somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রুবে৭১
যার জীবন নেই তার আবার প্রতিচ্ছবি! জীবন বলতে কি কেবল শুধু বেঁচে থাকার নাম! নাকি অন্য কিছু। আমি তো জানি সামগ্রিক প্রতিকুলতার মাঝে সবার সাথে কিছু গল্পের সমন্ময়ে সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্নার মধ্যে দিয়ে সময় অতিবাহিত করার পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পৃথিবীতে আবেগ দিয়ে বি

জীবন নিংড়ানো গল্প

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগের কভার পেজের উপরে লেখা বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। একটি কবুতর উড়ে যাচ্ছে বাঁধ ভাঙার আওয়াজের লগো তার পায়ে আঁকড়ে ধরে। এরই নাম স্বাধীনতা। ইচ্ছে মতো বেঁচে থাকার নামই স্বাধীনতা। ক-ত টুকু ইচ্ছেমতো বাঁচতে পারছি। লিখতে গেলে হয়তো আবেগ গুলো হাহাকার হয়ে বুকটা কাঁপতে কাঁপতে হৃদয় নিংড়িয়ে হাউমাউ করে কান্না চলে আসবে। চোখ বেয়ে নেমে আসবে হাজার ফোটা অশ্রুর ঝরনা ধারা। এই কান্নার কে বা দাম দিবে! কে দেবে আর কে দেবেনা, তা ভেবে এখানে লিখতে আসিনা।

ঢাকা শহরটা বাংলাদেশের প্রাণ কেন্দ্র বলে ধরা হয়। যেখানে কোন প্রাণ নেই, আবেগ নেই,সত্যিকারের ভালবাসা নেই, দয়া, মায়া, মমতা নেই। যা আছে তা হলো ব্যবসা। হৃদয় দিয়ে ব্যবসা, হৃদয় নিয়ে ব্যবসা। যার ফিডব্যাক টাকা। টাকার নামই মানি। পুরো দেশটাই চলছে এই সূত্রে। শুধু এই কারণে আজ আমি এই বিজয়ের মাসে করুন কন্ঠে বলতে চাই ''আমি পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্ধি এক বাঙালী" যার স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারটাকে খর্ব করা হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের পরাধীন থাকার সিস্টেমের কাছে।

শেষ স্বাধীন নবাবের একটি কথাই যেখানে মৃহমান হয়ে আছে "কে তাকে ভরসা দেবে, কে তাকে আশা দেবে" আমি বলি- কেউ না। যেখানে এই কথাটা মানায় সেই বর্তমান স্টেটের নাম বাংলাদেশ।

সরকারী চাকরীর বয়স শেষ হয়েছে ২০১৩/১৪ সালের দিকে। বেসরকারী চাকুরী করে যা পেয়েছি, তাতে মনে হয়েছে। যদি রক্ত বের করে কোম্পানীর মালিকদের দেয়া যেত তাহলে হয়তো এরা খুশি হতেন।এরা সময় দেয়ার থেকে ফিডব্যাক পেতে সব থেকে বেশি আশা করে। পরিবারের একটা সমস্যায় একটি চাকুরী করতে পারিনী। কেননা, আমি তো পরিবারের বড় ছেলে।

দায়িত্ব এড়ানো যায়না। অন্যর কম্পিউটার কম্পোজের দোকানো দৈনিক টাইপিং ও অন্যান্য কাজ করে চলতে হচ্ছে, চালাতে হচ্ছে পুরো পরিবার। অথচ, সব রকম যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও একটা ভাল জায়গায়ও কাজ করতে পারছিনা।

