somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শিখা রহমান
কবিতা প্রেমী; একটু এলোমেলো; উড়নচণ্ডী; আর বই ভালবাসি। শব্দ নিয়ে খেলা আমার বড্ড প্রিয়। গল্প-কবিতা-মুক্ত গদ্য সব লিখতেই ভালো লাগে। "কেননা লেখার চেয়ে ভালো ফক্কিকারি কিছু জানা নেই আর।"

দালাল

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১.
“আমি এক্সপেকটিং!!” কথাটা কানে ঢুকলেও মাথায় ঢুকলো না। পৌষের পড়ন্ত দুপুর; প্রায় তিনটা বাজে। কলাভবনের সামনে আমি আর মণিকা।

রোদে একটা লেপ মোড়ানো ওম ওম ভাব। শীতের অলস দুপুরটা রোদে ভেজা চুল এলিয়ে আয়েশী ভঙ্গীতে বসে থাকা এক রমণী; বাতাসে ভেসে আছে নারকেল তেলের মেথিমাখা মিষ্টি গন্ধ। কলাভবনের সামনে রৌদ্রজ্জ্বল মাঠ এখন ছাত্রছাত্রীদের কলকাকলীতে সরগরম। মণিকাকে দেখলে অবশ্য আমার আশেপাশের সব অদৃশ্য হয়ে যায়; একটা বুদ্বুদের মধ্যে শুধু আমরা দুজন।

গোলাপী কামিজে ওকে আজ একটা গোলাপের মতো দেখাচ্ছে। কামিজের গোলাপী আভা ফর্সা গালে!! আচ্ছা একেই কি দুধে আলতা রং বলে? রং নিয়ে গবেষনায় মগ্ন ছিলাম বলেই কথাটা ঠিক বুঝতে পারিনি। বোকার মতো বললাম “কাকে এক্সপেক্ট করছো?”

- না বোঝার কি আছে? নাকি ঢং করছো? আমি পেট বাঁধিয়ে ফেলেছি...এখন বুঝতে পারছো নিশ্চয়ই!!

বুকে ধাক্কা লাগলো “এতো দূর?” “হুউউ...এতোদূরই...“ ভুরু কুঁচকে গেছে; গাল টকটকে লাল। খুব রেগেছে। মেয়েটাকে কি সবসময়েই এমন সুন্দর লাগে? মুগ্ধতার কারণেই আবালের মতো আরেকটা কথা বললাম “আমাকে বলছো কেন?”

“তোমাকে বলছি বাধ্য হয়ে। তোমার প্রিয় বড়ভাইতো আমাকে অ্যাভয়েড করেছে। ফোন ধরছে না; ম্যাসেঞ্জারে, ভাইবারে, ফেসবুকে ব্লক। হলে গিয়েও দেখা পাইনি। রুমে থেকেও বলে পাঠিয়েছে সে বাইরে। তাকে বলে দিও যে আমি প্রেগন্যান্ট।“ হড়বড় করে কথা শেষ করে মনিকা উল্টো ফিরে চলে গেলো।

২.
- ফরহাদ!! মেয়েটাকে দেখছিস?
- কোন মেয়ে?
- তোর কি চোখ নাই? ওই যে বাচ্চাদের জামার ওই দিকে মেয়েটাকে?

এই মেয়েকে খেয়াল না করার কোন কারণই নেই। দোকানের ছেলে বুড়ো এমন কি মেয়েরা সুদ্ধ তার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা সুন্দরী। তবে সৌন্দর্য ছাড়াও মেয়েটার মধ্যে রহস্যময় কিছু আছে। কোন কোন মানুষ হেঁটে গেলে বাতাসে কেমন অন্যরকম কাঁপন তৈরী হয়, রৌদ্রের হলদে রঙ একটু বেশী উজ্জ্বল মনে হয়। এমন বিশেষ মানুষদের দিকে না তাকিয়ে উপায় নেই।

