somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বউ

২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বউ আমাকে খুব ভালবাসে। আমার খুব কেয়ার করে। আমিও আমার বউ কে খুব ভালবাসি। পরিবার থেকেই আমাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে।আমার বউ সব সময় আমার খেয়াল রাখে।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই বউ কে খুজতে লাগলাম।বিয়ের আগে ঘুম থেকে উঠে মোবাইল খুজতাম।আর এখন বউ খুজি।
বেপার কি এত সকালে গেল কোথায়?
একটু পরেই বউ ডাক দিল।
-এই উঠে পর।
-কেন?
-অফিসে যেতে হবে না?
-ও। হ্যা।
-তুমি ফ্রেস হয়ে আস। আমি টেবিলে খাবার দিচ্ছি।
-আচ্ছা তুমি আমার জন্য এত কষ্ট কর?
-কোথায় কষ্ট করি?
-এত সকালে উঠেই আমার জন্য নাস্তা বানাও।আরো কাজ কর।
-এটা কষ্ট হবে কেন? এতেই আমার সুখ।
এই তোমার নাস্তা রেডি।নাস্তা খেয়ে নাও।

নাস্তা খেয়ে অফিসে যাবো। এমন সময় দেখি আমার অফিসের ব্যাগ নাই।মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল।ব্যাগ খুজতে লাগলাম। কোথায় রেখেছি? মনে পরছে না।ব্যাগ এ সবকিছু গোছাতে হবে।আর ব্যাগ ই পাচ্ছি না।একটু পরে দেখলাম আমার বউ আমার কাছে ব্যাগ এনে দিল।ব্যাগ এর ভেতর সব কিছু গোছানো। অফিসে যাচ্ছিলাম এমন সময় বউ ডাক দিয়ে বলল আমি নাকি টাই বাধতে ভুলে গেছি। সত্যি ই তো টাই বাধি নি।ফিরে এলাম। এসে আবার দারালাম।বউ গলায় টাই বেধে দিল।আর কপালে কাজল দিয়ে একটা চাঁদ একে দিল। আমি বললাম প্রতিদিন তুমি বাচ্চাদের মত কপালে বাচ্চাদের মত কাজল
দিয়ে চাঁদ একে দাও কেন? বউ বলল যাতে তোমার ওপরে কোন মেয়ের নজর না পরে।
অফিসে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠবো এমন সময় দেখি চাবি নাই।
ফিরে গেলাম চাবি আনতে দেখলাম বউ আমার জন্য চাবি হাতে দাড়িয়ে আছে। বললাম চাবি ভুলে রেখে গেছি।
বউ চাবি দিয়ে বলল তুমি আরেকটা জিনিস ভুলে গেছ।
আমি বললাম কি?
বউ বলল আমার কপালে চুমু দিতে ভুলে গেছ।তুমি আমার কপালে চুমু দাও।
বউ এর কপালে চুমু দিয়ে অফিসে গেলাম। অফিসে গিয়ে কাজের অনেক চাপ ছিল। দুপুরের দিকে কাজ এর চাপ শেষ হল। দেখি বউ কয়েকবার ফোন দিয়েছে। ফোন সাইলেন্ট মোড এ রেখেছিলাম।
কল ব্যাক করলাম।
-হ্যালো।
-হ্যালো। কয়েকবার তোমাকে ফোন দিলাম।ফোন ধরলে না কেন?
-ফোন সাইলেন্ট মোড এ ছিল।
-যাও তোমার সাথে কথা বলবো না।
-সরি বাবা। আর হবে না।
-প্রমিস।
-প্রমিস। ফোন করেছিলে কেন? সেটা বল।
-তোমার সাথে কথা বলার জন্য।
-একটু আগেই তো কথা বললে। তাহলে এখন ফোন দিলে কেন?
-তোমার সাথে কথা না বললে আমার কিছুই ভাল লাগে না।
-কেন?
-ভালবাসি তোমাকে।
-কত টা ভালবাস?
-অনেক ভালবাসি।।
-আমিও। অনেক ভালবাসি আমার লক্ষি বউ কে।
-দুপুরের খাবার খেয়েছ?
-না। এখন খাব।
-এখন খাবে মানে?তারাতারি খাও।
-তুমি খেয়েছ?
-না। এখন খবো।শোন আজকে একটু তারাতারি চলে এস।
-কেন?
