চিত্র: গুগল থেকে...
হিউম্যান বা মানুষ: ইংরেজি বিশেষণিক 'মানুষ' শব্দটি হল পুরাতন ফরাসি 'humain' শব্দ থেকে ধার করা। যা শেষ পর্যন্ত ল্যাটিন 'hūmānus' থেকে বিশেষণ রূপ হোমো "মানুষ" শব্দটি নেয়া হয়েছে। শব্দটি একটি বিশেষ্য হিসাবে ব্যবহার (বহুবচন মানুষের হিসাবে) করা শুরু হয়েছিল ষোড়শ শতাব্দীর দিকে। আঞ্চলিক ইংরেজি শব্দ মানুষ(ম্যান) সাধারণত (মানবতার সমার্থক শব্দ), এবং পূর্বে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের উল্লেখ করতে শব্দটি ব্যবহৃত হত যদিও এই ব্যবহারটি এখন অপ্রচলিত।
পক্ষান্তরে 'মানুষ' শব্দের উৎপত্তি হয় 'মান' ও 'হুশ' শব্দদ্বয় যুক্ত হয়ে। (ভাবার্থ: 'মান' তথা 'আত্মসম্মানবোধ' এবং 'হুশ' তথা 'বিবেক' যার আছে সেই মানুষ।)
হোমো সেপিয়েন্স: দ্বিপদী হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতি ক্যারোলাস লিনিয়াস অষ্টাদশ শতকে তার বিখ্যাত গ্রন্থ Systema Naturae মাধ্যমে উল্লেখ করেছিলেন। জেনেরিক নাম হোমো ল্যাটিন homō "ম্যান" থেকে অষ্টাদশ শতকের দিকে ব্যবহার করতে শুরু করেছিল, শেষ পর্যন্ত "পার্থিব প্রাণী" (পুরাতন ল্যাটিন হোমো যা পুরাতন ইংরেজি গোমা "ম্যান," পিআইই ডেমেন থেকে যার অর্থ "পৃথিবী" অথবা "মাঠ")। প্রজাতি-নাম Sapiens যার অর্থ হল "বুদ্ধিমান" বা "বিজ্ঞ।" লক্ষ করুন যে ল্যাটিন শব্দ হোমো উভয় লিঙ্গকেই বোঝায় কিন্তু সেপিয়েন্স হল একবচন (যদিও স্যাপিয়েনের (sapien) মতো কোন শব্দ নেই)
ইনসান বা বাশার:
ইনসান অর্থ মানুষ,
বাশার অর্থ মনুষের রূপ,মনুষের রং,মানুষের ধরন।
আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কোরআন শরীফে বলেছেন "কুল ইন্নামা আনা বাশারুম্ মিসলুকুম।"
অর্থাত্ "হে রাসূল আপনি বলে দিন যে,আমি তোমাদের মতই মানুষ।"
এই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা "বাশার" শব্দ ব্যবহার করেছেন।যার অর্থ মানুষ নয়।এর অর্থ মানুষের রূপ।অর্থাত্ আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবিবকে মানুষের রূপ দিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।মূলত তিনি নূরের তৈরী আল্লাহর রাসূল।তিনি যদি আমাদের মতই মানুষ হতেন তাহলে আল্লাহ "ইনসান" শব্দ ব্যবহার করতেন।যার অর্থ হতো মানুষ। যেহেতু তিনি মানুষের রূপধারন করে দুনিয়াতে আগমন করছেন সেহেতু আল্লাহ তা'আলা কোরআনে "বাশার" শব্দটি ব্যবহার করছেন।
ইনসান বা নাস: আরবী নাস বা ইনসান শব্দের আভিধানিক অর্থ মানুষ। শব্দ দু'টির মূল ধাতু হলো নুসয়্যা। যার অর্থ ভুলে যাওয়া। মানুষ যেহেতু ভুলে যায় তাই আরবীতে এরূপ নাম করন করা হয়েছে। আল কুরআনের শেষ সূরাটি মানুষের নামে করা হয়েছে। এছাড়া কুরআন মাজীদের অনেক স্থানে "নাস" শব্দের উল্লেখ রয়েছে।
"মানুষ" শব্দের বিশ্লেষণ:
