somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়ে মা,মেয়ে অদম্য শক্তি

৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এ-বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল,
নারী দিল তাহে রূপ-রস-মধু-গন্ধ সুনির্মল।


মেয়ে কেন দুর্বল ! কে বলেছে দুর্বল !
কেও কি দেখেনি ইতিহাসের পিছের পাতা গুলো। দেখেনি তাদের সে ইতিহাস ! তবে কেনো আজও নারী র্নিযাতিত !! দেখেনি তাদের প্রতিবাদি রূপ , দেখিনি তাদের চোখের জলন্ত আগুন ।
আজ মনে করিয়ে দিব সেই ইতিহাস । নাড়ীদের জেগে উঠার সময় আবারও এসেছে আজ । নির্নম ভাবে মৃত্যু আর আপমান অপদস্থ আর নয় !!
নারীদের প্রথম আন্দোলনের শুরু

১৬৪৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নারীর অধিকার নিয়ে প্রথম কণ্ঠতুলে “মার্গারেট ব্রেন্ ” নামক এক নারী ম্যারিল্যান্ডের অ্যাসেম্বলিতে প্রবেশের দাবি করেন । আবার ১৬৬২ সালে ওলন্দাজ নারী মার্গারেট লুকাস রচিত 'নারী ভাষণ' বিশ্বের জ্ঞাত ইতিহাসে প্রথম নারীবাদী সাহিত্য। এই সৃষ্টিকর্মে নারীর পরাধীনতা ও অসম অধিকারের বিষয়ে তিনি আলোচনা করেন। ১৭৯১ সালে ফরাসি নাট্যকার ও বিপ্লবী ওলিম্পে দ্যা গগ্স (Olympw de Gouges) 'নারী অধিকার এবং মহিলা নাগরিকদের ঘোষণা' প্রকাশ করেন। এতে তিনি বলেন, 'নারী জেগে উঠো; গোটা বিশ্বে যুক্তির সঙ্কেত ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে। তোমার অধিকারকে আবিষ্কার করো। প্রকৃতির শক্তিশালী সাম্রাজ্য এবং পক্ষপাত, গোঁড়ামি, কুসংস্কার ও মিথ্যা দিয়ে অবরুদ্ধ নয়। সত্যের শিখা পাপ ও অন্যায় দখলের মেঘকে দূর করে দিয়েছে।' ১৭৯২ সালে তার বিখ্যাত গ্রন্থ 'A Vindication of the Rights of Woman' বা 'নারী অধিকারের ন্যায্যতা' প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থে তিনি নারীদের উপর পুরুষতন্ত্রের নিপীড়নের ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এর পূর্বে ১৮৩৭ সালে আমেরিকায় প্রথম দাসপ্রথা বিরোধী নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১২টি রাজ্যের ৮১ জন ডেলিগেট সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের অর্জনও কম ছিল না। এর মাধ্যমে মার্কিন নারীরা প্রথমবারের মত রাজনীতির সুযোগ পায়। ১৮৬৮ সালে এলিজাবেথ কেডি স্ট্যান্টন ও সুশান বি অ্যান্টোনি মিলে নারীবাদী সাময়িকী 'দি রেভ্যুউলিশন' প্রকাশ করেন। এখানে নর-নারীর অভিন্ন অধিকারের ব্যাপারে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। ১৮৯১ সালে কেডি স্ট্যান্টন এবং আরো ২৩ জন নারী মিলিতভাবে 'নারীর বাইবেল' রচনা করেন।
১৮৭১ সালে ফ্রান্সের শ্রমজীবী জনগণ প্রথম সাম্যবাদী সমাজ নির্মাণের উদ্দেশ্যে প্যারি কমিউন প্রতিষ্ঠা করেন। এ আন্দোলনে হাজার হাজার শ্রমজীবী নারীর অংশগ্রহণ নারীবাদকে নতুন গতি দেয়। প্যারি কমিউন রক্ষার্থে ১০ হাজার নারী যুদ্ধে অংশ নেয়। পরবর্তীতে, প্যারি কমিউন পতনের পর যুদ্ধ পরিষদ ১০৫১ জন নারীকে অভিযুক্ত করে। এদের মধ্যে লুই মিচেল এবং এলিজাবেথ ডিট্রিভের নাম ইতিহাসে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৮৬৬ সালে দার্শনিক ও আইনজ্ঞ জন স্টুয়ার্ট মিল নারী অধিকারে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেন। স্টুয়ার্ট মিল ব্রিটেন পার্লামেন্টের সদস্য হবার পর নারীর ভোটাধিকারের পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেন। ১৮৬৯ সালে ভোটাধিকারসহ অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি 'নারীর অধীনতা' রচনা করেন।
বাঙলায় নারী