-আজকের তারিখের কথা মনে আছে?
-হ্যা।
-বলতো আজকে কি?
-আমার মনে নাই।
-আজকে আমাদের বিবাহ বার্ষিকি।
-ও। আমি তো ভুলেই গেছিলাম।
-তারাতারি বাড়িতে এস। আজকে শপিং এ যাবো।ঘুরতে যাবো।
-কেন? তুমি চলে যেও।
-তোমার জন্য শপিং এ যাবো।তোমার শার্ট গুলো তো নষ্ট হয়ে গেছে।নতুন কিনতে হবে।
-আমার শার্ট এমনিতেই অনেক গুলো আছে। নতুন দরকার কি?
-অত কিছু বুঝিনা। তুমি তারাতারি এস।
-আচ্ছা। চলে আসবো।
আমার বউটা নিজের জন্য চিন্তা করেনা। শুধু আমার কথা ভাবে।
সকাল সকাল বাড়ি যেতে হবে। বাড়ি যাওয়ার কথা ভাবছিলাম। এমন সময় আমার সহকারী এসে বলল আজকে একটা জরুরি মিটিং আছে।
আমি বললাম এটা বাদ দিলে হয় না?
-সহকারী বলল "না স্যার।আজকের মিটিং বাদ দিলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।
বাধ্য হয়ে বসে থাকলাম।
মিটিং শেষ করতে রাত ৮ টা বেজে গেল।ফোন টা বের করে দেখলাম আমার বউ অনেকবার ফোন দিয়েছিল।
ভাবলাম ফোন ব্যাক না করে সরাসরি বাড়িতে যাবো।
বাড়িতে গেলাম। বউ দরজা খুলে দিল।কিন্তু কোন কথা বলল না।আমি কাছে গিয়ে বললাম।
-প্লিজ রাগ করো না।
-চুপ।
-বেপার কি আমার রাগ করেছ?
-হুম।
-কথা বলবে না?
-না।
-কিন্তু আমার লক্ষি বউ কেন রাগ করেছ সেটা বল।
-তুমি আসতে দেরি করলে কেন?
-ও। এই কথা। একটা কাজে আটকে গেছিলাম। সরি।
-তুমি তো এটা ফোন করে আমাকে জানাতে পারতে।
-সরি ভুল হয়ে গেছে।
-জানো তোমার জন্য আমি কত চিন্তায় ছিলাম?
-সরি আর হবে না। খেয়েছ?
-না।
-চল খেতে বসি।অনেক ক্ষুধা লাগছে।
-না।আমি খাবো না। তুমি খাও।
-আচ্ছা। না খেলে আমি গিয়ে শুয়ে পরি।
এই বলে আমি বিছানাতে গিয়ে শুয়ে পরলাম।একটু পরেই দেখলাম আমার বউ আমাকে ডাকাডাকি শুরু করেছে।
-এই। না খেয়ে ঘুমিয়ে পরলে কেন?
-আমি খাবো না।
-কেন?
-তুমি খাবে না।তাই আমিও খাবো না।
-না খেয়ে ঘুমালে তোমার শরির খারাপ হবে।
-না হয়।তুমি না খেলে আমিও খাবো না।
-আচ্ছা।চল আমিও খাচ্ছি।
উঠে খেতে বসলাম। বউ খাচ্ছে না দেখে বউ কে বললাম।
-ব্যাপার কি? খাচ্ছ না কেন?
-কেন খাচ্ছ না তুমি জানোনা?
-খাও।
-তুমি আমাকে না খাইয়ে দিলে আমি খাই?
-ও।ভুলেই গেছিলাম।আচ্ছা আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি।
-কালকে কিন্তু তোমাকে নিয়ে শপিং এ যাবো।
-আচ্ছা।
একটু পরে দুইজন গুমাতে গেলাম। ঘুমিয়ে পরেছিলাম।রাতে ঘুমাচ্ছিলাম।এমন সময় বউ ডাক দেয়া শুরু করলো।মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল। এমনিতেই সারাদিন শাষনে রাখে। এটা কোর না। ওটা কর।আবার এখন ডাক দেয়া শুরু করেছে।
-এই।
-কি হয়েছে?
