somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়া নিয়া খানিকটা বকরবকর

২৯ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের জীবনের পূর্ণতাই আসে বিয়ার মাধ্যমে। মাঝরাতে দুঃস্বপ্ন দেইখা ঘুম ভাঙলে যে আপনেরে স্বান্তনা দিবে, সে আপনের বিক্ষিপ্ত ও বিপর্যস্ত সময়ে আপনেরে প্রশান্তির বার্তা দিবে। সে আর কেউ না। আপনের বউ।

একজন মানুষের জীবনে বউ থাকার গুরুত্ব অপরিসীম। আজ আপনি একা চলতেছেন, বৈরাগ্য জীবনের নানা সুবিধায় তৃপ্তির ঢেকুর তুলতেছেন। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে আপনের প্রয়োজন পড়বে একজন জীবনসঙ্গীর। আর যদি প্রয়োজন না পড়ে তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে আপনের।

কারণ বউ আপনেরে সুখে-দুঃখে সর্বদাই ছায়া হয়ে পাশে থাকবে। মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদি সবাই একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত আপনেরে সহযোগিতা করতে পারবে; সর্বক্ষেত্রে নয়। বিপ্রতীপ চিন্তা করলে কোনো সীমানা যে বন্ধনের মধ্যে নাই, সেই বন্ধনই হচ্ছে 'বৈবাহিক বন্ধন'। এমন কিছু নাই যেইটা বউয়ের সাথে শেয়ার করা যায় না।

স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্তুতি, মা-বাবা, ভাই-বোন একান্নবর্তী ব্যক্তিদের দিয়া গইড়া ওঠা মানবপরিমণ্ডলরে কয় পরিবার। মানব জীবনের প্রথম চলা থিকাই এই পরিবারসূত্রের অমর বন্ধন সূচিত হইতে দেখা গেছে। আদম আ.-এর মাধ্যমেই এর প্রথম বিকাশ ধইরা নেয়া যায়। সন্দেহ নাই, পরিবারের প্রথম বিন্যাস হইছিল স্বামী-স্ত্রীর যুগল চাষাবাদে। তারপর ধীরে ধীরে সেইটা সমৃদ্ধ হইতে থাকে। ফুল ফলে ভইরা ওঠে ফসলের মাঠ। আল্লাহয় কয়, নিসাউকুম হারসুল লাকুম (তোমাদের স্ত্রীরা হইলো চাষাবাদের ক্ষেতস্বরূপ)। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়, তাযাওয়াজুল ওয়াদুদাল ওলুদ (তোমরা অধিক সন্তানদ মেয়েদের বিয়া করো)। সুতরাং নিষ্ফলা মাঠের কৃষকদের উদ্দেশ্য কইরা ইসলাম কয়, লা সরুরতা ফিল ইসলাম (ইসলামে কোনো বৈরাগ্যবাদ নাই)।

পৃথিবীর সকল মানুষরে আল্লাহ জোড়াবৃত্তিতে সৃষ্টি করছেন। তারপর তাতে ঢাইলা দিছেন মাওয়াদ্দাহ ও রহমত। দয়া ও মায়ার বন্ধনে বাঁইধা দিছেন। বিয়া একজন সুস্থ মানুষের প্রাকৃতিক প্রয়োজন। মানুষের স্বভাবজাত পরিচ্ছন্নতা ও মানসিক ভারসাম্যতা এবং চারিত্রিক পবিত্রতার অন্যতম উপায়রে বলা যায় বিয়া।

এর থিকা বুঝা যায়, সৃষ্টির সূচনাই যেইখানে মানব-মানবী দ্বারা সেখানে মানবী দ্বারা নিজের জীবনকে পরিচালনা করা কেন অসম্ভব! প্রকৃতপ্রস্তাবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তো দুটি শরীরের হলেও এ যে একটি 'আত্মা'।

কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজকাল শরীর থাকলেও আত্মা এক হতে পারতেছে না। খণ্ড হয়া বাস করতেছে আলাদা প্রান্তে। আসলে আমরা বিয়াটারে যতটা না চারিত্রিক পবিত্রতা হিসেবে দেখছি তার চাইতে বেশির ভাগ মানুষ বিয়ারে দেখতেছে সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসেবে। মেয়ে অবিবাহিত অবস্থায় ঘরে থাকলে মানুষ খারাপ কইব, ছেলের বিয়ে না হইলে বংশধর আইব না ইত্যাদি কারণেই আমাদের সামাজিক বিয়েগুলো হয়। খুব কম বাবা-মা ই বিয়া হইলে ছেলেমেয়ের চরিত্র ভালো থাকবে এইটা চিন্তা কইরা বিয়া দেয়।

আর ছোটবেলা থিকা ক্যারিয়ার নামক মরিচিকার বিষবাষ্প এমনভাবে মাথা ঢুকায়া দেয়া হইছে যে, অনেকে চরিত্রের উন্নয়ন করার কথা ভাবতেও ফুরসত পায় না। বিয়া জিনিসটার থিকা নিষিদ্ধ জমিনেই তাদের বিচরণ বেশি হয়া যায়। যার অনিবার্য ফল, সবাই ক্যারিয়ার গঠনে ব্যস্ত। এদিক থিকা যে চরিত্র গোল্লায় যাইতেছে, সেদিকে কারো খেয়ালের টাইম নাই। লাজ-লজ্জার বালাই ঠেলে কেউ যদি কখনো বইলাও বসে তাইলে তার আর রক্ষা নাই। পরিবার থিকা শুরু কইরা আশপাশের মানুষের কত্ত কত্ত কথা শুনতে হয় তার ইয়াত্তা নেই।

আমরা লোকের কথা ভয় পাই। যতটা আল্লাহরে ভয় পাই তার থেকেও হয়ত বেশি। তারপরও চরিত্রেকে নির্মল পবিত্র রাখার জন্য হলেও বিয়াটা করা জরুরি। তাই নিজে বিয়া না করতে পারলেও যদি অন্য কেউ কাউরে অন্তত সহযোগিতা করতে নাও পারেন। অন্তত তিরস্কার কইরেন না, তারে অনুৎসাহিত কইরেন না। বিয়া মানুষরে আর কিছু করুক না করুক, পবিত্র রাখতে এবং দায়িত্বশীল হতে সাহায্য করবেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:২১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×