somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুজরাত-সন্ত্রাস পর্ব:১,২,৩,৪,৫ (দলিল-ভিত্তিক দীর্ঘ পরিক্রমা)

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গুজরাত-সন্ত্রাস:-দলিল-ভিত্তিক একটি দীর্ঘ পরিক্রমা/রইসউদ্দিন গায়েন
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রি হবার খবর শুনে আমি শুধু আশ্চর্য হইনি,হতবাক হয়েছিলাম। কাজী নজরুলের একটি ব্যঙ্গাত্মক কবিতার দু’এক লাইন মনে পড়ে: ‘কুঁজো বলে সোজা হয়ে শুতে যে সাধ---দে শুইয়ে/দে গরুর গা ধুইয়ে।‌’ মনে পড়ে:যে লোকটি স্পষ্টতই মুসলিম বিদ্বেষী শুধু নয়,পরিকল্পিত নরহত্যাকারী; তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রি তো দূরের কথা,একজন সাধারণ মানুষ নামে আখ্যায়িত করা যায় কিনা সে প্রশ্নও ওঠে।ধর্মের নামে ভন্ডামি আর কতকাল চলবে? ট্রেনে পুড়ে মরল রামভক্ত আর পুড়িয়ে মারল রহিম ভক্তকে।একজন সাধারণ মানুষও জানে,ভগবান বা আল্লাহ মন্দির বা মসজিদের মধ্যে ঢুকে নেই। ‘তিনি আছেন সেথায়, যেথায় করছে চাষা চাষ/পাথর কেটে ভাঙছে সেথায়,খাটছে বার মাস।‌’ আমার আজও মনে পড়ে ছোটবেলায় ঘাটে,মাঠে,বাটে যেখানেই হোক না কোনও গিরগিটি দেখতে পেলেই ঢিল ছুঁড়ে বা লাঠি নিয়ে তাড়া করে মেরে ফেলা হ’ত।আর এই কাজে কিশোর বয়সের ছেলেরাই অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করলেও বয়স্ক লোকদেরও থাকতো এই মারণযজ্ঞে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ইন্ধন।আর এটাই আমার কাছে অতি আশ্চর্যের বিষয়।গিরগিটি মারার ইতিহাসভিত্তিক কারণ যেদিন লোকমুখে শুনলাম,সেদিন অত্যন্ত আহত হয়েছিলাম।সংক্ষিপ্ত ঘটনা এই(শোনা কথা,আমি কোনো বইতে পড়িনি): হজরত মহম্মদ(স:)এবং তাঁর কয়েকজন বিশ্বস্ত অনুসারী শত্রুর আক্রমন থেকে আত্মরক্ষার জন্য পাহাড়ী গুহায় আশ্রয় নিলে মাকড়সা গুহার মুখে জাল বুনে দিয়েছিল,যাতে শত্রুরা নবীজীর খোঁজ না পায়।কিন্তু এই বহুরূপী গিরগিটি নাকি শত্রুদের সাহায্যার্থে সত্য তথ্য জানিয়ে দিয়েছিল।আর সেই থেকেই নাকি গিরগিটি চিরশত্রু।অদ্ভুত ব্যাপার,এই ঘটনার জের ধরে গিরগিটি দেখতে পেলেই বেচারাদের আর রেহাই নেই।এখানে আমার প্রশ্ন যে বিশেষ একটি গিরগিটি শত্রুপক্ষকে সাহায্য করেছিল,তাকেই না মেরে তার বংশধরদের খুন বা হত্যা করার যৌক্তিকতা কোথায়?কোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ কি গিরগিটির বংশ ধ্বংস করার হিংসাত্মক মনোবৃত্তিকে সমর্থন করতে পারে?আমি জানি এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে কেউ এগিয়ে আসবেন না।কারণ হিংসাত্মক কর্ম-ই তো ধর্মের আর এক রূপ।ফিরে আসি গুজরাত-সন্ত্রাস প্রসঙ্গে।শুরুতেই একটি রিপোর্ট শোনা যাক:--
“গোধরা হত্যাকান্ডের পরদিন থেকে গুজরাতে যে তান্ডব শুরু হল তার নাম দাঙ্গা নয়,তা একটি সম্প্রদায়ের সম্পূর্ণ বিলোপের পরিকল্পনা প্রসূত।এই পরিকল্পনার অংশীদার যেমন রাস্তার খুনী তেমনই নরেন্দ্র মোদী সরকার।এই সরকারের একজন শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী হরেন পান্ডিয়া তাঁর নির্বাচনের প্রক্কালে অঙ্গীকার করেছিলেন যে তাঁর এলাকাকে তিনি মুসলমান- শূন্য করবেন।ফেব্রুয়ারি মাসের হত্যাকান্ডের অন্তত ছ মাস আগে সারা গুজরাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে বজরং দল এক ত্রিশুলদীক্ষার আয়োজন করে,তাতে নানান ধরনের অস্ত্র ও অস্ত্রশিক্ষা হিন্দু যুবকদের দেওয়া হয়।গত চার বছর ধরে গুজরাতে বিজেপি(ভারতীয় জনতা পার্টি),ভি এইচ পি(বিশ্ব হিন্দু পরিষদ)কখনো আর কখনো খ্রীস্টানদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসমূলক কাজ চালিয়ে গিয়েছে।রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ তাতে খুশি হয়ে বলেছে যে গুজরাত হল হিন্দু রাষ্ট্রের পরীক্ষাগার।এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষে হিন্দু রাষ্ট্রের যে কাঠামো তৈরি হযে উঠছে তার চেহারা আমরা ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভালভাবেই দেখতে পাচ্ছি।আমাদের দেশে একতরফা সন্ত্রাস ও হিংসার এরকম আখ্যান এর আগে কখনো শুনিনি।যদি এ হিংসা গুজরাতে অব্যাহত থাকে তাহলে সারা ভারতে তা ছড়াতে বাধ্য।কারণ সংঘ পরিবারের মূলমন্ত্র হল ধর্মনিরপেক্ষ ভারতকে ভেঙে হিন্দুরাষ্ট্র গঠন করা।এবং গুজরাত প্রমাণ করেছে যে হিন্দুরাষ্ট্র জন্ম নেবে সংখ্যালঘুদের বিধ্বংস করে।
