somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনবোধ

২০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




একদিন আমার খুব কাছের সহজ সরল বন্ধু আমারে চাকরীর জন্য খুব পিড়াপীড়ি করায়, আমি এইচ আরের একজন মেয়েকে যিনি প্রচুর নখরামি করেন,এবং যিনি একজন পুলিশের বউ বলে প্রচুর গর্ববোধও করেন, উনি বাসার কোন কাজ করেন না, রাঁধতে বাড়তে পারেন না বলে আরও গর্ব করে থাকেন, তাকে মোটামুটি ঠাণ্ডা গলায় থ্রেট দিয়া সেই বন্ধুরে ইন্টারভিউ বোর্ড পর্যন্ত পৌছাইয়া দেয়ার পর, ইন্টারভিউ জুরিবোর্ড তাকে সিলেক্ট করছেন এই আশ্বাস দিয়া শেষতক নাকচ করে দিলেন।

আমার বন্ধুর মতে সে খুবই ভালো ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন কিন্তু বাগড়া বসাইছেন সেই মেয়ে যিনি পুলিশের বউ বলে গর্ব করেন, যিনি এইচ আরের প্রধান না হলেও প্রধান হিসেবে ধাপট দেখাইয়া সেইখানে কাজ করেন।

পরবর্তীতে আমার বন্ধু এত কম জানে ক্যামনে! ক্যামনে সে আমার বন্ধু হয়!! এই নিয়া তাদের সমস্ত অফিস, অফিসের চেয়ার টেবিল ল্যাপটপ ডেস্কটপ পিওন পর্যন্ত ফিসফাস ও হাসাহাসি করতে লাগলেন। যার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সেই পুলিশের বউ।

ভুল আমার হইছে, কাউরে চাকরীর জন্য তদবির করতে হাত পা ধরতে হয়, ঠাণ্ডা গলায় শাসানী দিতে হয় না। শাসানী তারে ইচ্ছা করে যে সেই সময় দিছিলাম তা না, সে আমার বন্ধুর সিভি হাতে নিয়া ঠোঁট উলটাইয়া যে অবহেলার চেহারা করেছিলেন তার জবাবে হাল্কা একটা শাসানী ফরজ হয়ে গেছিল।এবং তাতেই সে মুলত বেশি ঘাবড়াইয়া গেছেন, যে এর বন্ধুরে যদি নেয়া হয় তাহলে হয়তো ক্রমাগত কৈফিয়ত কিংবা শাসানীর ভেতর থাকতে হতে পারে, কাজেই তাকে কিছুতেই চাকরী দেয়া যাবেনা।


স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমি প্রচণ্ড বিরক্ত হয়ে, কারো সাথে কিছু ডিসকাস করার ব্যাপারে নিষেধ করে, চুপ হয়ে যাওয়ার কয়দিন পর আমার বন্ধু ভয়ে ভয়ে আমারে ফোন দিতেই আমি ওরে আমি স্বাভাবিক আছি, এবং ঘটে যাওয়া ঘটনাকে আড়াল করার জন্য বললাম আচ্ছা ধর হলি আর্টজানের মতন ঘটনায় আমরা পড়লাম তখন আমি কি করবো বলে তোর মনেহয়?? ও সাথে সাথে উত্তর দিলো তুই আমগো যেমনে হোক বাঁচাইয়া দিবি।
অদ্ভুত কথা এরকম ভাবার কারন কি রে! আমি ঐ সিচুয়েশনে ক্যামনে বাঁচাবো?? বন্ধু বলে তা জানিনা কিন্তু তুই ঠিকই পারবি তুই ক্যামনে যেন সব পারোস।

ও যেহেতু সহজ সরল ও এই রকম অন্ধ বিশ্বাস করতেই পারে, কিন্তু আমার অতি দুষ্ট এক ভাগ্নিকে একই প্রশ্ন করবার পর, সে দুষ্ট হাসি দিয়া একই উত্তর দিলো! তার দুষ্ট হাসিতে ছিল কি মজা, তুমি মরবা আর আমরা বেঁচে যাবো! কিন্তু আমি কনফিউস্ড হয়ে কিছুতেই ইমাজিন করতে পারলাম না, আসলেই আমি অতো ভালো কিনা!? এরপর আমার আরেক বান্ধবীকে একই প্রশ্ন করলাম, সে যথেষ্ট বুদ্ধিমতি এবং আমার সম্পর্কে অনেক ধারণা রাখেন।

তবে সে একই ধরনের উত্তর দিলেন, কিন্তু কিছুটা ঘুরাইয়া উত্তর দিলেন, বললেন, সামিয়া তুমি নিজের জীবন তুচ্ছ করে ওদের বাঁচাইয়া ফেলবা সেইটা তুমি করবানা, তুমি বাঁচানোর সম্ভাবনা থাকলে চেষ্টা করবা, চেষ্টায় কাজ হবেনা বুঝতে পারলে কিছুই করবানা, তবে এটা ঠিক তুমি জীবিত অবস্থায় কারো ক্ষতি হতে দিবানা।

ওয়েল!! এই ভ্রান্ত ধারণা ওদের কেন হইল আমি জানিনা। একজনের প্রতি আরেকজনের এই অন্ধবিশ্বাস কে কি বলা যেতে পারে? এই বিশ্বাস সাময়িক যেমন হতে পারে, তেমনি চিরদিনের জন্য ও হতে পারে, এবং মানব সম্প্রদায়ের ব্যাথা বেদনা কষ্ট হতাশার মুল কারন এবং দুনিয়ার তাবৎ সারভাইভার তৈরি হয় অন্যের প্রতি এই সাময়িক অন্ধ বিশ্বাস থেকে। আসলে বিশ্বাসটা সাময়িকই হয় অথবা বিশ্বাস জিনিষটাই অস্থায়ী।

একচুয়ালি সেই হিসেবে সারা দুনিয়ার মানুষই সারভাইভার কারন তারা কেউ না কেউ কারো না কারো উপড়ে ডিপেন্ডেট, যার ভিত্তি হল গিয়া অন্ধবিশ্বাস। যে কারো সাথে কথা বললে এই রকম কোন না কোন সাইড থেকে সে সারভাইভার জানা যাবে, কোন কোন ডিফ্যাক্ট তার জীবনে পাওয়া যাবেই। আসলে এইটা মনেহয় মানব চরিত্রেরই একটা চক্র যা মানুষ তার মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চালাইতে থাকেন। একজন মৃত প্রায় মানুষও মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বিশ্বাস করেন কেউ এসে তাকে শেষ মুহূর্তে বাঁচিয়ে ফেলবে।

হতে পারে এইটা একটা ভ্রান্তি ভ্রান্তি খেলা! অথবা এইটাই বেঁচে থাকবার মুল সূত্র! যে কোনটা হতে পারে।
কথায় আছেনা বিশ্বাসে মিলায় শান্তি তর্কে বহুদুর।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:১৬
১৮টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×