somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনৈক ছাগু ব্লগারের বিপত্তি !!! (রম্যগল্প ) :D:D:D

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একদেশে ছিলেন এক ব্লগার । তিনি সামু নামক এক ব্লগে ব্লগিং করতেন । ধরা যাক ব্লগারের নাম ততমচং । তো তিনি একদিন রাতের বেলা ব্লগে একটা পোস্ট করে ঘুমাতে গেলেন । পরদিন সকালে তিনি ব্লগে ঢুকে দেখেন তার পোস্টে অনেকগুলো কমেন্ট । কিন্তু কমেন্টগুলো পড়ে তিনি কিছুতেই খুশি হতে পারছিলেন না , কারন প্রায় সবগুলো কমেন্টই গালাগালিতে পূর্ন । গালাগালির সাথে প্রায় সব কমেন্টেই যে কথাটি লিখা হয়েছিল তা হচ্ছে ছাগু । তিনি অনেক চিন্তা করেও কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না ছাগু আবার কি ?:|:| ছাগু খায় না মাথায় দেয় ?? ছাগু নিয়ে এইরূপ চিন্তা করিতে করিতেই তার পোস্টে আরেকটা কমেন্ট আসে এবং তিনি বুঝে যান ছাগু জিনিসটা কি । :|:| কারণ ঐ কমেন্ট এ একটা বেশ বলশালী দাড়িসহ ছাগলের ছবি দেওয়া , আর নিচে লেখা ছাগু । ছাগলের ছবি দেখে তিনিতো টাশকিত হয়ে গেলেন , ছাগলটি যেন তার দিকে চেয়ে মুচকি মুচকি হাসছে আর একটু পর পর চোখ টিপে দিচ্ছে ।
না এ হতে পারে না , তিনি নিশ্চয়ই ভুল দেখেছেন । ছাগলের ছবি কিভাবে তাকে চোখটিপে দিতে পারে ?তিনি পুরো দু মিনিট চোখ বন্ধ করে থাকলেন ।
কিন্তু চোখে খোলে দেখেন ছাগলটি মহানন্দে দাঁত বের করে হাসছে , তিনি তার দিকে চাইতেই ছাগলটা চোখ টিপে দিল ।
তিনি এবার পুরোপুরি অবাক হয়ে গেলেন , আরে কি ঘটছে এসব । তিনি তার স্ত্রীকে ডাকলেন রেহানা রেহানা একটু শুনে যাও তো ।
তার স্ত্রী রান্নাঘর থেকে ছুটে এলেন । কি হল ডাকছ কেন ?
দেখ তো এই ছাগল টা তোমাকে চোখ টিপে দেয় কিনা ?
রেহানা পুরো ঘরে চোখ বুলালেন , তিনি অবাক হয়ে বললেন কোথায় ছাগল ?
ততমচং সাহেব তার ল্যাপটপে দেখালেন , এই যে এখানে ।
রেহানা ল্যাপটপের দিকে এগিয়ে গেলেন , তিনি অনেকক্ষন দেখে তার স্বামীর দিকে করুন চোখে তাকিয়ে বললেন , কি বল এইসব ? এই ছাগলের ছবি আমাকে চোখ টিপে দেবে কেন ?
ও না এমনি ! ঠিক আছে যাও তোমার কাজে যাও ।
রেহানা বললেন ঠিকাছে , কিন্তু তোমার শরীর খারাপ নাকি ?
না আমি ঠিকাছি , তুমি কাজে যাও । ওকে আমি যাই , শরীর খারাপ হলে ডাক্তার দেখাও ।
রেহানা চলে যাবার পর ততমচং সাহেব ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে আৎকে উঠলেন , ছাগলটি এখন চোখ টিপার বদলে তার দিকে চেয়ে জিহ্বা বের করে ভেংচি কাটছে ।
এর মধ্যেই তার ব্লগে ছাগু লেখা আরও অনেক কমেন্ট আসতে লাগল । তার কেমন যেন লাগতে লাগল , তিনি ল্যাপটপ বন্ধ করে উঠে গেলেন ।


