somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিপোর্ট পেপার ...

০৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রাত্রি : আচ্ছা ধ্রুব তুমি বিয়ে করবে কবে বলত ? সারাজীবন কি ! প্রেম করেই কাটিয়েদিবে ? দুই পরিবার রাজি, সবাই বার বার শুধু জিজ্ঞাসা করছে কবে আমরা সংসার শুরু করব ? আমার এইসব আর ভালো লাগেনা ।
ধ্রুব : আচ্ছা, আমি তোমাকে এত সুন্দর একটা যায়গায় নিয়ে আসছি, রোমান্টিক কথাবার্তা বলবে তা না ; শুধু ওর বিয়ে বিয়ে । শোন আমার আমি চাকরিটা ছেড়ে দিচ্ছি । রাত্রি অবাক হয়ে তার দিকে রাগান্বিত ভাবে বলল তোমার যা ইচ্ছে তাই কর আমি চললাম আর খবরদার আমার পিছু নেবেনা । ধ্রুব হাসতে হাসতে বলল আরে দারাও কই চললে ; আরে শোন আমার কথা , আমার আরো ভালো চাকরি হইছে ; এই কথা শুনেই রাত্রি দারিয়ে গেলো এবং মুচকি হাসি দিয়ে ধ্রুব এর দিকে চেয়ে বলল সত্যি ! কি চাকরি ? কোথায় চাকরি ? কবে জইনিং? ধ্রুব আরে আস্তে আস্তে ; সব বলছি । আমার "ক" কোম্পানিতে চাকরি হইছে, বেতন -৫০০০০ শুরুতেই, ৬ মাস পর চাকরিটা স্থায়ী হয়ে গেলে ৬০০০০ হয়ে যাবে , আর চাকরি ঢাকাতেই এরিয়া সেলস্ ম্যানেজার হিসেবে ।
রাত্রি শুনে মহা খুশি তো এইবার আমরা বিয়ে করছি নাকি ? ধ্রুব হাসতে হাসতে হ্যা বাবা হ্যা তবে চাকরিটা স্থায়ী হলে তারপর ঠিক আছে ।
রাত্রি বড় নিশ্বাস ফেলে আচ্ছা ঠিক আছে ।


দেখতে দেখতে ৬ মাস কোন দিক দিয়ে পেরিয়ে গেলো ; বিয়ে হয়ে গেলো দুজনের, ৭ বছরের প্রেম সফল হলো তাও আবার দু-পরিবারের সম্মতিতে । বাসর রাতে ধ্রুব বলল এইযে মহারাণী বিয়ে করলাম দ্রুত কিন্তু বাচ্চা নেয়ার জন্য পেশার দিবেননা একটু সব গুছিয়ে নেই তারপর সব । রাত্রি : আচ্ছা বাবা ঠিক আছে বলবনা তবে জানো আমার দুইটা বাচ্চা নেবার সখ একটা মেয়ে আর একটা ছেলে ; আমাদের সব ঠিকঠাক হবেতো ? ধ্রুব : ইনশাআল্লাহ ।

এক বছর না যেতেই টিপিকাল ফ্যামিলি কথা এক বছর হতে চলল আমরা দাদা-দাদি - নানা-নানী কবে হব, খুশির খবর কবে শুনব ?

কিন্তু ধ্রুব তার একটাই কথা এখন না ; সময় এখনও হয়নি আর এইদিকে রাত্রির ইচ্ছা আছে কিন্তু ধ্রুবর ইচ্ছা না থাকায় সে আর জরাজরি করেনা ।

দেখতে দেখতে ৩টা বছর পার হয়ে গেছে, সংসার ও ঠিকঠাক চলছে আবার এইদিকে ধ্রুবরও চাকরিতে প্রমোশোন হয়েছে । এখন তার ইচ্ছে সে বাচ্চা নিবে, নানান কথা শুনে তার তিনটা বছর কেটেছে এবং ওর চেয়ে বেশি শুনতে হয়েছে রাত্রিকে ; পরিবারের লোকের কথা, নিজেদের এলাকার লোকের কথা, শ্বশুর বাড়ীর এলাকার লোকজনের কথা। সব কিছু সে সয্য করেছে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে কারণ সে যখনিই এই বিষয় নিয়ে তার কাছে গেছে ধ্রুব কোন মনোযোগ দেয়নি ।

