বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর দীর্ঘ ৩৩ বছরে হত্যাকারীরা নানা সময়ে দেশে-বিদেশের গণমাধ্যমে দম্ভের সাথেই হত্যার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। ২০০০ সাল পর্যন্ত দেশি এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন কূটনৈতিক দপ্তরে তারা ছিলেন বেশ বহাল তবিয়তেই। ইতিহাসের নৃশংসতম এই হত্যাকাণ্ড বিচারের কাঠগড়ায় বারবার পড়েছে দীর্ঘসূত্রিতার বেড়াজালে। অথচ গণমাধ্যমেই রয়েছে তাদের নিজেদের মুখে হত্যার স্পষ্ট বয়ান।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্রগুলোকে বাধ্য করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে খবর পরিবেশন করতে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিকে সপরিবারে হত্যার ঘটনাকে কেবল 'নিহত' শব্দেই শেষ করে ক্ষান্ত হননি, ঘটনার পরদিনই খন্দকার মুশতাক আহমেদ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে হত্যাকারী সেনা-কর্মকর্তাদের ‘স্বর্ণদার উন্মোচনকারী’ হিসেবে অভিহিত করেন।
এসব কিছুই যেন রবার্ট ব্রাউনিংয়ের ‘দ্য প্যাট্রিয়ট’ কবিতায় বর্ণিত এক দেশপ্রেমিকের ট্রাজিক প্রস্থান।
১৯৭৬ সালের মার্চে নিজে স্বাক্ষর করে লন্ডনভিত্তিক পত্রিকা সানডে টাইমস-এ কর্ণেল ফারুক দম্ভের সঙ্গেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। লেখার শিরোনাম ছিল, “আমিই বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় সহায়তা করেছিলাম, সাহস থাকলে আমাকে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।”
আর কিভাবে হত্যা করেছেন টিভিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে তারও বর্ণনা দিয়েছেন।
কর্ণেল ফারুক বলেন, “অবশ্যই আমাদের প্রথম পছন্দ ছিল জেনারেল জিয়া কারণ সে অন্তঃত দাগী নয়। অনেক চেষ্টা তদ্বিরের পর ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় আমি তার সাথে দেখা করতে সক্ষম হয়েছিলাম। জেনারেল জিয়া বলেছিলেন, আমি একজন সিনিয়র অফিসার। আমি এ ধরনের কোনও কাজে জড়াতে পারি না। তোমরা, জুনিয়র অফিসাররা যদি কিছু করতে চাও— তাহলে এগিয়ে যাও। তারপর আমরা লনে গেলাম।”
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবারের মতো এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য মামলা করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
সে সময় তখন কর্ণেল ফারুক নির্দ্ধিধায় বলেন, হত্যার জন্য অনুতপ্ত নন তিনি। কর্ণেল ফারুকের মতোই আরেক খুনি কর্ণেল রশীদও বিদেশি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে হত্যার পরিকল্পনার বর্ণনা দেন।
কর্ণেল রশীদ বলেন, “আমি আগেই বলেছি, তিনি (বঙ্গবন্ধু) ভাল প্রশাসক ছিলেন না। কিন্তু তার একমাত্র গুণ ছিল তিনি সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করতে পারতেন। যেহেতু তিনি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তি, তাই তাকে বাঁচিয়ে রাখলে আমাদের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়তো।”
এরপরও আত্মস্বীকৃত খুনিরা দীর্ঘদিন পেয়ে গেছেন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো তাদের কূটনৈতিক মিশনে চাকরি দিয়েই নয়, একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদেও বসিয়েছিলেন তাদের কাউকে।
Courtesy by: Desh TV
I was ready to captrue the VDO from Desh tv but unfortunately it was not shown at late Night news. Dont know why Desh TV didnot repeat it???