somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুনঃজন্ম

০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- আরেক পেগ ভদকা...।
- স্যার, ৯ পেগ তো খেয়ে ফেললেন! আর না খেলে হয় না?
- আমার টাকায় আমি মদ খাব। তোমার কি? তোমার কাজ মদ দেয়া, সেটা দাও। জড়ানো গলায় বললেন আবীদ বায়হান। বার টেন্ডার আর কথা বাড়াল না। ১০ নম্বর পেগ এনে দিল। পুরোটা একবারেই গিলে ফেললেন আবীদ রায়হান। এবং সাথে সাথেই শুরু হল বমি করা। দেখতে দেখতে চেহারা রক্তশূন্য হয়ে গেল। জীবনে প্রথম মদ খেলেন আজকে। এবং পরিমাণে বেশিই খেলেন। বার ম্যানেজার একটা ছোকড়াকে দিয়ে উনাকে পাঠালেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ওয়ার্ডেই সিট পাওয়া যায় না। সেখানে আবীদ রায়হান একটা কেবিনে সিট পেয়ে গেলেন। অবশ্য আবীদ রায়হানের ভাগ্য সব সময়ই ভাল। তিনি না চাইতেই এমন অনেক কিছু পেয়েছেন আর পান যা অন্যদেরকে ঈর্ষাকাতর করে তোলে। কিন্তু আবীদ রায়হান নিজে মনে করেন তাঁর ভাগ্য বড়ই অদ্ভুত। তাঁর সাথে প্রতিনিয়ত খেলা করে। এটা সত্য, উনি জীবনে অনেক কিছু পেয়েছেন কিন্তু তিনি যখন যা চেয়েছেন, যখন যা আশা করেছেন তাঁর কিছুই তিনি পান নি। মাঝে মাঝে ভাগ্য তাঁর সাথে নিষ্ঠুর রসিকতা করতেও ছাড়ে নি। উনি যা চান, ভাগ্য তা তাঁর কাছে নিয়ে আসে। তাঁকে তা স্পর্শ করতে দেয়। কিন্তু যখনই তিনি নিজের হাতের মুঠোতে নিতে চান, তখনই আচমকা টান মেরে তাঁর কাছ থেকে দূরে টেনে নেয়। তাঁকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, তুমি এর উপযুক্ত নও।

- আবীদ!
আবীদ রায়হান চোখ খুললেন। তাঁর বেডের পাশে লাল প্লাস্টিকের চেয়ারে একটা মেয়ে বসে আছে। মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগছে। কিন্তু চিনতে পারছেন না। তিনি তাকিয়ে রইলেন।
- কেমন আছিস আবীদ?
আবীদ রায়হান মেয়েটিকে এখন চিনতে পারলেন। ওর নাম স্মৃতি। তাঁর ক’জন কাছের বন্ধুদের একজন। তিনি বললেন, ভাল। তুই?
