somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাজিদ ঢাকা
পড়াশোনা কোন রকমে শেষ , , এখন আমি কর্পোরেট __ > সামুতে কেবল ভ্রমণ ব্লগ লিখি , না আসলে লিখতাম আবার লিখা শুরু করবো , , , শার্ট টাইয়ের নিছে বৈরাগী মনটা এখনও জীবিত আছে তাই মাঝে মাঝে সব কিছু তুচ্ছ করে বেড়িয়ে যাই বাংলার পথে থে থে থে থে থে

বাংলার পথে (পর্ব ৩১) -- মানিকগঞ্জ (০১) বালিয়াটী জমিদার বাড়ি

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হঠাৎ করেই চলে গেলাম মানিকগঞ্জ । সকালবেলা উঠে সোজা গুলিস্থান এর পর আ হাহ ! ! বালিয়াটী ।
মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটী গ্রামে এই জমিদার বাড়ি । ১৭৯০ সালে চার ভাইয়ের মাধ্যমে এই বালিয়াটী জমিদার বাড়ির গোঁড়া পত্তন হয়। কালের সাক্ষি হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে আছে।

যেভাবে স্থাপিত হলো
নিম্নবিত্ত সাহা পরিবার থেকেই বালিয়াটী জমিদার বংশের উদ্ভব। মহেশরাম সাহা নামে জনৈক বৈশ্য বারেন্দ্র শ্রেণীর ছোট্ট এক কিশোর ভাগ্য অন্বেষণে বালিয়াটীতে আসে এবং জনৈক পান ব্যবসায়ীর বাড়িতে চাকরি নেয়। পরে মহেশরামের ছেলে গণেশ রাম লবণের ব্যবসায় উন্নতি করেন। গণেশ রামের চার ছেলের মধ্যে একজন হলো গোবিন্দরাম। তিনি বিয়ে করেন বালিয়াটীতে। তার ঘরে জন্ম নেয় চার ছেলে। যথাক্রমে আনন্দরাম, দধিরাম, পণ্ডিতরাম ও গোপালরাম। এই চার ভাইয়ের পৃথক ব্যবসা ছিল। ওই চার ভাই থেকেই বালিয়াটী গোলাবাড়ী, পূর্ববাড়ী, পশ্চিমবাড়ী, মধ্যবাড়ী ও উত্তরবাড়ী নামে পাঁচটি জমিদার বাড়ির সৃষ্টি হয়।

কিভাবে যাবেন :
গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে জনসেবা পরিবহন এ করে সাটুরিয়া সরাসরি নামতে পারেন । আর এই দিকে যারা থাকেন তারা গুলিস্থানের ফুলবাড়িয়া থেকে বিআরটিসিতে করে আরিচাগামী বাসে উঠে মানিকগঞ্জের কালামপুর বাসস্ট্যান্ড নামবেন , সেখান থেকে সাটুরিয়া লোকাল বাসে যেতে হবে। সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড নেমে রিক্সা বা হেঁটেই চলে যেতে পারেন জমিদার বাড়ি ।
বিআরটিসি বাস ভাড়া ৯০ টাকা , যেতে সময় লাগবে ২ ঘণ্টার বেশি ।

ভ্রমন বৃত্তান্ত ও হালকা ইতিহাস :
বিআরটিসি এর সেই পুরাতন লাল বাস গুলোতে ছড়ে নামলাম কালামপুর বাস স্ট্যান্ড । বাস চলে গেল সোজা আর আমার গন্তব্য ডানের রাস্তা । নামতেই চোখে পড়লো জনসেবার বাস , কিন্তু লোকাল বিসমিল্লাহ্‌ বলে সওয়ার হইলাম , বাসের মানুষজন বেশ ভদ্রই তবে এখানে মনে হয় মহিলারা দাঁড়িয়ে থাকলে কেও বসতে দেয় না , লোকাল বাস আর অনেক মহিলা দাঁড়িয়ে একটু ঝামেলাই হচ্ছিল। যাই হোক হেল্পার মামা নামাইয়া দিয়ে বলল ডান দিকে হাটা দেন , হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ ই ই ই খেয়াল হল বিরাট বাড়ি অনেক গুলান , , একসাথে ৪ টি জমিদার বাড়ি এই প্রথম দেখলাম ।

