রিয়া ফোন দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু ওপাশ থেকে কেউ ফোনটা রিসিভ করছে না। রিয়া খুবই চিন্তিত কি হলো সাব্বিরের??
রিয়া আর সাব্বিরের রিলেশন প্রায় ৩ বছরের। এইতো বছর তিনেক আগে এক ফাল্গুনে সাব্বির এসে রিয়াকে বললো, রিয়া তোমাকে কিছু কথা বলার ছিল। রিয়া কিছু বোঝে উঠার আগেই সাব্বির বললো আই লাভ ইউ রিয়া~
সাধারনত মেয়েরা কোন ছেলের মুখ থেকে হঠাৎ করে এ ধরনের কথা শুনলে হতভম্ব হয়ে যায়। তার কি করা উচিত বুঝতে পারে না। তখন মনে মনে চিন্তা করে, মাটি ফেটে দুইভাগ হয়ে গেলে আমি ভেতরে ঢুকে পড়তাম! অথবা চিন্তা করে, ইশ আমি যদি এখন অদৃশ্য হয়ে যেতে পারতাম! তবে কেউ কেউ নিজেকে সামলে নিয়ে স্যরি বলে দ্রুত প্রস্থান করে। কখনও কোন মেয়ে এ ধরনের কথা হঠাৎ করেই শুনে বলে না, 'আই লাভ ইউ টু'~
কিন্তু রিয়া কিছু না বলে দ্রুত কেটে পড়লো। সে নিজেকে পালানোর চেষ্টা করলো। ওই দিন রাতে রিয়া ঘুমুতে পারে নি। সাব্বিরের কথাটি অদৃশ্য এক শব্দে তার কানে বারবার বেজে উঠলো। অনেক চিন্তা ভাবনা করে পরদিনই রিয়া সাব্বিরকে বলে দিল, 'আই লাভ ইউ টু'~
সেদিন থেকেই ওদের জীবনে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা। তবে এই কয়েকদিন সাব্বির কেমন যেন পাল্টে গেছে। রিয়াকে একদমই সময় দেয় না। ফোন দিলেও দু একটি কথা বলে রেখে দেয়। আজ তো ফোনই রিসিভ করছে না!!
রিয়া আবার সাব্বিরকে কল দেয়। মোবাইলের স্ক্রিনে দেখাচ্ছে রিয়া এ নিয়ে ৫৮ বার কল দিয়েছে সাব্বিরকে। কিন্তু সাব্বির একবারও রিসিভ করলো না!! রিয়া ভাবলো, সাব্বির কি তাকে ইগনোর করছে? সাব্বির আবার অন্য কারো প্রেমে পড়ে যায় নি তো!!
একটু পরই রিয়ার মনে হলো ধুর কিসব ভাবছি আমি!! নাহ্ এইভাবে সাব্বিরকে সন্দেহ করা ঠিক না। কারন ভালোবাসার সবচেয়ে বড় পুঁজি হলো বিশ্বাস। বিশ্বাস না থাকলে ভালোবাসাও থাকবে না। হয়ত সাব্বির কোন বিপদে আছে, রিয়া টেনশন করবে দেখে বলছে না। অথবা হয়ত ব্যাস্ততার জন্য ফোন রিসিভ করতে পারছে না~
কল দিতে দিতে রিয়া ৮৭ বার দিয়ে ফেলল!! কিন্তু সাব্বিরের কোন সাড়া শব্দ নেই! ৮৮ তম বার কল দেওয়ার আগে রিয়া ভাবলো, এইবার নিশ্চয়ই রিসিভ করবে। ৮৮ তম সংখ্যাটা তাদের জন্য লাকি নাম্বার। রিয়ার মনে আছে তাদের প্রেমের ৮৮ তম দিনে তারা একসাথে অনেক ঘোরাঘুরি করেছে। রিয়া ভাবলো ৮৮ সংখ্যাটা এখনও লাকি নাম্বার হবে। কিন্তু কই? সাব্বির এবারো রিসিভ করলো না!
৯১ তম বার কল দেওয়ার সাথেই সাথেই রিসিভ করে সাব্বির বললো হ্যালো। রিয়া বললো কই তুমি!! কি হয়েছে তোমার!!
-আমি আর শাফিন একসাথে রিক্সাতে করে ঘুরছিলাম। হঠাতই পেছন থেকে একটা বাস ধাক্কা দিয়েছে। আমার তেমন কোন সমস্যা না হলেও শাফিন গুরুতর আহত হয়েছে। ওকে হাসপাতালে ভর্তি করলাম। তুমি টেনশন করো না। ওকে আমি পরে কল দিব। ভালো থাকো...
সাব্বির টেনশন করতে নিষেধ করলেও রিয়ার টেনশন হচ্ছিলো। হোক শাফিন সাব্বিরের বন্ধু!! শাফিনের জায়গায় সাব্বিরও তো থাকতে পারতো! যাক আল্লাহ এখন দ্রুত শাফিনকে সুস্থ করে দিলেই হয়~
রিয়া ভাবছে, আমি সাব্বিরকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কত কিছু ভেবেছিলাম!! আসলেই বিশ্বাস বড় একটা জিনিস। না হলে তো এখন একটা ঝগড়াও হয়ে যেত! রিয়া মনে মনে ভাবলো, আজ থেকে আর কখনই সাব্বিরকে অবিশ্বাস করবো না~