somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটু এলোমেলো কথা আর একটু প্রকৃতির ছবি

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি আমার ভাই বোনের বিচ্ছু ছেলে মেয়েদের বলি আমি মরে গেলে খবরদার যেন কাউকে কাঁদতে না দেখি!! যদি কাউরে কাঁদতে দেখি তাইলে তোদের একেকটার খবর আছে!! চড় মেরে দাঁত ফেলে দেবো মনে রাখিস।
এখন জীবিত আছি ফিরেও দেখিস না! আর মরার পর কান্দন!! X( X( X(

আমার এই জোকগুলারে নাম দিয়েছি সস্তা জোক কারন এই সকল জোকে তেমন কেউ হাসেনা, বরং একটা কান্না কান্না পরিবেশ হয়!! আম্মা ছল ছল চোখে বলে তুই এই রকম মরার কথা কেন বলিস! কেন বলিস তুই!! তুই কি আমাকে মারতে চাস!!
আসলে বাবা মা হচ্ছে মানুষের জীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার। পৃথিবীর সকল বাবা মাকে সুস্থ সুন্দর ভাবে সন্মানের সাথে আল্লাহ্‌ দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখুক সেই কামনা।



আমার মেঝ আপু মারা গেছেন আজ তিন মাস উনত্রিশ দিন। এমন একটা দিন নেই, এমন একটি রাত নেই, এমন একটা মুহূর্ত নেই তাকে এক মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারছি, সে হঠাৎ এমনি আশ্চর্যজনক ভাবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলে যাবেন কিংবা গেছেন কিছুতেই বিশ্বাস হয়না।

জীবন বড়ই ঠুনকো নড়বড়ে অনিশ্চিত এবং মিথ্যা এবং অতি অল্প সময়ের জন্য একটি অপশন মাত্র। যখন মানুষকে দেখি জীবন নিয়ে নিজের পরিবার পরিজন নিয়ে নানা স্বপ্ন আর প্ল্যানিং খুব হাস্যকর লাগে! হাস্যকর লাগে কাউকে কাউকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথা বলতে দেখলে নিজেকে পৃথিবীর সেরা ভাবতে দেখলে '' নিজেকে এত সেরা ভাবার আসলেই কিছু নাই। মাটির নীচে ঘর প্রস্তুত! ওটা যে কোন সময় যে কাউকে টেনে নিতে পারে।



একটা মানুষ মরে গেলে হাজারো মুখে হাজারটা প্রসংশা! অথচ জীবিতকালে কেউ তার দিকে ফিরেও তাকায় না।। তার কি প্রয়োজন ভুল করেও কেউ জানতেও চায় না।।
মানুষটির বেঁচে থাকাকালীন এই প্রশংসা করলে কি হয় যা তার মরার পর করছে।? কি হয় একটু কেয়ার করলে? বিপদে একটু পাশে দাঁড়ালে! সাহায্য না হোক অন্তত হেসে একটু কথা বললে কি হয়?

সেদিন এইচ আর হেড এর কাছ থেকে আর্জেন্ট ডাক এসেছিলো আমার আর ইন্টার্ন এক মেয়ের, তার রুমে ঢুকে দেখি ইরা আপু, উনার সাথে সমুদ্র ভ্রমণের পর আগের মত আর দেখা হয়না, সে কদিন আগে বিয়ে করেছেন দীর্ঘ ঝড় তুফান আর বিরহের পর সুখী সুখী চেহারা, আজকাল উনি উনার ওড়নার আঁচল উড়িয়ে পরীর মতন ঘোরা ফেরা করেন অফিসে, তবু এত আনন্দের জীবনেও উনার অন্যকে নিয়ে মাথা ঘামানোর জন্য বিস্তর জায়গা আছে। এইচ আর হেড ম্যাডাম পঞ্চাশোর্ধ সৌম্য শান্তি চেহারার একজন কোমল মানুষ হয়েও সেদিন চেহারায় খানিকটা রাগী ভাব।
আমাদের দেখে ঝট করে ইরা আপু আঁচ করলো কিছু একটা হতে যাচ্ছে! কাজেই যে করেই হোক আশেপাশেই থাকতে হবে কিন্তু ম্যাডাম তাকে নিরাশ করে বলল ইরা তুমি দরজা বন্ধ করে দিয়ে চলে যাও এখন!

