somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে ইসলামীকরণে জামাত-বিএনপির অগ্রগতি (সংক্ষিপ্ত)

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




১। সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজনঃ ৭২ এর সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ছিল না। সেনাশাসক জিয়াউর রহমান নিজের ক্ষমতাকে পোক্ত করার জন্য সংবিধানে এটি সংযোজন করেন। একইসাথে তিনি একাত্তরের ঘাতক রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ দলের রাজনীতিতে আসারও সুযোগ দেন। এরপর থেকেই জামাত বাংলাদেশকে ইসলামীকরণে তার কার্যক্রম পুরোদস্তুর শুরু করে। আজ বাংলাদেশে ইসলামীকরণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগের মত দলও সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম তুলে দিতে পারেনি। আসলে জামায়াতে ইসলামীর ইসলামীকরণে আওয়ামী লীগও বাদ যায় নি। ধর্ম বিষয়ক মানসিকতায় আজ আওয়ামী লীগ আর জামায়াতে ইসলামীর পৃথক করা খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামঃ আরেক স্বৈরশাসক এরশাদ সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম অন্তর্ভূক্ত করেন। একটা প্রবাদ আছে "ঘরে আগুন লাগলে তাতে খড়কুটো দিয়ে তাড়াতাড়ি পুড়ে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।" জিয়াউর রহমান বিসমিল্লাহ দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের অন্তরে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন, আরেক সেনাশাসক বাদ যাবেন কেন? একজনে সংবিধানের সুন্নতে খতনা করলেন আরেকজন রাষ্ট্রের সুন্নতে খতনা করলেন। জামায়াতের পোয়াবারো। বিশ্ববেহায়াদের হাত ধরে শকুনরা এবার তাদের আসন পোক্ত করার সুযোগ পেল। বর্তমান অবস্থা তো জানেনই। আওয়ামী লীগ যথারীতি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখেছে। রাষ্ট্র আজকাল নামাজ রোজাও করে কিনা কে জানে!

৩। রোজার সার্বজনীনকরণঃ রমজান মাস আসলে দেশ এখন এক মহা ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত হয়। দিনমজুর ও নিম্নশ্রেণী ব্যতিত অন্যান্যদের কাছে রোজা হল সওয়াব কামাইয়ের জন্য একটি মহান মাস। ধর্মীয় দৃষ্টিতে যা পাপ বলে বিবেচিত তা দিনমজুর ও নিম্নব্ত্তিদের মাঝে কম, তাই তাদের রমজান মাস নিয়ে তেমন মাথাব্যথা থাকে না। তাছাড়া রোজা রাখার আনুসঙ্গিক ব্যয় বহন করা এবং রোজা রেখে শারীরিক শ্রম দেয়াও নিম্নবিত্তদের সম্ভব হয় না। কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যব্ত্তি এবং উচ্চবিত্তদের জন্য সওয়াব কামাইয়ের মাধ্যমে পাপমোচনের অবারিত দ্বার খুলে দেয় রমজান। শিক্ষিত-অশিক্ষিত-ছাত্র-শিক্ষক-ব্যবসায়ী-জ্ঞানী-অজ্ঞানী-আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবাই রোজার মাসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে রোজা রাখার জন্য। সোজা কথায় পাপীশ্রেণী পাপমুক্তির মোক্ষম এই সুযোগ মোটেই হাতছাড়া করতে চায় না। ইফতারীর সময়ে যদি রাস্তায় কেউ বের হয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন যে রাস্তা এমন ফাঁকা যে আপনার মনে হতে পারে আপনি কারফিউ এর মধ্যে বাইরে নেমেছেন। এর প্রায় পুরো দাবীদারই আমাদের জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের। আরো ২৫-৩০ বছর পূর্বে ফিরে গেলে দেখতে পেতেন যে ঐ সমযে রমজান ছাত্রদের মাঝে অতটা গুরুত্ব পেত না। তাদের কাছে শিক্ষাটাই প্রধান বিষয় ছিল, ধর্ম অতটা গুরুত্ব পেতনা। শিক্ষকরাও এখনকার মত ধর্মান্ধ ছিল না, সাধারণ মানুষের মধ্যে ধর্মভক্তি ছিল কিন্তু ধর্মভয় এতটা ছিল না।

৪। নারীদের হিজাবীকরণঃ দেশে পেশাজীবি নারীদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়লেও নারীদের বস্তাবন্দীকরণ (বোরকাকরণ) ও হিজাবীকরন বাড়ছে আরো বেশি আশংকাজনক হারে। ওয়াজ মাহফিল, জুমার নামাজের খুতবাসহ (খুতবা এখন আর রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রপ্রধানের গুনগান নয়) বিভিন্ন প্রচারে প্রচারে নারীদের বোরকার মধ্যে ঢুকানোর পুরুষালি প্রবণতা বাড়ছে পূর্বের তুলনায় বহু বহু গুন। এ ছাড়াও আযানের সময় মাথায় ওড়না বা কাপড় দেয়াটাও একটা প্রচলিত রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আযানের সময় কোন নারীর মাথায় কাপড় না দেখলে আজকাল শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল বয়সী পুরুষের মাথা আউলাইয়া যায়। নিয়মিত গাঞ্জাখোড়, ডাইলখোড়, ইভটিজার, ধর্ষক, ঘুষখোর, বদমাশ, লুচ্চা থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম যে কেউ আপনার বা আপনার মা-বোন-স্ত্রীকে রাস্তায় ধমক দিয়ে লজ্জায় ফেলে দিবে যদি আপনার বা আপনার মা-বোন-স্ত্রী আযানের সময় মাথায় কাপড় বা ওড়না তুলে না দেয়। এটাও জামাত-বিএনপির ইসলামীকরণের ফল।

৫। জঙ্গী উত্থানঃ জঙ্গী সম্পর্কে লুৎফুজ্জামান বাবরের সেই বিখ্যাত ডায়লগটা আপনারা বোধ হয়ে কেউ ভুলেননি-"উই আর লুকিং ফর শত্রুজ।" বিএনপির আরো একটি বিখ্যাত ডায়লগ ছিল- "বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি।" অবশ্য পরে বাংলা ভাইকে ফাসি দিয়ে নিজেরাই প্রমাণ করে গেছেন যে তাদের বাণী মিথ্যা ছিল, মিডিয়াই সঠিক ছিল। জামায়াতের জঙ্গী সংশ্লিষ্ঠতা বহুবারই প্রমাণ হয়েছে। জামায়াতের অঙ্গসঙ্গঠন ইসলামী ব্যাংককে জঙ্গী সংশ্লিষ্ঠতার জন্য জরিমানাও করা হয়েছিল। এছাড়া ইবনে সিনা হাসপাতালসহ বেশকিছু অঙ্গসঙ্গঠন জঙ্গীদের অর্থায়ন, সেবা-চিকিৎসা প্রদান করে থাকে। এছাড়া বিএনপি শাসনামলে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান বিষয়ে তারেকসহ অনেকেরই সংশ্লিষ্ঠতা আছে বলে বর্তমান তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

আইজকা আর থাক। আবার পরে লিখুম। চাইলে আপনারা এর সাথে কিছু এডাইতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১৪
৪৭টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×