গত চার বছর ধরে গুজরাতে হিংসা যেভাবে দানা বেঁধে উঠেছে তার ছবি বহু সাংবাদিক,বহু বেসরকারি তদন্ত অনুসন্ধানী দল আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন।মার্চ মাস জুড়ে টেলিভিশনের কোনো কোনো চ্যানেল গলি-বাড়িতে হত্যাকান্ডের দৃশ্যাবলী অকুস্থল থেকে পর্যায়ক্রমে আমাদের দেখিয়ে গেছেন।নাৎসী জার্মানিতে ইহুদীবিলোপের প্রচেষ্টা ছিল কনসেন্ট্রশন ক্যাম্পের দেওয়ালের আড়ালে।গুজরাতের প্রায় সব ঘটনা ও তাদের পরিকল্পনা আগাগোড়াই প্রকাশ্যে ঘটেছে,তার সব খুঁটিনাটি তথ্য ভারতীয় নাগরিকদের জানানো হয়েছে।আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা সব সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সময়ে অবহিত হইনি,আমরা সব জেনেও নিষ্ক্রিয় হয়ে থেকেছি,আমরা গুজরাতে মুসলমান সম্প্রদায়ের নাগরিক অধিক্র রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করিনি।,আমরা সংঘ পরিবারের প্রকৃত চেহারা জানবার বোঝবার চেষ্টা করিনি,বাজপেয়ীর মোলায়েম ভাষণে নিশ্চিন্ত থেকেছি,যতক্ষণ না বাজপেয়ী স্বয়ং স্বয়ং গোয়া কনফারেন্সে পুরোপুরি আত্মপ্রকাশ করে বলেছেন---‘সংঘ আমার আত্মা’।
গুজরাতের ধ্বংসলীলায় মুসলমান মহিলা ও শিশুদের ওপর যে ব্যাপক ও নিদারুণ অত্যাচার করা হয়েছে তা বিশেষভাবে প্রণিধান করে দেখা উচিত।সংঘ টরিবারের হিংসাত্মক কর্মসূচী যে কতদূর যেতে পারে শুধু তা বোঝার জন্র নয়,এই আক্রমণ সংঘ পরিকল্পনার এক বিশেষ আঙ্গিকের পরিচয়।সংঘের মতাদর্শে,রাজনৈতিক লেখা ও ভাষণে,শাখার সব ‘সাংস্কৃতিক’ কার্যকলাপে দটি ব্যাপারের ওপর সবৃদা জোর দেওয়া হয়েছে---এক হল মুসলমানদের ভারতে আগমনের প্রথম দিন থেকে হিন্দু নারীর উপর অত্যাচারে বিচিত্র কাল্পনিক বা অতিরঞ্জিত উপাখ্যান।অন্যটি হল মুসলমান জনসংখ্যার প্রবর্ধমান হারের তেমনই অতিরঞ্জিত কাল্পনিক পরিসংখ্যান,ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনা।এই দুই আখ্যানকে ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে এক আকাশচুম্বী প্রতিশোধমূলক মনোভাব,এক সর্বাত্মক হিংসাধর্মী আশঙ্কা।
এর পরিণাম আমরা গুজরাতে দেখেছি। ‘প্রতিশোধের’ পিপাসায় মুসলমান মেয়েদের প্রবীণা থেকে তিন বছরের শিশু পর্যন্ত বেধড়ক পেটানো হয়েছে,তাদের গণধর্ষণ ও বহুধর্ষণ করা হয়েছে,তাদের কোলের শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে চোখের সামনে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।অথবা শিশুদের পেট্রোল খাইয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে মায়ের সামনে।তারপর মাকে ধর্ষণ করে পেট চিরে গর্ভস্থ অজাত শিশুকে বার করে ছিন্নভিন্ন করে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে।ধর্ষিত,মৃত মহিলাদের জরাযু নষ্ট করা হয়েছে,তারপর প্রজনন স্থানে অত্যাচার করা হয়েছে।অথবা অ্যসিড ঢেলে তাঁদের নিম্নাঙ্গ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে,রাস্তায রাস্তায় নগ্ন করে হাঁটানো হয়েছে।সবশেষে তাঁদের আগুনে ফেলে ভসমঈভূত করা হয়েছে যাতে ধ্বংসের কোনো চিহ্ন না থাকে।আর যাতে মুসলমানদের অন্তিম ধর্মানুষ্ঠান---কাফন-কবর—পারন না করে হিন্দুমতে শবদাহ করা যায়।
এ অত্যাচার সাময়িক পাগলামি নয়,এর বিশেষ উদ্দেশ্য আছে।নারীদেহ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আধার,সেই আধার অত্যাচার করে নষ্ট করে মুসলমানদের ভবিষ্যৎকেই ভস্মীভূত করা হচ্ছে---শুধু প্রতীকিভাবে নয়,আক্ষরিক অর্থে।লক্ষ্যণীয় যে,বিশেষ করে শরীরের প্রজনন স্থানের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে।আরও লক্ষ্যণীয় মায়ের সামনে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে ব্যপাকভাবে।অর্থাৎ,এই প্রজন্ম থেকে শুরু করে ভ্রুণ পর্যন্ত,জীবিত ও অজাত সমস্ত মুসলমানের জীবন ও জীবনের সম্ভাবনা পর্যন্ত নষ্ট করা হয়েছে।জাতিবিলোপের উপাখ্যানে এধরনের ব্যাপক পরিকল্পনার নজির বিরল।
