এই যে লাল টসটসে তরমুজটি দেখছেন, কে জানে হতে পারে এটা কাপড়ের রং দিয়ে লাল করা, ক্যামিকেল দিয়ে পাকানো । সেকারিন দিয়ে মিষ্টি করা । খেলে নির্ঘাত ক্যান্সার না হলেও কিডনি বিকল হতে কতক্ষণ ?
মানুষ পারেও বটে !
বাঙ্গালীদের রসনা বিলাস নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এ নিয়ে বেশি কিছু বলতে গেলে শক্রু হতে বেশি সময় লাগে না । খাওয়ার জন্য বাঙ্গালী সব সময় আধা পাগলা থাকে। ভাব দেখায় কিছুই খায় না, কিন্তু সুযোগ পেলে হাড্ডিতে গোস্ত লাগিয়ে চিবায়। আমি নিজেও আছি এ দলে । টানা সাত দিন পোলাও খাওয়ার রেকর্ড আছে আমার । নিজের দোষটাও তো বলা উচিত ।
সকালে যে তরমুজ ২০০ টাকা, বিকালে সেটা ৮০০ টাকা হয়ে গেলেও কিছু পাবলিক সেটা দিব্যি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। গরুর গোস্তর কেজি ৮০০ টাকা হলেও এদের মধ্যে কোন বিকার দেখা যায় না, দিব্যি পাঁচ, ছয় কেজি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ক্রয় ক্ষমতা থাকলেই কি কিনতে হবে ?
রোজা উপলক্ষে বাজারে যেসব ফলমুল পাওয়া যাচ্ছে , তার অধিকাংশই ভেজালে পরিপূর্ণ । তরমুজের ভেতর সেকারিন যুক্ত পানি ও কাপড়ের রং দিয়ে ইনজেক্ট করে মিষ্টতা ও লাল বানানো হচ্ছে । জেনে বুঝে তবুও কিছু পাবলিকের এসব কেনা চাই । এদের আয়ের উৎস না হয় নাই বা জানতে চাইলাম, কিন্তু এই শ্রেনীটা নিজেদের অজান্তেই দেশটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে সেই হুশ বা জ্ঞানও এদের নাই।
এরাই ১ হাজার টাকার পোষাক হাসিমুখে ৫ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে গিয়ে নিলজ্জের মতো অহংকারের হাসি হাসে। আর এ সুযোগটিই নেয় অসাধু ব্যবসায়ী নামের আর একটা শ্রেনী । যখন দেখে বাড়িয়ে দাম চাইলেই বিক্রি হয়ে যায় তখন চাইবে না কেন ? আগে বাজারে গিয়ে আধ পোয়া , এক পোয়া জিনিস পাওয়া যেতো , এখন আধ পোয়া , এক পোয়া কিছু চাইলে দোকানি বেচি না বলে মুখ ফিরিয়ে নেয় । খারাপ আচড়ন করে ।
রাতারাতি টাকার পাহাড় বানানো কিছু অসাধু মানুষের বেহিসাবি আচড়নের চাপটি গিয়ে পরে সরাসরি সাধারণ মানুষ ও দেশের অর্থনীতির উপর । নীতি,বোধ বিবর্জিত এই শ্রেনীর সংখ্যা বাংলাদেশে এখন সব চেয়ে বেশি।
২০০ টাকার তরমুজ যখন ৮০০ টাকা চাওয়া হয় তখন সেটা না কিনলেই তো আর মূল্য বাড়ে না। যে জিনিসটা না কিনলে কোন ক্ষতি নেই সেটা কেন অতিরিক্ত মূল্যে কিনতে হবে ? কিন্তু তবুও কিছু মানুষ হুমরি খেয়ে পরে সেটা কেনার জন্য। এরা কারা, কোথা থেকে এতো অল্প সময়ে আর্বিরভূত হয়েছে ঢাকা শহরে ভেবে পাইনা। এক পুরুষ আগেই এদের দিন আনতে পান্থা ফুরাতো । একবেলা খেলে অন্য বেলা না খেয়ে দিন কাটাতো ।
"রমজান মানুষকে সংযম শেখালেও এসব মানুষরুপি, অর্থলোভীরা কুত্তা পাগলা হয়ে যায় । সারা বছর ধরে এরা অপেক্ষা করে থাকে কখন রমজান আসবে আর কখন হারাম টাকার পাহাড় বানাবে । ঈমানদারদের সাথে তাদের এটাই পার্থক্য।"
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৫৬