somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শিশির খান ১৪
সময় পাইলে ব্লগ লেখাটা এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। ব্যাস্ততার ফাকে যারা আমার ব্লগ দেখেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের অনুপ্রেরণা থাকলে নিশ্চই সামনের দিন গুলোতে লেখা চালিয়ে যাবো।

আলুর গুদামে ৭ লক্ষ টাকার মিষ্টি !

১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগে গোপা গোপ সাত আটটা মিষ্টি এক বসায় খাইতাম কিন্তু এখন পরিস্তিতি ভিন্ন মিষ্টির দোকানে যায়া করুন চোখে স্পন্স রসগোল্লা বা কালো জামের দিকে তাকায় থাকা ছারা আর কিছুই করার নেই কারণ দুই টা মিষ্টি খাইলেই দেখি বুক জ্বলা শুরু হয়ে যায়।পরিবারে ডায়বেটিকস রোগী আছে তাই ঠিক কইরা রাখছিলাম বয়স হওয়ার আগেই মিষ্টির কোটাটা পূর্ণ করবো যাতে পরে ডায়বেটিকস হইলেও মিষ্টি খাইতে না পারার জন্য যেনো কোনো আফসোস না হয় কিন্তু এখন বুঝতাছি তা মনে হয় আর সম্ভব হবে না ভেজালের ঠেলায়। মিষ্টি তো আর মিষ্টি নাই সব বিষ হওয়া গেছে যেমন এই তো গত ঈদ এর আগের কাহিনী চাঁদপুরে এক আলুর হিমাগারে জাটকা মজুদের খবর পেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হাজির হয় এবং তল্লাশি চালিয়ে ১১৩টি প্লাস্টিকের কন্টিনারে প্রায় ৫ হাজার কেজি মিষ্টির সন্ধান পায় যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭ লাখ টাকা।তৈরি করা মিষ্টি সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় এবং সেটা হতে হবে সম্পূর্ণ পৃথকস্থানে।আলুর হিমাগারে এই ৫ হাজার কেজি মিষ্টি মে মাসের ২৫ তারিখ থেকে মজুদ করা হয়েছিলো জুলাই মাসের ৭ তারিখের ঈদুল ফিতর এর জন্য ভাবতেছিলাম ১৫ দিনের জায়গায় ৪২ দিন পর পুরানো পচা এই মিষ্টি যদি কেউ খাইতো তে হইলে তার কি অবস্থা হইতো হয়তো ঈদ উপলক্ষে আর বাইরে যাওয়া লাগতো না সারা দিন বাথরুমে বইসা ঈদ পার করা লাগতো। সামনে দিয়া সব মিষ্টির ব্র্যান্ড এর দোকান গুলা ফিটফাট কিন্তু ভিতরে মানে কারখানায় গেলেই এরা একদম ধরা। বোরো বোরো ব্র্যান্ড গুলোর ও একি অবস্থা। বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এর অভিযানের ভিডিও আর খবর এর কাগজে বর্ণনা পরে বা নিজে কয়েকটি মিষ্টির কারখানার দেখে কারখানার পরিবেশ এর উপর যে ধারণা তৈরী হয়েছে তাতে মিষ্টি খাওয়া তো দূরে থাক দেখলেই পেট খারাপ হয়ে যায় এখন। কিছু বর্ণনা না দিলেই নয় যেমন কয়েক দিন আগে একটি কারখানার ভিডিও দেখছিলাম টয়লেটের পাশে অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে মিস্টি তৈরি করছে ।কারখানার উপরের টিন এর চাল এর ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি পরছে কারখানার ভিতরে কার্দমাক্ত পরিবেশের মধ্যেই বেশ কয়েকটা সিকারেটের অবশিষ্টাংশ পড়ে আছে এর মাঝেই চলছে কারিগরের মিষ্টি বানানোর কাজ। এদিকে মিষ্টি সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত রুমে গিয়ে দেখা যাচ্ছে মিষ্টির রস পুরনো হয়ে সাদা ছত্রাক পড়ে গেছে, মিষ্টি থেকে গন্ধ বেরুচ্ছে।রসে ডোবানো মিষ্টির পাত্রে ভাসছে মরা মাছি আর তেলাপোকা। এ ছাড়া মিষ্টি সংরক্ষণের রুমে কোনো এসি কাজ করছে না, একটা মাত্র ফ্যান ঘুরে তার মাঝেই প্রচন্ড গরমের মধ্যে খালি হাতেই বানানো হচ্ছে মিষ্টির রস মাখানো রুটি।গরমে শ্রমিকের ঘাম আর তেল একাকার হচ্ছে রুটির সঙ্গে।হয়তো একটু খুঁজলেই ইঁদুরে খাওয়া মিষ্টি পাওয়া যাবে সেখানে।কিছু দই পাওয়া যাবে যেগুলো কবে তৈরি করা হয়েছিল, তার মেয়াদ কত দিন ছিল তাতে কিছুই লেখা নেই।কারখানায় কোনো মিষ্টি কবে উৎপাদন করা হয়েছে, তা কারখানার লোকজনই বলতে পারবে না।