বেশ কিছু স্বাধীন তদন্তের অনুসন্ধানে এই পুরো প্রকল্প দ্ব্যর্থহীনভাবে ফুটে ওঠে।হিন্দুরাষ্ট্র যখন গুজাটের প্রান্ত ছাড়িয়ে ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়বে তখন এইসব তথ্য অনুসন্ধান করা আর সম্ভব হবে না,প্রকাশ করা দুরের কথা।
আমাদের হতে সময় বেশি বাকি নেই।ফ্যাসবিাদের একটা সুবিধা হল যে তা এতই ভয়ঙ্কর এক সত্য যে তাকে সময় থাকতে বিশ্বাস করতে কেউ চায় না।যখন সে সত্য সকলের কাছে একেবারেই প্রকট হয়ে ওঠে তখন তার হাতে আর সময থাকে না।
হিন্দু রাষ্ট্রবাদীদের জাতিবিলোপের ফ্যাসিস্ট পরিকর্পনা,বিশেষত মুসলমান মহিলাদের সম্বন্ধে তাদের প্রকল্প বেশ কিছু তদন্তে পরিষ্কার ধরা দিয়েছে।বিশেষ প্রণিধান করে এ সব তথ্য আয়ত্ব করলে তবেই আমাদের ফ্যাসীবিরোধী চেতনা দৃঢ় হবে,উদ্দেশ্য খুঁজে পাবে,শত্রুকে জানতে পারবে।.....(.তনিকা সরকার,জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়,দিল্লী।)…..(ক্রমশ: চলবে)

গুজরাত-সন্ত্রাস:পর্ব-২(দলিল-ভিত্তিক দীর্ঘ পিরক্রমা)
“বম্বের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান গুজরাতের অনুসন্ধানী দলের সদস্য হিসেবে তদন্ত করে যে তথ্য সংগ্রহ করেছেন তা প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রকারীদের সহায়ক ভূমিকা স্পষ্ট করে দেয়। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বিশেষ নিবন্ধে (২৪.৪.২০০২)তিনি লিখেছেন—‘রাজ্য সরকার হত্যালীলার নীরব দর্শকই শুধু ছিল না তারা এই ঘটনা ঘটতে দিয়েছে। তারা দাঙ্গাকারীদের প্ররোচিত করেছে,উৎসাহ দিয়েছে এবং ধ্বংসলীলায় অংশ নিয়েছে।পুলিশ তাদের চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।‌’
এর পরে তিনি লিখেছেন--- ‘একজন মন্ত্রী আমেদাবাদ শহরের পুলিশ কমিশনারের কন্ট্রোলরুমে সমর্থক নিয়ে বসে থেকে হুকুম দিতে থাকেন। আর এক মন্ত্রী রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের কন্ট্রোলরুমে ঢোকেন,এবং পুলিশ তাদের নির্দেশ মত কাজ করতে থাকে। পুলিশের এই সার্বিক আত্মসমর্পণ গোটা আই.পি.এস শ্রেণির পক্ষে এক কলঙ্ক হয়ে রইল—যার দাগ সহজে মুছবে না। গুজরাত নি:সন্দেহে পুলিশ বাহিনীর রাজনৈতিক দলের ক্রীড়নক হওয়ার নিকৃষ্ট উদাহরণ।‌’
এর পেছনে অবশ্যই বড় কারণ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে সব সময় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। গুজরাতে ডি জি পি,সি পি,এস পি ঠিক হয় রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশে।পুলিশ যে কত ভাল করে রাজনৈতিক প্রভুদের হুকুম তামিল করছে তার প্রমাণ,কোথাও ধর্ষিতাদের অভিযোগ পুলিশ স্টেশনে নেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ কর্মীরা স্বয়ং সাহায্যপ্রার্থী নারীদের যেদিকে বিপদ নেই সেদিকে যেতে বারণ করে তাদের হত্যাকারীদের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে।....
গোধরার ঘটনাকে সামনে শিখন্ডী করে ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ’ ও ‘বজরং দল’ যে বর্বর সাম্প্রদায়িক আক্রমণ চালিয়েছে তা হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিশোধ নয়। বেশ কিছুদিন ধরেই সংঘ পরিবার সগর্বে বলে আসছে গুজরাত হল হিন্দুত্ব নির্মাণের পরীক্ষাগার।ধ্বংসের এই গবেষণাগার যে খুব ভাল কাজ করেছে তা এই ধর্মীয় গণহত্যায় প্রমাণিত হয়েছে।
ঘটনার ছ’মাস পরেও গোধরার অগ্নিকান্ড কিভাবে ঘটেছিল,কারা ঘটিয়েছিল,পুলিশ আসতে বেশ দেরী করেছিল,ফায়ার ব্রিগেড কি করছিল,কেন মৃতদেহগুলি আমেদাবাদ নিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছিল,বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ডাকা বন্ধে রাজ্য সরকারও সামিল হয়েছিল এই সব প্রশ্নের একটাই জবাব---সরকারি সমর্থন। মোদী সরকারে এক মন্ত্রী হরেন পান্ডিয়ার এবং তদন্ত কমিশনে সাক্ষ্য(যা তিনি পরে অস্বীকার করেন)অনুযায়ী মোদী কিছু মন্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বৈঠক করে সবাইকে নির্দেশ দেন ‘দাঙ্গা থামাতে তৎপর হতে হবে না। আগে ওদের শায়েস্তা করা হোক’।মোদী অবশ্য এই ধরনের বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না।
