বেশ কয়েক বছর আগের কথা। তখন সংবাদ বিকিকিনি ব্যবসার একজন কর্মচারী আমি। রাত এগারোটায় অফিস। গিয়েছি পাঁচ মিনিট আগেই।
রাতের শিফটের আমাদের মুখদর্শন মাত্রই আগের শিফটের ক্লান্ত এবং অস্থির সেনানীরা ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে পড়লেন। ছুটির ঘন্টা পড়ে গেছে, তাদের বাড়ি যেতে হবে।
নিজের ডেস্কে গিয়ে চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিতেই তৌহিদ ভাইয়ের তারস্বরে চিৎকার, 'ভাই, লিড দ্যাহেন। হাউয়ার পোলারা করছেটা কি!'
ধড়মড় করে উঠে নিউজ সাইটে গিয়ে লিড নিউজ দেখেই চক্ষু চড়কগাছ। হাসবো না কাঁদবো সেই চিন্তায় খাবি খাচ্ছি।
বিএনপির এক নেতাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ শিরোনাম করা হয়েছে। শিরোনাম ঠিকই আছে কিন্তু নেতার নাম দেয়া হয়েছে- 'শামসুজ্জামান দুধ।'
তৌহিদ ভাই চোখের পলকে 'শামসুজ্জামান দুধ'কে 'শামসুজ্জামান দুদু' বানালেন। কিন্তু আসল ঘটনার দেখা মিললো সংবাদের রাফ কপি আর এডিটেড কপির মধ্যে।
নিউজটি তৈরি করেছেন অফিসে সদ্য যোগ দেয়া জুনিয়র একজন। উচ্চারণগত সমস্যার কারণে 'দ' আর 'ধ' এর প্রভেদ তার কাছে নেই। পুরো নিউজেই সে 'শামসুজ্জামান দুদু'কে 'শামসুজ্জামান দুধু' লিখেছে।
ম্যাজিকের বাকি অংশটা ঘটেছে এডিট করার সময়। অত্যন্ত সিনিয়র যিনি এডিটের দায়িত্বে ছিলেন তিনি সবগুলো দুধুর ওপর হাত বুলিয়ে সেগুলোকে দুধ করে দিয়েছেন। ফাইনাল ড্রাফটে 'শামসুজ্জামান দুদু' হয়ে গেছেন 'শামসুজ্জামান দুধ।'
ঘটনা আর কিছুই নয়। ছুটির ঘন্টা মস্তিষ্কে বাজতেই 'দুদু', 'দুধু' আর 'দুধ' সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। বেচারা শামসুজ্জামান।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৮