somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তথাকথিত রিলেশনশীপ এবং দাম্পত্য সমস্যা অতঃপর ডিভোর্স

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সৃষ্টিকর্তা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে শুধুমাত্র হালালই করেনাই বরং একে যেনো অপরকে ভালবাসে সে ব্যাপারে নির্দেশও দিয়েছে।
অপরদিকে বিবাহ বর্হিভূত ছেলে এবং মেয়ের মধ্যকার বেহায়াপানা, যেটাকে আমরা প্রেম-ভালোবাসা বলি সেটাকে করেছে হারাম।
কিন্তু কিছু প্রতিষ্টান তাদের ব্যাবসাহিক স্বার্থে কিংবা ব্রান্ডিং এর উদ্দ্যেশে মিডিয়ার মাধ্যমে এইসব বেহায়াপানাকে প্রোমোট করে যাচ্ছে।
এদের মধ্যে মূলতো মোবাইল অপারেটর গুলো অন্যতম। খেয়াল করে দেখবেন তারা মূলতো রোমান্টিক টাইপের নাটক গুলো স্পন্সর করে। কারন একমাত্র এই তথাকথিত প্রেম নামক ব্যাপােটার মধ্যে যুব সমাজকে ধাবিত করতে পারলেই তারা প্রতিদিনই ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলে আজাইরা প্যাচাল করবে। (ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে, একেতো নাচুনে বুড়ি তারউপর পাইছে ঢোলে বারি)
এভাবে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা আজাইরা প্যাচাল করতে করতে একটা সময় বিরক্ত লাগবে আর তখন ব্রেকাপ এবং এরপর আবার নতুন কারো সাথে।
অর্থাৎ জুটি চেইঞ্জ হবে কিন্তু প্রেমটা কন্টিনিউ থাকতে হবে। প্রেম কন্টিনিউ থাকলে মোবাইলের কথা কন্টিনিউ থাকবে তথা ব্যাবসা কন্টিনিউ থাকবে।
অথচ আজ সমাজের অধিকাংশ আত্মহত্যাই হচ্ছে এই বিবাহ বর্হিভূত প্রেমের কারনে। অনেক মানুষের জীবন নষ্ট হচ্ছে এই একই কারনে। আবার প্রেমের ফাঁদে পরে অনেক তরুণী ধর্ষনের শিকারও হচ্ছে কেউ আবার স্ক্যান্ডালও হচ্ছে। কিন্তু এসব ব্যাপারে কোনো সমাজিক প্রতিবাদ নাই।
গত কয়েক বছর ধরে দেখছি তরুন সমাজের বেশ আগ্রহের কারনে জনৈক টুটপেষ্ট কোম্পানি তাদের ব্রান্ডিং এর জন্য এই বেহায়াপানাকে বেছে নিয়েছে। তারা প্রতি বছরই বিভিন্ন রোমান্টিক নাটক তৈরি করে তরুন সমাজকে উৎসাহিত করছে। আবার দেখলাম যারা রানিং প্রেম করছে তাদের জন্য বিশেষ দিবসে ইভেন্টের ব্যাবস্থাও করছে।
আচ্ছা একটু খেয়াল করেনতো যাদের অভিনয় দিয়ে এই সমস্ত তথাকথিত বিবাহ বর্হিভূত প্রেম নামক ক্যান্সারকে তরুন সমাজের মস্তির্কে প্রমোট করা হচ্ছে সেই সমস্থ অভিনেতা অভিনেত্রীদের মধ্যে যারা বিবাহিত তারা নিজেরা তাদের বিবাহিত জীবন কত দিন কন্টিনিউ করতে পেরেছে! কিংবা তারা কতটা সুখি দাম্পত্য জীবন উপভোগ করছে! যারা নিজেরাই একটা দ্বীধান্বিত দাম্পত্যেরর মধ্যে আছে তাদের অভিনয় দেখে কিংবা অনুকরন করে আপনি কতটা ভালো থাকবেন তা কি একবারো ভেবেছেন? আসলে এটা তাদের পেশা পেটের দায়ে তারা অভিনয় করে মাত্র।