বিভিন্ন সংবাদপত্রের বিশেষ করে গুজরাতি পত্রিকাগুলির সাম্প্রদায়িক ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। করসেবকদের ধারাবাহিক প্ররোচনার কোনও আভাষ এইসব সংবাদপত্রে পাওয়া যায়নি। প্ররোচনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কিন্তু যদি সেই ঘটনাকে সমানে রেখে বর্বর নিধনযজ্ঞ চলে তাহলে কেন প্ররোচনার প্রসঙ্গটি বাদ যাবে?এইসব নানাবিধ প্ররোচনার চাক্ষুষ প্রমাণ শহরে থাকা সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে স্থানীয় পত্রিকারা কোনও যোগাযোগ করেনি,খবর ছাপা তো দূরের কথা।সত্যি ঘটনার তদন্তে গিয়ে সাংবাদিক জ্যোতি পুনওয়ানি এক প্রতিবেদনে (হিন্দু,১৫.৪.২০০২) যা জানিয়েছে তা ধিক্কার যোগ্য।
১.গোধরার মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রধান মৌলানা হুসেন উমেরজি সমস্ত শান্তি কমিটিতে পুড়ে যাওয়া মৃতদের পরিবার ও হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে মুসলিমদের হয়ে বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।বেশির ভাগ মিটিং-এ জেলা শাসকও উপস্থিত ছিলেন।যে সব হিন্দুরা উপস্থিত ছিলেন তারা কিন্তু এই ক্ষমা প্রার্থনার ঘটনাটি নিয়ে কোনও প্রচার করেননি।সব থেকে লজ্জার বিষয় ব্যাপারটির প্রচারে জেলাশাসকও অদ্ভুত নীরবতা পালন করেছেন।
২.হিন্দু ও মুসলিম অনেকেই দেখেছে স্টেশনে চা বিক্রেতা সিদ্দিক বকর-এর দাড়ি ধরে কিছু বজরং টানাটানি করেছে।এই চা বিক্রেতার সম্পর্কে হিন্দু রেলওয়ে কর্মীরা প্রতিবেদকের কাছে প্রচুর প্রশংসা করেছেন। কিন্তু গোধরার পত্রিকাগুলি উদ্দেশ্যমূলক ভাবে চুপ থেকেছে।
৩.গোধরার সাংবাদিকরা স্বীকার করেছেন যে সিদ্দিকের মেয়ে ১৭ বছরের সোফিয়াকে একজন রেলযাত্রী পেছন থেকে ধরে ট্রেনের দিকে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মুখে হাত চাপা দেওয়া সত্ত্বেও সে ‘মা’ বলে চিৎকার করলে তাকে ছেড়ে দেয়।কিন্তু এই কুৎসিৎ প্ররোচনা তাদের পত্রিকায় ঠাঁই পায়নি।
৪.যা প্রচারের আলোয় এসেছে তা হল হিন্দুদের স্কুল উড়িয়ে দেবার মুসলিম পরিকল্পনার অসমর্থিত খবর,একজন সিমি সদস্যের ‘তথাকথিত স্বীকৃতি’—কিভাবে গোধরায় পোড়ানো হবে,স্টেশনের সংলগ্ন মসজিদের ভেতর থেকে হিন্দু নারীদের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার।এই শেষ গুজবটি স্বয়ং মোদীও অস্বীকার করেছেন।কিন্তু গোধরার হিন্দুদের মতে গুজরাতে গোলমাল বন্ধ করতে মুখ্যমন্ত্রী জেনেশুনে ঘটনা অস্বীকার করেছেন।সেটাই তার মহানুভবতা।
৫.যদিও জেলাশাসক ও পুলিশ কর্তারা (এস পি)জানতেন উপরোক্ত ঘটনাগুলি গুজব মাত্র তারা কিন্তু সেটা নিয়ে কোনওরকম বাড়তি শ্রম খরচ করেনি জনসাধারণের সামনে প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে।
৬.সাম্প্রদায়িকতায় আচ্ছন্ন গোধরার হিন্দুরা ইংরিজি সংবাদপত্রগুলিকে এবং বেসরকারি টিভি সংবাদ মাধ্যমগুলি প্রচারিত কোনও খবর বিশ্বাস করে না।তাদের যখন বলা হয় যে প্রতিবেদক সোফিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তার ঘটনাটা সত্যিই হয়েছে তারা বলে সাজানো।শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া শিশুদেরও নাকি শিখিয়ে পড়িয়ে নেওয়া হয়েছে মিথ্যে বলতে।এসবই তাদের কাছে ‘জেহাদি ষড়যন্ত্র’।
গোধরা নিয়ে জাতীয় সংবাদপত্রে অনেক প্রশ্ন তোলা হয়েছে।তার একটি দেওয়া হল।প্রতিবেদক দিগন্ত ওঝা(হি.টা.)।
১.সিংগাল পালিয়ার বাসিন্দারা কেন ট্রেনে আক্রমণ করেছিল?আক্রমণ কি পূর্বপরিকল্পিত?
২.কারা ষড়যন্ত্রের ছক কষেছিল?
৩.জনতা কেন শুধু এস-৬ কামরা আক্রমণ করে,অন্য কোনও কামরা কেন নয়?
৪.বগিটি এত তাড়াতাড়ি কিভাবে জ্বলে ওঠে যার ফলে ৫৮ জন যাত্রীর পক্ষে বেরিয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়ে?কামরায় চারটি দরজা,দুটি প্ল্যাটফর্মের দিকে এবং দুটি তার উল্টো দিকে যেদিকে কেউ ছিল না এবং বগির দুদিকে ভেতর দিয়ে অন্য কামরায় যাওয়া দরজা।
৫.এস-৬ এর দুপাশের কামরার যাত্রীরা কেন তৎপরতা দেখায়নি আটকে থাকা যাত্রীদের বাঁচাতে,শত শত করসেবক যাত্রীরা কি করছিল?