মেয়েটি কিছু বলল না। বেশ খানিকক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। মনে হচ্ছে কঠিন কোন কথা বলবে। মনে মনে গুছিয়ে নিচ্ছে। হঠাৎ করেই বলা শুরু করল, তুই কেন নিজেকে এভাবে শেষ করছিস? কেন একটা মেয়ের জন্য নিজের জীবনটাকে ধ্বংস করছিস? তোর কি মনে হয়। তোর উপর শুধু ঐ মেয়েটিরই আধিকার রয়েছে? আর কারো কোন অধিকার নাই? তোর বাবা-মায়ের কোন অধিকার নাই? তুই কবিতা ছেড়ে দিয়েছিস। কিন্তু তুই কেন বুঝিস না তোর লেখা আমরা পরতে চাই... তুই কিছু লিখবি এটা আমরা আশা করি। একটা মেয়ের জন্য তুই কবিতা ছেড়ে দিলি! আর যারা তোর কবিতা পড়ে তাদের কথা একবারও ভাবলি না! তুই একটা স্বার্থপর। শুধু নিজের কথা ছাড়া আর কিছু তুই ভাবিস না...।
যেমন হঠাৎ করে শুরু করেছিল তেমনি হঠাৎ করেই থেমে গেল ও। তারপর ঝড়ের বেগে কেবিন থেকে বের হয়ে গেল। আবীদ রায়হান থমকে গেলেন। দরজার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। তাঁর মাথায় এখন চিন্তার ঝড় বইছে। হাজার স্মৃতি, যুক্তি-তর্ক। কেউ একজন তাঁর ভিতর থেকে বলে বলে উঠল, আবীদ রায়হান! তুমি ভন্ড! গলাবাজ! বড় বড় বুলি ছাড় কিন্তু নিজে তা মানো না। মানুষকে বলে বেড়াও, প্রতিভা থাকলে তার ব্যবহার করা উচিত। কারণ প্রতিভা স্রষ্টার উপহার। প্রতিভাকে অপচয় করলে যিনি উপহার দেন তাঁকে অপমান করা হয়। অথচ তুমি...! তুমি নিজে তোমার প্রতিভাকে তুলে দিয়েছো মদের গ্লাসে...! প্রতিভার কি নিষ্ঠুর অপচয়! কি নিপুণ তোমার ভন্ডামী। আবীদ রায়হানে দু’চোখ বেয়ে জল বেড়িয়ে আসল।

আবীদ রায়হানের প্রতিটি শব্দচয়নে তাঁর প্রতিভার পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল। তিনি ব্যাকরণের প্রতি সব সময়ই ছিলেন উদাসীন। জগতের সকল নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতেই তিনি আনন্দ পান। তাঁর লেখালেখিও তার বাইরে যেতে পারে নি। তিনি যা বিশ্বাস করেন, তাঁর হৃদয় যেটা স্টহিক বলে সেটাই তিনি সব সময় বলেছেন। এতে কে কি মনে করল তার জন্য কোন চিন্তা কখন তিনি করেন নি। তাঁর কলমও তাঁর মুখের মতই। তাঁর হাতের ছোঁয়া পেয়ে কলমও হয়ে উঠেছিল চরম স্বেচ্ছাচারী। পাতার পর পাতা শুভ্র জমিন ক্ষতবিক্ষত করে চলত শব্দের লাঙ্গল দিয়ে। নাঙ্গা তরবারির মত হাজার হাজার শব্দ একের পর এক বসিয়ে সাজাত বিক্ষুব্ধ মিছিল! সমাজের যত অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ মিছিল!
‘ছুঁড়ে ফেল এই ঘুনে ধরা সমাজ
ইতিহাসের রক্তাক্ত পথে,
ছিঁড়ে খুঁড়ে খাক শিয়াল-হায়েনা
তার গলিত সব এক সাথে...’
তিনি যেমন ছিলেন বিদ্রোহী তেমনি ছিলে স্বপ্নবাজ। নিজে স্বপ্ন দেখতেন সুন্দর আগামীর, দেখাতেন অন্যদেরকেও...।
‘স্বপ্ন দেখা পাখি তবু
আমার কাছে আসে।
বলে তোমার দু’চোখ মাঝে,
যতই ক্লান্তি থাকুক না কেন,
স্বপ্ন দেখতে ভুলো না যেন,
নব জীবনের উল্লাসে...’
