এই ভিডিওতে বেশ কিছু পাবলিক কন্সেপশন নিয়ে কথা বলে হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি ত্রেভর নোয়াহ এর ডেইলি শোটা নিয়মিত দেখি। আজ দেখলাম সিএনএন বিল গেটস এবং ডক্টর ফাউচি দুইজনেরই ই ইন্টার্ভিউ নিল। তারপর দেখলাম এই সাক্ষাতকার। প্রথমেই একটু বলি এই ডক্টর ফাউচিটা কে? এর সাথে আমার পরিচয় বেশ কিছু দিন আগে একটা ইউটিউব ক্যাপশনে- যেখানে লিখা আমি ডোনাল্ড ট্রাম্প এর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার থেকে মাইক কেড়ে নিতে পারি না । আমি মুগ্ধ একটা প্রেসিডেন্টের সামনে এইভাবে কথা বলতে পারার সাহস দেখে। ডক্টর ফাউচি সম্পর্কে Ragib Hasan স্যারের একটা ভাল নোট আছে চাইলে পড়ে আসতে পারেন।
https://www.facebook.com/ragibhasan/posts/10158112100458670
এইবার আসি এই ভিডিওতে ত্রেভর নোয়াহ কি প্রশ্ন করেছেন আর ডক্টর ফাউচি কি উত্তর দিয়েছেন?
১। কেন এই করোনা ভাইরাস অন্য ভাইরাসের চেয়ে আলাদা?
এই প্রশ্নের উত্তরে ডক্টর ফাউচি বলেন এইটা অনেকটা ইনফ্লুয়েঞ্জার মত যা পারসন টু পারসন কন্টাক্টে ছড়ায় কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জায় মৃত্যু হার অনেক কম মাত্র ০.০১% কিন্তু এই করোনায় যা প্রায় ১%। এই ব্যাপারটা আমরা আগে কখনওই ফেস করি নাই। আবার ইবোলার সাথে তুলনা করলে বলা যাবে, ইবলাও পারসন টু পারসন কন্টাক্টে ছড়ায়ে কিন্তু এই স্পর্শ হতে হবে খুবই নিবিড়। ( আমি যদি ভুলভাল না বকে থাকি তাহলে এই ইবোলা ছড়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সঙ্গম করলে ডক্টর ফাউচি হয়ত এই ব্যাপারটাই বুঝাতে চেয়েছেন।
২। আচ্ছা আমাজন থেকে কোন প্রোডাক্ট আসল সেইটা রিসিভ করতে মানুষ ভয় পাচ্ছে, মানুষ কেনাকাটা করতেও ভয় পাচ্ছে কারণ বারবার ডেলিভারি পণ্য বা মুদি দোকানের পলিথিন মুছা সম্ভব না?
ডক্টর ফাউচি এই প্রশ্নের উত্তরে একটা কাশি দেন তারপর বলেন আমার কাছে চায়না থেকে কোন পণ্য আসলে আমি রিসিভ করব আমার অসুবিধা নাই। কিন্তু আমি সাথে সাথে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলব। এই ভাইরাসটা আসলে ছড়াচ্ছে ড্রপ্লেটের মাধ্যমে। মানে হাঁচি কাশি দেয়ার পর যে কণা গুলো বের হয় এইগুলো যদি সার্ফেসে পড়ে আর আমি কিছুক্ষণের মধ্যে সেই সার্ফেস স্পর্শ করি তারপর নাকে মুখে হাত দেই তাহলে ছড়াতে পারে। এইজন্য কোন কিছু স্পর্শ করার কিছুক্ষণের মধ্যে সাবান দিয়ে হাত দুয়ে ফেলতে হবে। কারণ আমরা এইটা জানি ভাইরাসটা সার্ফেসে বেশ কয়েক ঘণ্টা বাঁচতে পারে। আমি বলব ১৫ মিনিট পর পর হাত ধুতে
