somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খুন

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা শব্দ।
বহু দুর থেকে একটা ক্ষীণ শব্দ ভেসে আসে।
খুব চেনা লাগছে।
হ্যা,জীবনের শব্দ।
আবার।
থেমে থেমে....
আবার...
এতক্ষণে নিশ্বাসের শব্দ টের পাই।
আধবোজা চোখে তাকাই..দু'টা তেলাপোকা আমার পা থেকে গড়িয়ে পড়া রক্ত চাটছে।আবার চোখ বুঁজি।
আআআহহহহহহহ্!!!
লোকটা আমার গলা পা দিয়ে মাটিতে চেপে ধরেছিল।
-বল?তুই খুন করিসনি?
-না না!আমি খুন করিনি।
অতি কষ্টে মুখ দিয়ে বেরুনো কথাগুলো লোকটা বুঝে কি না জানিনা।
ফের আমাকে টেনে হিঁচড়ে চেয়ারে বসানো হয়।জামাটা এত ভেজা....শীত শীত লাগছে।লোকটা এবার আমার মুখের সামনে আলো নিয়ে আসে।আহহ্....কত আলো!!অথচ আমার চোখ ঝলসে গেল!!ব্যথায় কাতরে উঠি আমি।
লোকটা আমার গলায় ফাঁস লাগায়।
-বল শালা,শুয়োরের বাচ্চা?তুই খুন করিসনি?বল!তোর সাথে আর কে কে ছিল?
আ আমি জানি না!কার খুন?আমি খুন করিনি!আমাকে মারবেন না.....আআমি আআমি নির্দোষ।আআআআহহহহ্!
তারপর সব কালো।লোকটা আমার মুখে কষে লাথি মেরেছিল বোধ হয়।
আমি আবার তাকাই।কে যেন কথা বলছে।সিলিং এর উপর সেই তেলাপোকা দুটো বসে আছে।আশ্চর্য!
আমি ওদের কথা শুনতে পাচ্ছি।অনেক পুরনো হাড়মজ্জাগত অভ্যাসবশত কান পেতে তাদের কথা শুনার চেষ্টা করি।
-আসছে ভালবাসা দিবসে আমরা কি করব বল তো?
-এই যে লোকটা দেখছ,ভালবাসা দিবসে এই লোকটাই হবে আমাদের ডিনার।
-ওহ্! তুমি এত ভালো I LOVE YOU!
আরে এটা তো কিছুই না তোমার জন্য আমি সব করতে পারি!
আরেকটা তেলাপোকা উড়ে আসে।আমার মতই লুকিয়ে শুনছিল।
-হাহাহা।এই একটা মাত্র মানুষ!?সুন্দরী,আমার সাথে যাবে?এমন অনেক সুস্বাদু খাবার খাওয়াব তোমায়!
-তাই কে তুমি?
-আমি দেশের সবচেয়ে বড় হাসপাতালের মর্গের Director..এই ফালতু তেলাপোকাকে ছেড়ে আমার সাথে এস।
তেলাপোকা দুটো উড়ে গেল। একটা তেলাপোকা রয়ে গেল।
আমরা দুজন দুজনকে দেখছি | কিন্তু এ কী!ও যে আমার আয়নায় দেখা প্রতিচ্ছবি মাত্র।কোথায় যেন আমরা একাকার হয়ে গেছি!
তার নাম কী?
একাকিত্ব?
কিংবা নিস্বংগতা?
তেলাপোকাটা আমার মুখের উপর উরে এসে রক্ত চাটতে থাকে |
দরজা খুলে যায়আবার সেই লোকটা আসেকে সে?মনে হয় একে যেন কোথায় দেখেছিঝাপসা চোখে তাকিয়ে তার চেহারা ভাল দেখা যায় না| কিন্তু আমি ওকে চিনিওর সাথে আমার বহুদিনের পরিচয়|
-"মরে গেছে নাকি?"
মুখের উপর এক বালতি পানি এসে পড়ে| তেলাপোকাটা দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় পালায়| আবার শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।আবার নির্মমতার সাগরে আমাকে ফেলে দেয়া হয়| আমি যে সাঁতার জানিনা! নিজেরই রক্তে ডুবে যেতে থাকি।
দূর থেকে....
বহু দূর থেকে....ভেসে আসে হাসির শব্দ...
সাগরের ঢেউয়ের দেয়ালে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে সেই হাসি...
প্রতিদিন একটু একটু করে খুন হওয়া আমাকে সে হাসি উপহাস করে...
নিজের লাশের দিকে তাকিয়ে এবার আমি আমার খুনিকে চিনতে পারি..
সেই লোকটাকে ও চিনতে পারি-আমার খুনিকে;বাস্তবতাকে....
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×