somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে রাজনৈতিক ইসলামের উথ্থান ও বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুসলিম জনসংখ্য-প্রধান দেশগুলোতে বামপন্থি/ধর্মনিরপেক্ষপন্থি রাজনীতি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। পক্ষান্তরে রাজনৈতিক ইসলামের উথ্থান হচ্ছে, এবং খুব দ্রুততার সাথে হচ্ছে। ভাবলে অবাক লাগে যে আফগানিস্থান, ইরান, ইরাক, তুরস্ক এরা এক সময় সেকুলার রাষ্ট্র ছিল। বিশেষ করে কামাল আর্তাতুকের দেশ তুরস্কের এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন কিভাবে হলো? মিশরের কথা ধরেন, ইখওয়ানুল মুসলিমিন যা পরে ইসলামিক ব্রাদারহুড নামে আত্মপ্রকাশ করে এর নেতা ইমাম শহিদ সহ প্রায় সকল নেতাকেই ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়। এরপরও এরা টিকে আছে পুরো শক্তি নিয়েই।

এই যে বাংলাদেশে বিএনপির পেছনে পুরো পশ্চিমা শক্তি দাঁড়িয়েছে এর মুল কারণ রাজনৈতিক ইসলামের উথ্থানের ভয়। যদিও বিএনপি ইসলামিক দলগুলোকে নিয়ে রাজনীতি করছে তবু মন্দের ভালো হিসেবে এ্টাই বেটার পলিসি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে যদি এভাবে ভাগ করেন যেখানে একপক্ষ হলো আওয়ামী লীগ অনপক্ষে এন্টি আওয়ামী লীগ। সেইখানে বিএনপি না থাকলে ইসলামিক দলগুলোই প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবে।

তাহলে ভারত কেন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়?
ভারত একবার বলেছিলো বাংলাদেশের ২৫% মানুষ জামায়াতের সদস্য ( হাস্যকর)। নিজের দেশে বিজেপির উথ্থান নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নাই। যতো মাথা ব্যাথা বাংলাদেশ নিয়ে যে এদেশের সব মানুষ জংগি হয়ে গেছে। আসল কারণ অবশ্যই তার নিজের স্বার্থ । বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে এরা বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের তৈরি পোষাকের বাজার দখল করতে চায়। তাছাড়া নতুন সাম্রাজ্যবাদি দেশ হিসেবে নিজের শক্তিমত্তা দুর্বল প্রতিবেশির উপর প্রয়োগ করে নিজের শক্তি পরীক্ষা করতে চাইছে। ভারতের চোখে বাংলাদেশকে দেখার জন্য আমেরিকার প্রতি আহবান এটাই প্রমাণ করে। বাংলাদেশকে ভারত সিকিম বানাতে চাইবে বলে মনে হয় না। বরং ‘কারজাই’ ধরনের সরকার যেটা শেখ হাসিনার সরকার হতে চলেছে এটাই ভারতের জন্য মন্দের ভালো।

শেখ হাসিনার সরকার ও তার সমর্থকরা ‘ওয়ার অন টেরর’ নামক যে অনন্ত যুদ্ধ বাংলাদেশে শুরু করেছে এটা আমেরিকা কতৃক প্রয়োগকৃত মুসলিম দেশগুলোতে ব্যর্থ পদ্ধতি। শুধুমাত্র ভারতের সমর্থন নিয়ে এটা সফল হবে না। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ট জনগণ আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এইটা একটা বড় ফ্যাক্টর। মানে জনসমর্থন।

কথা হচ্ছিলো রাজনৈতিক ইসলামের উথ্থান নিয়ে।
একবিংশ শতাব্দিতে এসে দেশে দেশে রাজনৈতিক ইসলামের এই বিকাশ অবশ্যই একটা বড় ঘটনা। বিভিন্ন মতাদর্শিক বিরোধের মধ্য দিয়ে এই পৃথিবীতে সে নতুন শক্তি নিয়ে হাজির হতে চাইছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। প্রগতিশীলতার নাম করে কিছু মানুষের ধর্মকে আঘাত করা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ধর্মকে নিয়ে ক্ষমতাসীনদের টানাহেঁচড়া কিংবা আর্দশিকভাবে মোকাবেলা না করে ওয়ার অন টেররের নাম করে ধর্মকে নিশ্চিহ্ন করার মানসিকতাই ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে একতাবদ্ধ হবার সুযোগ সৃষ্টি করে। তাছাড়া, তথাকথিত প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবি এবং এর সমর্থকরা যেহেতু ধর্মকে ঘৃণার চোখে দেখে থাকে ফলে এ বিষয় নিয়ে এদের জ্ঞানও শূণ্যের কোটায়। এজন্যই দেখা যায় গালিগালাজ, কটুক্তিতে পরিপূর্ণ চটি লেখা ছাড়া আর কিছুই এরা পারে না। সামপ্রতিক বাংলাদেশে হেফাজতের উথ্থান এদের কারণেই হয়েছে।

সেকুলারিজম ও চেতনার নাম করে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে অনেক বড় বড় দূর্নীতি করেছে। হত্যা গুমসহ রাজনৈতিক হত্যাকান্ড সংগঠিত করেছে। ইচ্ছে করেই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট করেছে। এগুলো করেছে তার একনায়ক মনোবাসনাকে চরিতার্থ করতে। সেই অর্থে বিরোধী দল এর অর্থবহ প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করতে পারে নি। এটাই সবচেয়ে বড় বিপদের কারণ। একটা উন্মত্ত পাগলা হাতিকে কেউ থামাতে পারছেনা।

ইসলামি দলগুলো তার মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে বলা যায় এক হয়েছে। অনেকেই জানেন যে, হেফাজত ও জামায়াতের মধ্যে আর্দশিক বিরোধ এত প্রকট যে একে সাপে নেওলের সাথে তুলনা করা যায়। অথচ এরাও এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে । এটা একটা ইঙ্গিত মাত্র। সামনের দিনগুলোতে এই মেরুকরন আরও স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হবে।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×