বানান বিশ্লেষণ: ম্+আ+ন্+উ+ষ্+অ
উচ্চারণ: ma.nuʃ (মা.নুশ্)
শব্দ-উৎস: সংস্কৃত মানুষ> বাংলা মানুষ।
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ: মনু + অ (অণ্), ষ-এর আগম।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে− ব্রহ্মার মন থেকে উদ্ভূত হয়েছিলেন মনু । আর মনু থেকে মানুষ জাতির উৎপত্তি হয়েছিল। সংস্কৃত ব্যাকরণে মনুর সন্তান অর্থে মানুষজাতিকে নির্দেশ করা হয়েছে।
পদ : বিশেষ্য
১. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {হোমো | হোমোনিনি | হোমিনিডি | হোমোনোইডি | ক্যাটার্হৃনি | সিমিফর্ম্স | হ্যাপ্লোর্হৃনি | প্রাইমেট | অমরাযুক্ত স্তন্যপায়ী | স্তন্যপায়ী | মেরুদণ্ডী | কর্ডেট | প্রাণী | জীবসত্তা | জীবন্তবস্তু | দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা | }
অর্থ: হোমিনিডি গোত্রের হোমো (Homo) গণের যে কোন জীবিত বা বিলুপ্ত প্রজাতি, যারা বুদ্ধিমত্তার বিচারে শ্রেষ্ঠ, বাক্প্রত্যঙ্গ দ্বারা সৃষ্ট ভাষার সাহায্যে সুচারুরূপে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে এবং ভূমির উপর দুই পায়ে সরলভাবে দাঁড়াতে পারে। এরা নিজের বুদ্ধিমত্তা দ্বারা নিজেদের প্রয়োজনীয় জীবনধারণের উপকরণ প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করতে পারে এবং উপাদনসমূহ থেকে নানাবিধ উপকরণ তৈরি করতে পারে। উন্নত মানসিক ভাবনার দ্বারা চিত্তবিনোদনের জন্য নানাবিধ বিমূর্তভাবনা উপস্থাপন করতে পারে।
বৈজ্ঞানিক নাম: Homo sapiens ।
[বিস্তারিত : মানুষ [জীববিজ্ঞান]
সমার্থক শব্দাবলি: আদম, আদমি, ইনসান, জন, নর, নৃ, মনুজ, মনুষ্য, মানব, মানুখ, মানুষ, লোক, হোমো।।
বিপরীত শব্দ: অমানুষ [ভাবার্থে]
২. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| পুরুষ | ব্যক্তি | জীবসত্তা | জীবন্তবস্তু | দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}
অর্থ:নৃজাতির পুরুষসত্তা। এমন একজন মানুষ, যিনি নারীর গর্ভে সন্তান উৎপাদনে সক্ষম।
সমার্থক শব্দাবলি: নর, মানব, মানুষ
বিপরীত শব্দ: মানুষী
ইংরেজি: male, male person ।
৩. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| ব্যক্তি | জীবসত্তা | জীবন্তবস্তু | দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা | }
অর্থ: একক মানবসত্তা।
সমার্থক শব্দাবলি: মানুষ, ব্যক্তি, লোক।
ইংরেজি: person, individual, someone, somebody, mortal, soul
মানুষ শব্দযুক্ত ক্রিয়ামূল:
মানুষ √কর্:
যথাযথভাবে প্রতিপালন করা।
মানুষ √হ: আদর্শ মানুষ হওয়া। আবার তোরা মানুষ হ। ব্রতচারী/গুরুসদয় দত্ত।
তথ্যসূত্র:
১।মানুষ শব্দের উৎপত্তি ও সংজ্ঞা
২। স্তন্যপায়ী প্রাণী মানুষ
৩। প্রাইমেট
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০২