সরাসরি ওয়াসার পানি ব্যবহার এবং হ্যান্ডগ্গ্নাভস ব্যবহার না করে নোংরা হাতে মিষ্টিসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য তৈরি করা এদের নিত্য দিনের কাজ। পরীক্ষা করলে দেখা যাবে ক্ষতিকর রাসায়নিক হাইড্রোজ ও মেয়াদোত্তীর্ণ রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের মিষ্টি, কেক, দই ও রসমালাই। দীর্ঘদিনের বাসী পুরনো আর ময়লাযুক্ত মিষ্টির রস গরম করে পুনরায় ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে এমনকি বেকারি ও মিষ্টি কারখানায় অভিযানের সময় কারখানা থেকে হাতেনাতে প্রায় ৬০ লিটার গরম পোড়া কালো হয়ে যাওয়া পামঅয়েল জব্দ করার ঘটনাও ঘটেছে কারখানার ভেতর থেকে গুদামে রক্ষিত ৮৩ বস্তা ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া জব্দ করা হয়। প্রতিবস্তায় ২৫ কেজি করে জব্দকৃত এই অ্যামোনিয়ার পরিমাণ ২০৭৫ কেজি।শুধু কি কারখানার পরিবেশ এখন তো মিষ্টি তৈরী তে যে কাচা মাল ব্যবহার হয় তাতেও ভেজাল যেমন দুধের ভেজাল খোলাবাজারের গরুর দুধ পাওয়া যায় তা কিন্তু এখন আর ভেজালমুক্ত নেই। আগে তো গোয়ালারা দুধে ভেজাল হিসেবে শুধু পানি মেশাত। কিন্তু এখন পানির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্যবহার অনুপযোগী ফরমালিন, সোডিয়াম, বরিক পাউডার। চিনিতেও এখন ভেজাল মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ঘন চিনি বা সোডিয়াম সাইক্লামেট। দাম কমাতে এর সঙ্গে মেশানো হয় বিষাক্ত সার ম্যাগনেসিয়াম সালফেট। এভাবে বিষের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে বানানো হয় 'বিকল্প চিনি'। এই 'বিকল্প চিনি'র এক কেজিতে ৫০ কেজি আসল চিনির কাজ হয়।দেখতে একই রকম হওয়ায় সাইট্রিক এসিড, সোডিয়াম সাইট্রেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেটের নামে গত কয়েক বছরে হাজার হাজার টন ঘন চিনি বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে। পরে এর সঙ্গে বিষাক্ত সার ম্যাগনেসিয়াম সালফেট মিশিয়ে সস্তা দামের বিকল্প চিনি বাজারজাত করছে রাজধানীর মিটফোর্ড ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত মাজার গেটকেন্দ্রিক কিছু ব্যবসায়ী।এই ভেজাল ঘন চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য, চকোলেট, আইসক্রিম, কনডেন্সড মিল্ক, বেকারি ও বেভারেজ দ্রব্য। এখন ডিমেও ভেজাল। আসল ডিমের সাথে মিশিয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে কৃত্রিম বা নকল ডিম। বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি এই ডিম তৈরিতে ব্যবহার করা হয় রাসায়নিক উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বনেট, স্টার্চ, রেসিন, জিলেটিন মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিষ মেশানো এসব মিষ্টি খেয়ে ক্যান্সার, কিডনি বিকল, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের মানুষ। এতো খারাপের মাঝেও ভিন্ন ধারার দুই একটা মিষ্টির কারখানা যে হচ্ছে না তা কিন্তু বলা যায় না যেমন চট্টগ্রামের এক মিষ্টির দোকানে কথা হচ্ছিলো তারা নাকি বাজার থেকে ছানা সংগ্রহ করেন না চন্দনাইশ থেকে টাটকা দুধ কিনে সেই দুধ ফুটিয়ে ছানা তৈরি করেন।এক লিটার দুধে ২০০ গ্রামের মতো ছানা হয়। সেই ছানার গোলা তৈরি করা হয় তারপর সিদ্ধ করে অস্ট্রেলিয়ার থেকে আমদানি করা সুপার রিফাইন্ড চিনি ও ফ্রান্সের এভিয়ান মিনারেল ওয়াটারে তৈরি সিরাপে ভিজিয়ে রাখা হয় আরেকটি বিষয় হচ্ছে, কোনো মিষ্টিতেই নাকি রং ব্যবহার করা হয় না। এমনকি জিলাপিতেও। ভাজার পর যে বাদামি রং হয়, তা জাফরানের রং থেকে বের হওয়া কালার।













সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৫৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×