“হুম্মম…দেখলাম ভাই!!” বলেই আবারো শার্ট খোঁজায় মন দিলাম। একদমই চাই না যে মেয়েটার সাথে ভাইয়ের পরিচয় হোক। “তোর নিশ্চয়ই ব্রেনে শর্ট সার্কিট হয়ে গ্যাছে!! এই মেয়েকে দেখে তোর মনে কোন হালচাল না হয় ক্যামনে? তুই শার্ট খুঁজতেছিস ?” আমি প্রমাদ গুনলাম। ভাই এখন ঘ্যানঘ্যান করতে থাকবে।

“ফরহাদ!! লক্ষী ভাই আমার…কোনভাবে একবার কথা বলার সুযোগ করে দে…বাকীটা আমি ম্যানেজ করে নেবো।“ ভাই ম্যানেজ করেন সত্যি!! কিভাবে তা আল্লাহ্‌ মালুম...এতো সাথে সাথে ঘুরেও মেয়ে পটানো শিখতে পারলাম না। সুন্দর করে বললেও ভাইয়ের কথা ফেলার সাধ্য আমার নেই।

রাশেদ ভাই ক্যাম্পাসে বেশ প্রভাবশালী, রাজনীতি করে। বাপেরও অনেক টাকা। আমি মফঃস্বল শহর থেকে পড়তে আসা নিম্নবিত্ত পরিবারের খুবই সাধারন ছেলে। হলের সিট টিকিয়ে রাখতে হলে রাশেদ ভাইয়ের কথায় সুর মেলানো ছাড়াও ওনার টুকটাক ফাইফরমাশ খাটি। তবে সামান্য কবিতা লেখার অভ্যাস আছে বলে উনি আমাকে একটু আলাদা চোখে দেখেন।

একটু ভেবে বাচ্চাদের একটা সার্ট নিয়ে হনহন করে মেয়েটার কাছে বললাম “শুনুন…এই সার্টটার দশ বছরের সাইজ আছে? চেক করে দেখুনতো…র‍্যাকে খুঁজে পাচ্ছি না।“ সার্টটা তার কাছে রেখে দিয়ে আবারো নিজের জায়গায় এসে শার্ট খোজাঁর অভিনয় শুরু করলাম। মেয়েটা সাদাকালো কামিজ পরেছে; কালো ওড়না গলার দুপাশে ঝোলানো। ঘন পল্লবে ঘেরা হালকা কাজল পরা চোখেরা খুব অবাক হয়ে তাকিয়েছিলো। টকটকে লাল রঙ্গা ঠোঁট; কথা বলার সময়ে ওই ঠোঁটজোড়া থেকে চোখ সরানো আমার জন্য বড় কঠিন ছিলো। এখনো চোখে ভাসছে সেই লাল, পুরুষ্ট, মাতাল করা লাল ঠোঁটেরা।

“এইইই যে শুনুন!!” এমন করে কেউ ডাকে?? সুনীল হলে বলতেন “দেখা হবে চন্দনের বনে…” আমি কাঠখোট্টা ভাবে বললাম “জী বলুন…সার্টের সাইজটা খুঁজে পেয়েছেন?” উত্তর দেবার আগেই ভাইয়ের এন্ট্রি “কি ব্যাপার?”

- না মানে…উনি সার্টের অন্য সাইজ খুঁজছিলেন। আসলে আমি এখানে কাজ করি না।
- কি আশ্চর্য!! আপনি কিছু মনে করবেন না। আমার এই ভাইটা একটু গবেট। নাহলে আপনার মতো কাউকে মানে এমন সুন্দরী, আর অভিজাত কাউকে দেখে কিভাবে ভাবলো সেলস গার্ল!! ওর হয়ে আমি ক্ষমা চাইছি।
- না না…ঠিক আছে। এমনটা হতেই পারে। আমি কিচ্ছু মনে করিনি।
- সে আপনার মহানুভবতা যে আপনি কিছু মনে করেননি। তবে আমি অনেক কিছু মনে করেছি। আমাকে এই গবেটের করা ভুলের জরিমানা দেবার সুযোগ দেন প্লিজ প্লিজ!!

