somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনমনে...খুজে পাওয়া...(২)

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাশ শেষ হবার মাত্রই আমরা উধাও হয়ে যাই! সোজা চলে যাই সোহেল মামার টঙ্গে। যে যা কিছু পাচ্ছে খাচ্ছে আর সন্ধ্যে নাগাদ সব বিল দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিল মামা আলাদা করে রাখে। যাবার সময় একেবারে বিল ক্লিয়ার করে যাই! সবার সাথে এমন সম্পর্ক আমার ভালো লাগে! ভুল বললাম সবার সাথে এমন সম্পর্ক তো নাই!
তো শোভন? ওই মেয়েটার সাথে আর দেখা হলো?
কোন মেয়ে?
কাল যাকে দেখিয়েছিলি সেটা…
ওহ না দেখা হয় নি। মেয়েটা মনে হয় অন্য ধাচের…
মানে?
মানে… ওরিয়েন্টেশনের দিন ওর পাশে ছিলাম আমি। যেভাবে তোদের স্টেজ পারফর্মেন্স দেখলো মনে হল মোটেই সহ্য করতে পারছে না। আর সবাই যেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে!
হুম কোন অজানা কারণে তার এসব মিউজিক ভালো লাগে না! আমাদের ব্যান্ডের নামও জানে না! আনমনে বললাম…
তুই কিভাবে জানলি? কথাটা ধরল শোভন।
কি জানলাম?
কি করে জানলি সে তোদের ব্যান্ডের নাম জানে না?
মানে… বুঝলাম ধরা পড়ে গেছি! সো বলে দিলাম গতকালের কাহিনী।
ওহ এই কাহিনী মামা! শয়তানী হাসি দিল শোভন! সোহেল মামা আজকের সব বিল কিন্তু সাগরের উপর! লিখা রাখো!
সোহেল মামাও কম যায় না! কাহিনী কিতা বাজান? খুলি মাত!
আরেহ আমাদের সাগরের তো হয়ে গেছে! ফোরন কাটল শোভন!
যাহ হারামির দল! ঠোট উল্টালাম আমি! হেল্প করবি কিনা বল!
হা তা তো অবশ্যি! কিন্তু মামা খালি পেটে যে কথা জমে না…
অগ্যতা চারটা সিঙ্গারার বিল দিয়ে উঠতে হল আমাকে!