রাতে ততমচং সাহেব ঘুমিয়ে আছেন , হঠাৎ তিনি শুনতে পেলেন গম্ভীর গলায় কে যেন তাকে ডাকছে
ততমচং সাহেব , ততমচং সাহেব শুনতে পাচ্ছেন ?
ততমচং সাহেব ঘুমজড়ানো গলায় বললেন , হু আপনি কে ?
আপনার ঘুম কি ভেঙ্গেছে ? আপনি তো গভীর ঘুমে অবচেতন ছিলেন ।
প‌্যাঁচাল না পেরে বলুন আপনি কে ?
স্লামালিকুম , আমি ঙংলহং
মানে ? হংলহং আবার কি ?
হংলংহ না ততমচ সাহেব আমার নাম ঙংলহং ।
আপনার নাম হংলহং বংলহং যাই হোক আপনি এখানে কি চান ?
জ্বী আমি ছাগুসম্প্রদায়ের একজন , আপনার সাথে সাক্ষাৎ এর জন্যে এসেছিলাম ।
ততমচং সাহেব এবার কেঁপে উঠলেন , ভাল করে চেয়ে দেখেন ব্লগের সেই বলশালী ছাগলটা তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে ।
ততমচং সাহেব চেঁচিয়ে উঠলেন এই হারামজাদা তুই এখানে কি চাস ।
কিছু চাই না , আপনার সাথে সাক্ষাতের আশায় এসেছিলাম । মুচকি হেসে বলল ছাগলটা ।
আমার সাথে সাক্ষাৎ করবি কিজন্যে ? চেঁচিয়ে উঠলেন ততমচং সাহেব ।
ছাগলটি মুচকি হেসে বলল আপনি তো এখন আমাদের সমাজের একজন , তাই সৌজন্য সাক্ষাৎ আর কি ? আপনি আমি তো এখন একি জিনিস । মানুষে মানুষে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে না সেইরকম আরকি । :)
ততমচং সাহেব এবার তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন , ধূর হবি হতভাগা , কুত্তার বাচ্চাX((
ছাগলটি আবারও মুচকি হেসে বলল , আপনার কথায় কিঞ্চিৎ ভুল রয়েছে আমি কুত্তার বাচ্চা না আমি হলাম ছাগলের বাচ্চা । আপনি যা আমি তা । আর আমি হলাম ছাগল সমাজের খুব উঁচুমানের একজন ছাগল , আমাকে এভাবে গালিগালাজ করা কি ঠিক ?
ততমচং সাহেব রাগ চেপে বললেন তুই যাবি ?
ঠিক আছে যাব কিন্তু আপনার জন্যে কিছু সুস্বাদু খাবার এনেছিলাম এগুলো কি রেখে যাব ।
খাবারের কথা শুনে ততমচং সাহেব কিছুটা নরম হযে বললেন কি খাদ্য ?
ছাগলটি হেসে বলল , জ্বী জনাব কাঁঠালপাতা ।
কি?
কাঁঠালপাতা চিনেন না ? আমাদের সমাজের সবথেকে প্রিয় খাদ্য । :)
ততমচং রাগে পাগলের মত হয়ে গেলেন , এই তুই যাবি ?
ছাগলটি বলল ঠিকআছে জনাব যাচ্ছি , কিন্তু আপনি কি আমার একটা উপকার করতে পারবেন ?
কি উপকার ?
ছাগলটি হেসে বলল , দেখুন জনাব আমার দাড়িগুলো অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে , ইচ্ছে থাকলেও কাটতে পারছি না ,কারন আমারতো হাত নেই । আপনি ছাগু হলেও আপনার হাত আছে আপনি যদি দযা করে আমার দাড়িগুলো কেটে দিতেন । :)
ততমচং সাহেব রাগে পাগল হয়ে চিৎকার করে উঠলেন ।

ততমচং সাহেবের চিৎকার শুনে রেহানা জেগে উঠলেন ।
তিনি লাইট জ্বালিয়ে বললেন , কি হয়েছে ?
ততমচং সাহেব কাঁপতে কাঁপতে বললেন ঐ শয়তান ছাগলটা কোথায় ? বলে কিনা আমি নাকি ওর দাড়ি কেটে দিব । কত্ত বড় সাহস । X((
রেহানা অবাক হয়ে বললেন , তোমার কি হযেছে বলতো সকাল থেকে এরকম ছাগল ছাগল করছ ব্যাপারটা কি ?
আর ছাগলের দাড়ি কেটে দিতে হবে মানে কি ?
ততমচং সাহেব ধীরে ধীরে শান্ত হলেন , বললেন না কিছু না , চল ঘুমাই ।
লাইট নিভিয়ে তারা আবার শুয়ে পড়লেন ।
কিন্তু ততমচং সাহেবের কিছুতেই ঘুম আসছিল না , তার বারবার ছাগলের কথা কানে বাজছিল
আপনে আর আমি একই জিনিস
আপনে আর আমি একই জিনিস
আপনে আর আমি একই জিনিস
ভোরের দিকে তার তন্দ্রামত আসল , তিনি ছাগল নিয়ে ভয়ংকর একটা দু:স্বপ্ন দেখলেন ।
দু:স্বপ্ন টা হল এরকম : তিনি প্রাণপনে দৌড়ছেন , কয়েকটি ভয়ংকরদর্শন বলশালী ছাগল তাকে দৌড়াচ্ছে আর বলছে আমার দাড়ি কেটে দে , আমার দাড়ি কেটে দে । সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হল তার পরনে কোন কাপড় নেই ।

