আজকের পর্বঃ ম্যাঁও প্যাঁও ভাবনা
ঘুমিয়ে আছি হাত পা ছড়িয়ে। অনেক দিন এমন শান্তির ঘুম ঘুমাই না। হঠাৎ কিসের যেন খুট খুট আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল।কান খাড়া করলাম।শব্দের উৎস খোঁজার চেষ্টা করলাম। ইদুর না অন্য কিছু! আওয়াজটা বেশ বিরক্তিকর।কুট কুট কুট কুট..... আবছা আলো ছায়ায় কিছু ই ঠাওর করা গেল না।
ছোটবেলায় খুব ভুতের ভয় ছিল। সন্ধ্যার পরে এক রুম থেকে আরেক রুমে যেতেও ভয় লাগতো। সব সময় মনে হত আমাকে একাই পেলে খাটের নিচে লুকিয়ে থাকা অশরীরীরা আমার পা ধরে টেনে নিয়ে যাবে । আব্বার বিশাল বিশাল তাড়া ও আমার ভুতের ভয় ভাঙাতে পারতো না। এখন অবশ্য সেই সব ভয় নেই। এখন আমি বেশ সাহসী।
নাহ! শব্দটা বিরক্তিকর।অস্বস্তি নিয়ে ঘুমানো যায় না, উঠতেই হলো। বাসায় একা আছি। ও হ্যাঁ একা আছি বললে আমাকে আবার ছন্ন ছাড়া ভেবে বসবেন না দয়া করে। আমার দোকা টোকা সব আছে। এক ঘর পোলাপান ও আছে তবে তারা এখন বাসায় নাই। এতরাতে কোথায় গেছে?
আরে বুঝলেন না? সে গেছে বাবার বাড়ি আর পোলাপানগুলো গেছে নানা বাড়ি।
যা হোক খামাকা প্যাচাল পেড়ে লাভ নাই। আমি বিছানা ছেড়ে উঠে লাইট জ্বালালাম। ভোরের আযান শেষে মোয়াজ্জেম সাহেব জানাচ্ছেন ফজরের নামাজের আর মাত্র বিশ মিনিট টাইম বাকি আছে।তাহলে সকাল হতে আর বেশি দেরি নাই।
এর মধ্যে অচিরেই খুটখাট রহস্যের সমাধান হলো। পোষা খরগোশটা ক্ষুধা মেটাতে ব্যস্ত।তাই এই খুটখাট শব্দ।হ্যাঁ ঠিক ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। আমারও কেমন যেন ক্ষুধা লেগে গেল। না থাক এখন খাই খাই না করে একটু ঘুমাই। সকালে জরুরি কাজ আছে।
আলো নিভিয়ে বিছানায় চলে এলাম। কিন্তু ঘুম আসছে না। বাইরে ভোর হচ্ছে। চমৎকার দৃশ্য। সেই সময় একটা জিনিস লক্ষ করলাম। মশারির বাইরে হাজার হাজার মশা। নিজেকে আচানক খাদ্য মনে হলো আর মশাগুলোকে খাদক। এত এত মশা আমার রক্ত লোভী! ভাবতেই কেমন যেন লাগলো। আচ্ছা এরা যদি ক্ষুদ্র প্রাণি না হয়ে সাইজে আরেকটু বড় মাপের হতো তাহলে কি হতো? এত লক্ষ কোটি মশার মাঝে টিকতে পারতো কি মানুষ। আর যদি ওরা রক্তপায়ী না হয়ে মাংসভুক পতঙ্গ হতো তাহলে?.........
না আর ভাববো না বেশি ভাবলে মাথা গরম হয়ে যাবে। আপনারা ঘুমান আমিও ঘুমাই।
ঘুমেই শান্তি!
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