৬.হোস পাইপগুলি কে কেটে দেয়,চেনই বা কে টেনে ট্রেন থামায়?
৭.কেন ১৯টি মৃতদেহ শনাক্ত হয়নি?এস-৫ ও এ-৭ এর যাত্রীদের তালিকা থাকা সত্ত্বেও কেন রেল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিবরণ জানতে চায়নি।
৮.মৃতদেহগুলি পোস্ট মরটেমের আগেই দিয়ে দেওয়া হয়।
৯.৫ জন অভিযুক্ত চিহ্নিত।চার্জশিটে কিন্তু তাদের আই এস আই-এর চর বলা হয়নি।
মনে হয় সরকার আসল অপরাধীদের খুজেঁ বের করতে খুব আগ্রহী নয়।
ফরেনসিক রিপোর্ট(যা সরকার ধামা চাপা দেবার চেষ্টা করেছিল) দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করেছে আগুন কামরার ভেতর লাগানো হয়েছে।তারা নানাভাবে হোসপাইপ,জ্বলন্ত কাপড় ইত্যাদি নিয়ে লাইন থেকে ছুঁড়ে দেখেছে যে তা ট্রেন পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না।ওইভাবে কেরোসিন ছুঁড়লে (পেট্রোল) তা বেশিরভাগটাই লাইনে পড়ে লাইনের ক্ষতি হত।অথচ বগির নীচে লাইন অক্ষত আছে।অকাট্য যুক্তি এবং অনেক আলোচনার পর যদিও বিশেষজ্ঞরা নির্দিষ্টভাবে সরকারি বক্তব্যের প্রতিবাদ করেননি তারা কিন্তু সেটা সমর্থনও করেননি।উল্টো কথাই বলেছেন।বারবার বলেছেন কামরার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল।কামরায় ঢোকার একমাত্র উপায় ছিল করিডর দিয়ে ভেতরের দরজায়।
স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে কি করে এক উন্মত্ত মুসলিম জনতা করসেবকদের চোখে ধুলো দিয়ে তাদেরই মাঝখান দিয়ে সংলগ্ন এস-৬ বগিতে ঢোকে? প্রথমেই নরেন্দ্র মোদী আই এস আই-এর নাম করে কিন্তু চার্জশিটে কেন উল্লেখ নেই?
ফরেনসিকের রিপোর্ট নিয়ে গোল ওঠার মাঝেই গোধরার তালিকা বেরোল।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের আগে পর্যন্ত কেন রেলমন্ত্রী নীতিশ কুমার যাত্রী তালিকা প্রকাশ করেননি?এই সন্দেহের মধ্যেই যখন তালিকা প্রকাশিত হল,দেখা গেল ৫৮ জন মৃতের মধ্যে মাত্র চার জনের নাম এস-৬ এর সংরক্ষণ তালিকায় ছিল।১৯ জনকে শনাক্ত করা যায়নি,৭ জনের কোনও হদিশ নেই।তাহলে ৩৭ জন সংরক্ষিত যাত্রী ছিলেন,তাদের কিভাবে সরকার সনাক্ত করলেন? তারা কে ছিল?
ফরেনসিকের রিপোর্ট যে সন্দেহের ভিত মজবুত করে তা হল গুজরাতের গণহত্যা পূর্বপরিকল্পিত।সেই জন্যেই সমস্ত গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করা হয়েছিল,রেশন অফিস,নির্বাচন দপ্তর,পুরসভা থেকে মুসলিম পরিবার,মুসলিম ব্যবসা সম্পর্কে নির্ভুল তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।কিভাবে একটা সম্প্রদায়কে সামাজিকভাবে ও অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়া হবে তারও ছক কষা হয়েছিল।তাই দেখা গেল গোধরা কান্ডের পর,নিখুঁতভাবে তিন চার দিনের মধ্যে শহরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মেরুদন্ড ভেঙে গেল। এরপর গ্রামাঞ্চলেও যেখানে আগে দাঙ্গা এভাবে হয়নি সেখানেও দলিত ও আদিবাসী সম্প্রদায়কে মুসলিমদের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় প্ররোচিত করা হল।...(ক্রমশ: চলবে)

গুজরাত-সন্ত্রাস পর্ব ৩(দলিল-ভিত্তিক দীর্ঘ পরিক্রমা)

মোদীর প্রধানমন্ত্রী হবার স্বপ্ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই একটি কবিতার লাইন উল্লেখ করেছিলাম পাঠকদের নিশ্চয়ই মনে আছে: ‘কুঁজো বলে সোজা হয়ে শুতে যে সাধ দে শুইয়ে----দে গরুর গা ধুইয়ে’।কথাটির যৌক্তিকতা প্রমাণ করার জন্য সাম্প্রতিক সময়ের একটি সাংবাদিক-রিপোর্ট পেশ করা হ’ল। গুজরাতে মুসলিম নিধনযজ্ঞে এই মোদী যে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ ইন্ধন যুগিয়েছিল এই রিপোর্টে তা’ স্পষ্ট বলা হয়েছে।কারণ সত্য কখনও গোপন থাকে না।এখন রিপোর্টটি পড়ুন:--তথ্যসূত্র—আনন্দ বাজার পত্রিকা,৪ঠা সেপ্টেম্বর,২০১৩)

বানজারার পত্রবোমায় বেসামাল মোদী
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
জেলবন্দি এক পুলিশকর্তার লেখা দশ পাতার একটা দীর্ঘ পদত্যাগপত্র। আর তার ধাক্কাতেই রীতিমতো বেসামাল নরেন্দ্র মোদী। বেকায়দায় তাঁর দল বিজেপিও। উল্টোদিকে বিজেপির সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে বাড়তি অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামার সুযোগ পেয়ে তুমুল উল্লাস কংগ্রেসের অন্দরমহলে।
সোহরাবউদ্দিন, তুলসীরাম প্রজাপতি-সহ চারটি ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ডি জি বানজারা গুজরাত পুলিশের প্রাক্তন ডিআইজি। ২০০৭ থেকেই সাবরমতী জেলে বন্দি এবং চাকরি থেকে সাসপেন্ড হয়ে রয়েছেন। এ বার জেল থেকেই চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। দশ পাতার সেই চিঠিতে নিজের ইস্তফার কথা জানানোর পাশাপাশি তিনি যা লিখেছেন, তাতেই সরগরম রাজনীতির ময়দান। চিঠিতে বানজারা লিখেছেন, “নরেন্দ্র মোদীর প্রতি শ্রদ্ধার কারণে এত দিন নীরব ছিলাম। কারণ ওঁকে ভগবান বলে মানতাম। এখন দেখছি দিল্লি যাত্রার জন্য ওঁর এত তাড়া যে, জেলবন্দি পুলিশ অফিসারদের প্রতি ঋণ শোধ করতেই ভুলে গিয়েছেন! অথচ এই অফিসারদের জন্যই তিনি সাহসী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন।”
