somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন নারীকে হেনস্তা করার অধিকার কারো নেই ....

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গতকাল একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে । প্রতিদিন পৃথিবীর কতো কোণেই তো কতো ভিডিও ভাইরাল হয় । সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে খবর ছড়াতে খুব একটা সময় লাগে না । ঘটনা ঘটতে দেরী কিন্তু ছড়াতে দেরি হয় না । স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েদের প্রকাশ্য প্রেম নিবেদন থেকে শুরু করে মডেলের ঝুলন্ত লাশ,রাজন হত্যাকাণ্ডসহ অনেক ঘটনার ভিডিও মুহূর্তে চলে আসে সোশাল মিডিয়ায় ।

গতকাল রাজধানী ঢাকায় যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেটিতে দেখা যাচ্ছে, একজন মহিলা গাড়িতে বসে সম্ভবত কোন সার্জেন্টকে উদ্দেশ্য করে খুব উত্তেজিত ভাবে কথা বলছেন । গাড়িটি খুব সম্ভব রাস্তার কোন সিগনালে আটকে ছিল । যদিও ভিডিওটির সাথে মন্তব্য জুড়ে দেওয়া হয়েছে, উনি নাকি রাস্তা আটকে রেখেছেন । ভিডিওটি দেখে কিন্তু তা মনে হয়নি । কারণ ভিডিওটিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ওই মহিলার গাড়ীর ডানে বামে আরো গাড়ী থামা অবস্থায় রয়েছে এমনকি সামনেও একটা মোটরসাইকেল দাঁড়ানো রয়েছে । উনি যদি রাস্তা আটকে রাখতেন, তাহলে ডানের বামের গাড়িগুলো আটকে থাকার কথা নয় । সেগুলো চলে যেতে পারতো । ওনার পেছনের গাড়িগুলোর সমস্যা হতো ।

ভিডিওটি দেখে মনে হয়েছে, গাড়িগুলো সিগনালে থামলে কেউ ভিডিও করা শুরু করে । সেটা ওই মহিলার নজরে পরায় তিনি প্রতিবাদী হয়ে উঠেন । যিনি ভিডিও করছিলেন, তিনি তখন ভদ্রমহিলার দিকে এগিয়ে যান এবং তাকে কথার মারপ্যাঁচে তাকে বারবার উত্তেজিত করে তুলেন । এবং বারবার বলতে থাকেন , বলেন , আপনি আরো বলেন । আমি দুই টাকার চাকর বলেন । বোঝাই যাচ্ছিল ইনটেনশনালি এমটা করা হচ্ছিল । যেন মহিলাকে দিয়ে আরো কিছু বলিয়ে নেওয়া যায় ।

এখন কথা হচ্ছে, কারো অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্য সিগনালে দাঁড়ানো কোন গাড়ি ও তার ভেতরে বসা কোন যাত্রীর ভিডিও করা এবং সেই ভিডিও অনলাইনে আপলোড করা আইনগত বৈধ কিনা ? একজন সার্জেন্ট যা পারেন তা হচ্ছে, গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করা । কাগজপত্র ঠিক না থাকলে মামলা করা । কোন অভিযোগ থাকলে সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া । কিন্তু কোন প্রকার নির্দেশনা ছাড়া কি কোন গাড়ী, গাড়ীর ভেতরের যাত্রীর বিশেষ করে মহিলা যাত্রীর ভিডিও করা কি ঠিক ? নাকি তা তা আইনত অন্যায় । কারো অনুমতি ছাড়া আপত্তিজনক অনলাইনে ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে, সাইবার ক্রাইম । এভাবে একজন মহিলাকে রাস্তায় হেনস্তা করার অধিকার রাষ্ট্র কাউকে দেয়নি । সংবিধান, আইন-আদালত ও এটা সর্মথন করে না ।

অনেক ভেবে দেখেছি ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে । প্রথমে মহিলা সার্জেন্টকে চাকর বলেছেন । এরপর তিনি নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে, ওনার বাবা যে একজন এমপি ও হাইকোটের একজন প্রাক্তন বিচারপতি তাও বলেছেন । পরিশেষে উনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর লোক হিসাবে পরিচল দিয়েছেন। এই শব্দগুলোর কারণেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে । কেউ একজন আক্রান্ত হবার পর , নিজেকে বাঁচাবার জন্য নিজের পরিচয় ব্যবহার করলে তাতে দোষ কোথায় ? সেটা তো দোষের কিছু না । সকলের জানা থাকা উচিত, Public Servants (Retirement) Act অনুযায়ী সরকারী সকল কর্মচারীই জনগণের চাকর বা সেবক । উনি উত্তেজিত অবস্থায় বারবার ওই সার্জেন্টকে তাই মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন । ভিডিওটি অনেকট রাজনৈতিক কারণে ভাইরাল হয়েছে । যারা প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করেন না তারাই ভিডিওটি ভাইরাল করেছে ।
আমরা কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের উদ্দেশ্য একজন মহিলাকে রাস্তার মাঝে হেনস্তা করে সেই ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, রীতিমতো দন্ডনীয় অপরাধ । আজ ওনার সাথে হয়েছে, কাল যে, আমাদের কারো মা বোনের সাথে এমনটা হবেনা সে গ্যারান্টি কে দিবে ?
পরিশেষে বলবো , একজন নারীকে হেনস্তা করার অধিকার কারো নেই । কারণ সে কারো মা, কারো বোন, কারো স্ত্রী । আজ যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ওই মহিলার সন্মানকে ভাইরাল করছেন , কাল আপনাদের মা বোনের সাথে এমন হলেও কেউ প্রতিবাদ করবে না ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৬
২৮টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×