যেভাবে মেয়েটি বেঁচে যেতে পারত!
ধর্ষণ করে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে। এর দোষ কার? উত্তর হবে যে করেছে তারই দোষ। আবার কার!
অবশ্যই তার। দোষ আর দোষহীনদের নিয়ে এই লেখা নয়। লেখছি, একটু সসচেতন হলে কী এই ধর্ষণ, এই হত্যা থেকে আমরা বাঁচতে বা বাঁচাতে পারি না? উত্তর হবে, অবশ্যই পারি।
তাহলে কীভাবে পারি?
পারি, 'সচেতনতা' জাগিয়ে দিয়ে।
সচেতনতা জাগিয়ে দেবার আগে দরকার প্রতিটি মা-বাবা বা অভিভাবকের নিজেদের সচতনতা জাগিয়ে নেয়া।
প্রথমে চলুন ভাবি কিছু বিষয় নিয়ে:
১.
ওঠতি বয়স:
এই সময়টা একটা স্বাধীনচেতা সময়। যতো ফাঁকি মা-বাবার সাথে দেয়া যায়। তা দিবে। বন্ধুর সাথে ঘুরতে যাবে। বলবে ক্লাস এসাইনমেন্ট আছে। পকেটে টাকা নেই। টিউশন ফি না দেয়া থেকে শুরু করে বই-খাতা থেকে টাকা চুরি করবে।
তাই ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত যথা সম্ভব মা-বাবা বা অভিভাবক নিজে উপস্থিত থেকে সবকাজ সমাধা করে দেয়ার চেষ্টা করা।
২.
সহজে বন্ধু পাওয়া:
ইন্টারনেটের এই যুগে বন্ধু পাওয়া সহজ হয়ে ওঠেছে। কার সাথে কখন কীভাবে পরিচয় হচ্ছে তা মা-বাবা জানেন না। কেও তো ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে। কিন্তু প্রতারণার আশ্রয়ে থাকা বন্ধুও কম নয়।
একবার মোবাইল বা ডিভাইস হাতে দিলে তা ফিরানো কষ্টকর হয়ে ওঠবে। তাই আগে থেকে তা নিয়ন্ত্রণ করা ভালো। স্কুল কলেজের পথে থাকলে স্মার্ট ফোন না দিয়ে বাটন ফোন দেয়া ভালো। এটি শুধু যোগাযোগের জন্য। ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত তা নিয়ন্ত্রণ করা গেলে ভালো।
৩.
ডিভাইস বা ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ:
অনেকে নিষিদ্ধ সাইটে ঢুকে সময় নষ্ট করেন। স্টুডেন্টরা বলে থাকে, গুগল থেকে তথ্য নিয়ে পড়ালেখা বা এসাইনমেন্ট করতে হবে। তখন তারা দরজা বন্ধ করে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেয় বন্ধ ঘরে।
ইন্টারনেট লাগানো কম্পিউটার না লেপটপটি আপনার ড্রইং রুম বা কমন রুমে সেট করেন। তাতে সে গোপন কাজ না করে আসল কাজটি করবে। কারন ড্রইং রুমে বা কমন রুমে সবার চলাচল থাকে।
৪. সন্তানকে বাসায় একা না রাখা:
শত ব্যস্ততা থাকলেও বাসায় সন্তান যেন একা না থাকে। তাকে ম্যানেজম্যান্ট করুন। তাকে বুঝতে না দেয়াই ভালো, সে খারাপকাজ করবে এই জন্য একা থাকতে দেয়া হচ্ছে না। বলুন, বয়স কম তোমার একা বাসায় থাকা নিরাপদ নয়।
৫.
মুভমেন্ট খেয়াল রাখুন:
স্টুডেন্টদের এক নাম্বার কাজ হলো, পড়ালেখা। ক্লাস আর প্রাইভেট তার রুটিন কাজ থাকে। ক্লাসে ঠিকভাবে যাচ্ছে কীনা হাজিরা সীট দেখুন। প্রাইভেটে বা ব্যাচে পড়তে সঠিক সময়ে গিয়েছে কিনা তার খবর নিন সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে ফোন করে।
শয়তানমার্কা হলে:
আপনার শত সচেতনার পরও সন্তান যদি শয়তানমার্কা হয়। সে আকাম করতে যাবেই। তাই কিছু নিরাপদ টুলস শিখিয়ে দিন তাকে।
৯৯৯
সময়ের সবচেয়ে কম সময়ে, সবচেয়ে দ্রুত রেসপন্স করে থাকে ৯৯৯ সংখ্যাটি। যা জাতীয় জরুরী নাম্বার হিসেবে সবার পরিচিতি পেয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থাপনায় এক অনবদ্য উদাহরণ হয়েছে ইতোমধ্যে এই নাম্বার।
৯৯৯ সংখ্যাটি মোবাইলে সেইভ করুন। মেসাজ অপশনে গিয়ে টাইপ করে রাখুন, কার সাথে দেখা করতে যাচ্ছ তার ডিটেইলস। যার সাথে দেখা করতে যাবে তার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার আর নীচে নিজের সকল ডিটেইলস নাম, ঠিকানা লিখে রাখুন। মেসেজের প্রথমে লিখুন, আমি বিপদে পড়েছি নীচের ঠিকানায়। বিপদে পড়লে যেন এক সেকেন্ডে সেন্ড অপশনে গিয়ে পাঠিয়ে দিতে পার।
মেসেজটি যেমন হতে পারে:
আমি বিপদে পড়েছি নীচের ঠিকানায়, প্লিজ হেল্প। নাম-... পূর্ণ ঠিকানা-... মোবাইল-...। আমার নাম-... ঠিকানা-...।
লেখাটি রহমান শেলী’র (মিজানুর রহমান শেলী) ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৫৯