somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাজ্জালের অর্থনৈতিক প্যাকেজ

০২ রা জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হযরত ওবায়েদ ইবনে উমায়ের আল-লায়াছি বলেছেন, দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করবে। তখন কিছু মানুষ তার অনুসারী হয়ে যাবে। তারা বলবে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি, দাজ্জাল নিঃসন্দেহে কাফের; তবে তার খাদ্য ভাণ্ডার থেকে খেতে এবং তার বাগানে পশুপাল চড়াতে তার অনুসারী হয়েছি। পরবর্তী সময়ে যখন আল্লাহর গজব নাজিল হবে, তা তাদের সকলের উপর নাজিল হবে।

(আল ফিতান, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৪৬)

আজ মুসলমান এই হাদিসগুলোতে চিন্তা করে না। যদি আমরা চিন্তা করি, তা হলে গোটা সুরতহাল স্পষ্ট হয়ে যাবে। আজও কি এমনটি হচ্ছে না যে, বাতিলের পরিচয় জানা সত্বেও অর্থনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য মুসলমান বাতিলের সঙ্গ দিচ্ছে, বাতিলকে সহযোগিতা দিচ্ছে কিংবা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে?

হযরত শাহ্‌র ইবনে হাওশাব (রাঃ), আসমা বিনতে যায়ীদ আনসারিয়া থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আসমা (রাঃ) বলেছেন, একদিন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার ঘরে অবস্থানরত ছিলেন। তখন তিনি দাজ্জাল সম্পর্কে কিছু কথা বললেন। তিনি বলেছেন, তার ফেতনাসমূহের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ফেতনাটি এই হবে যে, সে এক গ্রাম্য লোকের নিকট আসবে এবং বলবে, তোমার খেয়াল কি; আমি যদি তোমার মৃত উটটি জীবিত করে দেই, তাহলে কি তুমি মেনে নিবে আমি তোমার রব? গ্রাম্য লোকটি বলবে, হ্যাঁ। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তারপর শয়তানরা তার মৃত উটটিকে ঠিক আগের মতো বরং তার চেয়েও উত্তম – যেমন দুগ্ধদায়িনী ভরাপেট ছিল – বানিয়ে দিবে।

অনুরূপভাবে দাজ্জাল এমন এক ব্যক্তির নিকট আসবে, যার পিতা ও ভাই মারা গেছে। তাকে বলবে, তোমার ধারণা কি; আমি যদি তোমার বাপ ভাইকে জীবিত করে দেই, তাহলে কি তুমি মেনে নিবে আমি তোমার রব? উত্তরে সে বলবে, কেন নয়। ফলে, তারপর শয়তানরা লোকটির পিতা ভাইয়ের আকৃতিতে এসে হাজির হবে।

এ পর্যন্ত বলে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন এক কাজে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। কিছুক্ষন পর ফিরে এলেন। তখন লোকেরা এঘটনায় বিষণ্ণ ও বিচলিত ছিল। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দরজার চৌকাঠ দুটো ধরে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, কি হয়েছে আসমা? উত্তরে আসমা (রাঃ) বললেন, দাজ্জালের আলোচনা করে আপনি আমাদের কলিজাটা বের করে দিয়েছেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ও যদি আমার জীবদ্দশায় আত্মপ্রকাশ করে, তা হলে আমি তার জন্য বাঁধা হয়ে যাব। অন্যথায় আমার রব প্রতিজন মুমিনের হেফাজতকারী হবেন। তারপর আসমা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা যখন আটা খামির করি, তখন ততক্ষণ পর্যন্ত রুটি তৈরি করি না, যতক্ষণ না আমদের ক্ষুধা লাগে। তো সে সময় ঈমানদারদের অবস্থা কি হবে? উত্তরে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাদের জন্য সেই তসবীহ তাহমীদই যথেষ্ট হবে, যা আকামের অধিবাসীদের জন্য যথেষ্ট হয়ে থাকে।

(আল ফিতান, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৩৫)

এই বর্ণনাটি ইমাম আহমাদও বর্ণনা করেছেন। তবে উভয় বর্ণনায় শব্দের কিছু তারতম্য আছে। তাতে অতিরিক্ত এই কথাটিও আছে যে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যারা আমার মজলিসে উপস্থিত হয়েছ এবং আমার বক্তব্য শুনেছ, তোমরা এই কথাগুলোকে সেই লোকদেরও কানে পৌঁছিয়ে দিও, যারা এই মজলিসে উপস্থিত নেই’।

মুসনাদে তায়ালিসিতে এই বর্ণনাটি শাহ্‌র ইবনে হাওশাব এর সনদ ব্যতীত অন্য সনদে উল্লেখিত হয়েছে।

আবু উমামা থেকে বর্ণিত দীর্ঘ হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“দাজ্জাল বেদুইনের কাছে এসে বলবে- “ওহে বেদুইন! আমি যদি তোমার মৃত পিতা-মাতাকে জীবিত করে দিই, তবে আমাকে প্রভু বলে মেনে নিতে তোমার কোন আপত্তি থাকবে? বেদুইন বলবে- না!! অতঃপর দু’-জন শয়তান তার পিতা-মাতার রূপ ধরে তাকে বলবে- ওহে বৎস! একে অনুসরণ কর! সে তোমার প্রভু!”

(ইবনে মাজাহ # ৪০৬৭, সহিহ আল-জামি আল-সগীর # ৭৭৫২, মুস্তাদরাকে হাকিম)

হযরত হুজায়ফা (রাঃ) দাজ্জাল বিষয়ক বর্ণনা উদ্ধৃত করার পর বলেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“আমি এ বিষয়টি বারবার এজন্য বর্ণনা করছি, যেন তোমরা বিষয়টিতে গভীর মনোযোগ সহকারে চিন্তা গবেষণা কর, সজাগ সচেতন হও, সে মোতাবেক কাজ কর এবং বিষয়টি তোমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আলোচনা কর। কারণ, দাজ্জালের ফেতনা ভয়াবহতম একটি ফেতনা"।

(আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান)

আমিন বেগ ভাইয়ের ব্লগ থেকে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×