দেরাদুন থেকে কিছু দূরেই বয়ে চলেছে গঙ্গা নদী। আর নদী ঘিরে গড়ে উঠেছে অপরূপ প্রকৃতি এবং চিরায়িত সংস্কৃতি। ঋশিকেশ এবং হরিদুয়ার হল সেই দুই স্থান যেখানে প্রকৃতি এবং সংস্কৃতিকে প্রানভরে উপভোগ করা যায়। কদিন আগেই একটি ট্রেইনিং প্রোগামের অংশ হয়ে ঘুরে এলাম স্থান দুটি থেকে আর তা নিয়েই লিখছি আজ। প্রথম পর্বে ঋশিকেশ ভ্রমনের বৃতান্ত থাকছে।
বৃষ্টিস্নাত সকালে সবাই মিলে ঋশিকেশের পথে চললাম। কাছাকাছি পৌছাতে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পথ চলা পূর্ন্যাথীদের দেখা মিলল।
ঋশিকেশ পৌছাতেই মেঘে ঢাকা চারিপাশ দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
বাস থেকে নেমে সবাই চলতে শুরু করলাম লক্ষন ঝুলা নামক ঝুলন্ত সেতুর দিকে। আমাদের পরিকল্পনা এই সেতু দিয়ে গঙ্গা নদী পার হয়ে পার ধরে হন্টন করে অবশেষে রাম ঝুলা নামের আরেকটি ঝুলন্ত সেতু দিয়ে এপারে চলে আসা। সেতুর দিকে যেতে যেতে স্রোতস্বীনী গঙ্গাকে দেখলাম তবে পাথুরে মাটি বয়ে চলা গঙ্গার পানি একদমই মলিন।
লক্ষন ঝুলা করে গঙ্গা পার হলাম। সেতুটি দুলতে থাকায় একটু ভয় পেয়ে গেলাম। গঙ্গা নদীতে পূণ্যস্নান করতে আসা দর্শনার্থী এবং গঙ্গার অপরূপ শোভা সেতুতে দাড়িয়ে দারুনভাবে উপভোগ করলাম।
সেতু পার হয়ে প্রায় আধা ঘন্টা হন্টন পর্ব শেষে রাম ঝুলায় পৌছালাম। গঙ্গা পার হওয়ার আগে ১৯৫৮ সাল থেকে সুস্বাদু খাবার পরিবেশনকারী চুটিওয়ালা নামক রেস্টুরেন্টে নানা রকম ভেজিটেরিয়ান খাবার দিয়ে মধ্যান্নভোজন শেষ করলাম। রেস্টুরেন্টের সামনে পুতুলের হাতে আসল খাবারের থালি সাজিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করার ব্যাপারটায় মজা পেলাম। এছাড়াও পুতুলের পরিবর্তে কখনও-সখনও আসলের দেখা মিলে শুনলাম যদিও দেখতে পেলামনা।
রাম ঝুলা দিয়ে গঙ্গা নদী পার হলাম। গঙ্গার অপরূপ দৃশ্য আরেকবার উপভোগ করলাম।
ফেরার পথে ছোট্টবেলার সেই মজার খেলনা পুট-পুট স্টীমার কিনলাম যদিও তা এখনও চালিয়ে দেখা হয়নি।
পাহাড় বেয়ে চলা গঙ্গা শুধুই নদী নয় বরং তার চারিপাশের প্রকৃতি ও সংস্কৃতির জন্য প্রান স্বরূপ। আজ যেন সেই প্রানের সন্ধান পেলাম ঋশিকেশে এসে।
প্রথম পর্বের সমাপ্তি এখানেই। ঋশিকেশ থেকে রওয়ানা করলাম হরিদুয়ারের পথে আর সেখানে যা দেখলাম তা নিয়ে আসব কাল, ২য় ও শেষ পর্বে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:০৪