৩। এই যে ফেসবুকে বলা হচ্ছে চা, তারপর ডাইহাইড্রক্সি আরও বালছাল কি কি খেলে নাকি করোনা ভাল হয়? ( প্রথমেই বলি ত্রেভর নোয়াহ বালছাল শব্ধটা উচ্চারণ করে নাই, কিন্তু আমি খুবই বিরক্ত আমাকে আমার কিছু কলিগ এই জিনিসটা শেয়ার করছে, কোন এক ডাক্তার নাকি চা খাইতে বলছে? )
এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে- আগের কিছু এপিডেমিকে এই কেমিক্যাল কাজে দিছে এবং রেন্ডম ট্রায়ালে দেখা হইছে যে কাজ করে। কিন্তু করোনায় যে এইটা কাজ করবে এমন কোন প্রমাণ নাই। আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে এখন আমার মতে এইগুলো মাস পিপলের ব্যবহার করা উচিত না, কারণ যারা ভ্যাক্সিন আবিষ্কারে কাজ ট্রায়াল চালাচ্ছে তাদের দরকার।
৪। পুরো ইন্টার্ভিউ তে আমার কাছে এই প্রশ্নটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হইছে- আমরা কত দিন আইসলেশনে থাকব? কত দিন লকডাউন রাখব? ১৪ দিন ২১ দিন?
এইখানে ডক্টর ফাউচি একটা সেই বাক্য উচ্চারণ করছেন, সকালে সিএনএন এও দেখলাম একই কথা বলছেন Virus is the clock. একটু বুঝায়ে বলি উনি আসলে কি বলতে চাচ্ছেন। প্রথম কথা হচ্ছে আমরা কতদিনে এক্সপনেশিয়াল গ্রাফের পিকে যাব তারপর পিক থেকে নামব। ইতালির অবস্থা দেখে লাস্ট কয়েকদিনে মনে হচ্ছে ওরা পিকে যাচ্ছে এখন পিকে কিছুদিন থাকবে। কথা কথা হচ্ছে কতদিন পিকে থাকবে, তারপর এই পিক থেকে নেমে নরাম্ল অবস্থায় নামতে কতদিন লাগবে কেউ বলতে পারে না। কয়েকদিন আগে মনে হচ্ছিল ওয়াশিংটন হবে আমেরিকার এপিসেন্টার কিন্তু শেষ দুইদিনে দেখা গেল নিউইয়র্ক তছনছ হয়ে যাচ্ছে। এইটা বুঝা যাচ্ছে নিওইয়র্ক এখন পিকে যাচ্ছে, কয়দিন এই পিকটা থাকে সেইটা দেখার বিষয়। চায়না ৮ সপ্তাহ পর পিক থেকে নামছে। উনার কথা হইছে আমার মনে হইছে ভাইরাসটা কনট্রোলের একটা উপায় হইছে যখনি একটা এরিয়া করোনা আক্রান্ত হবে সাথে এরিয়া আইসলেশন করে ফেল উচিত কারণ এর পড়ে প্রশ্নের উত্তরে ফাউচি ব্যাখ্যা করছে কেন নিও ইয়র্ক সেই ভাবে করোনা আক্রান্ত হল-কারন নিও ইয়র্ক হচ্ছে একটা পর্যটন স্পট। প্রচুর মানুষ এইখানে আসে ফলে কন্টাক্ট বেশি হওয়াতে এইটা হইছে। নিওইয়র্ক টাইম এর এই আর্টিকেল টা পড়ে আসতে পারেন এইখানে খুব সুন্দর করে বলা হইছে করোনা কিভাবে চিন থেকে ছড়াল- Click This Link
সো গুজব ছড়াবেন না, এই মুহূর্তে যারা জেনেটিক্স বা ডক্টর তাদের কথা একটু শুনুন এবং অবশ্যই অথেনটিক কিনা সেইটা যাচাই করে নিন।
ত্রেভর নোয়াহ এর সাথে ডক্টর ফাউচি এর সাক্ষাতকার