somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৬ দিনের ভ্রমনলিপি (দিল্লী-মাউন্ট আবু-গুজরাট-দিল্লী)-২: রেল যাদুঘরে

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিমান বাহিনী যাদুঘর ভ্রমন শেষে অটো রিক্সা করে হাজির হলাম রেল যাদুঘরে। টিকেট কিনে প্রবেশ দুয়ার দিয়ে সামনে পা বাড়াতেই ছোট্ট একটি রেল ইন্জিন ও এক বিশালকায় চাকা আমায় স্বাগত জানাল।



সামনে এগোতেই গাইড ম্যাপ পেয়ে গেলাম। একবার তাতে চোখ বুলিয়ে সামনে এগোতেই রেলওয়েতে ব্যবহার করা কিছু জিনিষ ভর্তি আইল্যান্ড এবং সুভেন্যুর শপের দেখা পেলাম। শপ থেকে স্মৃতি স্বরূপ কয়েকটি চাবির রিং কিনলাম যাতে নানা রকম রেল ইন্জিনের রেপ্লিকা রয়েছে।



রেল যাদুঘরের দুটি অংশ। একটি ইনডোর এবং আরেকটি আউটডোর। প্রথমে ইনডোর অংশটিতে প্রবেশ করলাম। নানা রকম রেল বিষয়ক জিনিষ, মডেল চারিদিকে। তো শুরু করলাম ইন্জিন দিয়ে। প্রথমেই দেখে নিলাম প্রথম বাষ্পীয় রেল ইন্জিনের মডেল। কে জানত যে এই ছোট্ট ইন্জিন থেকে আমরা ক্রমান্বয়ে বুলেট ট্রেনে পৌছে যাব!



প্রথম রেল ইন্জিনের পর অনেকগুলো কয়লা চালিত ইন্জিন দেখলাম। কয়েকটি ইন্জিনে ক্রস সেকশন করে কিংবা ট্রান্সপারেন্ট করে মেকানিজমটি বুঝানো হয়েছে যা দেখার সাথে সাথে জানার আনন্দও দিয়ে যাচ্ছে অবিরত।



কয়লা চালিত ইন্জিনের পর তাকালাম আধুনিক ইন্জিনগুলোর মডেলের দিকে। ডিজেল চালিত, বিদ্যুত চালিত, ডিজেল-বিদ্যুত চালিত, ইত্যাদি নানা রকম বর্তমান সময়ের রেল ইন্জিন সাজানো এখানে।



ইন্জিন যাকে টেনে নিয়ে যায় সেই রেল বগি বা কোচ দেখার পালা এবার। আর সে এক বিশাল ব্যাপার। ব্রিটিশ পিরিয়ডের ডিলাক্স কোচ থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের এসি কোচ কি নেই এখানে! প্রতিটি কোচে সিট, ফ্যান, ইত্যাদি ডিটেলিং একদম সঠিকভাবে সাজানো। দেখে মনে হচ্ছে লিলিপুট রাজ্যের ট্রেন স্টেশনে চলে এসেছি।



কোচের পর অবধারিতভাবেই ওয়াগন বা মালগাড়ির কথা চলে আসে। সাধারন ওয়াগন থেকে শুরু করে তেলবাহী ওয়াগন এমনকি ওয়াগনবাহী ফেরী এবং রেল যাত্রী বাহী ফেরীর মডেল সবকিছুই উপস্থিত এখানে।



রেলওয়েতে ব্যবহার করা ক্রেন ও একটি পুরোনো ফায়ার ট্রাক দেখলাম যা মাল লোড-আন লোড, জরুরী পরিস্থিতি, কনস্ট্রাকশন, ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়।



মডেল ছাড়াও নানা রকম তৈযষপত্র, সাইন, যন্ত্রপাতি, ইত্যাদিরও দেখা মিলল ইনডোর অংশে।



মডেল ট্রেন সেট যা কিনা চলতে পারে এবং ক্যান্টিলিভার ব্রীজের রেপ্লিকা দেখেও খুব ভালো লাগল। তবে মডেলগুলো চললে আরো ভালো লাগত কিন্তু পেইন্টিং চলায় সেটা সম্ভব হয়নি এবার!



ইনডোর যাদুঘর থেকে বের হয়ে আইটডোরে পৌছালাম। এ যেন রেল ইন্জিনের মিলনমেলা। তবে প্রথম দেখাতে নজরে এল কিছু জীর্ন-শীর্ন পুরোনো ইন্জিন। এর একটাকে সেকশন করে বাষ্পীয় ইন্জিনের কার্য পদ্ধতির বাস্তব চিত্র দেখানো হয়েছে।



সব পুরোনো ইন্জিনের যে বেহাল দশা তা নয়, বেশ কয়েকটি ইন্জিনকে রং করে তার আগের রূপে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কয়েকটিতে রং এবং মেরামত চলছে।



বাষ্পীয় এবং কয়লা চালিত ইন্জিনের পর বর্তমান সময়ের দানবীয় ইনজিনগুলোর দিকে তাকালাম। সবগুলো যে দানবীয় তা নয়, কিছু নিরীহ, ভদ্র ইন্জিনেরও দেখা পেলাম। তবে শক্তিতে কেউ কারও থেকে কম নয়।



রেল ক্রেন গুলোকে দেখে ভাবলাম পুরোনো দিনে কত কিছুইনা তুলেছে এগুলো অনায়াসে। স্মৃতিতে পুরোনো ওয়স্টার্ন মুভির কিছু রেসকিউ সিন ফিরে এল যেখানে এমন কিছু হয়তবা দেখেছিলাম।



সবশেষে দেখা মিলল সচল টয় ট্রেনের যাতে চড়ে পুরো আউটডোরে চক্কর লাগানো যায় নিমিষেই। কিন্তু হাতে সময় নেই তাই ফিরে চললাম রেল স্টেশনে। ট্রেন যদিও রাতে কিন্তু ক্লান্তি দূর করতে হলে দারুন একটা মধ্যান্নভোজন আর একটু বিশ্রাম চাই। অতএব, যে পথে এসেছিলাম সে পথেই ফিরে চললাম।



রেলে চড়তে শুরু করৈছি সেই ছোট্টবেলা থেকে। কত স্মৃতিই না জড়িয়ে ট্রেন ভ্রমনের সাথে। দেশে, বিদেশে আজ পর্যন্ত যতবার ট্রেনে চেপেছি সেই সব যাত্রার রেপ্লিকা যেন আমায় ফিরিয়ে দিল রেল যাদুঘর।

*পর্ব-৩য়ে থাকবে মাউন্ট আবু যাওয়া এবং সেখানে পার করা প্রথম দিনের ভ্রমনলিপি।

**পর্ব-১
৬ দিনের ভ্রমনলিপি (দিল্লী-মাউন্ট আবু-গুজরাট-দিল্লী)-১: বিমান বাহিনী যাদুঘরে-
Click This Link
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×