এখানেই শেষ নয়। মোদীর অন্যতম আস্থাভাজন তথা রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অমিত শাহ-র বিরুদ্ধেও তীব্র বিষোদ্গার করেছেন বানজারা। এই পুলিশ কর্তার বক্তব্য, অমিত শাহের ‘কুপ্রভাবেই’ তাঁর ‘ঈশ্বর’ বিপথে চালিত হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “আমাকে এবং আমার অফিসারদের জেলে আটকে রেখে সিবিআই-এর হাত থেকে নিজেদের চামড়া বাঁচাতে এবং রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতেই ব্যস্ত এই সরকার।” সেই সঙ্গেই মোদী-সরকারের দিকে তোপ দেগে বানজারার অভিযোগ, ১২ বছর ধরে বিভিন্ন সংঘর্ষ মামলার কথা তুলে ধরে মোদীর সরকার বিপুল রাজনৈতিক ফায়দা তুললেও জেলে বন্দি পুলিশ অফিসারদের কথা ভাবেইনি।
একের পর এক অভিযোগে গুজরাত সরকারকে তুলোধোনা করে বানজারা শুধু যে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতৃত্বকেই চরম অস্বস্তিতে ফেলেছেন তা নয়, তাঁর চিঠির একটি অনুচ্ছেদ ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় মোদীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজেপিরই অনেকে। ওই অনুচ্ছেদে বানজারা লিখেছেন, “স্পষ্ট করে জানাতে চাই, যা করেছি, তা রাজ্য সরকারের গৃহীত সুচিন্তিত নীতি মেনেই।” দলের অনেকেই মনে করছেন, ওই অংশটির অর্থ হল, ভুয়ো সংঘর্ষের ঘটনায় এখন মোদীকেও জড়াতে চাইছেন বানজারা। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিরও বক্তব্য, বানজারার ওই চিঠিকে নথি হিসেবে গণ্য করে ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় মোদীকে জড়ানোর দাবি উঠতে পারে।
পদত্যাগপত্রটি গুজরাতের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি ও আইজি-কে দেওয়ার পাশাপাশি বানজারা পাঠিয়েছেন সিবিআইয়ের প্রধানকেও। আর তাতেই আশঙ্কার মেঘ জমছে বিজেপির অন্দরে। কী বলা যায় একে? অস্বস্তির ত্র্যহস্পর্শ?
ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় অমিত শাহকে বাঁচাতে অভিযোগকারীকে প্রভাবিত করার অভিযোগে গত কালই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে বিজেপির দুই নেতার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে একটি ‘স্টিং অপারেশন’-এর ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার মধ্যেই আজ মোদী সরকারের লোকায়ুক্ত বিল ‘অপর্যাপ্ত’ বলে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়াল। এই দুই ঘটনা নিয়ে এমনিতেই উত্তপ্ত রাজনীতির তাপ আজ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বানজারার পত্রবোমা।
একের পর এক ঘটনায় মোদী তথা বিজেপির চরম অস্বস্তিতে প্রত্যাশিত ভাবেই উচ্ছ্বসিত কংগ্রেস। মাত্র ক’দিন আগে রাহুল গাঁধী দলের মুখপাত্রদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, মোদীর বিরুদ্ধে মন্তব্য না করতে। মোদীকে আক্রমণ করলে মেরুকরণের রাজনীতিতে হাওয়া লাগতে পারে, এই আশঙ্কাতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আজ তাঁরই সবুজ সঙ্কেত পেয়ে কংগ্রেসের সদর দফতর থেকে মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়ানো হয়েছে। তুলসীরাম প্রজাপতি ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় মোদীর পদত্যাগও দাবি করেছে কংগ্রেস।
বানজারার চিঠি মনোবল বাড়িয়েছে বিজেপির অন্দরে মোদী-বিরোধীদেরও। মোদীকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করার জন্য যখন বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের বড় অংশ সক্রিয়, ঠিক তখনই এমন ঘটনায় বেশ উজ্জীবিত দলের মোদী-বিরোধী অংশ। মোদী-ঘনিষ্ঠরা অবশ্য গোটা ঘটনাকে কংগ্রেসের চক্রান্ত বলে দাবি করছেন।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, কংগ্রেস কিন্তু বানজারার চিঠি সম্পর্কে কিছু বলতে নারাজ। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, বানজারা নিজেই ভুয়ো সংঘর্ষে অভিযুক্ত। তা ছাড়া তিনি মোদীর তৈরি ফ্রাঙ্কেনস্টাইন। ভোটের মুখে জেল থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য মোদীকে ব্ল্যাকমেল করতেই তিনি এমন চিঠি লিখেছেন বলে দাবি কংগ্রেসের ওই নেতাদের। তাঁদের বক্তব্য, ওই চিঠির দৌলতে দলের কিছুটা ফায়দা হলেও বানজারাকে সমর্থন জানালে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ উঠতে পারে। তা কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়াবে।