তাঁর বয়সের তুলনায় তাঁর লেখা ছিল পরিণত। কিন্তু একদিন...। একদিন হঠাৎ করে তাঁর চেনা জগত সম্পূর্ণ পাল্টে গেল। তিনি একটি মেয়েকে দেখলেন। মেয়েটির পরনে ছিল সাদা একটি জামা। যেন কোন পরী মাত্র পৃথিবীতে নেমে এসেছে। প্রচন্ড প্রাণবন্ত মেয়েটি, যেন মাত্র ফুটেছে এমন কোন গোলাপ। আবীদ রায়হান বুকের মাঝে কেমন জানি ব্যথা অনুভব করলেন। সুখের মত ব্যথা! এমন সৌন্দর্যের দিকে তিনি তাকিয়ে থাকতে পারলেন না। চোখ নামিয়ে নিলেন। তিনি মেয়েটির একটি নাম দিলেন। প্রেমের দেবীর নামে নাম।

আবীদ রায়হান তখন কলেজ ছাত্র। প্রেমে পড়ার আদর্শ বয়স! পড়লেনও তাই... মেয়েটির সাথে দেখা হয় এক শিক্ষকের বাসায়। প্রাইভেট পড়তে গিয়ে... তারপর থেকে ঐ শিক্ষকের বাসা পরিণত হয় আবীদ রায়হানের তীর্থস্থান। প্রতিদিন গিয়ে বসে থাকেন মেয়েটিকে একবার দেখার আশায়। বেশির ভাগ সময়ই ব্যর্থ মনোরতে ফিরে আসেন। আবীদ রায়হান লিখলেন,
‘ভাবিনি, কখনও আমি
গাইব প্রেমের গান।
ভাবিনি, কখনও আমি
জঁপব কারও নাম।।
ভাবিনি, কখনও আগে
থাকব বসে, শুনব বলে
কারও মিষ্টি হাসি...’।
আবীদ রায়হান নিজের লেখা দেখে নিজেই চোখ কপালে তলে বসে রইলেন। তিনি লেখাটাতে একটা সুরও দিয়ে ফেললেন। তাঁর আর বুঝতে বাকি রইল না যে তিনি মেয়েটির প্রেমে পড়েছেন। কিন্তু তিনি কিছুতেই বলতে পারেন না। তাঁর একটাই ভয়, ‘চিরদিনের জন্য আপন করতে গিয়ে যদি চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলি!’ তাঁর বার বার মনে পড়ে যেতে লাগল এরিক মারিয়া রেমার্কের সেই অমর বাণী, ‘সবকিছু হাতের নাগালের একটু বাইরে রাখা ভাল। নাগালের মধ্যে রাখলে ছুঁতে ইচ্ছা করবে আর ছুঁতে পারলেই সেটাকে নিজের করে পেতে ইচ্ছা করবে। কিন্তু পৃথিবীর কোন কিছুই নিজের করে পাওয়া যায় না।" আবীদ রায়হান লিখলেন,
‘... অজান্তে কখন জানি
তাকে মন দিয়েছিলেম।
সে আমার প্রথম প্রেম।
সে আমার কাব্যের ভাষা।
সে আমার, অব্যক্ত ভালোবাসা...’।
এর মাঝে একদিন বিকালে আবীদ রায়হান রাস্তায় হাওটছিলেন। দু’পকেটে হাত ঢুকিয়ে, মাথা উঁচু করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আর ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ঝুলিয়ে তিনি হাঁটছিলেন। যেমনটি করে সব সময় হাঁটেন। হঠাৎ তিনি থমকে দাঁড়ালেন। তাঁর মুখের হাঁসিটি আস্তে আস্তে ফ্যাকাসে হয়ে গেল। তিনি দেখলেন ঐ মেয়েটিকে। সাথে অন্য একটি ছেলে। ওরা হাত ধরাধরি করে হাঁটছে। খুবই সুন্দর দৃশ্য! তবে আবীদ রায়হানের এই সৌন্দর্য সহ্য করার মত ক্ষমতা ছিল না। তাঁর চারপাশটা হঠাৎ কেমন জানি কেঁপে উঠল। পড়ে দেখলেন তিনি রাস্তার পাশে বসে আছেন। চোখে শূন্য দৃষ্টি।
বাসায় ফিরে আবীদ রায়হান বাথরুমে ঢুকে আয়নার সামনে দাঁড়ালেন। ওয়াসার বিশুদ্ধ (!) পানি আর চোখের নোনা জল মিলে মিশে এক হয়ে গেল। আবীদ রায়হান লিখলেন,