এখন যখন তাদের উভয়ের ইচ্ছে, ভাগ্য তাদের সাথ দিচ্ছেনা । তারা প্রায় এক বছর চেষ্টা করার পর কোন ফলাফল না আসলে তারা দুজনে সিদ্ধান্ত নেয় তারা ডা: দেখাবে । তারা ডা: দেখানো শুরু করে এবং ডা: পরামর্শ অনুযায়ী তারা আবারও চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু এবারও তাদের ফলাফল কার্যকরি নয় । তারা আবার ডা: পরিবর্তন করে আরো ভালো ডা: দেখায় এবারও তাদের ফলাফল আসেনি ।
দুইটা বছর এভাবে কেটে যায়, মানসিক চাপ বাড়তে থাকে , মানুষের নানা মুখি কথা বাড়তে থাকে ফলে তারা দুজনেই আবারও সিদ্ধান্ত নেয় তারা তাদের পুরো শরীর ভালো ভাবে চেক করাবে যাতে তাদের দুজনের কোন সমস্যা আছে কিনা, সবচেয়ে নামকরা ডা: তারা দেখাবে, টাকা যাই খরচ হোক । রীতিমত তারা সম্পূর্ণ চেককাপ করালো ; রিপোর্ট বলার দিন ডা: যখন ধ্রুবকে একটু বাইরে যেতে বলল ধ্রুব বুঝতে পারে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে । ডা: সাহিবা রাত্রিকে বলল আপনি একদম সুস্থ কিন্তু বলে বেশ খানিকক্ষন চুপ করে রইল ডা: - পরে দ্বীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললেন ধ্রুব কখনও বাবা হতে পারবেন না ; কথাটা শোনা মাত্রই যেন রাত্রির মাঝে এমন এক অনুভূতি কাজ করতে লাগল যেন সে আর এই পৃথিবীতে নেই ডা: সাহিবা অনেক কিছুই বলছেন কোন শব্দ তার কানে যাচ্ছেনা, চোখ দিয়ে অজস্র অশ্রু নেমে আসলো কিন্তু কান্নার কোন শব্দ নেই । তারপরও কাঁদতে কাঁদতে জিজ্ঞাসা করলো কোন কি সম্ভাবনা নাই ডা: সাহিবা, ডা: সাহিবা এবার তার হাতের উপর হাত রেখে বললেন রিপোর্ট তো তাই বলছে তবে আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন আমি আমার ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকটা মিরাকেল দেখছি ।

ডা: চেম্বার থেকে বেরিয়ে ধ্রুবকে না ডেকেই সোজা চলে যেতে লাগলো রাত্রি ; ধ্রুব বাইরে উয়েটিং এ বসা ছিল সে দেখলো রাত্রি কাঁদতে কাঁদতে তাকে না ডেকেই চলে যাচ্ছে, সে রাত্রি রাত্রি ডাকতে ডাকতে তার দিকে দ্রুত এগুলো এবং তার কাছে গিয়ে তাকে ডাকলো কি হলো চলে যাচ্ছ কেন ? কি হয়েছে ? ডা: সাহিবা কি বলল ? কোন প্রশ্নের উওর দিলনা রাত্রি সোজা গিয়ে গাড়িতে উঠল আর কান্না যেন অঝোর ঝরে পড়তেই আছে । ধ্রুব বুঝলো কোন একটা বড় সমস্যা হয়েছে; রাত্রি এত কাঁদছে কেন ? ডা: সাহিবা কি এমন বলল ? কি হয়েছে আমার ? হাজারো প্রশ্ন মনে নিয়ে সেও গাড়ীতে গিয়ে বসল এবং গাড়ী চালককে বাসার দিকে যাইতে বলল ।