এই অবস্থায় কংগ্রেস অস্ত্র করতে চাইছে বিজেপি-র দুই নেতা প্রকাশ জাভড়েকর ও রাজ্যসভার সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদবের বিরুদ্ধে ‘স্টিং অপারেশন’কে। ওই ভিডিও ফুটেজকে সামনে রেখে সুপ্রিম কোর্টে যে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে, তার মোদ্দা বক্তব্য, সোহরাবউদ্দিন মামলায় অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী তথা ভুয়ো সংঘর্ষে নিহত তুলসীরাম প্রজাপতির মা নর্মদাকে ভুল তথ্য দিয়ে ৬টি ফাঁকা ওকালতনামায় সই করিয়ে নিয়েছিলেন জাভড়েকর ও যাদব। তাঁদের উদ্দেশ্য একটাই, অমিত শাহকে বাঁচানো। কংগ্রেসের বক্তব্য, এই ষড়যন্ত্রের কথা নরেন্দ্র মোদীও জানতেন। তাই নিরপেক্ষ তদন্তে তিনি বাধা দিচ্ছেন। মোদী মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকলে তদন্ত সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত সিডি-কাণ্ড নিয়ে গতকাল মুখ খোলেননি জাভড়েকর। আজ তিনি বলেন, “ওই সিডি কংগ্রেসের সাজানো।”






সোহরাবুদ্দিন মামলায় জাভড়েকরের নাম
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ হত্যা মামলায় নাম জড়িয়ে গেল বিজেপি সাংসদ প্রকাশ জাভড়েকরের।
আজ সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে অভিযোগকারীকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে প্রকাশ জাভড়েকর, রাজ্যসভায় বিজেপিরই আরেক সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব ও সংঘ পরিবারের নেতা রামলালের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ অমিত শাহকে বাঁচানোর জন্য ওই পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যেখানে অভিযুক্তেরা সোহরাবুদ্দিন মামলায় অন্যতম প্রতক্ষ্যদর্শী তথা পুলিশি সংঘর্ষে মৃত তুলসি প্রজাপতির মা-কে ভুল তথ্য দিয়ে ছ’টি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছিলেন। আবেদনকারী আইনজীবী কামিনী জয়সওয়াল নিজের অভিযোগে আজ আশঙ্কা জানিয়েছেন, ওই ওকালতনামার সাহায্যে ভবিষ্যতে মামলা দুর্বল করার চেষ্টা করতে পারেন জাভড়েকররা। যদিও রাত পর্যন্ত গোটা অভিযোগটি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি জাভড়েকর-সহ অন্য বিজেপি নেতারা। কংগ্রেস শিবির বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অমিত শাহ দোষী প্রমাণিত হলে সমস্যায় পড়বেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। তাই মোদীকে বাঁচাতেই ওই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। শুধু অমিত শাহ নয় গোটা পরিকল্পনাটি জানতেন নরেন্দ্র মোদীও।
আজ সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারীর পক্ষ থেকে ওই মামলার স্বপক্ষে একটি স্টিং অপারেশনের সিডিও জমা দেওয়া হয়েছে। ওই সিডিও দেখা গিয়েছে, অমিত শাহের বিরুদ্ধে ভুয়ো সংঘর্ষ মামলা দুর্বল করতে গত বছরের আগস্ট মাসে সক্রিয় হন জাভড়েকর-ভূপেন্দ্ররা। সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে এক সাংবাদিকের সাহায্যে তুলসি প্রজাপতির মা নর্মদা প্রজাপতিকে দিয়ে গুজরাত হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট-সহ মোট ছ’টি আদালতের ফাঁকা ওকালতনামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। পরে অবশ্য জাভড়েকর ঘনিষ্ঠ ওই সাংবাদিকই স্টিং অপারেশনটি করেন। যার সিডি আজ সুপ্রিম কোর্টে জমা করা হয়েছে।
অভিযোগকারী কামিনী জয়সওয়ালের বক্তব্য, সে সময় তুলসির মা’কে বোঝানো হয়, গুজরাত সরকার নর্মদাকে সরকারি সাহায্য দিতে চায় তাই তাঁর সম্মতি প্রয়োজন। নর্মদাদেবী বিনা দ্বিধায় ওই ছ’টি ফাঁকা ওকালতনামায় স্বাক্ষর করে দেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রশান্তভূষণের আশঙ্কা, “অভিযোগকারীর ওকালতনামা অভিযুক্ত পক্ষের হাতে চলে আসায় প্রয়োজনে নর্মদার আইনজীবী পর্যন্ত পরিবর্তন করতে পারবেন অমিত শাহরা।” ওই ওকালতমানার সাহায্যে গোটা মামলাটিই দুর্বল করে দেওয়াই লক্ষ্য অভিযুক্তদের বলে মনে করছেন প্রশান্তভূষণ।

ইশরাত খুন ঠান্ডা মাথায়, চার্জশিটে অস্বস্তিতে বিজেপি নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি একটা পায়ে জুতো। আর একটা পা খালি। কমলা রঙের সালোয়ার-কামিজ পরা মেয়েটার লাশ পড়ে রয়েছে। তার ডান দিকে পড়ে রয়েছে আরও তিন জন। পুরুষ।
২০০৪ সালের ১৫ জুন টিভির পর্দায় ছবিটা সারা দিন ধরে দেখেছিল গোটা দেশ। তখনই জানা গিয়েছিল ১৯ বছরের কলেজ পড়ুয়া মেয়েটির নাম ইশরাত জহান। গুজরাত পুলিশ দাবি করেছিল, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিল ইশরাত আর তার বন্ধুরা। ওরা লস্কর জঙ্গি। আমদাবাদের রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মারা গিয়েছে চার জন।