‘প্রতিদিন কত,
স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
প্রতিদিন কত,
আশা ঝরে যায়।
প্রতিদিন কত
কষ্ট উড়ে যায়;
শীতের হিমেল
হাওয়ায় হাওয়ায়...’।

এরপর অনেকগুলো দিন কেটে যায়। আবীদ রায়হান কলেজ পাস করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি লড়াইয়ের জন্য কোঠর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একটা কোচিং সেন্টারে নিয়মিত ক্লাস করছেন। এভাবে তাঁর নিস্তরঙ্গ দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল। একদিন কোচিং-এ একটা পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ পরীক্ষার হলের এক কোণায় একটা মেয়ের দিকে তাঁর চোখ গেল। গভীর মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। কোন দিকে কোন খেয়াল নেই। মেয়েটি মুখটা একটু তুলতেই আবীদ রায়হান কেঁপে উঠলেন। সেই মেয়েটি! অনেকদিন আগের চিরচেনা মুখটি। যেটি দেখার জন্য তিনি অধির অপেক্ষায় বসে থাকতেন... আবীদ রায়হান তাঁর আশেপাশের জগত ভুলে গেলেন। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। দেখতে দেখতে একঘন্টা শেষ হয়ে গেল। সবার পরীক্ষা শেষ। মেয়েটিরও তাই। আস্তে আস্তে সবাই হল থেকে বের হয়ে গেল। আবীদ রায়হান একা বসে রইলেন। নির্বাক-স্তব্ধ। তিনি কলম তুলে নিলেন। লিখলেন,
‘আজ আরেক বার তাকে দেখলাম,
আরেক বার অপরিচিত অনুভুতিতে
কুঁকড়ে গেলাম।
সেই হরিনীর মত টানা চোখ
শান্ত-নিঃষ্পাপ- মায়াবী মুখ;
ঠোঁটে হৃদয় কাড়া সেই হাসি
স্বপ্ন ও বাস্তবতার মাঝামাঝি-
দাঁড়িয়ে সে,
আরেক বার ঝড় তুলে গেল
আমার হৃদয়ে’।

তারপর আবার অনেকগুলো সূর্যাস্ত দেখল এই পৃথিবী। বুড়িগঙ্গার পানি আরও দূষিত হল। কত খেলার মাঠে বহুতল ‘কংক্রিটের খুপরি’ উঠল। আবীদ রায়হান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলেন। লাল বাসে করে আসা যাওয়া করেন। কি রোমাঞ্চকর এক একটা দিন! কিন্তু রাত হলেই বাঁধে যত গন্ডগোল। আবীদ রায়হান এক একটি নির্ঘুম রাত কাটান আর লিখেন,
‘স্বপ্নকুমারী
তুমি আছো কেমন?
জানতে বড়, ইচ্ছে করে,
যখন-তখন, যখন-তখন।
স্বপ্নকুমারী
তুমি কোথায় এখন?
তোমায় নিয়ে, লেখা কবিতা
সুরে সুরে গাই, আমি এখন...’।

তখন জুন মাস। ১১ তারিখ। দুপুরের কাছাকাছি সময়। প্রচন্ড রোদ। রাস্তাঘাট ফাঁকা। আবীদ রায়হান অপেক্ষা করছিলেন এক বাসস্টপে। হঠাৎ একটা কণ্ঠস্বর শুনে তিনি চমকে ফিরে তাকালেন। সেই চেনাস্বর। সেই চেনা হাসি। রাতের আঁধারে তার কবিতার খাতায় যাকে তিনি খুঁজে বেড়ান; সেই মেয়েটি তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছে! তিনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলেন না। কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন, তুমি!