কালামপুর বাস স্ট্যান্ড

সাটুরিয়া বাস স্ট্যান্ড

প্রধান ফটকের উপর সিংহ

বাইরে থেকে অসাধারণ সৌন্দর্য

খোলা বন্ধের সময়সূচী


জমিদারবাড়ীর সিংহ দরজায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে প্রশস্ত আঙ্গিনা। একই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে চারটি বহুতল ভবন। এগুলোর পেছনে জমিদার অন্দরমহল এবং রয়েছে বিরাট পুকুর ৬ টি ঘাটসহ




গোলাবাড়ীর চত্বরে দোল পূর্ণিমার ১২ দিন পর বারুণীর মেলা বসত। সেই মেলা এখন বসে বালিয়াটীর পুরনো বাজারে। এ বাড়ীর জমিদাররা ছিলেন ধর্মপ্রাণ। বাড়ীর মন্দিরে বিগ্রহের পূজা হতো কিন্তু ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ওই বিগ্রহ এবং গোলাবাড়ী পাকিস্তানী সৈন্য এবং রাজাকাররা লুটপাট করে


দধিরাম পশ্চিমবাড়ীর জমিদারদের পূর্ব-পুরুষ। এই বাড়ীর জমিদাররা বাণিজ্যকেন্দ্র সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ঝালকাঠী, নলছিটি প্রভৃতি স্থানে লবণ, সুপারী, চাল ইত্যাদি ব্যবসার মাধ্যমে অনেক অর্থের মালিক হন। এদের ঐশ্বর্য বেড়ে উঠলে তারা জমিদারী ও তালুকাদারী কিনতে শুরু করেন। এই বাড়ীর জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় বিখ্যাত জগন্নাথ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। প্রথমে এটি ছিল স্কুল। বর্তমানে এটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। কলেজে উন্নীত হওয়ার সময় স্কুল শাখা আলাদা হয়। সেটি এখন কে এল জুবিলী হাইস্কুল নামে স্বমহিমায় উজ্জ্বল।

ভেতরের অন্দর মহল

পিছনে পুকুরে যাওয়ার রাস্তা

পূর্ববাড়ীর প্রথম জমিদার পুরুষ রায়চাঁন। তিনি দুটি বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের সম্পত্তির দশ আনা অংশ এবং দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সন্তানদের দান করেন ছয় আনা অংশ। দশ আনির জমিদারবাড়িটিই বর্তমানে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এ বাড়িটি ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর অধিগ্রহণ করে এবং এখনো এর সংস্কার কাজ চলছে। এ বাড়িটি বালিয়াটী প্রাসাদ নামে পরিচিত। এখানে পশ্চিম থেকে পূর্ব পর্যন্ত চারটি সুবৃহৎ অট্টালিকা বিদ্যমান। এগুলো বড় তরফ, মেজ তরফ, নয়া তরফ এবং ছোট তরফ নামে পরিচিত।













পুরোটা দেখার পর মনে হলো , জমিদার হইলে ইরাম বাড়িই বানানো উচিত , সেই রকম পুরাই । তবে ভারতে মোঘলদের স্থাপনার কথাই আলাদা।

জমিদার বাড়ি দেখার পর আর কিছু জায়গা রয়েছে এই সাটুরিয়াতে , রিক্সা করে বের হওয়ার আগে পিছলে পরে গিয়ে প্যান্টের যে দশা হয়েছিলতা পরিস্কার করা জরুরী মনে হল :P:P

>> সকল তথ্য সংগৃহীত নেট হতে ।
>> বানান ভুল ও গুরুচণ্ডালী দোষ মার্জনা করবেন ।

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন , , রেখে আসবেন পদচিহ্ন আর নিয়ে আসবেন শুধুই ফটোগ্রাফ।
=============================================
সাজিদ ঢাকা'র ভ্রমণ পোস্ট সংকলন
=============================================
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×