দুইবার ‘গবেট’ বলেছে, তাও আবার এমন মারদাঙ্গা সুন্দরীর সামনে। রাগে গা জ্বলে যাচ্ছিলো। কিন্তু একটা তেলতেলে হাসি দিয়ে বললাম “আমি স্যরি। ভালোমতো খেয়াল করিনি।“ “তুই এমন একটা মানুষকে খেয়াল করিসনি বলেইতো একটা গবেট…” তিনবার হলো!! মেজাজ ঠিক রাখা আসলেই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

- কিসের জরিমানা বলুনতো?”
- চলুন ক্যাফেতে কফি খাই। ক্ষতিপূরণের একটু সুযোগ দিন প্লিজ!!

এই প্রথমবার আমি চাইছিলাম যেন মেয়েটা ভাইয়ের কোথায় রাজী না হয়। অথচ মেয়েটা ক্যাফেতে আমাদের সাথে বসলো। নাম-ধাম জানার পালা শেষ হতেই কফি এলো। জরুরী ফোন করার ছুতোয় আমি উঠে ক্যাফের বাইরে চলে এলাম। কেন যেন কষ্ট হচ্ছিলো। মেয়েটার চোখ দুটো, হাসিটা বড্ড সরল। মেয়েটা কষ্ট পাবে ভেবে মন কেমন করছিলো।

ভাইয়ের বছরে অন্তত তিন চারবার ব্রেকাপ হয়। কিছুদিন মনমরা থাকেন, তারপরে আবারো নতুন উদ্যমে প্রেম শুরু করেন। প্রথম এক দু’মাস খুবই গদগদ ভাব থাকে। এই সময়ে আমার ওপরে একটু চাপ যায়। কবিতা, গান, কখনো বা মেসেজের ভাষা ঠিক করে দেয়া। পুরোপুরি মন জয় হয়ে গেলে উনি তারপর গুলশানের ফ্ল্যাটে যাতায়াত শুরু করেন। এর কিছুদিন পরেই সম্পর্ক ছেদ।

একেকবার ভাইয়ের একেকরকম সমস্যা “মেয়ের বয়স কম...ম্যাচুরিটি নাই...” “মেয়ের বয়স বেশী...সবকিছুতে খুতখুত করে...” “মেয়ের কথা বলার ধরনটা ভালো না...” “মেয়ের ভাই খুব রাগী...” “মেয়ের ছোট ভাইবোন নাই...শালাশালী না থাকলে ক্যামনে হয়?” ইত্যাদি ইত্যাদি। একবার ওনার দুঃখ দেখে সাহস করে বলে ফেলেছিলাম “ভাই...অনেকতো কষ্ট নিলেন...কিছুদিন মেয়ে ছাড়া থাকেন...” রাশেদ ভাই আঁতকে উঠেছিলেন “কি যা তা বলিস? মেয়েরা কষ্ট দিতে পারে কিন্তু মেয়ে ছাড়া জীবন অচল...” তারপরে একলাইন বেসুরো গানও করেছিলেন “আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি...তাই তোমার কাছে ছুটে আসি...”

মিনিট কুড়ি পরে ক্যাফেতে ফিরতেই ভাইয়ের উচ্ছল কন্ঠ “মণিকার সাথে ‘হালদা’ দেখতে যাবো। ওর বাড়ী চিটাগাংয়ে। ভালোই হলো…সব ডায়ালগ ওর থেকে বুঝে নেয়া যাবে।“

- আপনিও চলুন না আমাদের সাথে। আপনাকেও ডায়ালগ বুঝিয়ে দেবো।
একটু রাগ হলো, অভিমানও কি!! “আমার বাড়িও চট্টগ্রামে। একা একা দেখে ডায়ালগ বুঝে নেবো।“
- ওমা!! তাই? কোথায় বাড়ী আপনাদের?

ভাই যথারীতি বাগড়া দিলেন “আরে মণিকা তুমি ওকে আপনি করে বলছো কেন? ওতো তোমাদের ব্যাচেরই। আর ওকে বলে লাভ নেই। এই সব সিনেমা, শিল্প সাহিত্যের দিকে ওর তেমন ঝোঁক নেই…ও যাবে না।“

৩.
সন্ধ্যাবেলায় হলে ভাইয়ের রুমে উঁকি দিলাম “ভাইয়ের কি মণিকার সাথে ব্রেকাপ হয়ে গেছে?”

