মিচুয়াল ফ্রেন্ড দেখে মেয়েটাকে ফ্র্যান্ড রিকুয়েস্ট দিয়েছিল ছেলেটা। মেয়েটাও এক্সেপ্ট করে। ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করলেই প্রেম হয়ে যাবে এরকম ভাবনা ভাবার মত বোকা ছেলেটা ছিল না। সে ভাবেও নি। তবে মেয়ের ছবি আর পোস্ট গুলো দেখতে দেখতে বুকের বাঁ পাশে কেমন জানি করত ছেলেটার। মেয়েটার সব পোস্টে ছেলেটার লাইক দেয়া চাই! ওমা একদিন মেয়ের স্ট্যাটাস, "সেই অসাধারণ মুহুর্ত যখন ক্রাশ আপনার পোস্টে লাইক দেয়"! তার উপর ও এমন অসাধারণ একটি মেয়ে ক্রাশ খেতে পারে! লাইক দেয়া ছেলেটি স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করত কিন্তু এতবড় স্বপ্ন সে দেখে নি! একদিন ছেলেটা প্রোফাইল পিক চেইঞ্জ করল তাতে মেয়েটার লাইক। এতো দেখি মেঘ না চাইতেই জল! এত সুখ ছেলেটার কপালে সইবে কি?
হঠাৎ একদিন দেখে মেয়েটার টাইমলানে পোস্ট ইন এ রিলেশনশিপ! তাতে কি! "তুমি আমার একটা পোস্টে লাইক দিয়েছ, তার বিনিময়ে আমি তোমার পোস্টে জনম জনম ধরে লাইক কমেন্ট দিব" এই মূলমন্ত্রে দীক্ষিত ছেলেটার মেয়ের পোস্টে লাইক দেয়া কমেনি। নতুন বয়ফ্রেন্ড এর কথা মত ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে সব অপরিচিত ছেলেকে রিমুভ করে দেয় মেয়েটা। সে কোটায় লাইক দেয়া ছেলেটাও রিমুভড হয়ে যায়। তাতে কি, সে প্রতিদিন মেয়ের টাইমলাইন এ গিয়ে লাইক দিয়ে আসত। ওমা একদিন মেয়েটার এসএমএস! এই দিনটির জন্যই সম্ভবত ছেলেটা অপেক্ষা করছিল। অপেক্ষার ফল নাকি মধুর হয়। ছেলেটা কাঁপাকাঁপা হাতে ম্যাসেজ ওপেন করল। ম্যাসেজটায় লিখা ছিল, "আর একবার আমার কোন পোস্টে লাইক দিলে ব্লক মারব"
তাতে কি, মেয়েটা ব্লক তো আর মারে নি! আহ! কি মায়া, কি মায়া! অন্য মেয়ে হলে ঠিকই ব্লক মেরে দিত এতক্ষণে! এতো মায়াবতী মেয়ের ফেইসবুক আইডি খোলার কি দরকার ছিল কে জানে! সে এক কাজ করল, মেয়েটাকে সুন্দর করে ব্লক করল!
.
.
.
কি ভাবছেন? গল্পের টুইস্ট এখানেই শেষ? উহু! এত অসহিষ্ণু ভাবে কোন ছেলে মেয়েদের ভালবাসতে পারে? সে মেয়েটিকে ব্লক করেছে যেন মেয়েটা তাকে ব্লক করার সুযোগ না পায়। কিন্তু তার তো প্রায়ই মেয়েটার ছবি দেখতে ইচ্ছে হত,লাইক দিতে ইচ্ছে করত! সে প্রায়ই মেয়েটাকে আবার আনব্লক করত। জুকারবার্গের কি অদ্ভুত নিয়ম! একবার আনব্লক করলে নাকি ৪৮ ঘন্টার আগে পূনরায় ব্লক করা যায় না! ছেলেটা মেয়েকে আনব্লক করার পর তার সব পোস্টে লাইক দেয়া হয়ে গেলে এই ৪৮ ঘন্টা নিজের আইডি ডিএক্টিভেট করে রাখত, তারপর পূনরায় ব্লক করত! তাও মেয়েটাকে ব্লক করার সুযোগ দেয়নি! জীবন সে তো বহমান নদী কখনো থেমে থাকে না! কিন্তু ৪৮ ঘন্টা পরপর ছেলেটার জীবন কিছু সময়ের জন্য থেমে যায়!!!!