দুই হাজার তেরো। 'অভিশপ্ত তেরো'র মতই কুৎসিত একটা সংখ্যা। এই সংখ্যারেখার আগের এবং পরের বাংলাদেশের তফাৎটা বিস্তর। অসহিষ্ণু এবং সাম্প্রদায়িক যুগে প্রবেশের বছর। নোংরা শোনালেও 'সাম্প্রদায়িক' শব্দটা ব্যবহার করতেই হলো।
আচমকা এই সময়টার বীজ কিন্তু বোনা হয়েছিল পঁচাত্তরের পরেই। জিয়া এবং এরশাদ বীজকে সুরক্ষা দিয়েছেন। বিএনপির প্রথম টার্ম দিয়েছে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস। আওয়ামী লীগ তাদের প্রথমবারের শাসনামলে দস্তুরমত উপেক্ষা করে গেছে সেই ছোট্ট চারার অস্তিত্ব।
আবার বিএনপি এলে পর তরতরিয়ে বাড়তে থাকে গাছ। 'ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন গং' গাছের চারপাশে বেড় দিয়ে সুরক্ষিত করে গেছে তার অস্তিত্ব।
আওয়ামী লীগ এলো। কিন্তু বীজ ততদিনে পরিপূর্ণ বৃক্ষ। গাছে ফল ঝুলছে। গাছ না কেটে ঢিল ছুঁড়ে গাছ ফলশূন্য করার খেসারতে চলে এলো দুই হাজার তেরো। মাহমুদুর রহমান তখন মসীহা। গাছের রক্ষক। বিষবৃক্ষের ফল তুলে দিতে লাগলেন দেশবাসীর হাতে।
বিষের কথা ভুলে দেশ ডুবলো বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নে। কল্লা গেলো বিষবৃক্ষের বিরুদ্ধচারণকারীদের। আবার, গাছের শুকনো ডাল-পালা, পাতা বেঁচেও দেদারসে পকেট ভারী করতে লাগলো কেউকেউ।
যুদ্ধাবস্থায়ও লাভ হতে থাকলো সরকার এবং মাহমুদুর রহমান গং এর। ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকলো কেউকেউ। আর কল্লা হারাতে থাকলো মাথায় স্বপ্নের চাষ করা কৃষকেরা।
দেশ তো হারালো সবকিছু। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হলো বিএনপি। মাহমুদুর রহমানকে প্রতীক বানিয়ে ঝান্ডা উড়ানোর উজবুকির খেসারত আজ অবধি দিয়ে চলেছে দলটি।
গতকালকের হামলা বা জনরোষ যাই বলি তার জন্য বহুলাংশে নন প্রায় পুরোটাই দায়ী মাহমুদুর রহমান নামক অপোগণ্ডটি। গতরে রক্ত নিয়ে উনি হাসছেন। কারণ, তিনি জানেন লাল ফিতে কেটে যে দুই হাজার তেরোকে তিনি স্বাগত জানিয়েছিলেন এখন সেটাই বাংলাদেশ।
সবকিছুর পরেও কিন্তু থেকে যায়। মাহমুদুর রহমানকে শিক্ষা দিয়ে নিজেদের গায়েই আঁচড় কাটলো আওয়ামী লীগ। জনরোষ এখন সহানুভূতির ফুল হয়ে ঝড়বে ঐ মাহমুদুর রহমানের ওপরেই।
আওয়ামী লীগের হঠকারিতায় ভুগবে এবং হারবে আমাদের বাংলাদেশ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:০৯