কিন্তু শোভনের কিছু করতে হল না। সুযোগটা সামনেই চলে এল!
ডিপার্টমেন্টের করিডোর দিয়ে হাটছিলাম আমরা। সামনে দেখা হয়ে গেল মেয়েটার সাথে! তার বান্ধবীরাও আছে তার পাশে। তো শোভন শুরু করল।
এই যে তোমরা! একটু দাঁড়াও তো!
জ্বী ভাইয়া! একটু ভয় দেখা দিল তাদের মাঝে।
এই ভার্সিটির কিছু রুল আছে বুঝলে? বলে চলল শোভন। কিছু জিনিস মেইন্টেইন করে চলতে হয়! নতুন যেহেতু এসেছ, কিছু দিনের মাঝে শিখে যাবে। প্রথম কথা হল ভাইয়া আপুদের সালাম দিতে হয়! সম্মান করতে হয়! তাহলে বড় ভাইয়েরাও তোমাদের দরকারে হেল্প করবে।
জ্বী ভাইয়া।
ওকে চেনো? আমাকে দেখালো সে। মনে মনে প্রমোদ গুনলাম আমি।
ভাইয়া এই ভাইয়া তো কাল গান গেয়েছিল স্টেজে! এক মেয়ে চটপট করে বলে উঠল। চোখ জ্বলজ্বল করছে খুশিতে… কিন্তু আসল জন নির্বিকার…
হ্যা! খুশি হল শোভন। ও দ্য ড্রিমারসের ভোকাল! ওদের ব্যান্ড তো চেনো তোমরা!
সবাই মাথা নাড়ল।
তুমি চেন? ওকে নির্দিষ্ট করে জিজ্ঞেস করল শোভন। অস্বস্থির সাথে এক পা থেকে অন্য পায়ে ভার বদল করলাম আমি।
জ্বী ভাইয়া। নিচু স্বরে বলল সে। মাটির দিকে চোখ নামিয়ে রেখেছে। দেখে মনে হচ্ছে অনেক নার্ভাস! মেয়েটার জন্যে কেন যেন খারাপ লাগল অনেক। আসতে করে শোভনের শার্ট ধরে টানলাম। শোভন…
কিন্তু তাকে আজ পেয়ে বসেছে! হুম সাগর আমাদের মিউজিক ক্লাবের সেক্রেটারীও তোমরা যেহেতু নতুন এসেছো তাই তোমাদের মাঝে কেউ জয়েন করতে চাইলে সাগরের সাথে যোগাযোগ করতে পারো। সে তোমাদের মেম্বার করে দিবে। তোমরা ফ্রী প্রেকটিসও করতে পারবে। আমাদের ক্লাবে অনেক ইন্সট্রুমেন্ট পড়ে আছে তোমাদের জন্যই…
এক মেয়ে তখন ওকে গুতো দিল! এই তানিয়া তুই না গান গাইতে পারিস! জয়েন করে ফেল না ক্লাবে!
আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল! তু…তুমি মিউজিক করো! অবিশ্বাস্য কন্ঠে বলে উঠলাম! কেমনে কী!
ক্ল্যাসিকাল গান… মিনমিনিয়ে বলল সে… যেন ভয়াবহ কোন অপরাধ করে ফেলেছে। চোখ এখনো মাটির দিকে…
ক্ল্যাসিকাল…?
হ্যা ভাইয়া ও রবীন্দ্রসংগীতের গুরু… ও…
তাকে থামিয়ে দিল তানিয়া… তেমন কিছু না তাছাড়া…
এমন সময় পেছন থেকে শোনা গেলো দীপণ স্যারের আওয়াজ। এখানে কি হচ্ছে? গমগম করে প্রতিধ্বনি হলো যেন। এই মেয়েরা তোমরা ফার্স্ট ইয়ার না? ওরা কি বলছে?
ভয় পেয়ে গেলাম আমি। দীপণ স্যারের কিছুই ঠিক নাই! তিনি হাসতে হাসতে হঠাৎ রেগে উঠতেও পারেন। অন্য স্যারেরা তাকে এড়িয়ে চলে। আজ বুঝি আমাদের রক্ষে নেই!
কিছু বলার আগেই তানিয়া বলে উঠল, কিছু না স্যার, ভাইয়ারা আমাদের মিউজিকাল ক্লাবে জয়েন করার জন্য বলছিল… কিভাবে জয়েন করতে হয়…
তাই নাকি? সন্তুষ্ট মনে হল না স্যারকে। সাগর! সারা দিন মিউজিক নিয়ে পরে থাকলে হবে? পরীক্ষায় পাশ করতে হবে না? মিউজিকের ডিগ্রী দেই এখানে?
না স্যার। মিনমিন করে বললাম।
পড়াশোনা করতে হবে… আর… পরক্ষণেই তার মেজাজ ফুরফুরে হয়ে গেল। গতকালের অনুষ্ঠানটা ভালো অর্গানাইজ করেছো! তোমাদের নতুন গানটাও ভালো লেগেছে। keep it up!
বলে হন হন করে হাটা ধরল! পেছন থেকে শোভন বলে উঠল স্যার ওটা ওদের নতুন গান ছিল না… ছিল অর্থহীনের…
কে শোনে কার কথা… উনি ততক্ষণে ক্লাশের ভেতরে ঢুকে গেছেন।
থ্যঙ্ক ইউ! তানিয়াকে বললাম আমি। আসলেও। দীপণ স্যারের মাথা ঠিক থাকে না… এভাবে হেল্প করার জন্য ধন্যবাদ।
হেল্প কোথায়? হালকা হাসল সে। আপনারা তো তাই বলছিলেন…
একটু ইতস্তত বোধ করলাম। তোমাকে মিউজিক ক্লাবে দেখলে ভালো লাগবে আমার! বলে হাটা শুরু করলাম। পেছন থেকে শোভন দীপণ স্যারের নকল করে বলল কিন্তু পড়াশোনা সবার আগে!!
তার কথা শুনে সবাই হেসে ফেললাম। শান্ত হয়ে গেল পরিস্থিতি।
সো, দেখা হবে। বাই!
আমি আর শোভন ঢুকে গেলাম আমাদের ক্লাশে।

প্রথম পর্ব
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×