উনি দরজা ভেতর দিয়ে বন্ধ করে রুমের মাঝে উনার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিলো। কিচ্ছুতেই কিছু খেয়াল নাই।
ম্যাডাম প্রশ্নবোধক চোখে আর আমি একটা গাধা দেখতেছি সেই চোখে উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম, ইরা আপু হঠাৎই যেন ঘটনা বুঝতে পারলো বুঝে সরি বলে নিতান্ত অনিচ্ছায় স্লো মোশনে পা দুইটা লোহা হয়ে গেছে কিছুতেই নাড়ানো যায় না এই গতিতে বের হয়ে গেলো, ম্যাডামের সামনের চেয়ারটায় বসতে বসতে দেখি ইরা আপুর ফোন! হায়রে ইরা জাতি!!! উনি এই ফোন নেবার বাহানায় ৫ মিনিটের বেশি রুমে আসা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারবে বলে সন্দেহ! উনি তাই করলেন! এইবার ম্যাডাম প্রচণ্ড বিরক্ত আর আমি নির্বোধ বাচ্চা দেখতেছি সেই লুক দিলাম, উনার মিশন আজ ব্যর্থ।

যাই হোক আমাদের অপরাধ হল আমরা নামাজ ঘর ক্রস করার সময় জোরে জোরে কথা বলেছি, আসলে ঐ সময় ইন্টার্ন মেয়েটি তার আইডি কার্ড হারিয়ে দিশেহারা ছিল এবং আমাদের ফ্লোরের সমস্ত কোনা কাঞ্চিতে তার আইডি কার্ড খুঁজতেছিল, ঘটনাক্রমে আমি সেই পথ দিয়ে আসার পথে আমাকে পেয়ে যারপরনাই খুশি হয়ে কিছু একটা বলছিল!!
ইন্টার্ন মেয়েটিকে দেখলাম অতিরিক্ত ভয়ে অথবা লজ্জায় অথবা দুঃখে কাঁপছে।
উনার কাঁপাকাঁপি কয়েক মুহূর্ত দেখে ম্যাডামের দিকে চেয়ে বললাম ম্যাডাম কথা শুধু আমি বলেছি ও কিছু বলে নাই, ভুল আমার হয়ে গেছে, আই এ্যাম সরি এরকম আর হবেনা কথা দিচ্ছি।

ম্যাডাম বিচক্ষণ, সে আসল ব্যাপারটা বুঝতে পেরে অন্যান্য আলোচনা করে ছেড়ে দিলো! ইন্টার্ন মেয়েটি বের হয়ে বার বার সরি বলতে বলতে জানালো যে সে সত্যিই দুঃখিত হয়েছে যে আমি তার দোষ আমার ঘাড়ে নিয়ে ম্যাডামকে সরি বলে আসছি!

এই রকম ঘটনা আমার জীবনে বহুবার ঘটেছে যেমন এক সকালে বাসে উঠে মনটাই ভালো হয়ে গেলো কেননা জানলা দিয়ে এত ঝরঝরে বাতাস! আনন্দের সাথে জানলার এক তৃতীয়াংশ খুলে দিয়ে বসে আছি, হঠাৎ পেছন থেকে জানালার কাঁচ প্রচণ্ড শক্তিতে ধাক্কা দিয়ে আমার সাইট বন্ধ বন্ধ অবস্থা, জানালার কার্নিশে হাত রেখেছিলাম সময় মত না সরালে কেটে যেত, ভাবলাম ব্যাপারটা ভুলে হয়ে থাকতে পারে আবার জানলার কাঁচ খুলে দিলাম, এবং সাথে সাথেই আ্যকশন , পেছন থেকে চড়া গলায় চিৎকার করে ধমক দিলো একটা মেয়ে! সে ঠিক আমার পেছনে বসেছিল!

উনার কথা হচ্ছে বাতাস তো সবার দরকার তাই উনার সাইটে বেশি খোলা থাকবে ! একটা মানুষের মন নিমিষেই খারাপ করে দেয়া, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা কতই না সহজ! আমি জানালার কাঁচ পুরোটা আমার দিকে টেনে নিলাম, খাও যত ইচ্ছা বাতাস খাও।

কাজটা করেছিলাম আবেগে কষ্ট পেয়ে, পড়ে দেখলাম সে আমার সাইড দিয়ে যাবার সময় মাথা নিচু করে চলে গেলো! সে তার খারাপ ব্যবহারের জন্য অনুতপ্ত।

কিংবা দুইটা ঘটনাই হল যুদ্ধ শুরুর আগেই অস্ত্রহীন সৈনিকের উপর হামলা করে লজ্জিত কিংবা অনুতপ্ত অনুভব করা।



কিছু মানুষের স্বভাবে এই ধরনের আচরণ জন্মগত স্বভাবজাত। নিজেকে বড় এবং অন্যকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার মধ্যে তার নামে বাজে ধারণা পোষণ এবং সমালোচনার মধ্যেই এক ধরনের তৃপ্তি পেয়ে তাদের অক্ষমতাগুলো থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করে।

এই জন্য প্রকৃতি হচ্ছে সব থেকে ভালো বন্ধু ।



এই অসুস্থ মানুষজনের থেকে দূরে মাঝে মাঝে প্রকৃতির কাছে গিয়ে মনের কষ্ট বেদনা গ্লানি বিসর্জন দেয়া যেতে পারে।।



















কয়েকদিন আগের এক নৌকা ভ্রমনে ছবি তুলেছেন লেখক নিজে।।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:২১
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×