বাসায় ফিরেই তিনি লিখলেন,
১১ জুন দুপুরের সেই
নিরব উল্লাস,
কতশত স্মৃতি
দুখের দীর্ঘশ্বাস।
মিলে-মিশে একাকার
হাসি-নোনা জ্বল আমার।
কতদিন পর দেখা হল বন্ধু
তোমার আমার।

মেয়েটির ফোন নাম্বার নিলেও আবীদ রায়হান ওকে ফোন দেন নি অনেক দিন। কথাটা অবশ্য পুরোপুরি সত্য হল না। পরবর্তী ১ মাসে আবীদ রায়হান ওকে লাখ খানেক বার ফোন দিয়েছেন। কিন্তু রিং হওয়ার কেটে দিয়েছেন। এই ভয়ে যে ও যদি কিছু মনে করে! কিন্তু একদিন আর থাকতে পারলেন না। তিনি ভয়ংকর একটা দুঃস্বপ্ন দেখলেন। তিনি দেখলেন ঐ মেয়েটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। ও মারা যাচ্ছে! আবীদ রায়হান তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন। নীল একটা পোশাক পড়ে ধবধবে সাদা একটা বিছানায় ও শুয়ে আছে। আবীদ ওকে কিছু বলতে পারলেন না। শুধু স্থির চোখে তাকিয়ে রইলেন। আস্তে আস্তে ছবিটা ঝাপসা হয়ে উঠল।
আবীদ রায়হান ধড়পড় করে ঘুম থেকে উঠলেন। তাঁর গাল বেয়ে অশ্রু বয়ে যাচ্ছে। তিনি সেলফোনটি হাতে নিলেন। সমস্থ দ্বিধাদ্বন্দ মুছে call বাটনে চাপ দিলেন। ওপাশ থেকে রিসিভ করতেই তিনি সহজ স্বাভাবিক গলায় বললেন, কেমন আছো?
এরপর প্রতিদিনই কথা হতে থাকে। দিনে অন্তত এক মিনিট তো হবেই। আস্তে আস্তে দিনের গন্ডি পেড়িয়ে কথা বলার সময় হয়ে উঠতে থাকে রাত। রাত থেকে গভীর রাত। কথা বলতে বলতেই আবীদ রায়হান জানতে পারলেন যে, যাকে ও ভালবাসত তার সাথে ওর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। কারণ ঐ ছেলের পরিবার ওদের সম্পর্ক মেনে নিবে না এবং ঐ ছেলেও অনেক দূরে কানাডার বরফে ভালই আছে! আবীদ রায়হান আরও জানতে পারলেন যে, ঐ ছেলেকে ও এতোটাই ভালবাসে যে কখনই তাকে ভুলতে পারবে না। আবীদ রায়হান নির্বাক, অশ্রুসজল চোখে প্রতিটা শব্দ শুনলেন এবং শোনার পর বললেন, ব্যাপার না...!
তারপর দিন ঢাকার আকাশ অনেক কাঁদল। আকাশের অশ্রুতে ধুসর নগরীর সমস্থ অলিগলি ধুয়ে মুছে গেল। আবীদ রায়হান অনেকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজলেন। আকাশের অশ্রু আর তাঁর অশ্রু মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল। তিনি টি.এস.সি থেকে ফেরার পথে আবার সেই বাসস্টপে থামলেন। কারণ সেই মেয়েটি তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে। বাস থেকে নেমে দেখেন ছাতা দিয়ে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্যে ও আপ্রাণ চেষ্টা করতেছে। তিনি বললেন, চল হাটি কিছুক্ষণ। বৃষ্টি কমে গেছে। সামনে গিয়ে রিক্সা নেয়া যাবে।
তাঁরা হাটছেন। বৃষ্টির কারণে রাস্তা ফাঁকা। মেয়েটি ওর ছাতা গুঁটিয়ে নিল। দুজন এখন পাশাপাশি হাঁটছে। আবীদ রায়হানের হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ বৃষ্টির পানিতে তাঁর চশমার কাচ ঘোলা হয়ে গেছে। তিনি কিছু পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছেন না। তারপরও তিনি হাঁটছেন।
তাঁরা যখন রিক্সা নিলেন, তখন আবার আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামল। আগের চেয়ে দ্বিগুন বেগে। চারপাশ প্রায় অন্ধকার হয়ে গেল। ওরা পাশাপাশি বসে রিক্সায় যাচ্ছে। রাস্তায় পানি উঠে গেছে। একটা সময় পড়ে ভাঙ্গা রাস্তা শুরু হয়ে গেল। এই রাস্তায় রিক্সা যাবে না। হেঁটে যেতে হবে। এদিকে বৃষ্টি তখনও সমান তালে চলছে। ওরা রিক্সা থেকে নেমে হাঁটা শুরু করল। মেয়েটির বাসার সামনে আসার পর বৃষ্টি থেমে গেল।