খবরের কাগজে প্রায় পরিসংখ্যান রিপোর্ট দেখা যায় বর্তমানে ডিভোর্সের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যাচ্ছে। আর উচ্চ শিক্ষিত তথাকথিত আধুনিক সমাজের মানুষগুলোই দিনে দিনে এই ডিভোর্সের দিকে ঝুকছে, কারন তারা তাদের দাম্পত্য জীবন নিয়ে বিরক্ত। অথচ এই আধুনিক সমাজ সর্বদা যাদের কিটিসাইজ করে কথাবলে অর্থাৎ মোল্লাদের, সেই মোল্লারা ( যারা খাটি মোল্লা) কিন্তু সুখেই আছে। তাদের জীবনে কিন্তু ডিভোর্সের প্রয়োজন পরেনা। হয়তো ব্যাতিক্রম দু একটা হতেপারে কিন্তু ব্যাতিক্রমকে কখনোই স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করা যায়না।
আমার দেখা যারা প্রেম করে স্বার্থক হয়েছে অর্থাৎ বিয়ে পর্যন্ত যেতে পেরেছে তারা হয়তো মাঝে মধ্যে দুএক জনও সংসারিক জীবনে ভালো আছে কিনা যানিনা, তবে আমার পরিচিতদের মধ্যে যে কয়জনকে দেখেছি তাদের মধ্যে একজন ব্যাক্তিকেও ভালো থাকতে দেখিনি। এমন কি কয়েকজনকে ডিভোর্স পর্য়ন্ত যেতে দেখছি।
তবে একটা বিষয় ভেবে ভালো লাগে, আমার জীবনে আমি চারজন কে ডিভোর্সের একেবারে শেষ প্রান্ত হতে ফিরাতে পেরেছি। আসেলে সত্যিই আমার কথায় কাজ হয়েছে কিনা জানিনা, তবে তারা প্রত্যেকেই ডির্ভোসের জন্য ফাইনাল ডিসিশন নিয়েছিলো কিন্তু আমি কথা বলার পরে তারা আর ডির্ভোস নেয়নি। এই চার জনের নাম সহ বলতে পারলে হয়তো ভালো হতো, কিন্তু প্রাইভেসি বিবেচনায় তাদের নাম উল্ল্যেখ করলাম না।

যাইহোক টপিকে ফিরে আসি। যাস্ট একটা উদাহরন দেই। যখন কোনো নির্মাতা একটা জেনারেটর তৈরি করে তার সাথে একটা বইও দেয়, যেখানে ঐ জেনারেটরটির ব্যাবহার বিধি উল্ল্যেখ করা থাকে। তবুও কোনো সমস্যা হলে তার জন্য ইঞ্জিনিয়ারও আছে। এখন আপনি সেটাও ফলো করলেন না আবার ইঞ্জিনিয়ারকেও দেখালেন না তাহলে জেনারেটরটি ক্ষতিগ্রস্থ হবে এটাই স্বাভাবিক। ঠিক তেমনি যারা স্রষ্টা বিশ্বাস করেন তারা যে ধর্মেরই হোন না কেন প্রত্যেক ধর্মেই তো বিয়ের কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের কথা যদি বলি, আল্লাহ্ আমাদের সৃষ্টি করে আমাদের জীবন পরিচালনার জন্য দিয়েছে পবিত্র কোরআন এবং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দিয়েছে মাওলানা মুফতিদের। হ্যা তাদের মধ্যেও অনেক খারাপ লোক রয়েছে, কিন্তু সবাই তো খারাপ না। অদক্ষ অসৎ ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা স্থাপনা তৈরি করে স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সে দৃষ্টান্তওতো রয়েয়ে। সুতারং আপনার মেধা দিয়েছে আপনি যাচাই করে নিন কে ভালো আর কে ভন্ড।
জানি এ লেখা পরে অনেকেই আমাকে মৌলবাদি ভাবতে পারেন। অথচ অনেদিন আগে আমার একটা কথায় কেউ কেউ আমাকে বলেছে আমি নাকি নাস্তিকদের পক্ষে বলেছি। আসলে একটা কথা যদি কারো বিপক্ষে যায় তাহলে সে সেটা সহ্য করতে পারেনা এবং তখনি কেউ মৌলবাদি বলে আর কেউ নাস্তিক বলে ডাকে। আপনি যা খুশি বলতে পারেন অথবা ভাবতে পারেন এতে আমার কিছু যায় আসেনা। অনেকে আবার এটাও বলতে পারেন যে, আমি মাঝে মধ্যে প্রেম নিয়ে দুএক লাইন বলি আবার মাঝাে মধ্যে দুয়েকটা রোমান্টিক কথাও বলি, তাহলে এখানে কেনো আমি প্রেমের বিরুদ্ধে বলছি। এক মুখে কেনো দুই ধরনের কথা বলছি।