- হুম্ম...মেয়ে বহুত হাই মেইন্টেন্যান্স!!
- বলেন কি ভাই? তাকে দেখেতো তেমন ডিমান্ডিং মনে হয় না!!
- আরে শাড়ি-গহনা-ফোন এইসব চাইলে তো ভালো ছিলো। সারাক্ষণ আবোল তাবোল কবিতা আওড়ায়। পাহাড়-নদী কি সব!! সারাক্ষণ আকাশ-বাতাস-সমুদ্র...ভাল লাগে এইসব। ভাবের কথা আর কাঁহাতক সহ্য করা যায়? জানিস তো আমি খুবই বাস্তববাদী লোক। মালটাকে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারে, আর ভাইবারেও ব্লক করে দিয়েছি।

ভাইয়ের মোহভঙ্গ হয়েছে। ভয়ে ভয়ে বললাম “ভাই একটা সমস্যা হয়ে গেছে যে...”
- কিসের সমস্যা? কয়েকদিন ঘ্যান ঘ্যান তো করবেই...এক কান দিয়ে ঢুকায়ে অন্য কান দিয়ে বের করে দিবি। কিছুদিন পরে আপনাআপনি ঘ্যানানি থেমে যাবে...হা হা হা!! এইসব রুটিন তো জানিসই...তুই হচ্ছিস আমার হেলপার!!
- ইয়ে মানে মণিকা বলছে সে নাকি প্রেগনান্ট!!

ভাই আধশোয়া থেকে সোজা হয়ে বসলেন “একদম বাজে কথা...এই মাগীতো দেখি বহুত বজ্জাত। কার না কার সাথে পেট বাঁধায়ে বাচ্চা আমার ঘাড়ে চাপাইতেছে...”
- তাকে কি বলবো ভাই?
- কি আবার বলবি? ঘ্যান ঘ্যান করলে মানা করে দিবি...
- কিন্ত ভাই...জানেনইতো এইসব ক্ষেত্রে মেয়েদেরই সবাই বিশ্বাস করে। আর আপনাদের যে একটা সম্পর্ক ছিলো সেটা অনেকেই জানে। ক্যাম্পাসে একটা বদনাম, কানাকানি হয়ে যাবে...আমি আপনার রেপুটেশনের কথা ভাবছি...

ভাইয়ের চেহারায় একটু দুশ্চিন্তার ছায়া পড়লো। “মহা ঝামেলা দেখি...তুই কোনভাবে ম্যানেজ কর প্লিজ!! টাকা দিচ্ছি...ওকে বল ক্লিনিকে গিয়ে বাচ্চাটা খসায়ে ফেলতে...আমার চেনা ডাক্তার আছে...

৪.
কাঁচের ওপাশে ব্যস্ত শহরে সন্ধ্যা নামছে। শেষ বিকেলের সোনালী আলোতে কঠিন শহরটা কেমন মায়াময়!! মণিকা এসে মুখোমুখি বসলো। জাম রঙের কামিজে আজ ওকে একটা জারুল ফুলের মতো দেখাচ্ছে…একটু বিষণ্ণ!!

এই প্রথম কোথাও একলা দেখা। ওর চোখের দিকে তাকাতেই পৃথিবী দুলে উঠলো। আজ মুখে একদমই রূপটান নেই…কিশোরী মুখ, সরলতা কোমলতা মাখা!! “মণিকা…কিছু খাবে? অর্ডার দেই…”

- নাহ!! কি জন্যে ডেকেছো বলো। বেশীক্ষণ থাকবো না…
- না মানে…ভাইকে বলেছি তোমার কথা…
- উনি নিশ্চয়ই সব অস্বীকার করেছেন?
- হুম্মম…তা করেছেন। আসলে বলতে চাইছিলাম যে তুমি এই ব্যাপারে যাই সিদ্ধান্ত নাও না কেন আমি পাশে আছি…
- তুমি পাশে আছো মানে কি?