একটা ফ্যামিলি বাসায় খাওয়া থাকা মিলিয়ে প্রায় ৫০০০/- টাকা দিতে হয়। ক-তটা যে হিমশিম খেতে হয় আমাকে তা বুঝাবার সাধ্য হয়তো আমার নেই। বাবা ডায়বেটিকের রোগী। তার ওষুধপত্রের যোগান। একটি ঋণের কিস্তি সহ সংসারের খরচ চালানো। মাঝে মাঝে মনে হয়, এটাইকি জীবন! সামনে এনরোলমেন্ট পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করতে হবে। প্রায় ৪৮০০/- টাকার মতো লাগবে। অথচ, একটি টাকাও নেই হাতে। গত পড়শু রানার গ্রুপে একটি ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম। ৮ দিনের মধ্যে জানাবে বলেছে। কিন্তু, একটা অনিশ্চিত খবরের জন্য কি বসে থাকা যায়! যায়না।

নাখালপাড়া, আজিজ নেট কম্পিউটারের আজিজ ভাই তার ভাইস্তার বিয়ের দাওয়াত খেতে গেছে। আমার তিনদিন রোজগার বন্ধ। ডিপনেটের মামুন ভাইয়ের দোকনে বসে এই বাজে লেখাটুকু টাইপ করছি। হাতে কাজ নেই।

যে বাসায় খাই, সেখানেই কর্মাসিয়াল হিসাব করেন খালা। যা খেতে দেয়, বাড়িতে তা কোনদিন আমার সৎ মা'ও খেতে দেয়নি। তাই আজ মানা করে দিয়েছি। এই বিজয়ের মাসে আমি কোথায় স্বাধীন? নির্বাচনী আমেজে হয়তো অনেকেই আছে। আমার পেট বাঁচানোর চিন্তায় রাতে ঘুম হয়না। ইংরেজীতে অনার্স মাস্টার্সে ভাল রেজাল্ট করে কি পেলাম! সার্টিফিকেট গুলো বড় জোড় ৫০ গ্রাম ওজন হবে। আমার ওজন তো দিনকে দিন বেড়ে চলেছে। ছাতার মতো বাবাটা যদি পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। কে থাকবে আমাকে বাবা ডাকার। এই নষ্ট সিস্টেম, এই স্বাধীনতা কি কেড়ে নিচ্ছেনা আমার স্বপ্নকে। এই ১৮ কোটি মানুষের মাঝে কোন প্রধানমন্ত্রী শুনবে আমার কষ্টের কথা। শুনবে কোন মন্ত্রি। অনেককেই প্রধান মন্ত্রী বরাবর তার ব্যক্তিগত ত্রাণ তহবিল হতে সাহায্যের জন্য আবেদন পত্র লিখে দিয়েছি। নিজের ভেতর থেকে জমে থাকা ভাষা থেকে প্রধান মন্ত্রীর হৃদয় নরম হওয়ার মতো বাক্য ব্যবহার করে লিখে দিয়েছি শত শত আবেদন পত্র্। আমি ভিক্ষে চাইনা, একটা চাকুরী চাই। কাজ করে বাচঁতে চাই, বাঁচাতে চাই একটি পরিবারকে। কিন্তু, সুযোগের অভাবে পারছি কই!

জীবনে প্রেম কি শব্দটা শুধু বইয়েই পড়লাম। রোমান্টিক প্রেমের গল্প কবিতা লিখেছি। কিন্তু, নিজের জীবনে প্রেমটাও আসতে দেইনি। শুধুমাত্র পরিবারের প্রয়োজনের তাগিধে। আজ আর প্রেমের বয়স নেই। তবু ইচ্ছে কর কাউকে ভালবাসি।

এই রকম জীবন নিয়ে কি করে সাহস হবে স্বপ্ন তৈরি করার। আমার সেই সাহসটাও হাড়িয়ে গেছে। এই রকম একটি স্বাধীন দেশে। যেখানে আমার স্বপ্নরাও নোংড়া সিস্টেমের হাতে বন্ধি।

কি করবো! কিছু বুঝতে পারছিনা। এই বুঝি স্বপ্ন টা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।
তবু অপেক্ষায় থাকি ভালো কিছু হয়তো হবে। অদৃশ্য সৃষ্টা হয়তো আমাকে নিয়ে তার কাছে লাগা মধুর খেলায় ব্যস্ত। নাকি সেখানেও তার সময় কম আমার দিকে শুভ দৃষ্টি দেওয়ার।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৬
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×