পরদিন শুক্রবার ততমচং সাহেব বাজারে গেলেন । তিনি বাজার নিয়ে আসার পথে দেখেন রাস্তায় একটি ছাগল , ছাগলটি কেমন যেন তার দিকে চেযে ভেঙ্গাচ্ছে । তিনি দ্রুতপায়ে বাসায় চলে আসেন । ছাগলের যন্ত্রনায় তিনি ইতিমধ্যে ব্লগে বসাও ছেড়ে দিয়েছেন । যে দিকে তাকান সেদিকে শুধু ছাগল দেখেন । তার জীবন ছাগলময় হয়ে যাচ্ছে । সব সময় একই জিনিস তার কানে গানের মত বাজতে থাকে
আপনে আর আমি একই জিনিস
আপনে আর আমি একই জিনিস
খাবার টেবিলে বসে কিছুই খেতে পারেন না , তার কাছে সবকিছুকেই কাঁঠালপাতা মনে হয় ।

এভাবে কিছুদিন চলার পর তিনি নিজেকে কেমন যেন সত্যি সত্যিই ছাগল ছাগল ভাবতে লাগলেন । কেউ যদি বলে ছাগল খাব তিনি আৎকে উঠেন , তাকে আবার খেয়ে ফেলবে নাতো ?
একদিন তাদের বাসায় মেহমান খেতে আসবে , তখন কি খাওয়ানো যায় এ নিয়ে ঘরে আলোচনার সময় তার ছোট ছেলে বলল , বাবা একটা ছাগল নিয়ে আস অনেকদিন ধরে ছাগলের মাংস খাই না । এই কথা শুনে তো তার মাথায় রক্ত চড়ে গেল ছেলেকে ছুটে গিয়ে টাস করে মারলেন এক চড় ।
ছেলে তো অবাক হয়ে কাঁদতে লাগল । সে কিছুতেই বুঝতে পারছে না এই কথায় মার খাওয়ার কি আছে ?
তার স্ত্রীও অবাক হয়ে গেলেন ।
এছাড়াও কোন কথাবার্তায় কেউ যদি কোন প্রসঙ্গে ছাগল বলত তিনি চটে যেতেন ।

তার এইরূপ অবস্থা দেখে তার স্ত্রী তাকে একজন মনোবিষেযগ্গ এর কাছে নিয়ে গেলেন ।
মনোবিষেযগ্গ কামরন আলী তার দিকে চেয়ে বললেন আপনার সমস্যা কি ?
জ্বী আসলে আমার ছাগু সমস্যা ।
কি সমস্যা ? অবাক হয়ে বললেন কামরন সাহেব ।
ছাগু সমস্যা । নিজেকে ছাগু মনে হয় ।
ছাগু কি ?
ছাগু মানে ছাগল ।
ও আই সী ।
আর কি কি মনে হয় ?
খাবারগুলো কে মনে হয কাঁঠালপাতা ।
আর কিছু ?
জ্বী প্রতিরাতে একটা ভয়ংকর দু:স্বপ্ন দেখি । অনেক দাড়িওয়ালা ছাগল আমাকে তাড়া করে । আমি বিবস্ত্র হয়ে দৌড়তে থাকি । আর তারা আমাকে বলে :আমার দাড়ি কেটে দে ,আমার দাড়ি কেটে দে ।
কামরান সাহেব অবাক হয়ে বললেন, আপনাকে দাড়ি কেটে দিতে বলে ।
জ্বী ।
কামরান সাহেব বললেন , বুঝলাম আপনার মনে প্রচন্ড ছাগলভীতি জন্মেছে । আমার মনে হয় একটা কাজ করলে আপনার এই সমস্যা দূর হতে পারে । আপনি একটা ছাগল কিনে এনে , ঐটাকে চোখের সামনে কাটান তারপর খান ।
ডাক্তার সাহেবের এইরূপ কথা শুনে ততমচং সাহেব উঠে দাঁড়ালেন । পরক্ষনেই ঠাস করে একটা আওয়াজ শুনা গেল ।
কিছুক্ষন পর ততমচং সাহেবকে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হতে দেখা গেল । এবং তার পিছু পিছু বিব্রত লজ্জিত অবস্থায় তার স্ত্রীকেও আসতে দেখা গেল ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:৫৭
৪৬টি মন্তব্য ৪৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×