ঐ দিনের বৃষ্টিতে আবীদ রায়হানের কি জানি হয়ে গেল। তিনি তাঁর ভালবাসার কথা জানিয়ে দেয়ার জন্য একটা আকুতি অনুভব করলেন। ঐ রাতেই তিনি সমস্থ দ্বিধাদ্বন্ধ দূর করে তাঁর বুকের মাঝে অনেকগুলো বছর ধরে বেঁধে রাখা আবেগের নদীর বাঁধ খুলে দিলেন। তাঁর নিজেকে খুব হালকা মনে হতে থাকে। তবে তিনি জানিয়ে দিলেন, আমি তোমার কাছে কোন কিছু আশা করে কথাগুলো তোমাকে বলি নি। শুধু তোমাকে নিয়ে আমার আবেগটা তোমাকে জানালাম। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও। যদিও এই আবেগ আমি ইচ্ছা করে জন্ম দিই নি তবে তাকে আমি প্রশ্রয় দিয়েছি।
ও বলল, না। তুমি ক্ষমা চাচ্ছো কেন? তোমার তো কোন দোষ নেই।
তিনি বললেন, তুমি যা মনে কর...।
এরপর আরও কিছু দিন কেটে গেল। একদিন ফোনে মেয়েটি হটাৎ বলল, আবীদ! আমার মনে হয় আমি তোমাকে পছন্দ করা শুরু করেছি। কিন্তু আমি কনফিউজড। বুঝতে পারতেছি না কি করব।
আবীদ রায়হান শান্ত গলায় বললেন, Take your time and think wisely.
তারপর আসে সেই রাত। ২৬ শে জুলাই। বর্ষার মেঘলা আকাশ। বাইরে মৃদু বাতাস, ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া। নিঃস্তব্ধ চারিপাশ। এর মাঝে আবীদ রায়হান শুনলেন তাঁর জীবনে সবচেয়ে প্রতিক্ষিত এবং মধুরতম বাক্যটি “I LOVE YOU”.
আবীদ রায়হান থমকে গেলেন। নিজের কানকে তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। পুরোটাই তাঁর কাছে স্বপ্ন মনে হল। জীবনের মধুরতম স্বপ্ন।
- কি হল, কিছু বলছ না যে...।
- কি বলব বুঝতে পারছি না।
মেয়েটি অভিমানী গলায় বলল, আচ্ছা ঠিক আছে, কি বলবে তা বসে বসে চিন্তা কর। আমি ফোন রাখলাম।
আবীদ রায়হান আঁতকে উঠে বললেন, না না, ফোন রেখো না। শোন... “I LOVE YOU TOO”

এরপরের কটা দিন আবীদ রায়হান আনন্দের আকাশে উড়ে বেড়ালেন। জীবনটাকে তাঁর অনেক বর্ণিল মনে হতে লাগল। জীবনের নতুন অর্থ তিনি খুঁজে পেলেন। বেঁচে থাকার নতুন প্রেরণা, স্বপন দেখার নতুন কারণ তিনি খুঁজে পেলেন। তাঁর মনে হতে লাগল ঐ মুখটার দিকে তাকিয়েই তিনি কয়েক জনম পার করে দিতে পারবেন। দুরন্ত সেই দিন গুলোর স্মৃতি এখনও তাঁকে প্রতিনিয়ত বিষাক্ত ছোবল মারতে থাকে। কি ছিল না সেই দিন গুলোতে। কার্জন হলের লিচু তলা, টি.এস.সি-র ক্যাফেটেরিয়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা। তারুণ্যের উল্লাসে গিটারের ঝংকারে হারিয়ে যাওয়া, সারা রাত্রি জেগে ফোনে কথা বলা, জেগে জেগে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা। দিনের শুরুতেই আবার দেখা করা। আহ্‌! এক একটি দিন যে কিভাবে কেটে আবীদ রায়হান নিজেই বুঝতে পারছিলেন না। তবে তিনি ভুলে গিয়েছিলেন স্বপ্নেরও সমাপ্তি আছে। অসীম আকাশে ঘুড়ি যতই উন্মত্ত গতিতে উড়ুক না কেন নাটাইয়ের টানে তাকে আবার মাটিতে ফিরে আসতে হয়-ই।
সেদিন ছিল অক্টোবর মাসের ৪ তারিখ। রাত ২ টা। ৪ দিন অপেক্ষা করার পর আবীদ রায়হানের ফোনে কাঙ্ক্ষিত কলটি আসল। এর আগের ৪ দিন হাজার বার চেষ্টা করেও এই নাম্বারের ব্যবহারকারীকে পাওয়া যায় নি।
আবীদ রায়হান বললেন, তুমি কোথায় ছিলে? কোন সমস্যা?
