somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাজিদ ঢাকা
পড়াশোনা কোন রকমে শেষ , , এখন আমি কর্পোরেট __ > সামুতে কেবল ভ্রমণ ব্লগ লিখি , না আসলে লিখতাম আবার লিখা শুরু করবো , , , শার্ট টাইয়ের নিছে বৈরাগী মনটা এখনও জীবিত আছে তাই মাঝে মাঝে সব কিছু তুচ্ছ করে বেড়িয়ে যাই বাংলার পথে থে থে থে থে থে

বাংলার পথে(পর্ব ২১) -- মেঘনার বুকে "মায়া দ্বীপ" ভায়া বারদী - বৈদ্দের বাজার হয়ে মুগড়াপাড়া

১২ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভ্রমণ বাংলাদেশের সাথে ট্যুরে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সাধ ও সুযোগের সমন্বয় এই প্রথমই । ফেবু গ্রুপ থেকেই জানতে পারলাম ট্যুরের বিস্তারিত।
সময় মতো ভোর ৬ টায় হাজির হলাম হকি স্টেডিয়ামের গেটে। এর আগে - - ;) ঘুম থেকে উঠে দ্বিধাদণ্ডে ছিলাম যাব কিনা , , প্রথমত কাওকেই চিনি না , যদিও এরকম অনেক অভিজ্ঞতা আগেও ছিল , মনের সাথে অনেক যুদ্ধ করে , , জয় বাংলা বলতে বলতে চলেই গেলুম :P
গেটের সামনে কিছু মানুষ যাদের প্রস্তুতি দেখেই বোঝা যায় , তারাই ভ্রমণ বাংলাদেশের দল । একে একে পরিচিত হলাম (সৌদ বজলু রুবেল মনা তারেক বকর ফারুক সামিম বদী চন্দন ) ভাই ও প্রেসিডেন্ট টুটুল ভাই ও তার ভাতিজা । সৌদও সামিম ভাইয়ের বউ ও ছিল।
তারা সকলেই একে অপরের সাথে পূর্বপরিচিত হলেও আমি পুরাই নতুন তাই বাঁদরামি একদমই করি নাই , ,;) পাকনামি তো নাই ই ই ই, ,আর টুটুল ভাইকে ভয় ভয় লাগলো কারণ উনি আমার চেয়ে কয়েকগুণ বেশ দুষ্ট B-)B-) তবে উনি একটা অস্থির মানুষ B-)

গুলিস্তানের নবাবপুরের ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে বারদীর বাসে উঠলাম। ভাড়া সম্ভব ৩৫ টাকা। বাসটি বলাকার ক্লোন , সিট পুরাই মার্কা মারা। দেড় ঘণ্টার মতো সময় লাগলো বারদী বাজার পৌঁছাতে । সিট না থাকায় পুরো পথই প্রায় বকর ভাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাস থকে নেমে একটু হাঁটলেই মন্দিরের কাছে গিয়ে নাস্তা সারতে বসলাম। পূজার মৌসুম , , সকাল সকাল সবাই হাজির , , হৈ হাই , ধাক ঢোল , নাচ গান। এক্সপেনসিভ (১০ টাকা পরটা) নাস্তা সেরে মন্দিরে গেলুম , , ভিতরে নাচানাচি হচ্ছিল , , ইচ্ছা থাকলেও করলাম না ;) মন্দিরে এক জায়গায় দেখলাম সবাই গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কাছে গিয়ে দেখলাম এক মহিলা প্রায় মৃত্যু পথ যাত্রী , , পাপ মুক্তির জন্য কয়েকদিন ধরে এখানে শুয়ে আছে :|/:)কিছু ফটু দেখুন


মন্দির থেকে আবার আমাদের হাঁটা শুরু । বৈদ্দের বাজার যাব ।
ঠাস ঠাস ঠাস , , , জয় বাংলা হাঁটা দাও ।
প্রথমে গেলাম কাছেই জ্যোতি বসুর বাড়ি দেখতে । বাড়ির অবস্থা বড়ই খারাপ । কিছুই নাই ভিতরে , , ,



আমাদের একটা গ্রুপ ফটু


এবার হাঁটার পালা শুরু , , জ্যোতি বসুর বাড়ি দেখে এবার বারদী হয়ে মেঘনার পার ধরে হাঁটা । চারপাশে সবুজ আর পানি। খুব বেশি পানি না । হাঁটু সমান , জেলেরা মাছ ধরছে। আর প্রচণ্ড বাতাশ । আমরা দল বেধে হাঁটছি । কেও আবার ছবি তুলছে , কেও জিরিয়ে নিচ্ছে। সোজা রাস্তা , অনেকক্ষণ পর তারেক ভাই বলাতে বুঝতে পারলাম এই রাস্তাটা বানানো হয়েছে বাধের উপর। এত সুন্দর যে আপনি বুজতেই পারবেন না এটা বাধ ;)


পরিত্যাক্ত মন্দির


হঠাৎ টিপটিপ বৃষ্টি। মেঘনার বাতাসের সাথে বর্ষাধারা । চায়ের দোকানে আমরা আশ্রয় নিলাম ,,, সামনেই একটা ব্রিজ , নিজে বেশি পানি নেই ১০ ফিট এর মতো , গ্রামের ছোট ছোট ছেলেরা ব্রিজের উপর থেকে লাফ দিয়ে অস্থির মজা পাচ্ছে। আমরাও বা কেন এই মজা থেকে বঞ্চিত হবো , (তারেক বকর ফারুক আর সউদ ) ভাই কোন কথা নেই , , আগে লাফ B-) সউদ ভাই লাফ দেয়ার পর জানতে পারলাম উনি সাঁতার জানেন না ;) প্রথম ডুবের পর মাথা উপরে তুলে যখন তাকালেন , বোঝা যাচ্ছে পানি খেয়েছেন পেট পুড়ে । বৃষ্টি একটু থামলে চা খেয়ে আবার হাঁটা শুরু করলাম , , কিছুক্ষন পর পৌঁছে গেলুম বৈদ্দের বাজার । এখানেই বেস ক্যাম্প ।


