somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সালেহ মতীন
ভাঙতে নয়, গড়তে চাই। গড়তে চাই সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের একটি বিশ্ব সৌধ। আগামী প্রজন্মকে হানাহানিমুক্ত একটি শান্তিময় সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে চাই। সুন্দরকে আরো সুন্দর করে সাজানো এবং পরিশীলিত ব্লগিং চর্চার মাধ্যমে পরিশুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনই আমার সাধনা।

চিনল না, সে আমাকে চিনল না !

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চেনা মানুষ অচেনা হয়ে যাওয়া কিংবা কখনো কখনো একেবারে অচেনা মানুষকে চেনা চেনা মনে হওয়ার মতো ঘটনা আমাদের মাঝে মধ্যে মোকাবিলা করতে হয়। অচেনাকে চেনা মনে হওয়ার পেছনে কিছু রহস্যজনক বিষ্ময় কিংবা অলক্ষ্যে কিঞ্চিৎ স্মৃতিকাতরতা লুকিয়ে থাকলেও চেনাকে অচেনার মোড়কে আবৃত করলে সেখানে বিষ্ময়ের পাশাপাশি খানিকটা কষ্ট গড়িয়ে পড়ে। দুনিয়ার এই ছোট্ট জীবনে কারণে অকারণে কত মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় হয় তার হিসাব রাখা আসলেই কঠিন। তবে পরিচয়ের গভীরতার মাত্রানুযায়ী কোন কোন পরিচয় অমোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছে- আর কোন কোন পরিচয় সময়ের ধূসর অববাহিকায় মিশে যায়।
আমার কর্মজীবনের শুরু থেকে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় পনেরো বছর যাবৎ ঢাকা মহানগরীর দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকার একই ভবনে অফিস করেছি। এরপর বদলিজনিত কারণে আমার অফিস ঠিকানা পরিবর্তন হয়। স্বার্থপরতা ও ব্যস্ততম নগরীর হন্ত-দন্ত হয়ে ছুটাছুটি কালচার কিছুটা হলেও পাশ কাটিয়ে নগরীর একটি আবাসিক এলাকার অপেক্ষাকৃত শান্ত, ছায়া সুনিবিড় ও নির্বিঘ্ন এলাকায় বর্তমান আমার অফিস। বাণিজ্যিক এলাকায় বাণিজ্যিক অফিস ও ভবনগুলো বাণিজ্য নিয়েই ব্যস্ত থাকতেই পারে- কিন্তু এর বাইরের আবহাওয়া, রাস্তা-ঘাট, ইট-পাথরও প্রখর বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি লালন করলে তা নির্মম বিষ্ময়ই বৈকি।
দিলকুশা অফিসের সামনের ফুটপাতের এক ব্যাগ ব্যবসায়ীর সাথে আমার পরিচয়ের সূত্রপাত হয়েছিল ২০০৪ সালের দিকে। প্রথমে ক্রেতা-বিক্রেতা, তারপর কর্মস্থলের অবস্থানগত নৈকট্যের দরুন কর্পোরেট সম্পর্ক- এক পর্যায়ে আদর্শ মুসলিম হিসাবে দুজনের মধ্যে আপাত দৃশ্যমান সমতা থাকায় তা সৌভ্রাতৃত্যের পর্যায়ে পৌঁছে। নিজে ও অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রয়োজনীয় কেনা-কাটার বাইরেও প্রতি বছর আমার অফিসের একটি আকর্ষণীয় ক্যালেন্ডার নিতে আসা, আমার অফিসের নিচে লবিতে নামাজ পড়তে আসা এবং এমন আরো বহুবিধ অবাণিজ্যিক লেনদেনের কারণে তার সাথে আমার পরিচয়টা উল্লেখযোগ্য গভীরতা লাভ করে। এমনকি তার সাথে দু‘ তিন দিন দেখা না হলে ফোন কিংবা সরাসরি অফিসে এসে খোঁজ নিতেন যে আমার কোন সমস্যা হলো কিনা।
গত বৃহস্পতিবার (১৭/০৮/২০১৭) দিলকুশাস্থ সেই ভবনের আমার এক সহকর্মীর সাথে জরুরি প্রয়োজন থাকায় আসরের পর পরই সেখানে পৌঁছি। দিলকুশার দেয়ালে দেয়ালে তখন ঠিকরে পড়ছিল শারদ বিকেলের অসম্ভব আকর্ষণীয় চিকচিকে সোনা রোদ। খুব ভালো লাগছিল আমার। একে তো কয়েকদিন টানা বৃষ্টির পর এমন মিষ্টি রোদ, তদুপরি পেশাজীবীদের জন্য দিলকুশায় বিকেলের এ উম্মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন নীলাকাশ যেন ভাবতেই পারা যায় না। নির্ধারিত সময়ে ভবনের নিচে পৌঁছে সহকর্মীকে ফোন দিলে জানতে পারলাম তার নামতে ২০/২৫ মিনিট দেরি হবে। ভালোই হলো, অনির্ধারিত এই খণ্ড অবসরটুকু ইচ্ছা মতো কাটানো যাবে। মনে পড়ল ব্যাগওয়ালা ভাইয়ের কথা। ১০/১২ গজ এগিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ারের সামনে দোকানটিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন একজন ক্রেতা ছিলেন সেখানে। তিনি চলে গেলে সামনে আমি একা। দোকানীর চোখে চোখ পড়ল, সালাম দিলাম। অনুচ্চ আওয়াজে তিনি উত্তর দিলেন। ঐ পর্যন্তই ! তারপর চোখ নামিয়ে তার নিজের কাজে মনোনিবেশ করলেন। দোকানের সামনের ভাগে এক পা দু‘ পা করে এদিক ওদিক কিছুক্ষণ হাঁটলাম। তার দিকে তাকিয়েছিও কয়েকবার- কিন্তু তিনি আমায় চিনলেন না। এ জীবটাকে তিনি তার জীবদ্দশায় কখনো কোন কারণে দেখেছেন ম্যাগনিফাইং গ্লাস ব্যবহার করেও তার মধ্যে এমন ভাব খুঁজে পাওয়া গেল না। পরিচয়ের বটবৃক্ষটি কবে যে দেশান্তরিত হয়েছে তা বেমালুম ঠাহর করতে পারিনি।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:১৪
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×