আমরা রাজাকার ইস্যুতে যতটা সরব, মুক্তিযোদ্ধা ইস্যুতে ততটাই নিরব। কোন মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে থাকা অবস্থায় টাকার অভাবে ধুকেধুকে মরে গেলেও আমরা তার শান্তি কামনার লক্ষ্যে এগিয়ে আসি না। আবার রাজাকারকে ফাঁসি দিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করতেও ভুলি না!!!
না আমি বলছি না, রাজাকারের ফাঁসির দরকার নেই। আমিও সবার মতো বলব, সব গুলোকে জাস্ট ঝুলিয়ে দিন~
তবে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়েও ভাবতে হবে। তাদের বিদেহী আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করার চাইতে তাদের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটানোটা বেশি সুখকর~
পপ গুরু, মুক্তিযোদ্ধা আজম খাঁনের কথা মনে আছে?? হুম টাকার অভাবে চিকিৎসা না করাতে পেরেই ক্যান্সার নিয়ে মারা গিয়েছিলেন। যে আজম খাঁন গলা ফাটিয়ে গান গাইতেন, 'বাংলাদেশ... বাংলাদেশ...' সেই আজম খাঁনই একসময় গলা ফাটিয়ে বলেছিলেন, 'আমি তোমাদের কাছ থেকে বেশি কিছু চাই না, তোমরা শুধু আমাকে আমার রয়্যালিটির দামটুকু দাও'। না আমরা দেই নি। শেষ বয়সে এসে লজ্জায়, অপমানে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ও দিতেন না। লজ্জা কি উনারই হওয়ার কথা ছিল?? আমরা কি উনার চাইতে বেশি লজ্জিত হওয়ার কথা ছিল না??
আমরাই হয়ত শেষ জেনারেশন যারা মুক্তিযোদ্ধাদের সামনা সামনি দেখছে, মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনছে। এই শেষ জেনারেশনের উপর কি একটা দায়িত্ব বর্তাচ্ছে না??
আপনি থার্টি ফার্স্ট নাইটের কনসার্টের স্পন্সরশিপের জন্য কোন কর্পোরেট হাউজের কাছে যান। আপনার পুরো কথা শোনার আগেই কোটি টাকা ইনভেস্ট করতে রাজি হয়ে যাবে। এইবার মুক্তিযোদ্ধাদের রাইজিং ফান্ডের কনসার্টের জন্য একটা কর্পোরেট হাউজের কাছে যান। মুখ ব্যাকিয়ে, মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলবে, "মুক্তিযুদ্ধ টুদ্ধ রাখেন, ইও ইও টাইপ কিছু থাকলে বলেন"~
আমাদের দেশপ্রেম কি তাহলে "The Heroes of 71" গেইমসেই সীমাবদ্ধ থাকবে??
মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনলে, আমরাও কি মুখ ব্যাকিয়ে বলব, "হোয়াট দ্যা হেল আর ইউ টেল??"
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৯