পাশেই মেঘনা নদীর একটি শাখা , এখন পানি কম । আমরা একটা ভাতের হোটেলে সবাই ঢুকে ব্যাগ রেখে কাপড় বদলালাম চা সিঙ্গারা খেলুম :P । নদীতে গসুল কইরাম :P গত বছর এই সময় পদ্মাতে গসুল করতে ভাগ্যকুল গিয়েছিলাম।
পানিতে আমরা লাইন ধরে , ,


ছবি ক্রেডিট - সামিম ভাই
বুক সমান পানি , পানিতে নামার মজাই আলাদা যদিও স্রোত ছিল না। তারপর ও আলাদা একটা শান্তি আছে। বেশ কিছুক্ষন দাপ্রাদাপ্রি করে উঠে গেলাম । জুম্মা বার , নামায আছে । তাড়াতাড়ি কাপড় বদলে মসজিদের খোঁজে বের হলাম , , হোটেল গুলোর মতই পানির উপরে মসজিদ। আর অজু করতে হয় মসজিদের নিচে :P:P
এবার খাবার পালা , , খিদা ভালই লেগেছিল । মেঘনার পারে , , ইলিশের আকাল না হলেও পর্যাপ্ত না , , তাই ইলিশের পরিপূরক হিসেবে রুই মাছটা ছিল অসাধারণ । সাথে ডাল ভাজি , ছোট মাছ । প্রচণ্ড খিদা আর সব কিছু তাজা হওয়ার জন্য অত্যন্ত তৃপ্তি নিয়ে খেলাম।খাওয়ার পর দীর্ঘদিনের অভ্যাস ঝিমানো , , উফ ফ ঘুম ঘুম ভাব , , মনে হচ্ছে থাক :P:P

এবার ট্রলার ভ্রমণ । মেঘনার বুকে শীতল বাতাসে ট্রলারে ঘুরা।যদিও সূর্যের তাপ এখনও আছে কিন্তু উত্তেজনার কাছে তা অনুভূত হচ্ছে না। মেঘনার বুকে ১০-১২ বছর হয়েছে একটা নতুন দ্বীপ জেগেছে নাম " মায়া দ্বীপ" - - স্থানীয়দের দেয়া নাম । সেই দ্বীপের উদ্দেশ্যেই আমাদের যাত্রা ।


রুবেল ও বজলু ভাই , , সেই কি ঘুম , , ইচ্ছে হচ্ছিল একটু পানি মারি :P


বাতাস খেতে খেতে অবশেষে , , মায়া দ্বীপ - -


দ্বীপটা বেশি একটা বড় না , সবুজ আর সবুজ । সাথে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। অসাধারণ এক বিকেল । ধান ক্ষেতের মাঝে মাঝে হাটতে বেশ মজাই লাগছিল । ফারুক আর রুবেল ভাইয়ের ফটোসেশন চলছে । মাটির ডিবির উপর কিছুক্ষন বসে রইলাম।
তবে এর নাম মায়া দ্বীপ কেন হল বুজতে পারলাম না । তেমন কোন মায়া জাগেনি আবার যাওয়া জন্য তবে , , হ্যাঁ , , কাম্পিং করার জন্য বেশ ভালো একটি জায়গা তবে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ।

শেষ বিকেলের দিকে এবার ফেরার পালা। সূর্য প্রায় ডুবে যাচ্ছে , মেঘার বুকে এক অপরূপ দৃশ্য ।



ফিরে এলাম আবার বৈদ্দের বাজার । আবার একটু হালকা চা পানি খেয়ে হাঁটার কথা থাকলেও ফিরতে দেরী হয়ে যাবে তাই সিএনজি ভাড়া করেই রউনা দিলাম মুগরাপাড়া। ২.৫ কিমি পরেই মুগরাপাড়া। এতক্ষণ পরে বুজতে পারলাম আসলে আমি কই । সোনারগাঁ লোক শিল্প জাদুঘরে যাওয়ার পথেই হল এই মুগরাপাড়া।
বাসে উঠে শরীরটা এলিয়ে দিয়ে একটু চোখটা লেগে আসতেই দেখি , , বাসের ফ্যান চলছে , অর্থাৎ বাস থেমেছে। দিন শেষে অনাবিল আনন্দ শেষে , ক্লান্ত শরীরে হয়তো এই বাঁশটা খাওয়াই বাকি ছিল - বাসের চাকা নষ্ট। প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে বাস থেকে নামলাম ও অবশেষে সন্ধ্যার পরে গুলিস্থান এসে নামলাম।
শেষের বিচ্ছিন্ন ঘটনাটা ছাড়া ১০ কিমি হাঁটার সুন্দর একটি দিন গিয়েছিল। নতুন কিছু মানুষের সাথে পরিচিত হয়েছি , , যারা একজনের চেয়ে একজন অস্থির। তবে মজার ব্যাপার হল বাসায় এসে বুজতে পারলাম "তারেক ভাই" হল সেই তারেক ওবায়দা ভাই , , যার রাতারগুল অভিযান পরে যোগাযোগের চেষ্টা করছিলাম তার সাথে ।

*বানান ভুল ও গুরুচণ্ডালী দোষ মার্জনা করবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৫৮
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×