বাসায় গিয়েও কান্না থামছেনা রাত্রির ; এবার ধ্রুব রাগান্বিত হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলো সেই তখন থেকে কাঁদছ, কিছু বললে তার উওর দিচ্ছনা কি হয়েছে ? কি হয়েছে আমার ? রাত্রি কাঁদতে কাঁদতে ভাংগা ভাংগা গলাই বলল তুমি ; তুমি ধ্রুব : বলো কি ? আমি কি? রাত্রি : তুমি কখনও বাবা হতে পারবেনা !!!!!!!!

এইটা শুনে কোন কথা না বলে ধ্রুব ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে লাগলো হঠাৎ তার একটা ফোন কল এল কিন্তু ধ্রুব ফোনটি না ধরে আছাড় মেড়ে মোবাইলটি ভেংগে দিল এবং বাসা থেকে বেরিয়ে চলে গেল ।

রাত ২টা বেজে গেলো কিন্তু ধ্রুবর বাসায় আসার কোন নাম নেই চিন্তা হতে লাগলো রাত্রির । এইদিকে মোবাইলটি ভেংগে ফেলাই তাকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছেনা, দুই বছর হলো তারা আর শ্বশুর-শ্বাশুরীর সাথে থাকেনা, কথার ফুলঝরির কারণে তারা আলাদা থাকা শুরু করে কিন্তু যোগাযোগ প্রতিদিনিই হয় ; রাত্রি ঘরির কাটা দেখলো ২-৪৫ বাজে তারপর শ্বশুর কে কল দিল, এত রাতে কে আবার কল দিল বাবা ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে ছেলের বউ কল দিয়েছে, ফোন ধরেই মা কি হয়েছে এত রাতে কল দিলে ?
বাবা রাত প্রায় তিনটা বেজে আসল ধ্রুবতো ঘরে ফিরলনা ! বাবা বলল সে কি ! কি হলো আবার ? রাত্রি : বাবা আপনাকে সব বলব আপনি প্লিজ আমাদের বাসায় আসুন । এর ভেতর রাত্রি আরো কয়েক যায়গায় ফোন দিল ধ্রুবর বন্ধুদের ।

সবাই এসে হাজির, সবাই এসে একই কথা জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে ? রাত্রি: সবাই একটু দেখেন ও কোথায় আমি সব পরে বলব ।
সবাই যে যার মত বের হয়ে গেলো শুধু থেকে গেলো মা । আর এই দিকে রাত্রির বাবা-মা বার বার ফোন দিচ্ছে ।
ধ্রুবর মা রাত্রিকে জিজ্ঞাসা করল কি হয়ছে মা বলত ? রাত্রি কাঁদতে কাঁদতে মাকে জরিয়ে ধরে মা ধ্রুব কখনও বাবা হতে পারবেনা ।
ধ্রুবর মা স্হম্বিত হয়ে গেলেন আর বললেন এ কি বলছ ? রাত্রি হ্যা মা আমরা ডা: এর কাছে গিয়েছিলাম আজ ওর রিপোর্ট দিয়েছে, ও কখনও বাবা হতে পারবেনা মা !!!

এইদিকে ভোর হয়ে এল সবাই অনেক খোঁজাখুজির পর কেউ কোন হডিস করতে না পেরে ফিরে এলো । সবাই এসে আবারও জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে বলত ? এবার ধ্রুবর মা বলল তোমরা আমার ছেলেকে খুঁজে নিয়ে এস ঘটনা পরে শুনবে । সবাই তখন বলল আমাদের কি পুলিশের কাছে যাওয়া উচিত ? হঠাৎ ধ্রুব আসলো এসে বলল কাউকে কারো কাছে যেতে হবেনা দয়া করে তোমরা সবাই যে যার বাসায় যাও আমাকে আর রাত্রিকে একা থাকতে দাও । ধ্রুবর মা কিছু বলতে চাইলো কিন্তু ধ্রুব এবার চিল্লিয়ে উঠল বলল যেতে বললাম সবাইকে প্লিস ফোর গড সেক লিভ আস এলোন । সবাই যে যার দিকে তাকিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল ।

