মন খারাপ হলে কি করা উচিৎ? আমি জানি প্রায় সব মানুষ যে উত্তর দিবে তা হল গান শুনবেন, বাইরে কোথাও বেড়িয়ে আসবেন অথবা বন্ধুদের সাথে গল্প গুজব করবেন, আড্ডা দিবেন। যাই হোক এই সমাধান গুলো হচ্ছে আহ্লাদীপনা, এতে মন ভালো হয় না বরং মন খারাপ আরও বাড়ে, ব্যাক্তিগত ভাবে আমি মন ভালো করতে যে সমস্ত কাজ করা উচিৎ বলে মনে করি তা হল-
১। কথা বলা কমিয়ে দিতে হবে, মানুষজন এর সাথে কথা বলতে গেলেই তারা বুঝে যাবে যে মন খারাপ, এটা কারো কারো বিনোদনের কারন হতে পারে।
২। কাজে কর্মে অনেক ব্যাস্ত থাকতে হবে। অফিসের কাজ, বাসার কাজ, যে কোন ধরনের কাজ।
কাজ না থাকলে কাজ বানিয়ে করতে হবে, প্রয়োজনে ধোয়া কাপড় চোপড় আবার ধুতে হবে এই টাইপ কাজ।
৩। শারীরিক প্রচণ্ড পরিশ্রম হয় এই ধরনের কাজ বেশি বেশি করতে হবে, যেমন ঘর পরিষ্কার করা্, রান্না বান্না করা (পুরুষ মহিলা উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য) ঘর মোছা, (নেকরা দিয়ে বসে বসে মোছা) জিম করা, (ট্রেড মিলে ১০ পয়েন্টে দৌড়াতে হবে কম পক্ষে ৪০ মিনিট।)
৪। অতিরিক্ত মন খারাপের সময় শীতের দিনে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে হবে, আর গরমের সময় আগুন ফাটা রোদের মধ্যে হাঁটতে হবে মাইলের পর মাইল।
৫। মন খারাপের সময় যে আপনাকে তুচ্ছ চোখে দেখে এবং অপমান করার ধান্দায় থাকে তার আশেপাশে থাকতে হবে বেশি বেশি, তার উৎকট ব্যাবহারে বলা যায় না আপনার মন খারাপের প্যাটার্ন ঘুরে যেতে পারে।
৬। শপিংমল গুলোতে ঘুর ঘুর করতে হবে, নানা বিজাতীয় মানুষজন কথাবার্তা গান বাজনাতে অনেক কিছু তখন মাথা থেকে উবে যায়, এক্ষেত্রে যমুনা ফিউচার পার্ক আর বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্স এ ঘুরান দেয়া যেতে পারে। কিন্তু খবরদার কিছু কেনা যাবেনা, মনে কষ্ট নিয়া শপিং করলে বেশির ভাগ শপিং ভুল ভাল হয়, আমার ক্ষেত্রে সব সময় ভুল সাইজের ড্রেস কিনি। অনেকে আছে যেই জিনিস জিন্দেগিতে কোন কাজেই আসবেনা সেগুলো মন খারাপ নিয়া অন্যমনস্ক ভাবে কিনে বসে থাকে। আমার এক বান্ধবী স্কার্ট ভেবে একদিন দুই রঙের দুইটা পেটিকোট কিনে ফেলেছিল! মন খারাপের চোটে বুঝতেই পারেনি কি থেকে কি কিনে ফেলছে। দেখেন অবস্থা তাই মন খারাপ নিয়ে ভুলেও কিছু কেনা যাবেনা।
৭। মন খারাপের সময় বেশি বেশি খেতে হবে, বিশেষ করে ঝাল খাবার, ঝাল এর চোটে নাক মুখ চোখ দিয়ে এমন পানি বের হয়ে আসবে যে যন্ত্রণায় মাথা পুরো ফাঁকা হয়ে যাবে মনে কি ঘটেছে আঁচ করতেও টাইম লাগবে তখন।৭ নাম্বার পয়েন্ট টা বলায় আমার এক কলিগ ভীষণ বিষাদ মাখা কণ্ঠে বলেছিলেন ম্যাডাম খাইতেও তো টাকা লাগে, এত টাকা পাব কই! সংসার চালাতেই হিমশিম খেয়ে যাই। (এই ধরনের যারা আছেন তাদের জন্য ৭ নম্বর পয়েন্ট টার জন্য এক মিনিট নিরাবতা।) যাই হোক
মোট কথা মন খারাপ ব্যাপারটা আহ্লাদ করলে আরও বাড়বে। মন এবং শরীল একে অপরের পরিপূরক।মনে রাখতে হবে শরীল আরামে থাকলে মনের প্রায়োরিটি বেড়ে যায়, এবং শরীল পরিশ্রমের উপর থাকলে মন কি ভাবল না ভাবল সেগুলো নিয়া চিন্তা ভাবনা অনেক অনেক কমে যায়। তাই বেশি বেশি কাজ করুন মন ভালো রাখুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৬