সেলিনা পারভীন
১৯৬৯-এর রাজনৈতিক আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ ৷ সেলিনা পারভীনের শরিক হন গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলন কর্মকাণ্ডে৷ ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বেরিয়ে পড়তেন '৬৯-এর ২১ ফেব্রুয়ারি পল্টনের জনসভায় বা শহীদ মিনার থেকে বের হওয়া নারীদের মিছিলে যোগ দিতে৷ শরিক হতেন বুদ্ধিজীবীদের প্রতিবাদে আর সভায়ও৷
সুফিয়া কামাল

১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে করেন। এই বছরে তিনি ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শরিক হয়েছেন, কার্ফ্যু উপেক্ষা করে নীরব শোভাযাত্রা বের করেছেন। মুক্তবুদ্ধির পক্ষে এবং সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিপক্ষে আমৃত্যু তিনি সংগ্রাম করেছেন। প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন হলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তাঁকে বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি নারী শিক্ষার জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাথমিক অবস্থায় ছাত্রী ছিল ৮ জন। চার বছরের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪-তে। ১৯৩০ সালের মাঝে এটি হাই স্কুলে পরিণত হয়। স্কুল পরিচালনা ও সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রোকেয়া নিজেকে সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত রাখেন। ১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন।[২] বিভিন্ন সভায় তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। ১৯২৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলার নারী শিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
একজন বাঙালী, যিনি ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী মহিলা শহীদ ব্যক্তিত্ব।[১] তৎকালীন পূর্ববঙ্গে জন্ম নেয়া এই বাঙালি বিপ্লবী সূর্য সেনের নেতৃত্বে তখনকার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং জীবন বিসর্জন করেন।
মাদার টেরিজা
১৯৮২ সালে বৈরুত অবরোধের চূড়ান্ত প্রতিকূল সময়ে মাদার তেরেসা যুদ্ধের একেবারে ফ্রন্ট লাইনের হাসপাতালে আটকে পড়া ৩৭ শিশুকে উদ্ধার করেন। ইসরায়েলী সেনাবাহিনী ও ফিলিস্তিনী গেরিলাদের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধ বিরতি ঘটিয়ে পরিবেশ কিছুটা অনুকূলে এনেছিলেন। এই সুযোগেই রেড ক্রসের সহায়তায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলে যান। বিধ্বস্ত হাসপাতালগুলো থেকে কম বয়সের রোগীদের সরিয়ে আনেন।
এগুলো ছিলো শুধু ইতিহাস

বর্তমানে মেয়ে জাতি তাদের এই হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের সাথে সাথে হারিয়ে ফেলছে তাদের অধিকার গুলোকে। আবারো তারা ইতিহাসের নারী-বিরোধী দালালদের মতো কিছু নতুন শত্রু এর মুখে পড়ছে। আর আমাদের সেই পুরুষজাত চেয়ে চেয়ে দেখছে। তবে তাই বলে নারী পুরুষের সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না !! ইতিহাস তো এমনটি বলে না !!
তবে কেন তোমরা জেগে উঠছো না আবার , কেন ফুঁসে উঠো না আবার ইতিহাসের পাতার মতো জলন্ত আগুনের মত !!
কেনোই বা দেশে এভাবে দিনে দিনে শেষ হয়ে যাবে নতুন উৎজীবিত প্রান, কেনোই বা মরতে রিশা,তনু,মিতু !!
মেয়ে নারী, মেয়ে মা । প্রত্যেকটি মেয়ে থেকে সৃষ্টি হয় একজন মা। আর যে মায়ের জন্য সন্তান বড় হয় , সেই সন্তানেরা অন্য কোন মেয়ে মেরে ফেলতে পারে।
মেয়ে মা হতে পারে । মেয়ে সেবা দিতে পারে। মেয়ে প্রতিবাদী হতে পারে। মেয়ে কমলবতী হতে পারে। মেয়ে ক্ষমতাবান হতে পারে। মেয়ে অদম্য শক্তির অধিকারী হতে পারে ।
তবে মেয়ে কেন এতা অবহেলিত !! মেয়ে জাতি কেন আগুনের শিখার মত জ্বলে থাকতে পারবে না। জাগো জাতি জাগো !! জাগো মেয়ে , জাগো অদম্য শক্তি !!
ভেঙ্গে দাও দালালদের শক্তি ! রুখেদাও নিষ্বাশ !! নেমে আসো অান্দোলনে তোমাদের শক্তির জোরে । আর কত হবে অবহেলিত ,হবে শোষিত !! দেখিয়ে দাও শামসুল হকের বিলকিসের মতো !!
শত শক্তিকে পরাজিত করতে পারে নারী !! মেয়ে মা , মেয়ে অদম্য শক্তি !!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×