somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

The creativity of কাজের বুয়া of Dhaka city : দ্বিতীয় পর্ব

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ
Click This Link

প্রথম পর্ব লিখে আপনাদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পেয়েছি তাই ২য় পর্ব লেখার সাহস করলাম। গত পর্বে কাজের বুয়ার রান্না করা ৫ টা creative item এর উল্লেখ করেছিলাম। বাকি ৫ টা এখন দিচ্ছি। এই রান্নাগুলো পরখ করার ক্ষেত্রে আমি ছিলাম এক গিনিপিগ। কয়েকটা রেসিপি ভাল ছিল আর বাকিগুলো, আপনারাই ধারনা করে নিন আমার জায়গায় আপনি থাকলে কেমন লাগত।

৬. ধনে পাতার ফ্রাই

এই রান্নাটা আমার খুব একটা খারাপ লাগে নি। সবজি রান্নার জন্য বাসায় তখন কিছুই ছিল না। তাই বুয়ার মাথায় creativity-র পুরাতন রোগ জেগে উঠল । ধনে পাতাগুলোকে মশলা দিয়ে ভাল করে মেখে সরিষার তেলে ভাজা হয়েছিল। খাবারটা দেখে জিহবায় পানি এসে গিয়েছিল কিন্তু মুখে দিয়ে দেখি বুয়া লবন দিতে ভুলে গেছে। আপনারা যদি এই রেসিপি তৈরি করতে চান তবে লবন দিতে ভুলবেন না কিন্তু।

৭. চিকেন ফ্রাই with টমেটো সস

নাম শুনে হয়ত ভাবছেন এ আর এমন কি নতুন খাবার। অপেক্ষা করুন, এখানেও creativity আছে। সাধারনত আমরা মুরগির মাংসের সাথে তৈরি করা টমেটো সস খেয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের বুয়া অনেক বেশি creative. তিনি প্রথমে টমেটো সিদ্ধ করে জ্বাল দিয়ে কিভাবে জানি সস তৈরি করলেন। সেই সসের ভিতর সিদ্ধ করা মুরগির মাংস ঢাললেন। তারপর তেল ও মসলা দিয়ে আবার অনেকক্ষণ জ্বাল দিলেন। তরকারিতে কোন ঝোল ছিলনা, ঝোলের বদলে ছিল সস। সেদিন ছিল শুক্রবার। সপ্তাহে একদিন একটু ভাল খেতে চাওয়ার অপরাধ করেছিলাম। সেটার শাস্তি এমনভাবে পেতে হবে বুঝি নাই। মুরগির মাংসের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলছিলাম “তুই ফ্রাই হইসিস ঠিক আছে, আমারে ফ্রাই করলি না কেন ?”

৮. বেগুন দোপেয়াজা with কালোজিরা ভর্তা

কালোজিরা অনেক রোগের ওষুধ ঠিক আছে কিন্তু এর ভর্তা খেতে আমার খুব একটা ভাল লাগে না, আমি আসলে খেতেই পারি না। দুর্ভাগ্যক্রমে বাসায় সেদিন কালোজিরা ছিল। বুয়াকে বললাম বেগুন ভাজি (আমার খুব প্রিয় খাবার) করতে। বুয়া বেগুন ভাজির সময় তার ভেতর কালোজিরা ঢুকিয়ে দিয়ে কিভাবে জানি বেগুন ভাজির উপর কালোজিরার একটা আবরণ তৈরি করল। বলাই বাহুল্য, অতি সাধের বেগুন ভাজি আমার আর সেদিন খাওয়া হয় নি।

৯. গাজরাংস (গাজর + মাংস)

হয়ত ভাবছেন এইটা আবার কি নাম। গাজর এবং মাংসের সন্ধি করলে সম্ভবত তাই দাঁড়ায়। কোন ভাষাবিদ যদি থেকে থাকেন তিনি হয়ত আরো ভাল বলতে পারবেন। মাংস আমরা হয় ভুনা অথবা আলুর সাথে তরকারি আকারে খেয়ে থাকি। আলুর বদলে অনেক সময় অন্য কিছু থাকে। কিন্তু সেই অন্য কিছুটা যদি শুধু গাজর থাকে তাহলে কেমন লাগে বলেন? সালাদ হিসাবে গাজর ঠিক আছে কিন্তু তরকারি হিসাবে চিন্তা করতে আপনাদের কেমন লাগে জানি না, আমার অসহ্য লাগে। কিন্তু বুয়ার creativity-র জ্বালায় আমাকে সেটাও সহ্য করতে হয়েছে।


১০. খিচুরি without ডাল

এইটা আমাদের ঘন ঘনই খেতে হয়। ডাল ছাড়া খিচুরির কথা কি আপনারা জানেন? না জানলে এখন জানুন। যেদিন রাতে আমদের ভাত বেঁচে যায় তার পরদিন সকালে বুয়া রুটি তৈরি না করে ভাতগুলোকে হলুদের সাথে মিশিয়ে তেল দিয়ে ভেজে আমাদের জন্য রেখে যায়। তাতে তাঁর কষ্ট কম হয় কিন্তু আমাদের যন্ত্রনা বাড়ে বই কমে না। খেতে মাঝে মাঝে ভাল লাগে কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই বিরক্ত লাগে। কিন্তু কিছুই করার নেই।

সংক্ষেপে এই হচ্ছে আমাদের বুয়ার creativity-র নমুনা। সামনে আরো যে কত creativity দেখতে হবে আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন। আপনারা হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন কেন এই বুয়াকে আমরা এখনও বদলাচ্ছি না। তার দুটো কারন,
. ঢাকা শহরে কাজের বুয়া পাওয়া অনেক কঠিন, যারা মেসে থাকেন তারা এটা ভাল বুঝবেন।
. বুয়ার ব্যবহার অনেক ভাল। তার ভাল ব্যবহারের জন্য তার creativity কে আমরা ignore করি।

প্রথম পর্ব পড়ে আমার অনেক পরিচিতজন তাদের বুয়ার creativity-র কথা জানিয়েছেন। ইচ্ছে আছে যদি সময় করতে পারি তবে সেগুলোকে নিয়ে ৩য় পর্ব লেখার। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন। যারা মেসে থাকেন তাদেরকে বলব মানিয়ে নেওয়া ছাড়া যেহেতু কিছু করার নেই তাই কষ্ট করে মানিয়ে নিন। একটা সহজ সমাধান দিচ্ছি। অবিবাহিতরা বিয়ে করে ফেলুন। কষ্টের দিন শেষ হয়ে যাবে। B-)

প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ
Click This Link

১৬টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×