(ইংরেজী একটি ব্লগ থেকে অনুবাদকৃত)
প্রিয় পুত্র,
অনেকদিন আগে আমি একটা সংবাদ পেয়েছিলাম। যা একজন মা এর জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সংবাদ, যা মানবজাতির জন্য শ্রেষ্ঠ সংবাদ। এই সংবাদটি ছিলো আমি মা হতে যাচ্ছি~
বাবা বিশ্বাস করো, আমি তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না ওইদিন আমি কতটা খুশি হয়েছিলাম!! এর সপ্তাহ্ খানেক পর থেকে আমি আমার শরীরে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। আমি অস্বস্তিবোধ করছিলাম কারন আমি ক্ষুদার্ত থাকতাম কিন্তু বমির জন্য খেতে পারতাম না। স্বাভাবিকভাবেই ঠিক মত খেতে না পারার কারনে আমি দুর্বল হয়ে পড়লাম~
তুমি আস্তে আস্তে বড় হচ্ছিলে আর আমার শরীর বিস্তৃত হচ্ছিল। অনেক ভয় থাকার পরও কেন জানি তোমাকে প্রতিটা দিন পূর্বেরদিনের চাইতে আরো বেশী ভালোবাসতাম~
তখনকার দিন গুলোকে সপ্তাহের মতো মনে হতো, আর একটা সপ্তাহকে এক মাসের মতো মনে হতো কারন আমি বেশীক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাম না, ঠিক মত হাঁটতে পারতাম না। তারপর একটা সময় আসলো তখন আমি চিৎ হয়ে শুতে পারতাম না। তোমার ওজনের কারনে আমি চিৎ হয়ে ঘুমালে বুকে ব্যাথা করতো, তাই বাধ্য হয়েই উপুড় হয়ে অথবা কাত হয়ে ঘুমাতে হতো। কিন্তু তখনও আমার ভয় হতো... আমার এই নড়াচড়ার কারনে তোমার যদি কোন ক্ষতি হয়ে যায়!! বিশ্বাস করো, এত কিছুর পরও তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা বিন্দু মাত্র কমে নি। বরং বেড়ে গিয়েছিল~
তারপর একদিন আমি তীব্র ব্যাথা অনুভব করতে লাগলাম। এমন তীব্র ব্যাথা আমি জীবনেও অনুভব করি নি। আমি ভেবেছিলাম আমি মনে হয় মরে যাচ্ছি। এইদিনেই তুমি পৃথিবীতে এসেছিলে.. ব্যাথাটা অনেকক্ষন স্থায়ী হয়েছিল। সেকেন্ডের পর সেকেন্ড পার হচ্ছিল, মিনিটের পর মিনিট পার হচ্ছিল ব্যাথা বেড়েই চলছে... বিশ্বাস করো তারপরও এক মূহূর্তের জন্যেও আমি তোমাকে ঘৃণা করি নি, এক মূহূর্তের জন্যেও একটা কটু কথাও তোমাকে বলি নি। আমি শুধু মনে মনে এটাই ভেবেছি, যে করেই হোক তোমাকে পৃথিবীতে আনতেই হবে, তোমার চেহারাটা আমার দেখতেই হবে~
মৃত্যু যুদ্ধের পর তুমি পৃথিবীতে আসলে। তোমার চেহারাটা দেখার পর আমার কাছে মনে হলো সেই মৃত্যু যন্ত্রনা মনে হয় উড়ে চলে গেছে। আমার চোখের কোনে যে পানি জমেছিল তা আনন্দ অশ্রুতে রূপান্তরিত হলো; আমার শরীরে যে ব্যাথা ছিল, সেটা আনন্দের ব্যাথাতে পরিনত হলো। আমি তোমাকে আমার বুকের মধ্যে চেপে ধরেছিলাম এবং বলেছিলাম, “সুবহানা রব্বিয়াল আলা”~
(দ্বিতীয় অংশ পরে দেওয়া হবে)