নয় বছর পরে আজ সিবিআই গুজরাতের অতিরিক্ত মুখ্য ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ইশরাত জহান মামলার চার্জশিট পেশ করে বলল, ঠান্ডা মাথায় ওই চার তরুণ-তরুণীকে হত্যা করেছিল গুজরাত পুলিশ। তার পর ঘটনাটাকে সংঘর্ষের চেহারা দিতে নিহতদের হাতে গুঁজে দিয়েছিল একে-৪৭ এবং আরও কিছু অস্ত্রশস্ত্র। অর্থাৎ শেখ সোহরাবুদ্দিনের পর এ বার আরও একটা ভুয়ো সংঘর্ষের মামলায় জড়িয়ে গেল মোদীর পুলিশের নাম।
মোদীর পুলিশ, মোদী নন সরাসরি। নরেন্দ্র মোদী বা তাঁর ঘনিষ্ঠ, সোহরাবুদ্দিন মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন পুলিশমন্ত্রী অমিত শাহের নাম চার্জশিটে নেই। রয়েছে আইপিএস জি এল সিঙ্ঘল, আইপিএস ডি জি বানজারা, এডিজি পি পি পাণ্ডে-সহ মোট সাত জন পুলিশ অফিসারের নাম। তার মধ্যে বানজারা আগেই সোহরাবুদ্দিন মামলায় অভিযুক্ত হয়ে সাসপেন্ড হয়েছিলেন। পাণ্ডে এখন ফেরার।
কারও কারও দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সম্ভবত সিবিআই-কে মোদীর নাম না-রাখার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে। কারণ, মোদীর নাম রাখামাত্র বিজেপি বলতে শুরু করত, কংগ্রেস রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআই-কে ব্যবহার করছে। বিজেপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ বিভিন্ন সময় তুলেছে। প্রাক-নির্বাচনী বছরে মোদী তথা বিজেপি-র হাতে নতুন করে প্রচারের অস্ত্র তুলে না-দিতেই এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস সূত্রে দাবি, সিবিআইয়ের চার্জশিটে মোদীর নাম না-রেখেও তাঁর সরকারের প্রতি আঙুল তোলা গিয়েছে। তাতে সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙবে না বলে আশা করছেন তাঁরা। এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন মিস্ত্রি আজ বলেন, “সত্যিটা ঠিকই বেরোয়। মোদীর আসল চেহারাটা খুব শিগগিরি সামনে আসবে।” মণীশ তিওয়ারির কটাক্ষ, সিবিআই নিয়ে বিজেপি দ্বিমুখী আচরণ করে। “হরেন পাণ্ড্য মামলায় যখন সিবিআইয়ের চার্জশিট মোদীর পক্ষে গেল, তখন তো কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। এখন যেই বিষয়টা ওঁদের বিপক্ষে গেল, ওঁরা বলছেন, সিবিআই নাকি কংগ্রেস ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন!”

ডি জি বানজারা
জি এল সিঙ্ঘল
তরুণ ভানোট
এন কে আমিন
ইশরাত মামলার চার্জশিট বিজেপি তথা মোদীকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে বটেই। ঘটনাচক্রে আগামিকালই দিল্লি আসছেন মোদী। আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রচার নিয়ে দলীয় বৈঠক করবেন। তার আগের দিনই ইশরাত মামলার চার্জশিট পেশ হল। পাশাপাশি, সিবিআই-কে স্বাধীনতা দেওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামাও জমা দিল কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্র যে আসলে সিবিআই-কে নিজের মতো করেই ব্যবহার করতে চায়, ইশরাত মামলা তার আরও একটা প্রমাণ বলে আজ সুর চড়িয়েছে বিজেপি। সেই সঙ্গে সিবিআইয়ের চার্জশিট নিয়ে তাদের সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছে সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ।
সিবিআই চার্জশিটে বলেছে ইশরাতরা যে মোদীকে খুনের ছক করছিল, সে প্রমাণ নেই। আইবি-র যে সতর্কবার্তার ভিত্তিতে গুজরাত পুলিশ ইশরাতদের পাকড়াও করে, তা ভুয়ো। সিবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের নিরিখেই ইশরাতের পরিবারের দাবি, তাঁদের মেয়ে নির্দোষ প্রমাণিত হল। কিন্তু ইশরাত এবং তার তিন সঙ্গীর সঙ্গে লস্কর জঙ্গিদের সম্পর্ক ছিল কি না, তাদের মধ্যে দু’জন পাকিস্তান থেকে এসেছিল কি না, তা চার্জশিটে নেই। এই ফাঁক নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিজেপি।
কিন্তু সিবিআইয়ের বক্তব্য, ইশরাত মামলার তদন্তভার তারা হাতে নিয়েছে গুজরাত হাইকোর্টের নির্দেশে। হাইকোর্ট বলেছিল, ইশরাতদের মৃত্যু ভুয়ো সংঘর্ষে হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখতে। ইশরাতদের প্রকৃত পরিচয় খোঁজা তাদের দায়িত্ব নয়। বিজেপি মুখপাত্র নির্মালা সীতারামন যদিও অভিযোগ করেন, এ ভাবে লস্করের ভূমিকাটাকেই লঘু করে দেখা হচ্ছে। সন্ত্রাস নিয়ে রাজনীতি করা কংগ্রেসের উচিত হচ্ছে না। আরও এক...(নোট:---কোনো কারণে আমার ডকুমেন্ট থেকে সম্পূর্ণ অংশ কপি-পেস্ট করার পরে প্রকাশিত হয়নি,এজন্য দুঃখিত)...ক্রমশঃ চলবে.....
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×