হ্যা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা হতে পারে, আসলে হতে পারে বললে ভুল হবে অবশ্যই হতে হবে। রোমান্টিকতা থাকতে হবে, নয়তো এক সঙ্গে থাকা সম্ভব নয়। যদিও আমি নিজে সিঙ্গেল, তবে ভবিষ্যত নিয়ে দুয়েকটা রোমান্টিক ভাবনা মাথায় আসতেই পারে। আর সেখান থেকে হয়তো দুএকটা বলা।
আমি প্রেমের বিরুদ্ধে বলছি না। যাস্ট বিবাহ বর্হিভূত বেহায়াপানার বিরুদ্ধে বলছি। যদিও বর্তমান যুব সমাজের বেশিরভাগই এই বেহায়াপানাকেই প্রেম মনে করে।
অথচ সবুজ বৃক্ষের সাথেও যে প্রেম হতে পারে কিংবা কোনো নদীর প্রতি, পাখিদের প্রতি, ফুতপাতে পরে থাকা অসহায় একটি শিশুর প্রতি, যে মাটির বুকে দিন রাত বিচরন করছি সেই মাটির প্রতিও যে ভালোবাসা হতে পারে সেটা হয়তো অনেকেই ভাবেনা।
দুজন দুজনকে ভালোবাসেন ভালো কথা, বিয়ে করে নেন।
ও স্যরি, বিয়ে করলে তো আবার স্টাবলিষ্ট হতে পারবেন না! অথচ পার্কে ঘষাঘষি করছেন, রুম ডেটিং করছেন, অশ্লীল কথাবার্তা বলছেন তাতে আপনার স্টাবলিষ্ট হতে সমস্যা হচ্ছেনা। সমস্যা হবে যদি আপনি তিনবার কবুল বলেন তাহলে আপনি স্টাবলিস্ট হতে পারবেন না এইতো?
হ্যা একটা সময় আমিও এটাই মনে করতাম। কিন্তু না, এটা ভুল ধারনা।
অফিসিয়ালি কবুলটা বলে তারপর প্রেম করেন ডেটিং করেন এরপর যখন নিজেকে স্টাবলিষ্ট মনে হবে তখন একসঙ্গে সংসার করবেন ব্যাস হয়ে গেলো।
আসলে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি এই স্টাবলিষ্ট শব্দটা মূলতো সভ্যতা এবং কর্পোরেটদের একটা নেতিবাচক আবিষ্কার মাত্র। যেটা বিলাসী জীবন যাপনের লোভ দেখিয়ে ধীরে ধীরে মানুষের জীবনের সুখ কেড়ে নিচ্ছে। মানুষকে একে অপরের খুব কাছাকাছি নিয়ে এসে একা করে দিচ্ছে। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে "লোভে পাপ পাপে মৃত্যু" এই ব্যাপারটাও ঠিক একই রকম।
তাই যারা অন্যের রিলেশন নামক বেহায়াপানা দেখে নিজে কেনো রিলেশন করতে পারছেন না এটা ভেবে আফসোস করছেন কিংবা ডিপ্রেশনের মধ্যে আছেন তাদের বলছি। সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেককে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্ট করেছেন। নারী কিংবা পুরুষদের মধ্যে অনেকেই তো আছে অন্ধ, ল্যাংরা, লুজা, বোবা, ট্যারা ইত্যাদি ইত্যাদি এদের মধ্যে কেউই কিন্তু সঙ্গী ছাড়া থাকেনা। প্রত্যেকেরই একটা সময় কারো না কারো সঙ্গে সন্ধি হচ্ছে।
সুতারং স্রষ্টা আপনার জুটি হিসেবে যাকে সৃষ্টি করেছে সময় মতো আপনিও তাকে পেয়ে যাবেন। তখন কেবল মাত্র তার সঙ্গেই স্রষ্টার দেখানো নিয়ম অনুযাই প্রেম ভালোবাসা যা খুসি করেন দেখবেন জীবনে ভালো থাকবেন। কিছু দুঃখ সেখানেও থাকবে কিন্তু ডিভোর্স পর্যন্ত যেতে হবেনা এটা নিশ্চিত। জীবনে কিছু হাসি কান্না তো থাকবেই। রাত না থাকলে দিনের অস্তিত্বকে আলাদা করা যেতোনা। আমার কথা আপনার কাছে খারাপও লাগতে পারে, আপনি কি করবেন বা নাকরবেন সেটা একান্তই আপনার ব্যাক্তিগত। তবে ভালো থকতে হলে ভালো হওয়াটা জরুরী।

ধন্যবাদ।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×