somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোশাক বিতর্ক

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নারী এবং পুরুষ উভয়ের প্রতি উভয়ের যে আকর্ষণ, তা সম্পূর্ণ সহজাত। বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক থাকলেও ধার্মিক এবং নাস্তিক উভয়েই এ বিষয়ে একমত।

পরস্পরের প্রতি এই আকর্ষণ যদি না থাকতো তবে পৃথিবীতে মানবসভ্যতার বিকাশ অসম্ভব ছিল। নারী-পুরুষের এই আকর্ষণ মূলত দুই ধরনের, ১. আত্মিক, ২. দৈহিক।

মজার কোন দৃশ্য দেখলে বা মজার কোন কথা শুনলে মানবদেহে এনডোরফিন নামক এক ধরনের হরমোনের নিঃসরণ হয়,যার কারণে হাসি পায়। একইভাবে উন্মুক্ত বা খোলামেলা নারী দেহ দর্শনে পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃসৃত হয়ে যৌনাকাঙ্খার সৃষ্টি করে। এটা একেবারেই পুরুষের সৃষ্টি গত বৈশিষ্ট্য। এখন কেউ যদি বলে, নারীদের এটা ওটা দেখেই যদি কোন পুরুষের যৌনাকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয় তবে সে কেমন পুরুষ। তাহলে সেটা তাঁর বায়োলজি বিদ্যার অজ্ঞতা।

বরং যদি কোন পুরুষ বলে, খোলামেলা নারীদেহ তাঁর মধ্যে কোন আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত করে না, তবে হয় সে মিথ্যা বলছে না হয় তাঁর হরমোন কাঠামো স্বাভাবিক পুরুষ হতে আলাদা।

কাজী নজরুল তার কাব্যের ভাষায় বলেন,
বন্ধু, কহিনি মিছে,
ব্রহ্মা বিষ্ণু শিব হ’তে ধ’রে ক্রমে নেমে এস নীচে-
মানুষের কথা ছেড়ে দাও, যত ধ্যানী মুনি ঋষি যোগী
আত্মা তাঁদের ত্যাগী তপস্বী, দেহ তাঁহাদের ভোগী!


নারী শরীরকে খোলামেলা বা আকর্ষণীয় অবস্থায় দেখলে টেস্টোস্টেরন নিঃসৃত হবেই, এবং টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃসৃত হলে পুরুষের মধ্যে যৌনাকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হবেই। পুরুষের বায়োলজিক্যাল প্রোগ্রামিং এভাবেই করে দেয়া।
এখন কথা হচ্ছে, যৌনাকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হলেই কি কারো প্রতি ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে? কিংবা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে হবে? না, এটাকেও আমি সমর্থন করতে পারছি না।

জন্তু জানোয়ার 'স্বজাতি বিপরীত লিঙ্গের' কারো প্রতি আকাঙ্ক্ষা জাগলেই বিচার-বিবেচনাহীন ভাবে তা চরিতার্থ করে। মানুষ হয়েও যদি একই কাজ করে, তবে মানুষ আর জন্তু জানোয়ারের পার্থক্য কী?

মানুষ তো বুদ্ধিমান এবং বিচক্ষণ প্রাণী। যে জানে কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ। ভালো-মন্দ বিচার করে মন্দ কাজ হতে নিজের ইচ্ছে-আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাই তো মানুষকে অন্যসব প্রাণী হতে আলাদা করেছে। সেই নিয়ন্ত্রণই যদি না থাকলো তবে সে মানুষ কী করে হয়?

আসলে প্রতিটা মানবদেহই মানুষ ধারণ করে না। কিছু মানবদেহ জন্তু ধারণ করে, এমটা সব জাতিতে সব দেশেই আছে। দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের যে কথাটি বলা হয়, তা আসলেই বাস্তবসম্মত নয়। বরং এটাই সত্য যে, জন্তু কখনোই তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে পারে না। যদি তাই হতো তবে বিশ্বের অত্যন্ত সভ্য জাতি খ্যাত স্ক্যান্ডেনেভিয়ানরা ধর্ষণে শীর্ষ দশে আসতো না।
বিবেক, বিবেচনা, শালীনতা, বুদ্ধি, যুক্তি, এসব মানুষের জন্য। সকল মানবদেহ মানুষ ধারণ করে না। তাই যত কথাই বলা হোক, আর যত যুক্তিই দেখানো হোক, যারা পোশাককে কারো উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার অযুহাত হিসেবে ব্যবহার করে, কিংবা পোশাক দেখে খারাপ মন্তব্য করে, তাঁরা তা করবেই। আবার যার মাথায় মধ্যে একেবারে কট্টর ভাবে গেঁথে গিয়েছে, যত যাই হোক তাকে শরীর দেখাতেই হবে। সে কোন যুক্তি, কিংবা বায়োলজি-টায়োলাজি মানবে না, সে শরীর প্রদর্শন করবেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:২৬
১৩টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×