-আমার এই বালিশ টা শক্ত।ঘুমিয়ে আরাম পাচ্ছি না।
-তাহলে আমার টা নাও।
-না ওটাও শক্ত।
-তাহলে কালকে নরম বালিশ কিনে আনবো।
-আমি কি নরম বালিশ আনতে বলেছি?আমি তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো।
-আগে বললেই হয়। এত বাহানা করার কি আছে?
-তুমি বোঝ না।
-আচ্ছা বালিশে না ঘুমিয়ে আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমালে তো।আর খুব ভাল লাগে?
-হ্যা। এটাই তো আমার সুখের জায়গা। এখানে ঘুমালে আমি অনেক আরাম পাই।

এই বলে আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমায় আমার বউ।আমিও ঘুমিয়ে পরি।সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলাম। দেখি আমার বউ এখন ও ঘুম থেকে উঠেনি।বেপার কি? প্রতিদিন আমাকে ডাল দেয়।আর আজকে উঠেনি কেন?মাথায় হাত দয়ে দেখলাম। অনেক জর। বুঝলাম এই জন্যই ঘুম থেলে উঠেনি। ডাক্তার কে ফোন করলাম। হাত মুখ ধোয়ার জন্য বাথরুমে গেলাম।বের হয়ে দেখি বউ বিছানাতে নাই।বেপার কি? গেল কোথায়?
খুজতে খুজতে গিয়ে দেখি বউ কিচেনে নাস্তা তৈরি করছে।
আমি বললাম
-বেপার কি? তুমি অসুস্থ শরির নিয়ে উঠে এসেছ কেন?
-তোমার জন্য নাস্তা বানাতে হবে না?
-তাই বলে অসুস্থ শরির নিয়ে?
-নইলে তো তোমার অফিসে দেরি হয়ে যাবে।
-না হয়। তুমি বাদ দাও কাজ।আমি অফিস থেকে আজকে ছুটি নিব।
এই বলে বিছানাতে নিয়ে এসে শুইয়ে দিলাম।
একটু পরে ডাক্তার এসে বলল "চিন্তার কিছু নেই। অসুধ খেলেই ঠিক হয়ে যাবে।
ডাক্তার চলে গেল। আমি গিয়ে বউ এর পাশে বসলাম। এবং বউ এর হাত ধরলাম
-তুমি অফিসে যাও।
-না যাবো না।
-অফিসে না গেলে তোমার অনেক ক্ষতি হবে।
-না হয়।তোমাকে অসুস্থ শরিরে রেখে আমি অফিসে যাবো না।
-আমাকে অনেক ভালবাস?
-হ্যা। পাগলি। তোমাকে অনেক ভালবাসি।
-আমি অনেক ভাগ্যবতি তোমার মত স্বামি পেয়ে।
-তাই।
-হ্যা।
বিকেলের দিকে জর কমে গেল। তারপরে দুইজন বিকেলে শপিং করতে গেলাম।
শপিং এ গিয়ে আমি কিছু পছন্দ করছি না । বউ ই সব পছন্দ করছে। একটু পরে ডাক দিল।
-এই রাব্বি। এদিকে আসো।
-কি হল ডাকছো কেন?
-এইটায় তোমাকে অনেক সুন্দর লাগবে।এইটা নাও।
-আচ্ছা।নাও।
শপিং শেষ করে দুইজন অনেক ঘুরলাম। রাতে বাসায় এলাম। এসে বউ বলল।।
-এই শার্ট গায়ে দাও তো। দেখি তোমাকে কেমন লাগে?
-আরে কেনার আগে তো গায়ে দিলাম ই।
-তখন ভাল ভাবে দেখতে পারি নি।
-এখন গায়ে দাও।আমি মন ভরে দেখবো।
-আচ্ছা।
-তোমাকে তো অনেক স্মার্ট লাগছে।
-যেভাবে পোশাক কিনে দিচ্ছ? কখন অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করি কে জানে?
-কি বললে? তোমাকে আমি অন্য কারো হতে দিব না। তুমি শুধুই আমার।
-আমার প্রতি কত প্রেম?
-অনেক অনেক।
এই বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমার বুকে মাথা রেখে কান্না করা শুরু করলো। বললাম কি বেপার? কাদছ কেন?
বউ বলল "সুখে কাদছি।আজ আমি অনেক সুখি।
.
(পুরোটাই কাল্পনিক।হয়তো বিয়ের পরে এমন হবে আমার বউ এর সাথে)
.
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×