somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২১ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে আমি লজ্জিত.......

২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ আমি লজ্জিত। একটু বেশিই লজ্জিত। লজ্জিত ৩৩,০০০-১২,০০০=২১,০০০ শিক্ষার্থীর কাছে। তাদের স্বপ্নকে নিয়ে আজ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়। তাদের স্বপ্ন আজ খেলনায় পরিণত হয়ে গেছে। আমি জানি তারা এখন বিষাদগ্রস্থ মন নিয়ে বসে আছে। মনের এই বিষাদগ্রস্থতা কেটে গেলে তারা আঙুল তুলে প্রশ্ন করবে আমাকে। আমি উত্তর দিবো আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। লজ্জায় আমার মাথা হেঁট হবে।

তারা সবাই বাকৃবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলো। তাদের সবার নির্ধারিত ৯ পয়েন্ট ছিলো। তারা সবাই অনৈতিকভাবে ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা ফি পরিশোধ করে আবেদন করেছিলো। কিন্তু নিয়মের এক জটিল বেড়াজালে পড়ে আবেদনকৃত ৩৩,০০০ পরীক্ষার্থীর ২১,০০০ই বাদ পড়ে গেলো। যদি বুঝতাম তারা সবাই স্রেফ আবেদন করেছে কিন্তু টাকা পরিশোধ করেনি তাহলেও একটা বিষয় ছিলো। মনের কোণে একটু সান্তনা খোঁজে পেতাম। কিন্তু বাদ কৃত ২১ হাজারের সবার কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে নিয়ে তাদের বাদ দেয়া এক প্রকার জোচ্চুরি ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি সোজা কথায় একটি প্রথম শ্রেণীর প্রবঞ্চনা।

হ্যাঁ, প্রশ্ন অনেক ধরনের আসতে পারে। এত স্টুডেন্টের কাছে টাকা ফেরত দেয়া কি আদৌ সম্ভব? আর এত স্টুডেন্টের পরীক্ষা নেয়া কি এতই সহজ?

এগুলো এক ধরনের দায় সারা প্রশ্ন। অ্যাপ্লাই করার সময় প্রত্যেক স্টুডেন্টই তার যোগাযোগের মোবাইল নাম্বার দিয়ে অ্যাপ্লাই করেছিলো। সুতরাং যদি ইচ্ছা থাকে তবে সেই নাম্বারে টাকাটা ফেরত পাঠানো কোনো সমস্যা না। আধুনিক যুগে এটা সম্ভব। বাকৃবি প্রশাসন ২০১২ সালে একটা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু স্টুডেন্টের মোবাইল নাম্বারে টাকা ফেরত পাঠিয়েছিলো। আর গত বছর আমরা সকলেই দেখেছি ২৮ হাজারের মতো ছাত্রছাত্রী এখানে পরীক্ষা দিয়েছে। তেমন কোনো প্রকার সমস্যা হয় নি যার কারণে এই প্রক্রিয়া থেকে পিছু হটতে হয়। হ্যাঁ, টুকটাক কিছু প্রশাসনিক কাজে ঝামেলা হয়েছিলো সত্য। অভিজ্ঞতার অভাবে এগুলো একটু আধটু হতেই পারে। তাই বলে সেই ঝামেলা কিভাবে কাটিয়ে উঠা যায় সেই চেষ্টা না করে একেবারে আগের নিয়মে ফিরে যাওয়া মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো অবস্থা বৈ আর কিছু না।

তবে ভর্তি পরীক্ষায় টাকা নিয়ে পরীক্ষা দিতে না দেয়ার নিয়ম শুধু বাকৃবি পালন করছে এমনটি নয়। বাংলাদেশের আরা ৪-৫টা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা আসলে এরকম চাতুরি করে টাকা কামানোর ধান্দায় নেমে পড়ে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যত নিয়ে যখন থাকে দিশেহারা তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলো হয়ে যায় একেকজন পুরনো সাহিত্যের অত্যাচারী জমিদারের মতো। তারা নিয়ম পরিবর্তন করে। কিন্তু এই পরিবর্তনের অন্তরালে লুকিয়ে থাকে জনগণের পকেট কাটার পরিকল্পনা। পরিকল্পনা না বলে দুরভিসন্ধি বললেই বোধ হয় ভালো হবে।

২১ হাজার শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এরকম দুরভিসন্ধি করেই শিক্ষার বারোটা বাজাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এরা শিক্ষার্থী নয়, আজ তারা একদল টাকা বানানোর মেশিন বানাতে পারলেই বোধ হয় খুশি হয় খুব বেশি। এরকম অসংখ্য শিক্ষার্থী এসকল দুরভিসন্ধি দ্বারা বলি হচ্ছে। বলি হচ্ছে তাদের স্বপ্ন, তাদের উচ্চ শিক্ষা লাভের আকাঙ্খা। আমরা চেষ্টা করেছি যথাসম্ভব আন্দোলন করার। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ ভালো আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনই আমাদের শক্তি। যারা অর্থ লিপ্সায় বিভোর হয়ে থাকেন তাদের যুক্তি দিয়ে বুঝানো নিরর্থক। তাদের আন্দোলন দিয়ে দমন করতে হবে।

জানি না ২১ হাজার শিক্ষার্থী বন্ধুরা কোথায় ভর্তি হবে। যেখানেই ভর্তি হও শিক্ষা রক্ষার আন্দোলন সংগ্রামের সাথে থেকো। একদিন এসব অনিয়ম হটবেই, হটতে বাধ্য।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৪৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×