
ঘটনাটি প্রায় ১৬ বছর আগের হলেও প্রথম আলো'তে সংবাদটি পড়ে বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো । একটি সভ্য দেশের , সভ্য সমাজ হতে একজন মানুষ এভাবে হারিয়ে যেতে পারে না ।
ঘটনাটি সাড়ে ১৫ বছর আগের।
চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড় হয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পথে নিখোঁজ হন এক নারী চিকিৎসক নুসরাত আলম। অসহায় পিতা মাতা এখনো তার পথ চেয়ে আছে । আশা করি আইন শৃঙ্খলাবাহিনী এ রহস্যের কিনারা করবে । প্রথম আলোতে সংবাদটি পড়ার পর একটু খোজ খবর নিতেই জানতে, পারলাম চট্রগ্রামে নুসরাতের মতো নিখোজ হওয়ার সংখ্যা নেহায়েত কম নয় । গুগল করতেই, বের হয়ে এলো ডজনখানেক ঘটনা । যার অধিকাংশ ঘটনা অমীমাংসিত থেকে গেছে । নিখোজ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একদিকে যেমন আছেন , রাজনৈতিক,ব্যবসায়ী,চাকরীজীবি অন্যদিকে তেমন আছে একেবারে সাধারণ মানুষ ।
ঘটনাগুলো পড়ে বুঝতে পারলাম এসব ঘটনাগুলোর পেছনে রয়েছে কোন সংঘবদ্ধ কোন চক্র । যাদের উদ্দেশ্য হতে পারে গুম খুন করে অর্থ আদায় । এবং যারা ভালো মানুষের পোষাকের আড়ালে নিবিঘ্নে গুম, খুন করে পার পেয়ে গেছে । একটি রহস্য বের করতে পালেই রসুনের কোয়ার মতো অনেক নিখোজ গুম রহস্যের ঝট খুলে যাবে । এ জন্য চাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঐকান্তিক চেষ্টা, কর্তব্যবোধ ও নিষ্ঠা ।
ওই চিকিৎসকের নাম নুসরাত আলম। নিখোঁজ হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ২৬ বছর। তাঁর বাবা নুরুল আলম ভূঁইয়ার ভাষ্যে, ‘জলজ্যান্ত মেয়েটিকে পাওয়াই গেল না। পুলিশ কিছুই করতে পারেনি। জীবিত না মৃত, সেটাও জানি না। মারা গেলে অন্তত কবরটা দেখিয়ে দেন।’
নুসরাত চট্টগ্রাম নগরের ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) এমবিবিএস কোর্সে। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে সেখান থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরে তিনি চমেক হাসপাতালে শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ে পিজিটি (পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং) করছিলেন।
২০০৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। প্রতিদিনের মতো সকালে বাসা থেকে হাসপাতালে যান নুসরাত। দুপুরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে রিকশায় লালখান বাজারের বাসার উদ্দেশে রওনা হন। এর পর থেকে তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ নুসরাতের মুঠোফোনের সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করে হাসপাতালের কাছে প্রবর্তক মোড়ে।
পরিবার ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নুসরাত কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাঁর পরিবারের কেউ রাজনীতি করেন না। কারও সঙ্গে পরিবারের শত্রুতা নেই। তাঁর সঙ্গে কারও প্রেমের সম্পর্কও ছিল না। পারিবারিকভাবে বাগ্দান হয় এক প্রকৌশলীর সঙ্গে। এরপর নিখোঁজ হন। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় , কারা নুসরাত কে গুম করেছিলো , কি ছিলো তাদের উদ্দেশ্য ? এমন ও তো হতে পারে, নুসরাত স্বেচ্ছায় কারো সাথে গিয়ে নির্যাতন ও গুমের স্বীকার হয়েছেন । হয়ে আশে পাশে ঘুরঘুর করা মানুষগুলোর মধ্যে ই লুকিয়ে আছে খুনি । এমনটা হলেও তা বের হওয়া একান্ত দরকার ।
প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হোক।
তদন্তকারী সংস্থাই বের করুক তিনি জীবিত না মৃত।
তদন্তের পর তদন্ত, ফলাফল শূন্য
নুসরাত নিখোঁজ হওয়ার পরদিন (২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর) তাঁর বাবা নুরুল আলম ভূঁইয়া বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেন। থানা-পুলিশ কিছুই করতে না পারায় ছয় মাস পর মামলাটি নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে যায়। তারাও কিছু করতে না পেরে দুই বছরের মাথায় (২০০৯ সাল) আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ডিবিতে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রামের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই সময় অনেক চেষ্টা করেও কিছুই পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


