গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে একজন নারীবাদী ব্লগারের সাথে আমার অনেকটা সময় তর্ক হয়। তার ভাষ্য যেমন ছিল তুলে ধরতে চেষ্টা করছি।
"ওয়েস্টার্ন কান্ট্রি গুলোতে বাচ্চারা তাদের মা, বোন এবং প্রতিবেশি নারীদের ছোট থেকেই অর্ধ নগ্ন অবস্থায় দেখেই অভ্যস্ত আর সে কারনেই নারী দেহের প্রতি নাকি তাদের কোন আগ্রহ নেই। যে কারণে ওসব দেশে ধর্ষনের ঘটনা ঘটেনা। সুতরাং বাংলাদেশেও এমন হোক যে সব নারী অর্ধনগ্ন হয়ে বাস করুক তাতে নারীদেহের প্রতি কোন পুরুষের ইনটেনশনই থাকবে না"
তার কথা অনুযায়ী মানে হচ্ছে "নারী তুমি নগ্ন হও কিন্তু আমি পুরুষ সংযত হব না বরং তোমার নগ্নতায় অভ্যস্ত হয়ে একসময় আমি মুখ ফিরিয়ে নিব"
কি তার কথার সারাংস এমনটাই আসে না??
কেন ভাই নারীকে নগ্ন না করে আমি নিজেকে সংযত করতে পারিনা?? পারিনা আমার ভাইকে নৈতিক শিক্ষায় বড় করতে??
তর্কের এক পর্যায়ে আমি তাকে বললাম ভাই আপনি এই নগ্ন সিস্টেম টা আপনার ফ্যামিলি থেকে শুরু করেন, যদি পারেন তবে আমি আপনাদের সাথে নগ্নতার মিছিলে ব্যানার হাতে সবার সামনে রাজপথে থাকব। উনি আমাকে ব্লক করে দিয়েছিলেন।
এখন আসি, যে উনি ব্লগার হয়ে ঠিক ওয়েস্টার্ন কান্ট্রি সম্পর্কে কতটা জ্ঞান রাখেন?? নিচের তথ্যটা দেখুন:
নিচে দেয়া হলো বিশ্বের প্রথম ১০ টি ধর্ষণপ্রবণ দেশের
চিত্র।
১.মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র :
বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ধনী ও শক্তিশালী দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও নারী নিরাপত্তার হার চিন্তা করার মতো বিষয়। এদেশে ধর্ষণের শিকার
হওয়াদের মধ্যে ৯১ শতাংশ মহিলা ও বাকী ৯ শতাংশ পুরুষ।
২.যুক্তরাজ্য :
ইংল্যান্ড পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত দেশগুলির অন্যতম। অথচ সেদেশে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটে বিস্তর। তথ্য বলছে, বছরে প্রায় ৮৫ হাজার মহিলা ধর্ষিতা হন গ্রেট ব্রিটেনে। প্রতি বছর যৌন হয়রানির শিকার হন প্রায় ৪০ হাজার মহিলা।
৩.দক্ষিণ আফ্রিকা :
দক্ষিণ আফ্রিকায় কমবয়সী ও শিশুকন্যার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে সবচেয়ে বেশি। আর সেদেশে সাজাও অত্যন্ত কম। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে সাজা হয় মাত্র ২ বছরের জেল।
৪.সুইডেন : সুইডেনে প্রতি চারজনে একজন মহিলা ধর্ষণের শিকার হন। এবং প্রতিবছর ধর্ষণের সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে সুইডেনে।
৫.ভারত: বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতে প্রতিমুহূর্তেই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে। "নির্ভয়া কাণ্ডের" পর সেভাবে কোনও প্রভাব পড়েনি সমাজ জীবনে বা ধর্ষণের ঘটনাও কমার কোনও লক্ষণ চোখে পড়েনি।
৬.জার্মানি :
ইউরোপের আর এক উন্নত দেশ জার্মানিতে এখনও পর্যন্ত ধর্ষণের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ।
৭.ফ্রান্স:
১৯৮০ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সে ধর্ষণের ঘটনা অপরাধ হিসাবে গণ্য হতো না। পরে তা অপরাধের তালিকায় স্তান পেয়েছে। বছরে ৭৫ হাজারের বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ফ্রান্সে অথচ ১০ শতাংশ ঘটনারও অভিযোগ জমা পড়ে না পুলিশে।
৮.কানাডা : হাফিংটন পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী বছরে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ যৌন নির্যাতনের শিকার হন কানাডায়। বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটে বাড়িতে চেনা পরিবেশে এবং ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে
পরিবার- বন্ধুবান্ধবরাই যৌন নির্যাতন করেন।
৯.অস্ট্রেলিয়া :
অস্ট্রেলিয়াতে ২০১২ সালের হিসাব ধরলে পঞ্চাশ হাজারের বেশি মহিলা বছরে নির্যাতিতা হন।
১০.ডেনমার্ক :
ডেনমার্কে ৫২ শতাংশ মহিলা যৌন নির্যাতনের শিকার হন প্রতিবছর।
সূত্র : অন্য দিগন্ত
সূত্র : সামু ব্লগ
উত্তর চাই নারীবাদীদের কাছে উপরোল্লিখিত দেশ গুলো তো কঠোর নিরপত্তা আছে, নারীর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আছে। এমন স্বাধীনতাই আছে যে কেন নারী যদি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়েও রাস্তায় চলে তবুও তাকে কেউ কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। তাহলে কেন ধর্ষনের টপ লিস্টেড দেশ??
তাহলে ওরা কারা যারা রাস্তার পাশে পার্ক করা গারীতে সেক্স করে?? ওরা কারা যারা দিনের আলোয় প্রকাশ্য সেক্স করে?? উত্তর দেন।
ওদের কাছে সেক্স কোন ব্যাপারই না আর তা যেখানে সেখানে এভেইলেবল, তারপরও তারা টপ লিস্টে বাস করে!! ওয়াও জোস না ব্যাপার টা??
আর এদিকে আপনারা সম অধিকার চান, ধর্ষনের জন্য পুরুষ জাতি তুইলা গালি দেন! কেন কোন পুরুষই কি আপনাকে জন্ম দেয় নাই?? তাইলে যা মুখে আসে তা বলার মানে কি??
যে ছেলে ধর্ষন করে সে অবশ্যই কোন নারীর গর্ভেই জন্ম নিয়েছে, হয়ত ছেলেটার একটা বোনও আছে যিনি নারী! তবে তারা কেন নারী তাদের সন্তান/ভাইকে নারীর প্রতি সম্মান শিখায় নাই?? কেন নৈতিক শিক্ষা দেয় নাই?? কেন নারীকে বিপদে ফেলার বদলে নারীকে বিপদে রক্ষা করার শিক্ষা দেয় নাই?? তবে কি প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ্য ভাবে আপনারা নারীরা ব্যার্থ নন?? নাকি এখন থেকে নিজের ছেলে সন্তান হলে তার যৌনাঙ্গ গোড়া থেকে কেটে নারীবাদের দায়িত্ব পালন করে ঝেরে উঠবেন?? উত্তর দেন প্লিজ।
নিজে উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি না নিয়ে বরং নম্রতা, ভদ্রতা, সম্মান শ্রদ্ধা সহ নৈতিক শিক্ষা, মানুষ হওয়ার শিক্ষা নিজ ঘর থেকে চালু করুন তাতে আপনার ভাই/সন্তানের হাত থেকে অন্য নারীরা সুরক্ষিত থাকবে, ধর্ষন কমবে।
#সাকিব