somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি অসমাপ্তভালবাসারগল্প

২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জায়গাটা উত্তরা,সেক্টর ২।
এয়ারপোর্ট থেকে খুব দূরে নয়।এই
সেক্টরের ব্লক বি তে সুউচ্চ
এপার্টমেন্ট বিল্ডিং মারলিন।
মারলিনের দ্বিতীয়
ফ্লোরে থাকে কাজী পরিবার।
তাদের
দুই মেয়ে আর তিন ছেলের
মধ্যে মেজো ছেলেটা খুব
হ্যান্ডসাম,নাম আবির।যেমন
চেহারা তেমন তার গঠন।
ঝাকড়া চুল,তার
সাথে খোচা খোচা দাড়ি,মানিয়েছে খুব।
আর ছেলেটার ব্যবহার ও খুব
অমায়িক,যে কাউকেই প্রথম
পরিচয়েই আকর্ষন করার মতো।
আবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
বায়োকেমিস্ট্রির ফার্স্ট ইয়ার
এর
স্টুডেন্ট।
একই বিল্ডিং এর চতুর্থ
ফ্লোরে থাকে মির্জা পরিবার।বেশ
সুখী একটা পরিবার।এই পরিবারের
একমাত্র মেয়ে স্নেহা মির্জা।তার
বাহ্যিক সৌন্দর্যের
বর্ণনা দেয়া মুসকিল।সুন্দর
গঠন,চমতকার গায়ের বর্ণ।ও রাজুক
উত্তরা মডেল কলেজের ক্লাস
নাইনে পড়ে।সাইন্সে পড়ে।মেধার
দিক
দিয়েও খুব ভাল আর অনেক
ফ্রেন্ডলি।স্নেহার
মা বাবা ফিজিক্স আর
কেমিস্ট্রির
শিক্ষক হিসেবে আবিরের
কথা ভাবলেন।ছেলেটা খুব
মেধাবী আর সাইন্সের ও স্টুডেন্ট।
স্নেহাকে আবির পড়াচ্ছে প্রায় ১
মাস ধরে।এর মধ্যে দুজনের
মাঝে খুব
বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।
স্নেহাকে পড়াশোনা ছাড়াও যেকোন
কাজে হেল্প করে আবির।
মোটকথা চান্স পেলেই
ওরা নিজেদের
মধ্যে গল্প গুজবে মেতে উঠে।
এভাবে কেটে গেল কয়েক মাস।এর
মধ্যে স্নেহার দ্বিতীয় সাময়িক
পরীক্ষার রেজাল্ট দিল।দেখা গেল

ফিজিক্সে ৮৩ আর
কেমিস্ট্রিতে ৮৯ নম্বর পেয়েছে।
স্নেহার বাবা মা খুব খুশি আর
স্নেহা নিজেও খুব খুশি।মনে মনে ও
আবিরকে ধন্যবাদ দিল।
একদিন বিকেল
বেলা স্নেহা ছাদে গেল।আর হতাত
সে আবিরকেও ছাদে পেল।সেদিন
বিকেলে ওরা অনেক গল্প করল
আর
সন্ধায় বাসায় ফিরে গেল।এভাবেই
মাঝে মাঝে ওরা ছাদে গল্প করত।
একদিন স্নেহা ওর ভাল রেজাল্টের
জন্য আবিরকে আইস্ক্রিম
খাওয়ালো।দুজনে ছাদে গল্প
করছে আর আইস্ক্রিম খাচ্ছে।
আবির ও
মাঝে মাঝে ওকে আইস্ক্রিম,চকলেট
খাওয়াতো।এভাবেই ওরা দিন দিন
খুব
ভাল বন্ধু হয়ে গেল আর ভাব
জমছিলো দুজনের মধ্যে।
একদিন তৃতীয় তলার
মলি আন্টি ওদেরকে একসাথে ছাদে দেখলো।