অন্যপাশ থেকে বিষণ্ণ নারীকন্ঠ বলে উঠল, আবীদ! তোমাকে আমার কিছু বলার আছে।
আবীদ রায়হান উদ্বিগ্ন হয়ে বললেন, কি হয়েছে?
যে কণ্ঠস্বরের আনন্দের সুরলহরি আবীদ রায়হানকে আনম্না করে দিত সেই কণ্ঠস্বরের খানিকটা বিষাদ মিশ্রিত প্রতিটি শব্দ আবীদ রায়হানকে তীক্ষ্ম ছুরির মত ক্ষতবিক্ষত করে দিতে লাগল।
- আমাদের সম্পর্কের বিষয়টা হয়তো বাসায় জানতে পেরেছে। মানে অনুমান করতে পেরেছে। আম্মু আমাকে বলেছে যাতে তোমার সাথে কোন যোগাযোগ না রাখি। আম্মু আমার ফোনের সিম পর্যন্ত বদলে দিয়েছে। আমি বাসায় অনেক সমস্যা ফেস করতেছি...।
আবীদ রায়হান মেঘের মত গম্ভীর গলায় বললেন, তুমি কি চাও?
- আমি জানি না আবীদ। আমি কিচ্ছু জানি না। তবে আম্মুর কথার বাইরে যাওয়া আমার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব না। কখনোই না।
আবীদ রায়হান শান্ত গলায় বললেন, হুম। উনার কথার বাইরে যাওয়া তোমার উচিত না। দেখ, আমি সারা জীবন চেয়েছি কারো জীবনে আনন্দের কারণ না হতে পারি অন্তত কষ্টের কারণ যাতে না হই। সেই কেউ যদি তুমি হও তাহলে তো আর কথাই নেই। আমার জন্য তুমি তোমার পরিবারে সমস্যায় পড়েছো এইজন্য আমি দুঃখিত এবং লজ্জিত। I’m really sorry. কিন্তু সব সময় তোমার ভালো চেয়েছি, চাই এবং ভবিষ্যতেও চাইব। আর চাই বলেই বলতেছি, তুমি আন্টির কথা শোন। কারণ সেটাই তোমার জন্য ভাল হবে। আমি চাইলে তোমার উপর জোর খাটাতে পারতাম কিন্তু তা আমি করব না। কারণ তোমাকে কথা দিয়েছিলাম যে তোমার উপর কখনও জোর খাটাব না। আর এই জন্যই বলতেছি, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার তোমার উপর দিলাম। তুমি যা চাইবে
তা-ই হবে।
অন্যপাশ থেকে বিষাদসিক্ত কণ্ঠস্বর বলে উঠল, I’m sorry Abeed. I’m sorry.