মণিকার কন্ঠস্বর এমন শীতল!! মনে হলো টেবিলের ওপাশে একখন্ড বরফ বসে আছে। ওর চোখের দিকে তাকাতে সাহস হলো না। মাথা নীচু করে বললাম “তুমি যদি বাচ্চাটা না রাখতে চাও সাহায্য করতে পারি...ভালো ক্লিনিক জানা আছে...আর যদি বাচ্চাটা রাখতে চাও তবে...”

“তবে?” হাসির আভাস পেয়ে চোখ তুলে দেখলাম ঠোঁটের কোনে বিদ্রুপের ভাঁজ। “তবে কি সাহায্য করবে তুমি?”

- তাহলে আমি তোমাকে বিয়ে করে বাচ্চাটাকে স্বীকৃতি দিতে রাজী আছি...
- ওহহহ!! মহানুভবতা...
- নাহ মণিকা...আমি...আমি আসলে তোমাকে অনেক পছন্দ করি। পছন্দ করি বললে কম হয়...ভালোবাসি...
- তাই বুঝি? ভালোবাসার মানুষকে কেউ এভাবে আরেকটা অমানুষের কাছে ছেড়ে দেয়। দোকানে তোমাকে ভালো লেগেছিলো বলেই রাশেদের সাথে ক্যাফেতে গিয়েছিলাম। অথচ দেখলাম যে আমাকে এড়িয়ে চলছো। তারপরেও তোমাকে ভালো বন্ধু ভেবেছি। টের পেয়েছিলাম আমার প্রতি তোমার একটু ভালোলাগা আছে। হয়তো সে কারণেই রাশেদের ব্যাপারে নানা কানাঘুষো শোনার পরেও তোমাকেই বিশ্বাস করেছিলাম। কেন যেন মনে হয়েছিলো তুমি আমাকে মিথ্যে বলবে না...তোমাকে আমি বিশ্বাস করেছিলাম, তোমাকে, তোমার বন্ধুত্বকে, তোমার অনুচ্চারিত গোপন ভালোবাসাকে...

- মণিকা প্লিজ!! আমি দুঃখিত...
- তোমরা দুজনে যা করেছো, যা করো তাকে হয়তো কোন আইনে অপরাধ বলা যায় না, তবে কোন মানুষের অনুভূতি নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারো নেই। যাই হোক...তোমাকে আমার পাশে থাকতে হবে না...
- কিন্তু তোমার কি হবে এখন? বাচ্চাটা...

- আমি প্রেগন্যান্ট নই ফরহাদ। তোমাদের একটু শিক্ষা দেবার জন্য বলেছি। রাশেদ নিশ্চয়ই ব্রেকাপের আসল কারণটা তোমাকে বলেনি। তার সাথে শুতে চাইনি বলেই সম্পর্কটা ভেঙ্গে গিয়েছে।
তবে প্রেগন্যান্ট হলেও তোমাকে আমি বিয়ে করতাম না। মেরুদন্ডহীন একজন মানুষ…তেলাপোকার মতো বেঁচে থাকা তোমার। রাশেদ যা বলবে তুমি তাই করবে…এমনকি ওর হয়ে আমাকে মেসেজ লিখে দেয়া পর্যন্ত!! মেয়ে সাপ্লাইয়ের দালাল...আর যাই হই দালালের বউ কক্ষনো হবো না।
যাই হোক...আসছি। আশাকরি আর কখনো আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করবে না।

মণিকা চলে গেছে। আমি ক্যাপাচিনো আর পাসতা অর্ডার দিলাম। পকেট ভারী। ভাইকে স্ক্যান্ডেলের ভয় দেখিয়ে হাজার দশেক টাকা খসিয়ে নিয়েছি। ফিরে গিয়ে বাচ্চা ফেলতে রাজী হয়েছে বলে আরো কিছু মাল খসিয়ে নিতে হবে। হাতে টাকা থাকলে মেজাজটা ফুরফুরে থাকে। তবে আজ একটু বিষণ্ণ লাগছে।

ক্যাপাচিনো এসে গেছে। কফিতে চুমুক দিলাম। তেলাপোকার মতো আমাকে আরো অনেক বছর বেঁচে থাকতে হবে। দালালদের ভালোবাসতে নেই।

© শিখা রহমান
ছবিঋণঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:২৯
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×