somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম পাতার হৃস্টপুস্ট পোস্ট!

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শীত শুরু হলেই নাক গলে পানি ঝরবে এটা যেনো নিয়ম হয়ে গেছে। ঢাকার আকাশ ধোয়ায় মেঘলা হলেও মফস্বলের নীল আকাশ এখনো ঢাকা পড়েনি। সাদা সাদা মেঘের পাজায় শুভ্রতাগুলো মন ভরিয়ে দেয়। খেজুড়ের রস এখনো আসেনি, গাহকদের আগে থেকে ডেকেই বলে রেখেছি কোনো রস বাইরে বিক্রি না হয়। মা ইতিমধ্যে গুঁড় পাটানোর মহা আয়োজন নিয়ে ফেলেছেন। ছোটবেলা বড় বড় হাড়িগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকতাম। ভেতরে বসে থাকলে নিজের শ্বাস প্রশ্বাস শোনা যেতো। এর কিছুক্ষন পর শুনতে পেতাম বুকের ঢিব ঢিব শব্দ স্পস্ট। বাইরের চিৎকার খুব পেশী শোনা যেতনা শুধু সারা শরীরে একটা কম্পন অনুভব করতাম। মাথাটা ঝিম ধরে যেতো। মা কিভাবে যেনো ঠিকই বের করে ফেলতেন। একজন বাবা বললেন এভাবে বেশীক্ষন থাকলে কার্বন ডাই অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় মারা যাবো। বড় হয়ে জানতে পারলাম মাথা ঝিম ধরা প্রথম লক্ষ্মনই হলো কার্বন ডাই অক্সাইডের বিষক্রিয়া।

কিন্তু অনুভুতি গুলো অন্যরকম ছিলো। খুব দ্রুত একটা ঘোর লেগে যেতো। স্কুলের হোমওয়ার্ক, ক্রিকেট খেলায় হেরে যাওয়া, টিভির কার্টুন দেখতে না পারার একটা হতাশা অথবা মায়ের বকুনিগুলো কিছুই মনে থাকতো না। খুব ভালো হতো বাকি জীবনটা এরকম দঃসহ স্মৃতিহীন হলে।

মাদ্রাসাতে ছোটখাটো একটা সমস্যা হয়েছে। গতকাল বিশাল একটা অনুষ্ঠানের জন্য খুব বড় আয়োজন হয়েছিলো। এলাকার চ্যায়ারম্যান, মেম্বার সহ মুরব্বিদের অনেকেই এসেছিলেন। বাবা প্রধান অতিথির জন্য এমপি সাহেবকে দাওয়াত করলেও তার পিএস এসেছিলেন। তা নিয়ে চ্যায়ারম্যান সাহেব একটু নাখোশ। তার কিছু চাহিদা ছিলো, খুব সম্ভবত এ কারনেই এমপি সাহেবের সাথে সাক্ষাত চাইছিলেন। উনি দেখা দেননি। পিএসও সে কথা কানে তোলেননি। এ নিয়ে সকাল থেকেই চ্যায়ারম্যান তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মাদ্রাসাতে বসেছে বৈঠকে। বাবা চেস্টা করছেন পানি বেশিদূর না গড়ায়।

মা ঘরে ঢুকেই বিছানা ঠিক করতে শুরু করলেন,” তোর ঘরটা একটু তো গুছিয়ে রাখবি!”

“মা, একটু বস। কথা ছিলো।” আমার দিকে শঙ্কার দৃস্টিতে তাকালেন। তাক থেকে একটা বই নামাতে নামাতে তার দিকে মুচকি হাসলাম,” তেমন কিছু না। বসো। আমি রবিবার রাতে ঢাকা যাচ্ছি। কিছু দিন থাকবো। একটা টার্নকি প্রজেক্টের কাজ পাশ হয়েছে। দেশের বাইরে যেতে হতে পারে। জহিরের ছোটভাইটা আমাদের ওখানে ইন্টার্নির আবেদন করেছিলো। ওটা হয়নি। ও যদি কিছু বলে, বলবে যে চেস্টা করেছিলাম। তবে ওর জন্য আমি অন্য কোথাও দেখছি। আমাকে কিছু বলবে না। তবে ওর মা যদি কিছু বলে তাহলে এটা বলে দিও।”

“কেন হয়নি? তুই তো ওদের বলেছিলি হয়ে যাবে।” মা বেশ উৎসুক। “ সেটা অফিসে গেলে বুঝতে পারবো। যতদূর বুঝতে পেরেছি রোহিঙ্গাদের উন্নয়নের ব্যাপারে ওর কিছু বক্তব্য অনেকে পছন্দ করেনি! সেটা যাই হোক, এর চে বেশী এন্টারটেইন করো না। আর বাবা এসব কি করছে! সামলাতে পারবে?”

মা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। মফস্বল শহর আর আগের মতো নেই। যান্ত্রিকতায় শহুরে রূপ নিচ্ছে। চারিদিকে বড় বড় দালান ওঠার পাশাপাশি মানুষের মানবিকতা দূরে হারিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের প্রধান চাবিকাঠি ইনফ্রাস্ট্রাকচারের উন্নয়ন হলেও আমাদের দেশে যেটা হয় সেটা হলো হালুয়া রুটির ভাগ এবং এগুলো দেখার কেউ নেই। যদি কেউ তদারকি করতে যান তাহলে বাধে গন্ডগোল, অযাচিত পরিস্থিতি। ঢাকা থেকে এগুলো সামলানো মুস্কিল। কিন্তু কি আর করা! সবাইকে এগুতে হয়।

ওহহ! আরেকটি কথা, সেফ হবার পর এটাই আমার প্রথম পোস্ট।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১২
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×