আবীদ রায়হান অনেক কষ্টে গলা স্বাভাবিক রেখে বললেন, You don’t need to be sorry. তোমাকে শেষ বারের মত একটা গান শোনাতে চাই। আবীদ রায়হান ধরা গলায় গাইলেন,
তোমার কাছে এই মিনতি
দয়া করে রেখো।
আমার মৃত্যু হলে পরে
একবার তুমি এসো।
মাটি চাপা আমার কফিন
একবার দেখে যেয়ো।
বেলী ফুলের একটি মালা
সাথে কিছু হাসনুহেনা
আমার এফিটাপে তুমি
ঝুলিয়ে দিও...।
গান শেষ হওয়ার পর অনেকক্ষণ নিরবতা বিরাজ করল। আবীদ রায়হানের গলা ভারি হয়ে আসতে লাগল। তিনি আর কিছু বলতে পারলেন না। কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনের লাইন কাটলেন। উনার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে। প্রচন্ড ঘুম... ঘুম ঘুম চোখেই তিনি লিখলেন,
হে পৃথিবী!
আমার মৃত্যুর জন্য
দায়ী করব না তোমায়;
তোমার নেই কোন ভয়।
আমি ‘ডেথনোট’ লিখে যাব-
‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী আমি,
দায়ী আমার হৃদয়...’।



হাসপাতালের বেডে শুয়ে আবীদ রায়হান সিলিং এর দিকে তাকিয়ে আছেন। দুটা টিকটিকি একবার এদিকে যাচ্ছে আবার ঐদিকে। থেকে থেকে দুটোই থমকে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে আর বিকট শব্দে ডেকে উঠছে। আবীদ রায়হানের চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসল। তিনি চোখ বন্ধ করলেন। তাঁর কানের পাশ দিয়ে দু’ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। তিনি বিড়বিড় করে আবৃতি করতে লাগলেন,
আকালের অন্ধকারে, তুমি ছিলে আলো,
দৃষ্টি মেলে তোমায় আমি, বেসেছিলাম ভালো,
তাকিয়ে দেখি আজকে তোমার, স্মৃতি এলোমেলো...।
এমন সময় কেবিনে কেউ ঢুকল। আবীদ রায়হান মাথা ঘুড়িয়ে দেখলেন স্মৃতি। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আবীদ রায়হান মুচকি হাঁসি দিয়ে বললেন, কেমন আছিস?
স্মৃতি নরম গলায় বলল, I’m sorry.
আবীদ রায়হান বলল, কেন?
ও বলল, তোকে এভাবে কথা গুলো বলা আমার ঠিক হয় নি। খুব রাফ বিহেভ করে ফেলেছি। I’m sorry.
আবীদ রায়হান মুচকি হাসলেন। বললেন, নাহ! তোর দুঃখিত হবার কিছু নেই। তুই তো সত্য কথাই বলেছিস। সত্য সব সময় একটু নিরস, নিষ্ঠুর হয়। আর কারো সত্য বলার জন্য দুঃখিত হওয়া উচিত না।
স্মৃতি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। আবীদ রায়হান বললেন, তুই আসলে ঠিকই বলেছিস। আমার জীবনটা তো শুধু একজনের জন্য না। আমার উপর তো শুধু একজনেরই অধিকার নেই। আরও অনেকেরই তো আশা রয়েছে আমাকে ঘিরে...।
স্মৃতি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। ওর চোখে অশ্রু চিকচিক করছে।
আবীদ রায়হান বললেন, স্মৃতি...!
ও ছোট্ট করে উত্তর দিল, হুম...।
আবীদ রায়হান ভড়াট গলায় বললেন, আমি আবার লিখব...।
স্মৃতির চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ও অবিশ্বাস মাখানো গলায় বলল, সত্যি!
আবীদ রায়হান বললেন, হ্যাঁ। সত্যি! আমাকে কাগজ কলম দে’...।
স্মৃতি কাগজ কলম এগিয়ে দিল। আবীদ রায়হান গুটিগুটি অক্ষরে লিখলেন, “পূণঃজন্ম”।

~ সমাপ্ত ~
(২১. ০১. ২০১৩)
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×