সকালে অফিসের তাড়া থাকে। তাই রাতটাকে বেছে নিয়েছি হাঁটার জন্য। বাসা থেকে মিনিট পাঁচেক হেঁটে চলে এলাম আরামবাগ মসজিদের মাঠে। মাঠের পশ্চিমে একতলা মসজিদ উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত, পূর্বদিকের অপর প্রান্তে আরামবাগ কল্যাণ সমিতির অফিস, উত্তরের দেয়াল ঘেষে নারকেল গাছের সারি, দক্ষিণের বস্তি ও ঝিলপাড় টাকে আড়াল করেছে সদ্য গাঁথা উঁচু দেওয়াল। উপরে খোলা আকাশ, সেখানে চাঁদ ভেসে বেড়াচ্ছে, ওকে কেউ দেওয়াল দিয়ে বাধতে পারে না - ও স্বাধীন।
.
মসজিদের সামনের পাকা বারান্দায় আমি দৌড়াই - আপন মনে। মিনিট দশেক পর একটু ক্লান্ত হলে মনটাকে নিয়ে যাই অন্য দিকে - ছোট্ট ইটের টুকরোটাকে পা দিয়ে ঠেলে দেই সামনে। ভেসে উঠে দুই নম্বর বিল্ডিংয়ের মাঠ, হাফ প্যান্ট পরা একটা ছেলে বল নিয়ে দৌড়াচ্ছে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে, তার বড় আপা তাকে জানালা দিয়ে ডাকছে - 'বাবু', 'বাবু' বলে। তবুও তার বাসার ফেরার নাম নেই। আজ কেউ ডাকে না। কিন্তু বাসার ফেরার তাড়া অনুভব করি- তাঁর জন্য, ছেলের জন্য। কি অদ্ভুত মানুষের জীবন। প্রিয় মুখগুলো সময়ের সাথে সাথে কেমন পাল্টে যায়।
.
প্রকৃতি কিন্তু পাল্টায় না। ধানমন্ডি লেকের পাড়ে বসে যে চাঁদটাকে একসময় দেখতাম, সে এখনো তেমনই আছে। আর আমার কালো চুল সাদা হয়েছে, দাড়িও সাদা।
.
খোলা মাঠে চাঁদ দেখার মজাটাই অন্য রকম - কি বিশাল আকাশে আলোর বন্যা। আমি তাকে মোবাইলে ধরি। একটু হেঁটে নারকেলগাছের পাতার ফাঁকে চাঁদকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করি।
.
জীবনটা বড় সুন্দর। একটু চোখ মেলে শুধু চারপাশটা দেখুন, নিজের মতো করে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:১৭