My dear moon shine,
পত্রের শুরুতে কোন প্রকার শুভেচ্ছা জানচ্ছিনা, কারণ জানি এই চিঠি তোমার কোনদিনই পড়া হবে না। কতদিন পর লিখতে বসেছি জানো? তুমি জানবেই বা কি করে আমারই তো হিসেব নেই। এখন ভীষণ ব্যাস্ত হয়ে গিয়েছি মুন আগের মত লিখতে বসা হয় না। জানও মুন অনেক ছোটবেলা থেকে যখন পড়তে শিখেছি তখনই লেখার ইচ্ছে হয়েছিল!ফেইসবুকে কত আগ্রহ নিয়েই না লিখতাম! আচ্ছা সেগুলো কি খুবই অখাদ্য হত? তাহলে কেনই বা তুমি হঠাৎ একদিন ইনবক্সে এসে বললে,"আপনার লেখাগুলো খুব ভাল হয়"
জানো মুন, আমি না হুমায়ূন আহমেদের প্রচুর বই পড়েছি,তাকে অনুকরণ করার চেষ্টা করতাম, আজকের চিঠিতেও তার লেখার প্রভাব ছিল। তুমি কি জানো, আমি না ভীষণ দুর্বল হৃদয়ের মানুষ! যখন স্ট্যাটাস দিতাম না তখন বুক কেমন জানি করত , কয়টা লাইক পরবে এই চিন্তায়! খুব হাস্যকর না মুন? আচ্ছা তুমি যে আমার স্ট্যাটাসের কমেন্টে একবার লিখেছিলে, "পড়ে প্রচন্ড হাসলাম" সত্যিই কি তুমি হেসেছিলে?
আমি না প্রতিদিন প্রচুর লেখা পড়তাম, বাস্তবে প্রতিটি মজার ঘটনা লিখে রাখতাম স্ট্যাটাস দিব বলে। পাগলামী মনে হচ্ছে তাইনা? আরও কত যে পাগলামী করেছি তা তো জানোই না! বাসায় যখন যেতাম তখন নেট ছিল না , প্রতিবার স্ট্যাটাস মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে লিখে সাইবার ক্যাফে তে গিয়ে ওয়ার্ড ইন্সটল করে সেখান থেকে লেখাটি কপি করে পেস্ট করতাম! কয়েকটি লাইকের জন্য কত কষ্ট তাই না? তুমি কি জানো, এক সময় আমি ভীষণ জনপ্রিয় অনলাইন লেখক হয়ে যায়? কত ছেলে মেয়ে আমাকে ইনবক্সে তাদের ভালোবাসা বিষয়ক সমস্যার কথা জানিয়ে সলিউশন চাইতো! আমিও দিতাম , অনেকে আবার তার বয়ফ্রেন্ডের কাছে গুছিয়ে চিঠি লিখে দিতে বলত! তারা কি জানে আমি আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির কাছে লেখা চিঠিটি সেন্ড করতে পারিনি? আচ্ছা , মেয়েগুলো এতো অকৃতজ্ঞ হয় কেন মুন? তাদের হেল্প করার পর তারা কখনো জানাইও নি কোন উপকার হয়েছিল কিনা! তোমার সঙ্গে যখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন না আমি ইনবক্সে ঘুরতাম, সেই মেয়েগুলোর আমি কোন উপকার করতে পেরেছি কিনা খুব জানতে ইচ্ছে হতো মুন। বেশিরভাগ ই দেখতাম কালো হয়ে আছে। আচ্ছা আমাকে ব্লক করার মত কোন ক্ষতি কি আমি তাদের কোনদিন করেছি?আমি তো কখনো কাউকে ইনবক্সে ডিস্টার্ব করি নি! ইভেন তোমাকেও না! তুমি যখন ইনবক্সে আমার লেখার প্রশংসা করলে তখন মনে হয়েছিল এত দিনের লেখালেখি অর্থময়! এরপর প্রতিটি স্ট্যাটাস লিখতে হাত কাঁপতো! যে আমি স্ট্যাটাস দিয়ে লগ আউট হয়ে যেতাম নটিফিকেশনের যন্ত্রনায় সে আমি বসে বসে হাজার লাইকের ভীড়ে তোমার লাইক খুঁজে বের করতাম! তুমি লাইক না দিলে সে স্ট্যাটাস ডিলেট করে দিতাম। কত অদ্ভুত তাই না? আচ্ছা তোমাকে কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি হঠাৎ কেন তুমি আই ডি ডিএক্টিভেট করেছিলে? তোমার শোকে আমি আই ডি ডিএক্টিভেট করার পর আই ডিএক্টিভেট করার পর বুঝলাম কেউই টের পায় নি অথচ আমি কিন্তু তোমার আইডি ডিএক্টিভেট এর ব্যাপারটা বুঝেছিলাম, প্রতিদিন হাজার বার তোমার প্রোফাইলে যেতাম বুঝব না! জানো, প্রথমে বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো তুমি কি আমাকে ব্লক মারলে! ভাবলাম ইশ কত কিছুই না বলার ছিল, কিছুই তো বলা হয় নি! তুমি তো আইডি আবার এক্টিভেট করেছিল তাও তো সে না বলা কথাগুলো কখনো বলিনি। তাতে কি তুমি তো আর ব্লক মারো নি, এই ভেবে শান্তি লাগতো!
প্রিয় মুন, হাজারো প্রেম বিষয়ক লেখা পড়ে কিংবা লিখেও আমি আজ পর্যন্ত জানি না কি কারণে আমি তোমাতে মুগ্ধ হয়েছি? তুমি কি জানো, তুমি আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণার নাম , যে আমি পড়াশোনা বাদ দিয়ে সারাদিন লেখা নিয়ে পরে থাকতাম, যখন দেখলাম ভীষণ প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তির সঙ্গে তোমার বিয়ে হয়ে গেল, সেই আমিই ভীষণ রকমের মনযোগী হয়ে গেলাম! আমি না এখন তোমার বরের চেয়ে প্রতিষ্ঠিত, প্রেরণা কিন্তু তুমিই! কিন্তু জানো আমি না ভীষণ দু:খী। মহাপুরুষ ছাড়া সাধারণ মানুষ নাকি ভালবাসার কথা লুকাতে পারে না, আমি ত কখনো মহাপুরুষ হতে চাই নি। আচ্ছা,তোমার চিন্তায় খাবার কেন গলা দিয়ে নামে না তার উত্তর কি তোমার জানা আছে? একসময় প্রতিদিন ১০-১৫ ঘন্টা করে অনলাইনে থাকা আমি না তোমার বিয়ের পর ফেইসবুকে আসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলাম ,তোমার বরের সঙ্গে তোমার ছবি দেখতে হবে সে ভয়ে! তোমার ছবি দেখলেই তো বুকের বাঁ পাশে কেমন জানি করে তোমার কথা ভেবে! তোমাকে না বলতে পারা সেই কথাগুলোর কারণে আজও কেন মনের ভেতর খচখচ করে কেউ কি তা জানে? প্রিয় মুন খচখচানি কবে কমবে তুমি কি জানো?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৫২