মলি আন্টি স্নেহা আর আবির
দুজনের বাবা মাকেই এই
ব্যাপারে জানাল।স্নেহার
বাবা মা তাই
অন্য ধরনের কিছু ঘটার আগেই
ঠিক
করলো স্নেহাকে আবিরের
কাছে আর
পড়াবেনা।পরদিন স্কুল
থেকে ফিরে স্নেহা তা জানতে পারলো।
সাথে সাথে স্নেহার স্বচ্ছ,সুন্দর
মনটা আধারে ঢেকে গেল।এর পরের
কয়েকদিন স্নেহার সাথে আর
দেখা হলনা আবিরের।আবির ও
নিজেকে আর সামলাতে পারলনা।
স্নেহার সাথে থাকা প্রতিটা মুহূর্ত
ওর মনে উকিঝুকি দিতে থাকল।
ছাদে স্নেহার সাথে ওর
গল্প,হাসি,কথা,স্নেহার সব
স্মৃতি ওকে কষ্ট দিতে শুরু করল।
এর পরের কয়েক মাস আবিরের
সাথে আর কথা হয়নি স্নেহার,ওর
মনের না বলা কথাগুলো আর
বলা হয়নি আবিরকে।ওদিকে হটাত
করে স্নেহাদের ইউ।এস।এ যাওয়ার
ভিসা হয়ে গেল।এক মাস পর
ফ্লাইট।
এই খবর শুনে স্নেহা আরো ব্যাকুল
হয়ে গেল।অজানা এক বেদনায় ওর
হৃদয়,মন সব কিছুতে একটা ঝড়
বয়ে গেল।আবির ও এই
খবরটা শুনে কষ্ট পেল।একদিন
বাসার নিচে আবির আর স্নেহার
দেখা হল।
স্নেহা কবে চলে যাচ্ছে আবির
জানতে চাইল।স্নেহা জানাল দুইদিন
পর।বলার সাথে সাথে স্নেহার
চোখে পানি এসে গেল।আবির
স্নেহাকে ইউ।এস।এ গিয়ে ওর
কথা স্মরণ করতে বলল।স্নেহা আর
উত্তর দিতে পারলনা,চলে গেল।
দুইদিন পর।রাত ৯:৩০।
স্নেহা গাড়িতে উঠে বসল।দুতলায়
বেলকনিতে আবিরকে দেখতে পেল
ও।
আবির হাত নাড়ে।কিন্তু কিছুই
বলতে পারলনা স্নেহা।কিভাবে আর
কখন যেন
আবিরকে ভালবেসে ফেলেছে স্নেহা নিজের
অজান্তে।আর ওর সেই অসমাপ্ত
ভালবাসার বিসর্জন
দিতে হচ্ছে শুধুই চোখের জল দিয়ে।
এইত সেদিনের সেই রৌদ্দ্রুজ্জ্বল
পড়ন্ত বিকাল,সেই ছাদ,সেই
স্মৃতি।
কিন্তু নিয়তির অমোঘ
টানে তা এখন শুধুই স্মৃতি,যেন
তা ফুরাবার নয়।
প্লেন নিউইয়র্কের যে।এফ।
কে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করল।
স্নেহাদের জন্য ওদের
রিলেটিভরা আগেই এপার্টমেন্ট
ঠিক করে রেখেছিল।ওখানেই উঠল
ওরা।কিন্তু স্নেহার ভাবনার
কেন্দ্রবিন্দু ওই আবির আর
আবিরের স্মৃতি।
টেলিফোনে আবিরের নম্বর ডায়াল
করে রিসিবার কানে ঠেকাল স্নেহা।
কিন্তু আবিরের ফোন বন্ধ।
একটা দীর্ঘ শ্বাস
ফেলে ফুপিয়ে কাদতে থাকল স্নেহা।
তা যেন আর থামার নয়।এ কান্না ওর
সারাটা জীবনের,যতদিন
বেচে থাকবে আবিরের স্মৃতি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×