somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাজিদ ঢাকা
পড়াশোনা কোন রকমে শেষ , , এখন আমি কর্পোরেট __ > সামুতে কেবল ভ্রমণ ব্লগ লিখি , না আসলে লিখতাম আবার লিখা শুরু করবো , , , শার্ট টাইয়ের নিছে বৈরাগী মনটা এখনও জীবিত আছে তাই মাঝে মাঝে সব কিছু তুচ্ছ করে বেড়িয়ে যাই বাংলার পথে থে থে থে থে থে

বাংলার পথে(পর্ব ২৩) -- কুয়াকাটা ভ্রমণ (২) সূর্যোদয় , মিশ্রী পাড়া বৌদ্ধ মন্দির , রাখাইন পল্লী।

০৯ ই আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলার পথে(পর্ব ২২) -- কুয়াকাটা ভ্রমণ (১) কিভাবে যাবেন সাথে থাকা ও খাওয়া।

রাত ৮ টায় অবশেষে , প্রায় ১৪ ঘণ্টার জার্নি শেষে নামলাম , কুয়াকাটা । :P , , হোটেল খোজার পালা , কয়েকটা দেখলাম , ভাড়া ৭০০-৮০০ , ডবল বেড নন এসি। কিন্তু এগুলান বীচ থেকে দূরে তাই সামনের দিকে আগালাম । সমুদ্রের কাছে হোটেল হলে রাতের বেলা বারান্দায় বাতাস পাবেন আর সমুদ্রের আওয়াজ ও পাবেন । পর্যটনের সুন্দর একটা হোটেল আছে তবে দাম বেশি । প্রায় ভালো সব গুলো ঘুরে , শেষে গেলাম হোটেল গ্রেভার ইন , , , অনেক ক্যাঁচাক্যাচি , তেল মাখন মারার পর ৮০০ টাকা করে ঠিক করলাম । নতুন হোটেল , রুম ও অস্থির ।


শান্তিতে বিছানায় লাফ দিলাম , , ক্লান্তিতে ঘুম আসছে । নতুন জায়গায় এলাম বাঁদরামি না করলে হয় , , তাড়াতাড়ি গসুল করে বেড়িয়ে পড়লাম ।
খিদা ও লেগেছিল সেই রকম । খাবারের বেশি ভালো হোটেল দেখলাম না । বসলাম একটাতে । কোরাল মাছ দিয়ে ভাত , খেলাম তো মজা করেই , কিন্তু আরও মজা পেলুম বিল দিতে গিয়ে ১২০ টাকা করে কোরাল , , বিল প্রায় ৩৬০ , ২ জনে । দাম না জিজ্ঞাসা করে খেলে জা হয় আর কি X(X(:((

খাওয়া শেষ , পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি । এবার চলো , সমুদ্র আর কি কি আছে দেখি :P
রাত ১০ টার দিক , বাইক ভাড়া করতে গেলাম , , রাস্তা ঘাটে অনেক বাইক ওয়ালা , ফুচকা খেতে খেতে একটার সাথে কথা হল , , , সে আমাদের সাথে কাল থাকবে , , দর্শনীয় স্পট গুলান দেখাবে । ৫০০ টাকা প্রতি বাইক , ১ টি বাইকে চালক ছাড়া ২ জন বসতে পারবেন ।
আমি তো মাসাল্লাহ , আর আনুপ তো দানব । এক বাইকে ২ জন :P:P
রাত ১১ টা , , আপন মনে , ছন্দে আনন্দে হোটেল ফিরছি , , রাস্তায় মানুষ একটু কম । ২ মাতালের পাল্লায় পড়লাম । প্রথমেই ডাক দিল আমাকে , আমি দিল খোলা মানুষ , কুলাঙ্গার টাকে চিনতে পারি নাই , , হাবিজাবি প্যাঁচাল , ছিনতাই এর উদ্দেশ্য , এর পর দানবীয় অনুপের আগমন , , এবং রক্ষা পেলাম :Dমাতাল ভাইয়েদের একজন নাকি গোলাম মাওলানা রনির শালা ;);)
ভোর ৪:৩০ - সূর্যোদয় দেখা
এত ভোরে বাইক হাজির , বের হয়ে গেলাম বাইকে করে । ভাবছিলাম এত সকাল , ভুল রাত এখনও । কোন বিপদে যে পড়ি । কিন্তু বীচের কাছে যেতেই বুজলাম , এইখানে সবাই ই এই সময়েই উঠে যায় । বাইক নিয়ে অনেকেই রেডি , গন্তব্য বীচের পূর্ব প্রান্ত ।

এই হালকা আলোর মধ্যে দিয়েই বাইকে আমরা ৩ জন । বালি বেশ ভালই শক্ত । বালি দেবে যাচ্ছে না । সূর্যের কোন খবর নাই । সূর্যের মোবাইল ও নাই ফোন দিতাম ।

একবারে পূর্বে চলে এসেছি । এখানেই গঙ্গা মতির চর । খালি জঙ্গল , কাজের কিছুই নাই । এই ভোর বেলাতেই জেলেরা বেড়িয়ে গেছে মাছ ধরতে ।
ধীরে ধীরে ফর্সা হচ্ছে , কিন্তু সূর্য দেখা যাচ্ছে না।

মাঝে একটা ছোট খালের মতো , নৌকা দিয়ে বাইক পার করলাম ।

জেলের সাময়িক বাড়ি

পূর্ব প্রান্তে এসে দাঁড়িয়ে আছি। সূর্যের খবর নাই , মেঘে আকাশ ঢাকা । মাঝে একবার বৃষ্টি ও নামলো , কিন্তু হায় য় য় য় য় /:)
সমুদ্রের পারে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে , সূর্যের অপেক্ষায় ।


অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে এবার বিরক্ত লাগছে । খুবই বিরক্ত । সূর্য তুই মুড়ি খা , ,
জি হ্যাঁ ----- ইহা বাস্তব , দেশি টাইটানিকের উপর আনুপ

রউনা দিলাম মিশ্রী পাড়ার উদ্দেশে , , পথে দেখেন এইটা কি X((


সূর্য উইঠে গেছে , ,কিন্তু অনেক উপরে । সূর্যোদয় দেখায় মূল সৌন্দর্য হল , সমুদ্রর বুক থেকে আসতে আসতে উঠার দৃশ্য । কিন্তু ইহা আর দেখা হইল না ।
মিশ্রী পাড়া বৌদ্ধ মন্দির:
সমুদ্র সৈকত থেকে ৮ কিমি পূর্বে , মিশ্রী পাড়া - রাখাইনদের আবাসস্থল। বাইক নিয়ে রউনা দিলাম । ৬ :৩০ এ আমরা মিশ্রী পাড়া বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে । কিন্তু মন্দির বন্ধ। কি করা যায় , , , আসে পাশে কেও নেই , , কিছু দূরে দেখলাম বৌদ্ধ ছোট পোলাপান । মাথা চান্দি , এত টুকুন পোলা সেই কি ভাব , , , এখন নাকি খোলা যাবে না । অনেক আকুতি মিনুতি করলাম , , কিন্তু বদ গুলান :-*:-*
এখানেই রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি

কি আর করার , নাসতা করা দরকার ,
এই যে আমাদের পাইলট - - পোলা খুবভালো যদিও প্রথমে সন্দেহ করসিলাম ।

নাস্তা শেরে ডাব ও খেলুম । ইতিমধ্যে আরও ২ জন ভিজিটর আসলো। বাপ আর পোলা । ২ জন ২ টা বাইকে B-)B-)
এবার চান্দি গেট খুলতে বাধ্য । অতিমাত্রায় ভদ্র হয়ে ভিতরে গেলাম , , কারন স্বর্ণ মন্দিরে এই বৌদ্ধ ভিক্ষু দের দাবড়ানির কথা মনে ছিল :Pআর এবার ফুল প্যান্ট পরেই আসছি।
এই হইল সেই মূর্তি

বহুত উঁচা কই জানি পড়ছিলাম ৩৬ ফুট মনে হয় ।
মন্দির দেখিয়া ১০ টাকা সাহায্য দিলাম । আরও বেশি দিতে গেসিলাম , , কিন্তু হামরার পাইলট সাব মানা করিল , , ঐ চান্দি নাকি একটা বেয়াদব , , তাই বেশি যেন না দেই ।

রাখাইন পল্লী
পাশেই রাখাইনদের বাড়ি , পাইলট লইয়া গেল । হাঁটিয়া হাঁটিয়া দেখলুম । বাড়ি গুলান , মাটি থেকে উপরে ।
আরাকান রাজ্য থেকে বিতারিত হয়ে আসা রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের রাজা মং এর নেতৃত্বে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রথমে চট্রগ্রাম এবং পরে পটুয়াখালীর এ জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় তাদের বসতি স্থাপন করে। নিজস্ব ঐতিহ্য ও কৃষ্টে গড়ে তোলে নিজেদের আবাসস্থল। তৎকালীন সরকার রাখাইন সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওই সময় ৩ একর এবং তাদের নিজস্ব পল্লীব জন্যে ১২ একর করে সম্পত্তি প্রদান করেন। এখনও তাদের ঐতিহ্যবাহী কলাপাড়ায় বিদ্যমান আছে।
ডিজিটাল বাড়ি , আগে বাড়ি মাচার উপর হইত , , অহন এগুলান পাক্কা । মানে দেখলে মনে হয় মাটির নিচের পাইলিং উপরে উইঠা আসছে :P
তাঁতে কাপড়বুনা হচ্ছে , , বহুত দাম । দাম শুইনা মনে হইল চামড়ার ব্যাগ ও এর থেকে দাম কম । মনে মনে কইলাম , আমি খালি পারি না দেইখা কাপড় বুনতে :)

এই সব আজাইরা কাজ কাম করতে করতে এবার বাইকে , , এবার যাব ঝাপাঝাপি করতে , , নন্দন পার্ক , সমুদ্রে :P


সৈকতে কিছু পোলাপান ছবি তোলার জন্য পাগল কইরা ফেলল । সেমি ডেসলার কামরা , , , , ২০ টাকা কইরা প্রিন্ট ।
আর ৫ টাকা কইরা যদি পেনড্রাইভে নেন ।
এবার কিছু সেমি ডেসলার এ তোলা ফটু

জেলেরা এভাবে গুরা চিংড়ি খুঁজে , , আমরাও হাত লাগালাম। দেইখা যত সস্তা মনে হইতেসে , করতে গেলে ঠেলা আছে। ঢেউ এর বাড়িতে এক জায়গায় থাকা যায় না।

এই যে আমাদের কেমরা ম্যান , , অনুপ পোজ দিসে , আর আমি ডিজিটাল দিয়া মজা লইলাম ।


মাত্র সকাল ৯ টা , , , বাকি আছে আরও অনেক দর্শনীয় জায়গা- - সেই বিখ্যাত কুয়া , সিমা মন্দির , ক্রাব আইল্যান্ড , শুটকি পল্লী , সাবের হোসেন চৌধুরীর অস্থির রিসোর্ট।
সাথে থাকুন

* বানান ভুল ও গুরুচণ্ডালী দোষ ক্ষমা করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৪০
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×