সবাই যাওয়ার পর ধ্রুব এক বড় নিশ্বাস ফেলে শোন রাত্রি আমাকে দ্রুত ডিভোর্স দিবে আমি একবারিই বলব আর এ বিষয়ে আমাকে কোন কিছু বলতে আসবেনা বলে সে তার ঘরের দিকে চলে যেতে লাগলো, রাত্রি : তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে, কি সব আবল-তাবল বলছো ? ধ্রুব কোন কথায় শুনলো না সোজাসুজি তার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল ।

রাত্রি সোফায় বসে রইল, চোখ দিয়ে পানি পরতেই আছে, এইদিকে ধ্রুব দরজা বন্ধ করে তার ঘরে বিছানার পাশে বসে একটার পর একটা সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে । বেশ অনেকক্ষন পর ধ্রুব বের হল দেখলো রাত্রি সোফায় ঘুমিয়ে পরেছে তার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে অনেক ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরেছে তারপরও ধ্রুব কেন জানি নিষ্ঠুর ভাবেই বলল তুমি এখনও এখানে ??? রাত্রি হঠাৎ চমকে উঠল কি হয়েছে ? ধ্রুব : তুমি এখনও এখানে কি করছ তোমার বাসায় চলে যাও, আমার সাথে থাকার কোন মানে নেই, আমার বাচ্চা জন্ম দেয়ার ক্ষমতা নেই, তোমার সুন্দর জীবন পরে আছে সামনে ইনজয় করো ।

রাত্রি : আচ্ছা তুমি কেন এত পাগলামি করছ ? আমরা দেশের বাইরে যাব, চিকিৎসা বিজ্ঞান কত উন্নত এখন কোন না কোন ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কেন তুমি এত ভেঙে পরছ ? আমি আছি তুমি কোন চিন্তা করনা, আল্লাহ সব ঠিক করে দিবে ।

ধ্রুব : আমি কোন কথা শুনতে চাইনা । আমি তোমাকে চলে যেতে বলেছি তুমি চলে যাবে এটাই ফাইনাল । আমাকে ডিভোর্স দিবে তোমার যা দেনা পাওনা সব আমি দিয়ে দিব তবুও দয়া করে তুমি এই বিষয়ে কোন কথা বারিওনা দয়া করে ... বলতে বলতে ধ্রুব কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল ।
রাত্রি : আমাকে এই চিনলে , লাগবেনা তোমার কোন সম্পতি সেটা তুমি তোমার কাছেই রাখো,, চলে যাচ্ছি তোমার মাথা এখন প্রচন্ড গরম এখন আর কথা বারিয়ে লাভ নেই ।

এর পর নানা ভাবে ধ্রুবকে বোঝানোর চেষ্টা করা হলো কিন্তু কোন কাজে আসলোনা সে তার কথাতেই আকড়ে থাকলো । শেষ পর্যন্ত রাত্রি ধ্রুবর জেদ এর কাছে হার মানল তাকে ডিভোর্স দিল এবং পরিবারের নানান চাপে সে আবারও বিয়ে করল ।

দীর্ঘ ৫ বছর পর এক রাস্তা দিয়ে ধ্রুব হেটে যাচ্ছে বাসার একটা প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে, সে আর ঢাকায় থাকেনা অনেক দূর কক্সবাজার চলে এসেছে, এখানে এক ছোট বাসা নিয়ে থাকে সে একাই । বন্ধু-বান্ধব কারো সাথে তার যোগাযোগ নেই এমনকি পরিবারের সাথেও তেমন যোগাযোগ রাখেনি সে । ছোট একটা চাকুরি করছে । প্রতিটা রাতের অনেকটা সময় তার কাটে কক্সবাজার এর সমুদ্র সৈকতে একা আর তার সিগারেট ।

