somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ একা দিন ফাঁকা রাত

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবিতা



বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ভোর হয়ে এলো।ঘরে ঢুকে ক্লান্ত শ্রান্ত শরীরটা  বিছানায় এলিয়ে দিলেও মিনারের দুচোখে ঘুম এলো না একরত্তিও। পুরো বাড়িতে এখনও তিথির স্পষ্ট  স্পর্শ  বিদ্যমান।হাতের ছাপগুলো এখনও লুকিয়ে যায়নি।ওর নিঃশ্বাসের অবশিষ্টাংশ এখনও রয়েছে ঘরের আনাচে কানাচে।অথচ সেই জলজ্যান্ত  মানুষটিই এখন  অবর্তমান। অতীত হয়ে গেল কিছু সময়ের ব্যবধানে!
এটা কিভাবে সম্ভব?কখনও  কি হয় না-কি এমন? হতে পারে? এমন কিছু যে হতে পারে কখনও কল্পনাও করেনি মিনার।তিথিও কি ভেবেছিলো কখনও তাদের এমনভাবে বিচ্ছেদ হবে?
মানুষ ভাবে এক হয় আরেক, এটাই বুঝি ভবিতব্য।
তাহলে কেন এতো সব প্রস্তুতি। এতো আয়োজন। এতো আকুলতা।এতো ভালোবাসা! কেন এই সব মায়ার খেলা?
সবই যখন হারাবে তবে কেন এই আসা আবার বিনা নোটিশে চলে যাওয়া?

তিথির সাথে প্রথম দেখার দিনটা মিনারের চোখে  বরাবরই জীবন্ত।
সেদিন রাত গভীরে  বাড়িতে হঠাৎ "চোর এসেছে, চোর এসেছে " শোর উঠলো।চোরের পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে  তিথির সাথে মিনারের তীব্র  বাদানুবাদ । অনেক ঝামেলার পরে জানা গেল চোর ভাবা সেই ছেলেটি আসলে একজন মানসিক রোগী।ছেলেটির নাম মারুফ। মারুফ তিথির ভাই ছিল। মারুফের অবিন্যস্ত ভাবনার দেয়ালের পরতে পরতে তিথির প্রবল উপস্থিতি ছিল।বোনকে সে খুব ভালোবাসতো।হাসপাতাল চত্ত্বরে মারুফের আকুলতা সবাইকে স্পর্শ করছিল।আসলে তিথির এই হুট করে চলে যাওয়াটা একদমই অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। ওর এই চলে যাওয়া সবাইকে কাঁদাচ্ছিল।
হঠাৎ ই ঠান্ডা লেগেছিল তিথির।কাশিটাও বেড়েছিল বাড়াবাড়ি রকম।পারিবারিক চিকিৎসক ঢাকায় ব্যস্ত থাকার কারণে চিকিৎসায় দেরি হচ্ছিল। বাড়াবাড়ি কাশির দমকে সন্ধ্যায় হঠাৎ বমি হলো।সদ্য অফিস ফেরত মিনার সব ময়লা গুছিয়ে পরিষ্কার করলো।তিথি আট মাসের সন্তান সম্ভবা ছিল,ওকে বিশ্রামে রেখে চায়ের জল চড়িয়ে মিনার টিভিতে ক্রিকেট খেলায় মন দিল।
এরই এক ফাঁকে অন্য ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ সেরে নিয়েছিল। দশটা নাগাদ বেরুতে হবে। যদিও তিথি মানা করছিল এসব না করতে।
এদিকে দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ ছিল বলেই তিথির হঠাৎ উঠে যাওয়াটা খেয়াল করেনি মিনার।অদ্ভুত একটা শব্দ হতেই ছুটে গিয়েছিল মিনার।তখন তিথি মেঝেতে....  রক্ত ভেসে যাচ্ছিল।টাইলসের মেঝেতে পানি ছিল। সামান্য পানিতে এত বড় অঘটন ঘটবে কে ই বা জানতো!
অ্যামবুলেন্সে তোলবার সময় শেষবার চোখ মেলেছিল তিথি।মিনারের হাতটা বড্ড বেশি শক্ত করে  আকড়ে ধরেছিল সে।কিছু বলতে চাইছিল হয়তো!কিন্তু তার চোখ জুড়ে সর্বনাশি ঘুম ছিল। অ্যাম্বুলেন্সের চলার পথে একসময় সেই শক্ত বাঁধনও শিথিল হলো। তিথি চলে গেল রাত নয়টা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে।

সি সি টিভি ফুটেজ চেক করে ঘুমুতে যাবার আগে
মোবাইলটা হঠাৎ বেজে উঠলো।অফিসের রিসেপশনিস্ট লাস্যময়ী মিথিলার কল পেয়ে মিনারের মুখে সূক্ষ্ম একটা হাসির চিহ্ন ফুটে উঠলো।.....
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৭
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×