আজকের পর্বঃ দুঃখবিলাসী মন
___________________________
অনেক দিন পর আবার শৈশবে ফিরে গেলাম।নিশ্চয় ভাবছেন মিথ্যা বলছি। এটা আবার কি করে সম্ভব টাইম মেশিন তো এখনও আবিষ্কার হয় নি!
তাহলে শুনুন ....ছোটবেলার দিনগুলোতে আমি আর আমার মা সুযোগ পেলেই হয় গল্পের বই না হয় সিনেমা দেখতে বসে যেতাম ভি সি আর এ।বেশির ভাগ ই ভারতীয় বাংলা আর কিছু বাছাই করা বাংলাদেশের বাংলা সিনেমা।কখনও কখনও অবশ্য হিন্দী ছবিও দেখা হতো।
যাহোক বহুদিন বাদে আজ আবার একটা ভারতীয় বাংলা সিনেমা দেখতে বসেছিলাম।ছবিটি ঋত্বিক ঘটকের "মেঘে ঢাকা তারা"। ছবি দেখা শেষ, মন খারাপ করে বসে আছি। একা।ঘর অন্ধকার ।সন্ধ্যা হয়ে গেছে আলো জ্বালানো হয় নি। থাকুক অন্ধকার থাকুক। আঁধার আমার ভালো লাগে।
আগে মুভি দেখার পর, আমার মন ভালো বা খারাপের সঙ্গী ছিল আমার মা। মুভি শেষ হলেও মুভির রিএ্যাকশন গুলো তার পরবর্তী সময়ে অনেকটা সময় আমাদের মধ্যে বিদ্যমান থাকতো। হাসির মুভি হলে ছবির মাঝে শেষে তারপরে ও রেশ থেকে যেত অবিরাম।
দুঃখ কষ্ট সামাজিক মিলের সিনেমার ভালো পরিসমাপ্তির ক্ষেত্রে ও একই কথা প্রযোজ্য। ছবি শেষে আমি আর মা দু'জন হাপুস নয়নে কাঁদছি। এমনটা অনেক দিন হয়েছে। যে কেউ দেখলে পাগল টাগল বলতো নিশ্চয়। ভাগ্যিস কেউ দেখে নি।
এখনও সেই অভ্যাসটাই রয়ে গেছে আমার মধ্যে । মা তো এখন আর নেই তাই মন খারাপের পাল্লাটা একটু ভারি ই বলা চলে।তবে ছবি দেখা শেষে সিনেমার চরিত্রগুলোর সুঃখ দুঃখগুলো নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই আর। তাই কষ্টগুলো একটানা বুকের মধ্যে অন্য সুরে বেজেই চলেছে। বিশেষ করে শক্তি পদ রাজগুরু কাহিনী আর ঋত্বিক ঘটকের পরিচালনায় মেঘে ঢাকা তারার নিতা রূপে সুপ্রিয়া চৌধুরীর অভিনয়। অসামান্য।
অনিল চট্টোপাধ্যায়ের সাথে সুপ্রিয়া চৌধুরীর দ্বৈত লিপ সিং এ গানটা এখনও কানে বাজছে। রবী ঠাকুরের গান সেই বিখ্যাত গান।
যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙলো ঝড়ে, জানি নাই তো তুমি এলে আমার ঘরে....
অতীত স্মৃতি রোমন্থন কখনও কখনও বেদনার হলেও এক ধরনের কষ্ট মিশ্রিত সুখানুভূতি জাগ্রত হয় মনে। এটাকে কি বলে জানি না। এটাকে দুঃখ বিলাস বলে হয়তো।
আহ! সেই দিনগুলোতে যদি আবার ফিরে পাওয়া যেত।কি মজাই না হতো!
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ৮:২৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