সেইদিন গাড়িতে করে ছুটিতে আসছিল রাত্রি ও তার হাসবেন্ড এবং তার দুই সন্তান । হঠাৎ রাত্রি জানালার বাইরে তাকাতেই তার চোখ আটকে যায় , দেখে বাইরে হেটে হেটে যাচ্ছে ধ্রুব- চুল বড়, দাড়ি বড় চেনার দায় নেই। রাত্রি দেখেই ড্রাইভারকে বললো গাড়ি থামাতে সে গাড়ি থেকে নেমে ডাকদিল ধ্রুব বলে । ধ্রুব খুব অবাক হলো আমাকে এই নামে কে ডাকছে কারণ সবাই কক্সবাজারে তাকে তার পুরো নামে চেনে রেদউয়ানুল হক নামে । সে ঘুরে তাকেতেই দেখে রাত্রি কিন্তু একবারের জন্য বিচলিত হয়নি, স্বাভাবিক ভাবে কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল ছুটিতে এসেছো ? একা না নিশ্চয় ? আর সব কথায় ? শুনে ছিলাম বিয়ে করেছো ?

রাত্রি : এত গুলো প্রশ্ন করলে একবারো জিজ্ঞাস করলে না কেমন আছো ? যাইহোক আমার দুটো সন্তান গাড়িতে বসে আছে তাদের বাবার সাথে । তুমি এখানে কি করছ ? ধ্রুব : বাদ দাও আমার কথা যেখানে এসেছো সেখানে যাও আমি একা থাকতেই ভালোবাসি এখন তাই এখানে । যাও যাও যেখানে যাচ্ছিলে সেখানে যাও । এই কথা বলে ধ্রুব সামনের দিকে হাটা দিল । রাত্রি অবাক হয়ে তার দিকে দেখল, কান্নায় চোখটা টলমল করছে কিন্তু কোন রকম তা সামলে আবার উঠে পড়ল গাড়িতে । গাড়িতে উঠেই ড্রাইভারকে বলল তারাতারি যাও হোটেলে । রাত্রির হাসবেন্ড জিজ্ঞাস করল কে ছিল । রাত্রি : কেউ না ।

ধ্রুব দোকানে গেল তার প্রয়োজনীয় জিনিসটা কেনার জন্য সাথে একটা সিগারেটও ধরালো ধরিয়ে সিগারেট টানতেছে, হঠাৎ একটা গাড়ি এসে তার সামনে দাড়ালো, গাড়ি থেকে একজন মহিলা নামলো তাকে খুব চেনা চেনা লাগছে ধ্রুবর , কোথায় যেন আগে দেখেছি । এগুলো চিন্তা করতেই মহিলা বলল রেদউয়ানুল সাহেব কেমন আছেন ? এত খুজেছি আপনাকে ; হাজারো বার আপনার ফোনে চেষ্টা করেছি কিন্তু নাম্বার বন্ধ পেয়েছি । ঢাকা শহরের কত যায়গায় আপনাকে খুজেছি কিন্তু কোথাও আপনাকে পাইনি । আপনার দেয়া সংক্ষিপ্ত ঠিকানায় পুরো যায়গায় আমি গেছি কিন্তু আপনাকে পাইনি । শেষমেষ ২টা বছর পর যখন পেলাম আপনার ঠিকানা শুনলাম আপনি ১.৫ বছর আগেই কোথায় চলে গেছেন কেউ জানেনা ।

অনেক হতাশা নিয়ে আমি এতটা বছর আছি, আপনাকে এইভাবে এখানে পাবো আমি ভাবিনি । ধ্রুব : আপনি আমাকে খুজেছেন কিন্তু কেন আমি কি আপনার কোন ক্ষতি করেছি ? এতটা হতাশ কেন আপনি আমার বিষয় নিয়ে কিছুই বুঝতেছিনা । আপনাকে আমি চিন্তে পেরেছি আপনি ডা: সাহিবা, আমার জীবনের কাল হা হা হা হা ।

