ধরুন আপনি পরকীয়া করেন । পরকীয়া বানান কি ? র ষিকার না দীর্ঘিকার এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না ।
যা বলছিলাম, ধরুন আপনি পরকীয়া করেন । বিষয়টা আপনার পরিচিত জনেরা টের পেয়ে গেলেন । শুরু হলো ফিসফাস ,ঠুসঠাস । কথায় আছে, গুয়ের গন্ধ আর রসালো কথা নাকি বাতাসের আগে ছড়ায় । আপনার পরকীয়ার কথাও এ কান, ও কান হতে হতে আপনার স্ত্রী কানে গিয়ে পৌঁছল । সদা লক্ষ্মী, সতী-সাবিত্রী স্ত্রী রেগে তেলে বেগুন । শুরু হলো সাংসারিক ছায়াছবি, এর ই নাম অশান্তি । রাজ্জাক, শাবানা,নতুনের জায়গায় অভিনেতা, অভিনেত্রী আপনারা তিনজন । দর্শকের সারিতে আত্মীয়, স্বজন ছেলে মেয়েরা । আপনার অবস্থা তখন ডাঙ্গায় তোলা মাছের মতো । যার সাথে সর্ম্পক সে কিছু না ছড়ালেও , কথা ছড়াবার লোকের তো আর অভাব হয় না । আর যদি খারাপ মেয়ে বা ছেলের পাল্লায় পরেন তাহলে তো আর কথাই নাই ।
আপনি কিন্তু আপনার সামাজিক অবস্থান,সন্তানদের ভবিষ্যৎ আত্মীয় স্বজনদের সবার কথা ভেবে সর্বোপরি মান ইজ্জত হারাবার ভয়ে,বিড়ালের মাছ খাওয়ার মতো মুখ মুছে ফেলে বলে বসলেন, সব অপপ্রচার । আপনার উন্নতিতে ঈষাম্ভিত হয়ে লোকজন অপপ্রচার করছে । আপনার ভাবসাপ প্রতিবাদে, অস্বীকারে ইত্যাদি দেখে অনেকের ই মনে হতে পারে আসলেই সেটা অপপ্রচার ।
কিন্তু মনে রাখবেন, মেয়েদের ব্রেনের আরপিএম শয়তানের ব্রেনের আরপিএম এর চাইতেই অনেক গুন বেশি । তারা যখন কারো পেছনে লাগে তখন আটঘাট বেধেই লাগে । আপনার মোবাইল ফেসবুক ঘেঁটে ঘটনার সত্যতা বের করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয় না । যদি ও আপনি সব ডিলিট করে ফেলেন , চোরের মনে সদা খিরাই ক্ষেতে ।
গায়ের জোড়ে,কুট কৌশলে সত্য ঘটনাটাকে মেরে কেটে হয়তো শেষ পর্যন্ত অপপ্রচার বলে চালিয়ে দিতে পারবেন । কিন্তু ভাই ঘটনাটা তো সত্যই ছিলো । মজা যা লুটার তা দুই পক্ষই লুটেছেন । জিতে গেছেন ভেবে মনে মনে শয়তানের হাসি হাসছেন । কিন্ত এর পরের দাম্পত্য জীবন কি আর স্বাভাবিক থাকে ? অনেক ক্ষেত্রেই থাকে না ।
আবার অনেক অপ প্রচার আছে যা আসলেই সত্য নয় । মানির মান নষ্ট করার জন্য শুধুই অপ প্রচার । সেটাকেই রং চং দিয়ে সত্য বানিয়ে নি:দোষ ব্যক্তিকে কলঙ্কিত করার বহু ঘটনা ইতিহাস থেকে আজো বিলীন হয়ে যায়নি । উত্থান পতনের এই রঙ্গ মঞ্চে এসব নতুন কিছু না । মনে রাখবেন, চুরি করে চোর উপাধি মুছে ফেলা গেলেও চুরি না করে চোর উপাধি পেলে সেটা আর মুছে ফেলা যায় না । মিথ্যা অপবাদ এর ব্যাপারে ধর্ম কি বলে আমি সেদিকে যাবো না ।
যখনই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন দুর্নীতির কথা ঘটলেই এখন শুনি , সব অপ-প্রচারের তোকমা দিয়ে দুর্নীতিবাজদের বাঁচিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় । চোরের মার বড় গলার চেয়ে দুর্নীতিবাজের নিজের গলা আরো বড় হয়ে যায় । কারণ এই চুরিটা তো আর একা করা হয় না । অনেক প্লান, প্রোগ্রাম করে মিলে মিশে চুরি করা হয় তাই ফাঁক থাকে না । আগে ছিলো চোরে চোরে মাশতুতো ভাই আর এখন চোরে চোরে শালা দুলাভাই ।
সম্প্রতি শিল্পকলা একাডেমীর, এমন একটি দুনীতির কথা উঠে এসেছে । শিল্প কলা একাডেমীর ডিজি বা মহাপরিচালকের যিনি একদিকে আমার ক্লাসমেটের চাচা অন্য দিকে আমার প্রিয় শিক্ষিকা কৃষ্টি হেফাজ ম্যাডামের স্বামী সেই হিসাবে উনি আমার সামান্য পরিচিত ।
দুদকে'র জিজ্ঞাসাবাদে উনি কিন্তু বলে দিয়েছেন সব অপ প্রচার। মিথ্যা বানোয়াট,এর কোন সত্যতা নেই ।
চাচা, মানলাম সব অপপ্রচার বা মিথ্যা বানোয়াট । মানলাম, মিথ্যা বিল বাউচার বানিয়ে কোটি কোটি টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনার সবটাই মিথ্যা, বানোয়াট । কিন্তু এই যে কোটি কোটি টাকা খরচ হলো , সেটা তাহলে কি ভাবে হলো ? কখন হলো ? কোন ঘটনা বা অনুষ্ঠানের জন্য হলো ? এটা প্রমাণ করে দেওয়া কিন্তু খুব কঠিন নয় কোন বিষয় না । যদি সত্যিই টাকাটা প্রয়োজনে খরচ হয়ে থাকে । তাই এই মিথ্যাকে কিন্তু মিথ্যা প্রমাণ করার দায়িত্বও আপনার ।
কারণ আপনার শরীরে সব দায় চাপিয়ে দিয়ে যারা আজ বহু দূরে দাড়িয়ে মজা দেখছেন , তাদের মুখোশগুলো খুলে দেবার দায়িত্ব কিন্তু আপনাকেই পালন করতে হবে । তা না হলে, দুর্নীতিবাজেরা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে । আর যদি সেটা করতে গিয়ে আপনার নিজের মুখোশ ই খুলে পরে তাহলে বলবো, চাচা আপনা প্রাণ বাঁচা ।
পরিশেষে বলবো, শিল্প সাহিত্যের নামে দেশে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে, অথচ দেশের শিল্প, সাহিত্য আজ ধ্বংস প্রায় । আর কতো ? একটা জাতি এতো, এতো দুনীতি কেন সহ্য করবে ? কেন, দুনীতিবাজদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেই তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আরো বড় দুনীতিতে ঝাপিয়ে পরবে ? এতো বড় স্পর্ধা চোর বাটপারের দল পায় কি করে ?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:২৬