মহিলা কাছে এসে ধ্রুবর হাত জরিয়ে বলল আমি একটা কথা বলব, আমি জানি এই কথা শোনার পর আপনি আমাকে কখনও ক্ষমা করতে পারবেন না যদিও দোষটা আমার ছিলনা কিন্তু আমার নিজেকেই দোষি মনে হয় । ধ্রুব : আপনি কি বলছেন এসব আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা, কক্সবাজার এসে ভারি পেক নিয়েছেন নাকি ????

ডা: সাহিবা : ভাইয়া আপনার মনে আছে আপনার রিপোর্টে এসেছিল আপনি কখনও বাবা হতে পারবেন না ??
ধ্রুব : হ্যা
ডা: সাহিবা : ভাইয়া রিপোর্টটি ভুল ছিল । আপনার মাইনোর সমস্যা ছিল যা কিছু ট্রিটমেন্টে ভালো হয়ে যেত কিন্তু আপনি বাবা হতে পারবেননা এটি ভুল ছিল ।
ধ্রুব : কি বলেন এইসব ? আসলেই আপনি মনে হয় বেশি নিয়ে ফেলেছেন । যান আপনার হোটেলে ফিরে যান; এক রিপোর্ট আমার পুরো জীবনটা তছনছ করে দিয়েছে আবার এখন আসছে রিপোর্ট ভুল ছিল, আপনার চাকরি আছেতো না আপনাকে এখন পাগলের ডা: বানানো হয়েছে ??
ডা: : আচ্ছা আপনার স্ত্রী কোথায় আমি উনাকে সব বলব
ধ্রুব : আমার সাথে ওর তালাক হয়ে গেছে । ভাগ্যের কি পরিহাস দেখেন আজই তার সাথে দেখা হয়েছিল কিছুক্ষন আগে ; তার আবার দুটো বাচ্চাও হয়েছে ।
ডা: : আসলে আমার দ্বারা কত ক্ষতি হয়ে গেল কিন্তু সত্যি সেটা আপনার প্রাপ্য ছিলনা, আপনার নাম রেদউয়ানুল হক আমার আরো একটা পেসেন্ট যার নাম রেদউয়ানুল হক । আমার ল্যাব আসিসটেন্ট নামের কারনে রিপোর্ট টি ভুল করে বসে আপনার যায়গায় তার রিপোর্ট টা দিয়ে দেয় আর আপনার রিপোর্ট চলে যায় তার ফাইলে । যেইদিন আপনার রিপোর্ট ডেলিভারী ছিল সেইদিন তাদেরও ছিল। আপনাকে দেখার পর আমার পরের আপপয়েনটা ছিল তার । আর সে আমার আপনার কয়েকদিন আগের পেসেন্ট তার নানা অবলিগেশন ছিল, তাই আপনারা চলে যাবার পর আমি যখন তাকে দেখি ও তার রিপোর্ট দেখি আমার খটকা লাগে, পরে নাম চেক করতে গিয়ে দেখি একই নাম , ল্যাব আসিসটেন্ট ডাকি পরে একটু ভালো ভাবে চেক করায় বুঝতে পারি সে দুইটা রিপোর্ট পেপার উলট-পালট করে ফেলেছে । আমি সাথে সাথে আপনাকে কল দেয় কিন্তু দুই-তিন বার রিং বাজার পর তা দু:ক্ষিত বলে ।

ধ্রুব : এই কথা শোনার পর কি বলবে কি করবে কিছুই বুঝতে পারছিলনা । সে কারো দিকে না তাকিয়ে কারো কথা না শুনে সোজা হাটা দিল সমুদ্রের দিকে ...........


হয়ত সব কিছুর হ্যাপি এনডিং থাকতে নেই ----- রাজীব
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ২:২৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×